ডালের উপকারিতা ও ব্যবহার এবং ক্ষতিকর দিক, ডাল পাতে রাখলে যেসব রোগ কাছেও ঘেষবে না ,অতিরিক্ত ডাল কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?, প্রতিদিন ডাল খেলে যে ৩টি যাদুকরী উপকার মিলবে,৫ রকমের উপকারী ডাল,কোন ডাল আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী?,স্বাস্থ্যের জন্য মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা

বিষয়: ডালের উপকারিতা ও ব্যবহার এবং ক্ষতিকর দিক, ডাল পাতে রাখলে যেসব রোগ কাছেও ঘেষবে না ,অতিরিক্ত ডাল কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?, প্রতিদিন ডাল খেলে যে ৩টি যাদুকরী উপকার মিলবে,৫ রকমের উপকারী ডাল,কোন ডাল আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী?,স্বাস্থ্যের জন্য মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা

উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস হলো ডাল। এটি শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এ ছাড়াও ডাল নানা রকম খনিজ ও পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় তা শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এ কারণে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় আমাদের বেশির ভাগেরই প্রথম পছন্দ ডাল। এটি ছাড়া যেন আমাদের খাওয়াই হয় না। তবে অনেকেই আছেন যারা দিনে তিন বেলাই ডাল খেতে পছন্দ করেন।

কিন্তু কোনো কিছুই বেশি পরিমাণে খাওয়া শরীরের জন্য ভালো নয় বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। তাদের মতে, বেশি মাত্রায় ডাল ও দানাশস্য খেলে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। কী কী খারাপ প্রভাব পড়তে পারে তা হলো-

# পেটের সমস্যা

ডালজাতীয় শস্যে ভরপুর মাত্রায় ফাইবার থাকে। ফাইবার ডায়েটে রাখা ভালো, যা হজমশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু বেশি মাত্রায় ফাইবার খেলে আবার বিপদ। মাত্রাতিরিক্ত ফাইবারের কারণে পেটের গোলমাল, আমাশার মতো সমস্যা হতে পারে।

# কোষ্ঠকাঠিন্য

ডালে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার দুই-ই থাকে। ডালজাতীয় শস্য বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। আর সেই পর্যাপ্ত পানি না পেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হয়।

# কিডনি স্টোনের সম্ভাবনা

অতিরিক্ত পরিমাণে মসুর ডাল খেলে কিডনির ওপর অত্যাধিক চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে কিডনি স্টোনের সম্ভাবনা থাকে। এর কারণ হলো-মসুর ডালে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন থাকে, যা শরীরে অত্যাধিক প্রবেশ করলে ক্ষতি হতে পারে।

# অ্যালার্জির সমস্যা

দানাশস্য থেকে অনেকেরই অ্যালার্জির সমস্যা হয়। ডাল অল্প মাত্রায় খেলে শরীরে ততটা খারাপ প্রভাব পড়ে না। কিন্তু খুব বেশি মাত্রায় খেলেই বিপদ!

# মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ে

যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তাদের ডায়েটে খুব বেশি ডাল না রাখাই ভালো। এতে মাইগ্রেনের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।

অনেকেই মনে করেন, ডাল খেলেই শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়। বিশেষত যারা নিরামিষ খান, তারা ডালের মাধ্যমেই শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করেন। তবে ডালজাতীয় শস্যে সম্পূর্ণ প্রোটিন থাকে না। এতে মিথিওনাইন নামক প্রোটিন থাকে না। তাই শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ করতে কেবল ডালের ভরসায় থাকলে হবে না, খেতে হবে অন্য স্বাস্থ্যকর খাবারও।

দৈনন্দিন জীবনে ডাল ছাড়া ভাবাই যায় না। প্রোটিনে ভরপুর ডাল আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকবে না এমনটা বোধহয় কল্পনা করাও যায় না। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি, ভিটামিন ও খনিজ আমরা এই ডাল থেকেই পেয়ে থাকি। শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে ডালের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই ডাল খেতে পছন্দ করেন সবাই, তবে অনেকের বিশেষ কোনও ডালের প্রতি আসক্তি থাকতে পারে। তবে কোন ডালের কী পুষ্টি গুণ তা জেনে নিয়ে খাদ্য তালিকায় রাখাটাই ভাল।

