প্রকল্পের প্রকৃতি উল্লেখপূর্বক বাস্তব জীবনে এর গুরুত্ব সম্পর্কে আপনার অভিমত ব্যক্ত করুন, hsc উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১২শ শ্রেণি যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৪র্থ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান/ উত্তর ২০২১

শ্রেণি: ১২শ/ hsc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 04 বিষয় কোডঃ 2860
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ প্রকল্পের প্রকৃতি উল্লেখপূর্বক বাস্তব জীবনে এর গুরুত্ব সম্পর্কে আপনার অভিমত ব্যক্ত করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

প্রকল্পের সংজ্ঞা

(Definition of Hypothesis) ইংরেজি ‘Hypothesis’ শব্দের বাংলা অর্থ হলাে প্রকল্প । আর ‘Hypothesis’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘Hupothesis থেকে। এর অর্থ হলাে ‘to suppose’ যার বাংলা পরিভাষা করা যায় ‘ধরে নেয়া’ বা ‘মনে করা। তাই উৎপত্তিগত অর্থে প্রকল্প হলাে, কোনাে কিছুকে ভিত্তি হিসেবে ধরে নিয়ে অনুসন্ধেয় বিষয়ের যথার্থ বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা। অথবা প্রকল্প হলাে, কোনাে বিষয়কে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করার লক্ষ্যে প্রণীত সাময়িক ধারণা।

তবে বিভিন্ন যুক্তিবিদ বিভিন্নভাবে প্রকল্পের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তাঁদের মধ্য থেকে যুক্তিবিদ জে. এস. মিল (J. S. Mill), কোহেন মরিস (Cohen Morris) ও ই. নেগেল (E. Negel) এবং কফি (Coffey) প্রদত্ত সংজ্ঞা নিম্নে উল্লেখ করা হলােযুক্তিবিদ জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill) তাঁর A System of Logic গ্রন্থে প্রকল্পের সংজ্ঞায় বলেন, “প্রকল্প হলাে (প্রকৃত প্রমাণ ছাড়া অথবা অসম্পূর্ণ প্রমাণের ভিত্তিতে) একটি আনুমানিক ধারণা, যা থেকে জানা বাস্তব ঘটনার প্রেক্ষিতে অবরােহিত সিদ্ধান্ত টানা যায় এবং ঐ সিদ্ধান্তগুলাে জানা বা জ্ঞাত সত্যের সাথে মিলিয়ে যদি দেখা যায় যে, ধারণাটি থেকে গৃহীত সিদ্ধান্তের সাথে জ্ঞাত সত্যের মিল রয়েছে, তবে এ ধারণাটি সত্য হবে অথবা সত্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।”

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

(“An hypothesis is any supposition which we make (either without actual evidence, or an evidence avowedly insufficient) in order to endeavour to deduce from its conclusions in accordance with facts which are known to be real; under the idea that if the conclusions to which the hypothesis leads are known truth, the hypothesis itself either must be, or at least likely to be true.” 1889, p-345) কোহেন মরিস (Cohen Morris) ও ই. নেগেল (E. Nagel) তাঁদের Introduction to Logic and Scientific Method বইয়ে প্রকল্পের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, “কোনাে বিষয় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমরা যখন সমস্যার সম্মুখীন হই, তখন আমাদের পূর্ব ধারণা ও উক্ত বিষয়ের মধ্য থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রদত্ত সাময়িক ব্যাখ্যাই হলাে প্রকল্প।”(1989, p200-201)

প্রকল্পের প্রকৃতি

প্রকল্পের উপর্যুক্ত সংজ্ঞা ও উদাহরণ বিশ্লেষণ করলে এর নিম্নলিখিত প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়

১। সাময়িক ধারণা : প্রকল্প হলো কোনো কিছুর ব্যাখ্যায় প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণের অভাবে সাময়িকভাবে গৃহীত একটি
আনুমানিক ধারণা।

