দ্বিতীয়/২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের মূল কারণগুলো কী কী? hsc উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস ২য় পত্র ১২শ শ্রেণি ৫ম অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান/ উত্তর ২০২১,

শ্রেণি: ১২শ/ hsc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: ইতিহাস ২য় পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 05 বিষয় কোডঃ 2855
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ দ্বিতীয়/২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের মূল কারণগুলো কী কী?

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথমদিকে সাফল্য পেলেও শেষপর্যন্ত এই যুদ্ধে অক্ষশক্তি অর্থাৎ জার্মানি , ইতালি ও জাপানের মিলিত জোট পরাজিত হয়েছিল । প্রথমে ইতালি , এরপর জার্মানি এবং সবশেষে জাপান পরাজিত হয় ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার যোগদান
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র লেন্ড-লিজ আইন অনুসারে এতদিন ইংল্যান্ডকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ , যুদ্ধবিমান , রণতরী , বিভিন্ন ধরনের আধুনিক অস্ত্র ইত্যাদি দিয়ে সাহায্য করে আসছিল । কিন্তু পার্ল হারবার ঘটনার পর আমেরিকা সরাসরি মিত্রপক্ষে যােগ দেয় ও যুদ্ধ শুরু করে । ফলে সামরিক শক্তির বিচারে অক্ষশক্তির মােট ক্ষমতার থেকে মিত্রশক্তি বেশি ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে ।

হিটলারের রাশিয়া অভিযানের ব্যর্থতা
হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানি কর্তৃক সােভিয়েত রাশিয়া আক্রমণ ছিল এক চরম ভুল সিদ্ধান্ত । হিটলার চেয়েছিলেন অত্যন্ত দ্রুত আক্রমণ চালিয়ে রাশিয়ার দখল নেবেন । কিন্তু তা সম্ভব হয়নি । বিভিন্ন জায়গায় রুশ সেনাবাহিনী প্রবল প্রতিরােধ গড়ে তােলায় এবং পোড়ামাটি নীতি ( খাদ্যশস্য পুড়িয়ে দিতে দিতে পিছু হটা ) ও গেরিলা রণকৌশল প্রয়ােগ করায় জার্মানি সর্বশক্তি নিয়ােগ করেও পরাজিত হয় ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

অক্ষশক্তি ভুক্ত দেশগুলোর লক্ষ্যের ভিন্নতা
অক্ষপক্ষের তিন শক্তি ( জার্মানি , ইতালি , জাপান ) -র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যােগদানের পশ্চাতে আলাদা আলাদা লক্ষ্য ছিল । হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানি চেয়েছিল গণতন্ত্র ও সাম্যবাদের কবর দিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে । ‘ উদীয়মান সূর্যের দেশ ’ জাপান চেয়েছিল সাম্রাজ্যবাদের প্রসার ঘটাতে । ইতালি তাদের ফ্যাসিবাদী শক্তির দ্বারা গণতন্ত্রের কণ্ঠরােধ করতে চেয়েছিল । অক্ষশক্তির এই আলাদা আলাদা লক্ষ্য তাদের সফল হতে দেয়নি । অপরদিকে মিত্র শক্তিবর্গের একটাই লক্ষ্য ছিল , তা হল বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা ।

অক্ষশক্তির ভুল রণকৌশল
জার্মানি প্রথমদিকে সাফল্যের সঙ্গে একে একে পশ্চিমি শক্তিগুলির মােকাবিলা করে , সকল শক্তি নিয়ে সােভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে পূর্ব রণাঙ্গনে উপস্থিত হয় । এই সুযােগে ইঙ্গ-মার্কিন মিলিত বাহিনী ফরাসি উপকূল নর্মান্ডিতে অবতরণ করে । ফলে জার্মানিকে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খুলতে হয় , যা জার্মানির বিপক্ষে যায় । হিটলারের নেতৃত্বে দুটি রণাঙ্গন খুলে যে চরম ভুল ও নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছিল জার্মানি , সেই ভুলের মাশুল দিতে পরাজয় বরণ করে অক্ষশক্তি ।