ডাল আমাদের জাতীয় খাদ্য। এক একজনের পছন্দের তালিকায় এক এক রকম ডাল জায়গা জুড়ে নিয়েছে, তবে আপনি যে ডালই পছন্দ করুন না কেন, তার পুষ্টি গুণ কতটা সেটা অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত। বাজারে সাধারণত যে ডাল পাওয়া যায়, সেগুলোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে একটু জেনে নিন।  

মুগ ডালের পুষ্টি গুণ
সাধারণত বাজারে দুই প্রকারের মুগ ডাল পাওয়া যায়। একটা খোসা ছাড়া হলুদ রঙের আর একটি খোসা সমেত সবুজ রঙের। এই ডাল খুব সহজে হজম হয়ে যায়, যারা নিজেদের ওজন নিয়ে খুবই সতর্ক, তাদের জন্য এই ডাল খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন। মুগ ডালে প্রোটিন, প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার ও ভিটামিন বি১ -এ ভরপুর।    

উপকারিতা: 
– ওজন কমাতে সাহায্য করে। 
– গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মুগডাল খুবই উপকারী। 
– শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে মুগ ডাল।

মুসুরি ডালের পুষ্টি গুণ
বাঙালির বেশির ভাগ রান্নাঘরেই বোধহয় মুসুরি ডালের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি১ প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এই ডালের মধ্যে। লাল রঙের মুসুরি ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন থাকে। মাত্র এক কাপ মুসুর ডালে ২৩০ ক্যালোরি, প্রায় ১৫ গ্রাম ফাইবার এবং ১৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে।   

 উপকারিতা: 
– মুসুরি ডাল পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।  
– শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি থাকলে অবশ্যই মুসুরি ডাল খান, কারণ এই ডাল পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। 
– শরীরে জমে থেকে কোলেস্টেরল দূর করে, শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।  

অড়হর ডাল
আমাদের দেশে অড়হর ডাল বেশি একটা ব্যবহার হয় না। তবে এই খুবই সুস্বাদু। এই ডালে রয়েছে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি এবং পটাসিয়াম। আপনার শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে এই ডাল।

উপকারিতা:
– অড়হর ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
– নিয়মিত ফাইবার গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়, স্ট্রোক এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
– এতে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। যা মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
– এই অড়হর কার্বোহাইড্রেটের একটি ভাল উৎস। এর সাহায্যে দেহর শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। 

বিউলির ডাল
এই ডাল দুই রকমের। একটি খোসা ছাড়া সাদা রঙের, আর একটি কালো। আমাদের দেশে এই ডাল তেমন প্রসিদ্ধ নয়, তবে ভারতের বিভিন্ন স্থানে এটি প্রসিদ্ধ। পাঁপড় তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয় এই ডাল। ডাল মাখানি থেকে তড়কা এবং রান্নাতেই ব্যবহৃত হয় এই ডাল। পুষ্টিতে ভরা এই ডাল যেমন সুস্বাদু তেমনি বিভিন্ন গুণে ভরপুর।  

উপকারিতা: 
– বিউলির ডালে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।
– পেটের জ্বালা দূর করে।
– আপনার ত্বককে চকচকে ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এই ডাল।

ছোলার ডাল
ছোলার ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। ছোলার ডাল আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করতে সহায়ক। ছোলার ডাল খাওয়া যুবকদের জন্য বেশি উপকারী বলে মনে করা হয়। এতে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে, যা পেশি গঠনে সাহায্য করে।

উপকারিতা: 
– ছোলার ডাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
– এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণও খুব কম।
– ছোলার ডাল খাওয়া রক্তাল্পতা, জন্ডিস, কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুব উপকারী বলে বিবেচিত হয়।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

Leave a Comment