২। কোনো বিষয়ের বা ঘটনার ব্যাখ্যা : সাধারণত যে কোনো বিষয় বা ঘটনার সঠিক ব্যাখ্যা প্রদানের জন্যই প্রকল্প
প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় ঘটনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক
আবিষ্কার সংক্রান্ত সকল কিছুর প্রাথমিক ব্যাখ্যর প্রয়াসই হলো প্রকল্প।

৩। প্রকল্প সত্য বা মিথ্যা হতে পারে : কোনো বিষয় বা ঘটনার যথার্থ কারণ অনুসন্ধানের জন্য যে সব প্রকল্প গ্রহণ
করা হয় সেগুলো সত্য বা মিথ্যা যে কোনোটি হতে পারে।

৪। প্রকল্প একাধিক হতে পারে : যে কোনো বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কিত প্রকল্প একাধিক হতে পারে। কারণ কোনো
ঘটনা ব্যাখ্যা করার জন্য প্রথমে যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় তা যদি ঘটনাটি ব্যাখ্যায় যথেষ্ট না হয় তাহলে উক্ত
প্রকল্প বর্জন করে নতুন আরেকটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়। আর প্রকৃত সত্য বা সঠিক সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত এ
প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে। এ কারণেই প্রকল্প একাধিক হতে পারে।

৫। প্রকল্প সম্ভাবনামূলক : প্রকল্প যেহেতু অপ্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে গৃহীত আনুমানিক ধারণা সেহেতু এটি সাধারণত
সম্ভাবনামূলক হয়ে থাকে।

৬। প্রকল্পের সত্যতা বাস্তবতার উপর নির্ভরশীল : কোনো প্রকল্প থেকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবের অনুরূপ হলে সেটি
সত্য হয়, আর বাস্তবের অনুরূপ না হলে সেটি মিথ্যা হয় বলে এর সত্যতা বাস্তবতার উপর নির্ভরশীল।

৭। ঘটনা সম্পর্কে পূর্ব জ্ঞান থাকতে হয় : সঠিক প্রকল্প গ্রহণ করতে হলে যে ঘটনা সম্পর্কে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে
তার সম্পর্কে অবশ্যই পূর্ব জ্ঞান থাকতে হবে। কেননা কোনো ঘটনা সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রকল্প গঠন
করা হলে এর সাহায্যে খুব সহজেই কার্য-কারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যায়।

প্রকল্পের প্রাসঙ্গিকতা

প্রকল্প ছাড়া একদিকে যেমন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়, অন্যদিকে তেমনি এর
সহায়তা ব্যতীত বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান তথা জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিও সম্ভব নয়। তাই বাস্তব জীবনের জটিল ও রহস্যময়
সমস্যাগুলোর সমাধান কল্পে এবং চুড়ান্ত সত্য বা অধিকতর নিশ্চয়তামূলক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য প্রকল্প সর্বদাই
একটি অপরিহার্য ও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিষয়। নিম্নে প্রকল্পের প্রাসঙ্গিকতার বিভিন্ন দিক উল্লেখ করা হলো

১। ব্যবহারিক জীবনে : প্রকল্প হলো কোনো ঘটনা ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা। ব্যবহারিক জীবনে আমরা অনেক সময় বিভিন্ন
জটিল ও রহস্যময় ঘটনার সম্মুখীন হই, যেমন- চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, হত্যা, আকস্মিক কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়া
ইত্যাদি। কিন্তু বেশির ভাগ ঘটনারই প্রকৃত কারণ খুব সহজে জানা যায় না।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

তাই ঘটে যাওয়া ঘটনাটির আসল কারণ কোন্টি তা নির্ণয়ের পূর্বে আমাদেরকে প্রাথমিকভাবে একটি কারণ অনুমান করে নিতে হয়। আর এসব ঘটনা ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে যে কারণটি অনুমান করি তাই হলো প্রকল্প।

২। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে : কোনো বিজ্ঞানী যখন ঘটনাবলির মধ্যে কার্য-কারণ সম্পর্ক আবিষ্কার করতে চান, তখন
তিনি প্রকল্প প্রণয়নের মাধ্যমেই অগ্রসর হন। আবার কোনো ঘটনার ব্যাখ্যায় প্রাথমিকভাবে গৃহীত প্রকল্পটি যদি
কার্যকরী না হয় তাহলে তিনি তা বাতিল করে অপর একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেন। এভাবে বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়নের
মাধ্যমে কোনো ঘটনার বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান অগ্রসর হতে থাকে। যেমন- বিশিষ্ট বিজ্ঞানী নিউটনের আবিষ্কৃত
মধ্যাকর্ষণ নিয়মটি প্রথমে তাঁর নিকট প্রকল্প আকারেই উপস্থিত হয়েছিল। তিনি আপেল গাছের নিচে বিশ্রামরত
অবস্থায় একটি আপেল মাটিতে পড়তে দেখলেন।

এর কারণ তিনি জানতেন না। এমতাবস্থায় তিনি প্রথমে একটি
আনুমানিক ধারণা করলেন যে, ভূপৃষ্ঠে হয়তো কোনো আকর্ষণ শক্তি রয়েছে যা কোনো ভারি বস্তুকে নিচের দিকে
টানে। আপেলটির ভূপাতিত হওয়া সম্পর্কে বিজ্ঞানী নিউটনের এ আনুমানিক ধারণাটিই হলো প্রকল্প। এরপর তিনি
বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যখন ‘মধ্যাকর্ষণ শক্তি’ আবিষ্কার করলেন তখন তা একটি তত্ত্ব বা সূত্রের মর্যাদা
লাভ করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র আমাদের ব্যবহারিক জীবনেই নয়, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রেও এর
ব্যবহার অপরিহার্য।

৩। প্রাকৃতিক ঘটনাবলির ব্যাখ্যায় : প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো এতো জটিল, মিশ্র ও রহস্যময় যে, সহজে এগুলোর কারণ
আবিস্কার করা সম্ভব হয় না। প্রকৃতির এই জটিল ঘটনাবলির কারণ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া প্রকৃতির জটিল বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যাকে সরল ও প্রাঞ্জল করার জন্য প্রকল্পের
সাহায্য গ্রহণ করতে হয়। কারণ প্রকল্প সব সময়ই নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে প্রকৃতিতে সংঘটিত বিষয়াবলির
প্রকৃত স্বরূপ অনুসন্ধানের কাজকে সহজ করে দেয়। সুতরাং এদিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় যে, প্রাকৃতিক
ঘটনাবলির ব্যাখ্যায় প্রকল্প একটি অতীব প্রাসঙ্গিক বিষয়।

৪। পরীক্ষণ ও নিরীক্ষণে : জীবন জটিলতায় সৃষ্ট ঘটনাবলির ব্যাখ্যায় ও প্রকৃতির রহস্য উদ্ঘাটনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার
যুগপৎ ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন। আর এই পরীক্ষণ ও নিরীক্ষণ কার্যের প্রকৃতি ও পথকে সহজ ও প্রশস্ত করার
ক্ষেত্রে প্রকল্পের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

৫। সিদ্ধান্ত সার্বিকীকরণে : বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ সচেতন বলে তিনি প্রকল্প প্রতিষ্ঠার সব স্তর অতিক্রম করে
সিদ্ধান্ত অনুমান করেন। আবার সাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ নিজের অজান্তেই প্রকল্পের নিয়ম অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করে থাকেন। অন্যদিকে আরোহ অনুমানের লক্ষ্যও সার্বিক সত্য অর্জন করা। তাই এক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত
অনুমানের প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসেবে প্রকল্প গঠন করা হয়। সুতরাং সিদ্ধান্ত সার্বিকীকরণের ক্ষেত্রে প্রকল্পের কোনো
বিকল্প নেই।