ইংল্যান্ড জয়ে হিটলারের ব্যর্থতা
নৌবাহিনীর গুরুত্বকে অস্বীকার করে হিটলার যান্ত্রিক বাহিনী ( প্যানাৎসার ) , ট্যাংক এবং বিমানবহর ( লুফৎভাফে ) -কে কাজে লাগিয়ে সফল হতে চান । বিমানপথেই ইংল্যান্ডকে ধ্বংস করা যাবে বলে হিটলারকে ভুল বুঝিয়েছিলেন তাঁর বিশ্বস্ত অনুচর গােয়েরিং । কিন্তু বাস্তবে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন , দ্রুতগতির ব্রিটিশ বিমানগুলির সাহায্যে সাহসী ও দক্ষ ব্রিটিশ বৈমানিকরা জার্মান আক্রমণকে নির্বিষ করে দেন ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ইতালি ও জাপানের সীমিত শক্তি
জাপান ও ইতালি আর্থিক দিক থেকে অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় যুদ্ধের সিংহভাগ খরচ বহন করতে হয় একা জার্মানিকে । বিমান , কামান , ট্যাংক , নৌবহর , আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের অভাব ছিল ইতালির । অপর ক্ষুদ্র দেশ জাপানের লােকবল , অর্থবল ও সম্পদ সীমিত ছিল । তাই প্রকৃত অর্থে অক্ষশক্তি বলতে বােঝায় জার্মানির শক্তিকেই । জার্মানির একার পক্ষে মিত্রশক্তির সর্বাত্মক মােকাবিলা অনেকটাই কঠিন ছিল ।

জার্মানি কর্তৃক রণাঙ্গনের বিস্তার
ভৌগােলিক অবস্থানের দিক থেকে জার্মানির দুই সীমান্তে ছিল ফ্রান্স ও রাশিয়া । আক্রমণাত্মক যুদ্ধে বিশ্বাসী জার্মানি তাই চেয়েছিল নিজ ভূখণ্ড ছেড়ে অন্য রাষ্ট্রের দিকে অগ্রসর হয়ে আক্রমণ হানতে ।

জার্মান সেনাবাহিনী তাই ছড়িয়ে পড়েছিল রাশিয়ার দিকে , ভূমধ্যসাগরের দুই তীরে , ফ্রান্সের পশ্চিম উপকূলে । কিন্তু এতে জার্মানির বিপদ কমেনি , উলটে বেড়েছিল । সমর বিশেষজ্ঞ লিডেল হার্ট বলেছেন — অতিরিক্ত লাভের আশায় জার্মানি তার সাধ্যের বাইরে নিজের সমরাঙ্গন বিস্তৃত করেছিল ।

সহমত ও সমন্বয়ের অভাব
যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রায় সাড়ে আট মাস পর যুদ্ধে যােগ দেয় মুসােলিনির ইতালি । শুধু তাই নয় , কিছু দিনের জন্য মুসােলিনি যুদ্ধ থেকে ইতালিকে সরিয়েও নিয়েছিলেন অর্থসংকট ও সামরিক যুদ্ধাস্ত্রের অভাবের অজুহাতে । জাপান আবার ইউরােপের ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী ছিল না । ফলে অক্ষশক্তি পরাজয়ের মুখে পড়ে ।

বিশ্বজনমত আদায়ে ব্যর্থতা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মিত্রশক্তি বর্গ জাতিপুঞ্জ ( United Nations Organisation ) গঠন করে ঘােষণা করে যে , তারা ভবিষ্যতে আর পররাজ্য গ্রাস করার জন্য যুদ্ধ করবে না , তারা লড়াই করবে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য । এসব কথায় আকৃষ্ট হয়ে বিশ্বজনমত তাদের পক্ষে আসে । অপরদিকে অক্ষশক্তিভুক্ত দেশগুলি যুদ্ধাপরাধী , পররাজ্য লােলুপ ও গণতন্ত্রের হত্যাকারীরূপে পরিচিতি পাওয়ায় বিশ্বজনমত তাদের বিরুদ্ধে যায় ।

