৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় নিউরনের উল্লেখ আছে

স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকর এককই নিউরন। একে স্নায়ুকোষও বলা হয়। আমাদের মস্তিষ্কে কোটি কোটি নিউরন থাকে। বুদ্ধি ও অনুভূতির আধার এই মানব মস্তিষ্ক নিউরনের প্রধান কেন্দ্রস্থল। মস্তিষ্কে নিউরনের উপস্থিতির জন্য আমরা যেকোনো সংকেত দ্রুত গ্রহণ করতে পারি। এটি বুদ্ধি, অনুভূতি, চিন্তা, ইচ্ছাশক্তি, উদ্ভাবনীশক্তি, চেতনাশক্তি—যেকোনো মানসিক বোধকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন—দেহের কোনো অংশ  স্পর্শ করলে, গরম বা ঠাণ্ডা অনুভব করলে বা কেউ চিমটি কাটলে মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছে যায়। যেকোনো অনুভূতি এত দ্রুত মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয় যে এর সংকেত প্রেরণের গতি সেকেন্ডে ১০০ মিটার। মস্তিষ্ক তাই তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

প্রতিটি নিউরনে দুটি অংশ থাকে। একটিকে বলে কোষদেহ অন্যটি প্রলম্বিত অংশ। কোষদেহ নিউরনের মুখ্য অংশ। এটি গোলাকার, ডিম্বাকার, সুচালো প্রভৃতি বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। এর ব্যাস ৬ থেকে ১২০ মাইক্রন পর্যন্ত হয়।

কোষদেহ থেকে নির্গত বা বহির্গত শাখা-প্রশাখাকে প্রলম্বিত অংশ বলে। এটি আবার দুই প্রকার, যথা—ডেনড্রাইট ও অ্যাক্সন।

কোষদেহের চারদিকে সৃষ্ট ক্ষুদ্র তন্তুময় শাখাবিশিষ্ট অংশই ডেনড্রাইট। একটি নিউরনে বহু ডেনড্রাইট থাকে। এগুলো মূলত সেই অংশ, যা মানবদেহের বিভিন্ন ইন্দ্রিয় থেকে বা অন্য নিউরন থেকে তথ্য গ্রহণ করে। ডেনড্রাইটের সংখ্যা যত বেশি হবে, একটি নিউরনের তথ্য গ্রহণের ক্ষমতাও তত বেশি হবে। একটি নিউরনের ডেনড্রাইটের সংখ্যা চার লাখ পর্যন্ত হতে পারে।

অন্যদিকে কোষদেহ থেকে উৎপন্ন সুতার মতো অংশকে অ্যাক্সন বলে। সাধারণত একটি নিউরনে একটি মাত্র অ্যাক্সন থাকে।

বিভিন্ন উদ্দীপনা গ্রহণ করে প্রতিবেদন সৃষ্টি, মস্তিষ্কে যাবতীয় স্মৃতি সংরক্ষণ, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজ নিয়ন্ত্রণ,  সমন্বয় সাধন এবং পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করা নিউরনের কাজ।

J.S.C

Leave a Comment