৬। সামাজিক জীবনে : সামাজিক জীবন যাপন করতে গিয়ে মানুষ প্রতিনিয়ত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে।
কোনো কোনো সময় আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিষয়াবলি তার চিন্তা-চেতনার পরিপন্থী হয়ে
দাঁড়ায়। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যায়। এমতাবস্থায় প্রত্যেক মানুষকে
সমস্যার প্রকৃতি, উৎস ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভের জন্য আনুমানিক ধারণার ভিত্তিতে
অগ্রসর হতে হয়। আর এ ধরনের ধারণা বা পরিকল্পনাই হলো প্রকল্প। তাই মানুষের সামাজিক জীবনেও প্রকল্প
একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

প্রকল্পের গুরুত্ব

আমরা জানি যে, কোনো বিষয় বা ঘটনার প্রাথমিক ও আনুমানিক ধারণা গঠন করাকে প্রকল্প বলে। প্রকৃতপক্ষে প্রকল্পের স্বরূপ ও প্রকৃতি আলোচনা করলে দেখা যায় যে, এটি ছাড়া কোনো ঘটনার কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয় ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান সম্ভব নয়। বর্তমানে আমরা যেসব বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও আবিষ্কার দেখতে পাই তা এক সময় প্রকল্প হিসেবেই গ্রহণ করা হয়েছিল। সুতরাং প্রকল্পের গুরুত্বকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

নিম্নে এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো :

১। ঘটনা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে : প্রকৃতিতে জটিলরূপে সংঘটিত ঘটনাবলি ব্যাখ্যা করা সম্ভব না হলে সেগুলো প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করা যায় না। আবার এ ঘটনাগুলো আদৌ প্রয়োজনীয় কী-না তাও নির্ধারণ করা যায় না। তাই কোনো বিষয় বা ঘটনার প্রকৃতি কিংবা কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে সে সম্পর্কে আনুমানিক ধারণার ভিত্তিতে অগ্রসর হতে হয়। আর এ ধরনের আনুমানিক ধারণাই হলো প্রকল্প। সুতরাং যেকোনো বিষয় বা ঘটনার সঠিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে প্রকল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।

২। নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের ক্ষেত্রে : প্রকৃতিতে প্রতিনিয়ত যে সব ঘটনা ঘটে সেগুলো সব সময় সুবিন্যস্ত থাকে না। এসব ঘটনার প্রকৃতি নির্ণয় করার ক্ষেত্রে আমরা কখনো নিরীক্ষণ আবার কখনো পরীক্ষণের আশ্রয় নিয়ে থাকি। কিন্তু এই নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের কার্যকারিতা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে যথার্থ প্রকল্প গঠনের উপর।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৩। জ্ঞানকে সুসংবদ্ধ ও সুশৃংখল করে : আমাদের চারপাশে সংঘটিত প্রাকৃতিক ঘটনাবলি হচ্ছে অসংখ্য ও বৈচিত্র্যময়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোকে সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে জানা যায় না। তাই প্রকল্পের সাহায্যে এগুলো সম্পর্কে ধারণা গঠন করে সেই ধারণার মাধ্যমে আমাদেরকে প্রাকৃতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে জানতে হয়। সুতরাং অসংখ্য ও বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে সুসংবদ্ধ ও সুশৃংখল জ্ঞান পেতে হলে আমাদেরকে প্রকল্পের সাহায্য গ্রহণ করতে হয়।

৪। দৈনন্দিন জীবনে : প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সার্বিকভাবে দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে প্রকল্প অনেক গুরুত্ব বহন করে। কেননা মানুষ তার যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের শুরুতেই প্রাথমিকভাবে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এবং পরবর্তীতে ঐ পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে পর্যায়ক্রমে লক্ষ্য অর্জনের দিকে ধাবিত হয়। অর্থাৎ প্রকল্প ছাড়া আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কোনো সমস্যারই সঠিক সমাধান করতে পারি না।