ছোট ছোট শরিকদের জোট ত্যাগ
অক্ষশক্তি জোটের ছােটোখাটো দেশগুলির মধ্যে রুমানিয়া , বুলগেরিয়া , হাঙ্গেরি , ফিনল্যান্ড বিপদের সময় জোট ত্যাগ করে । স্পেনের একনায়ক জেনারেল ফ্রাঙ্কো যুদ্ধের সময় সাহায্যের হাত গুটিয়ে নেন । যুদ্ধে হিটলারের পরিণতি কী হবে তা আগাম অনুমান করে এইসব ছােটো শরিক দেশগুলি অক্ষশক্তি জোট ছেড়ে বেরিয়ে যায় ।

কৌশলগত ত্রুটি
যুদ্ধাস্ত্রের সঠিক ব্যবহার ও তার প্রয়ােগের ক্ষেত্রে অক্ষশক্তির কিছু কৌশলগত ত্রুটি ছিল ।

  1. অ্যাডমিরাল ডােনিজ একটি Naval Air Force গঠনের প্রস্তাব দেন কিন্তু হিটলার তা মানেননি ।
  2. জার্মানির জেট রকেট তৈরির ক্ষমতা থাকলেও হিটলার ‘ ভি ’ রকেট তৈরির নির্দেশ দেন ।
  3. প্রচণ্ড শীতে গরম পােশাকের অভাবে নর্মান্ডি ( ১৯৪৪ খ্রি. ) থেকে জার্মান সেনাদের ফিরে আসতে হয় ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সেনা অসন্তোষ
হিটলারের প্রতি অক্ষশক্তির সামরিক অফিসারদের মধ্যে যথেষ্ট অসন্তোষ দানা বেঁধেছিল । বিশ্বাসযােগ্য ও দক্ষ সেনাপতিদেরও তিনি অকারণে সন্দেহ করতেন । হিটলারের অকারণ দমনপীড়নের জন্যই তরুণ , সুদক্ষ সেনাপতি রােমেলকে আত্মহত্যা করতে হয় । সেনাপতি গােয়েরিং ও হিমলারও পদচ্যুত হন । ঐতিহাসিক শিয়ারার ‘ তৃতীয় রাইখের উত্থান ও পতন ’ গ্রন্থে বলেছেন রাশিয়া অভিযানের পর থেকেই জার্মান সেনাপতিরা বলতে থাকেন , দেশ বড়াে , হিটলার বড়াে নন ।

হিটলারের দায়িত্ব
অ্যাডলফ হিটলার ছিলেন একজন অত্যন্ত দাম্ভিক , নিষ্ঠুর , খামখেয়ালি , সন্দেহপ্রবণ , স্বৈরাচারী প্রকৃতির লােক । যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ সেনাপতিদের পরামর্শকে তুচ্ছ করে তিনি নিজে ত্রুটিপূর্ণ যুদ্ধ পরিকল্পনা রচনা করায় অক্ষশক্তির পতনের পথ তৈরি হয় । দেশের ভেতরে নাৎসি বাহিনীর প্রতি ক্ষোভ ও ঘৃণা ঝরে পড়ে । এতে জার্মান সেনাবাহিনীর মনােবল নষ্ট হয়ে যায় । অন্যদিকে ইংল্যান্ডের চার্চিল , আমেরিকার রুজভেল্ট ও রাশিয়ার স্তালিনের উন্নত যুদ্ধ পরিকল্পনা অক্ষশক্তির পতন নিশ্চিত করে ।

উপসংহার
মিত্রপক্ষ বাহিনী রােম দখল করে নিলে ( ১৯৪৪ খ্রি. ৪ জুন ) ইতালির পতন ঘটে । হিটলারের ঘনিষ্ঠ সহযােগী মার্শাল ডোয়েনিৎস ফ্রান্সের রেইমস শহরে মার্কিন সেনাপ্রধান আইজেনহাওয়ারের সদর দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করলে জার্মানির পতন ঘটে । অবশেষে আমেরিকা জাপানের হনসু দ্বীপে হিরােসিমায় ‘ লিটল বয় ’ ( ১৯৪৫ খ্রি. ৬ আগস্ট ) ও নাগাসাকিতে ‘ ফ্যাট ম্যান ‘ নামক দুটি পরমাণু বােমা ফেললে বাধ্য হয়ে জাপান আত্বসমর্পণ করে ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

Leave a Comment