মুহাম্মদ আলী অবসর গ্রহণ।। মুহাম্মদ আলী আত্মজীবনী পাঠ-৭

তবে তিনি ১৯৮০ সালে ফিরে আসেন ল্যারি হোমস এর কাছ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে নিতে। ল্যারি ছিলেন তার শিষ্য তাই সকলেই লড়াইটি নিয়ে আগ্রহী ছিল।

১১ রাউন্ড পর আলি পরাজিত হন। পরে জানা যায় মস্তিস্কে মারাত্বক ত্রুটি ধরা পরেছে। তার মস্তিষ্ক ফুটো হয়ে গিয়েছিল। পরে তিনি ১৯৮১ সালে অবসর গ্রহণ করেন(৫৬ জয় ৩৭টি নকআউটে ৫ পরাজয়)। তিনি “সর্বকালের সেরা” বক্সার।

বক্সিং কিংবদন্তী মুহাম্মদ আলী ৭৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এ্যারিজোনা রাজ্যের ফিনিক্স শহরে একটি হাসাপাতালে শুক্রবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

এখন পর্যন্ত তিনিই একমাত্র মুষ্টিযোদ্ধা যিনি তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ানের শিরোপা জয় করেন। ১৯৯৯ সালে শ্রোতা/দর্শকদের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে তিনি বিবিসি আয়োজিত শতাব্দীর সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের সম্মান অর্জন করেন।

মি. আলী নিজেকে বলতেন গ্রেটেস্ট অর্থাৎ সবার চেয়ে সেরা।

বক্সিং রিঙে তিনি প্রজাপতির মত দুলে দুলে উড়তেন আর বোলতার মত আঘাত করতেন প্রতিপক্ষকে।

(মি. আলীর বিখ্যাত লড়াই, ১৯৬৪ সালে সনি লিস্টনের বিরুদ্ধে বিজয়ের গল্প শুনতে এখানে ক্লিক করুন)

তারঁ জন্ম হয়েছিল ১৯৪২ সালের ১৭ই জানুয়ারি, ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে হিসেবে কেনটাকি রাজ্যের লুইভিল শহরে।

ক্যসিয়াস ক্লে ১৯৬৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম বদলে রাখেন মুহাম্মদ আলী।

তিনি প্রথম সবার নজর কাড়েন ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকসে।

সেখানে তিনি স্বর্ণপদক জয় করেন।

এর চার বছর পর সনি লিস্টনকে হারিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ান হন।

সেই শিরোপা জয়ের ঠিক পর দিন তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধকে মুহাম্মদ আলী অনৈতিক বলে মনে করতেন। সেকারণে আমেরিকান হিসেবে ঐ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

তার এই নৈতিক অবস্থানের জন্য সে সময় তার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানের শিরোপা কেড়ে নেয়া হয়েছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় আড়াই বছর ধরে আইনি লড়াই চলেছিল।

এরপর মি. আলী আবার বক্সিং রিঙে ফিরে আসেন এবং জর্জ ফোরম্যানকে পরাজিত করে আবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ান হন।

বক্সিং থেকে অবসর নেবার পর মুহাম্মদ আলী পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত হন। তৎকালীন জায়ার (বর্তমান নাম গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র)-এর রাজধানী কিনশাসায় ১৯৭৪ সালে হওয়া এই প্রতিযোগিতার আরেকটি জনপ্রিয় নাম: রাম্বল ইন দা জাঙ্গল।

এর পর মুহাম্মদ আলীকে অনেকেই চ্যালেঞ্জ করেন এবং এক সময় তিনি লিওন স্পিংক্সের কাছে পরাজিত হন।

কিন্তু ফিরতি ম্যাচে তাকে আবার পরাজিত করে মি. আলী তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ান হয়ে ইতিহাস তৈরি করেন।

মুহাম্মদ আলী বেশ পরিণত বয়সে মুষ্টিযুদ্ধ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

ঢাকায় মুহাম্মদ আলী: বাংলাদেশী বক্সার আব্দুল আলীমের সাথে।

ঢাকায় মুহাম্মদ আলী: বাংলাদেশী বক্সার আব্দুল আলীমের সাথে। এক সময় তিনি পার্কিনসন ডিজিজে আক্রান্ত হন।

গত বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মি: আলীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে তাঁর জন্মস্থান কেনটাকি রাজ্যের লুইভিল শহরে।

মুহম্মদ আলী ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সফর করেন। সরকারের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের এই সফরের সময় তাকে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।

পাশাপাশি তিনি তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে তিনি প্রদর্শনী লড়াইয়ে অংশ নেন। তার প্রতিপক্ষ ছিল ১২-বছর বয়সী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

Leave a Comment