৫। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে : বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা যেমন- চুরি-ডাকাতি, খুন-গুম, নারী নির্যাতন, কিশোর অপরাধ ইত্যাদি ঘটনার যৌক্তিক সমাধান একমাত্র প্রকল্প প্রণয়নের সাহায্যেই সম্ভব। তাছাড়া প্রত্যেকটি রাষ্ট্র প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কর্মসূচী প্রণয়ন করে থাকে। যেমন- বার্ষিক আয়-ব্যয়ের সম্ভাব্য পরিকল্পনা হিসেবে বাজেট প্রণয়ন, বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতি সাধনের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রকল্প গঠন করা হয়ে থাকে। আবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক লক্ষ্য

অর্জনের জন্য প্রকল্পের মাধ্যমেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। সুতরাং বলা যায় যে, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনের সকল ক্ষেত্রেই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৬। ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে : ইতিহাস রচনার জন্য ইতিহাসবিদ সাধারণত প্রথমে বিভিন্ন উৎস থেকে ইতিহাসের প্রাথমিক উপাদান সংগ্রহ করে থাকেন। সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁকে একটি প্রাথমিক ধারণা বা প্রকল্প গঠন করতে হয়। এরপর ঐ প্রকল্প বা প্রাথমিক ধারণাকে যাচাই করে সঙ্গতিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা সম্ভব হলে একে ইতিহাসের মর্যাদা প্রদান করা হয়। তাই ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রেও প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৭। অবরোহমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে : কোনো কোনো সময় ঘটনাসমূহের মধ্যকার কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে দৃষ্টান্ত সংগ্রহ সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায় কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের একমাত্র উপায় হলো কোনো ব্যাপকতর নিয়ম সম্পর্কে প্রকল্প গ্রহণ করে, পরে ঐ প্রকল্পের ভিত্তিতে অবরোহমূলক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। তাই অবরোহমূলক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৮। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে : যেকোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রথমে প্রকল্প হিসেবে গৃহীত হয় এবং পরবর্তীতে তা প্রমাণিত হলে ও কোনো বিরোধী দৃষ্টান্ত দ্বারা ভ্রান্ত প্রমাণিত না হলে নিয়ম বা মতবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই সকল বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে প্রকল্প একটি অপরিহার্য বিষয়।

৯। আরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে : আরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে প্রকল্পের স্থান ও গুরুত্ব প্রসঙ্গে যুক্তিবিদগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বৃটিশ যুক্তিবিদ ফ্রান্সিস বেকন (ঋৎধহপরং ইধপড়হ) এর মতে, প্রাকৃতিক নিয়ম আবিষ্কারের জন্য প্রকল্পের কোনো প্রয়োজন নেই। বরং এক্ষেত্রে নিরীক্ষণ ও অপনয়ন সূত্রই যথেষ্ট। অন্যদিকে বিজ্ঞানী নিউটন বলেন, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে আমি প্রকল্প প্রণয়ন করি না।

অর্থাৎ যুক্তিবিদ ফ্রান্সিস বেকন ও বিজ্ঞানী নিউটন আরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে প্রকল্পের স্থান ও গুরুত্ব স্বীকার করেন না। যুক্তিবিদ জন স্টুয়ার্ট মিল এর মতে, আরোহে প্রকল্পের গুরুত্ব খুবই সামান্য। কারণ তিনি মনে করেন যে, আরোহ কোনো আবিষ্কারের পদ্ধতি নয়, এটি হচ্ছে প্রমাণের পদ্ধতি। তবে যুক্তিবিদ উইলিয়াম হিওয়েল (ডরষষরধস ডযববিষষ) প্রকল্পের উপর অধিক গুরুত্বারোপ করে বলেন, একটি বৈধ প্রকল্প এবং একটি আরোহ অনুমান প্রায় সমপর্যায়ভুক্ত। সুতরাং তাঁর মতে, আরোহ অনুমানেও প্রকল্পের গুরুত্ব রয়েছে।

সুতরাং পরিশেষে বলা যায় যে, প্রকল্প হলো এমন একটি বিষয় যাকে আবিষ্কার, প্রমাণ, কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয় ইত্যাদির ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেই হয়। অর্থাৎ জগৎ ও জীবনের সাথে জড়িত সকল ক্ষেত্রে প্রকল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

Leave a Comment