৮ম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে বাঁশির উল্লেখ আছে

৮ম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে বাঁশির উল্লেখ আছে

শিক্ষা Writing Side পরীক্ষা প্রস্তুতি

Google Adsense Ads

বাঁশি বা বাঁশরি হলো দক্ষিণ এশিয়ার এক ধরনের বাদ্যযন্ত্রবিশেষ। বাংলায় বাঁশি শব্দটি সংস্কৃত শব্দ বংশী থেকে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে। আবার ওই বংশী শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বংশ থেকে, যার অর্থ বাঁশ। বাঁশ (বংশ) দিয়ে তৈরি হতো বলে এর নাম বাঁশি। এই যন্ত্র মূলত বাঁশ দিয়ে বানানো হলেও কেউ কেউ শখের বশে স্টিলের, তামার, পিতলের, রুপার, এমনকি সোনার পাইপ দিয়েও বানিয়ে থাকে। বাঁশির ইংরেজি নাম ‘ফ্লুট’। বাংলায় মুরলি, বংশী বা বাঁশরি নামেও ডাকা হয়। বাঁশি বাজানো হয় ফুঁ দিয়ে। সংস্কৃত গ্রন্থ নাট্যশাস্ত্রে এই যন্ত্রের গুরুত্ব ও কার্যপ্রণালীর বিস্তৃত বর্ণনা পাওয়া যায়।

লোকসংগীতের বিভিন্ন ধারা, যেমন—সারি, ভাওয়াইয়া, যাত্রা, কবিগানে অন্যান্য যন্ত্রের সঙ্গে বাঁশি বাজানো হয়। বাঁশি বানানো হয় সাধারণত মুলিবাঁশ দিয়ে। প্রথমে বাঁশির মাপমতো মুলিবাঁশ কেটে নিতে হয়। কাটা অংশের মাথার দিকে রাখতে হয় গিঁট, যাতে ওপরের দিকটা বন্ধ থাকে; এর অপর প্রান্ত থাকে খোলা। এরপর রোদে শুকাতে হয়। শুকানো হয়ে গেলে আগুনে পোড়ানো লোহার শলাকা দিয়ে সাত-আটটি ছিদ্র করতে হয়। পরে আঁকা হয় নকশা। মাটির প্রলেপ লাগিয়ে আবার আগুনে সেঁকে পানিতে ধুয়ে বাঁশের টুকরাগুলো ফের রোদে শুকানো হয়। সবশেষে করা হয় বার্নিশ। এভাবেই বাঁশি বানানো হয়। বাঁশি নানা রকমের স্কেলের হতে পারে। এই স্কেল বাঁশের দৈর্ঘ্য, ব্যাস ও ছিদ্রের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। গিঁটের কাছে যে গোল ছিদ্রটি করা হয়, তাকে বলে ফুঁৎকাররন্ধ্র। বাকি ছিদ্রগুলোকে বলে তারারন্ধ্র। ফুঁৎকাররন্ধ্রে মুখ রেখে আড়াআড়িভাবে বাঁশিটি ধরে অপর ছিদ্রগুলোতে দুই হাতের তর্জনী, মধ্যমা ও অনামিকা দিয়ে বায়ু নিয়ন্ত্রণ করে বাঁশি বাজানো হয়। ধরন অনুযায়ী বাঁশির বিভিন্ন নাম রয়েছে, যেমন—আড়বাঁশি, কদবাঁশি, টিপরাবাঁশি, হরিণাবাঁশি। এগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে আড়বাঁশি সর্বাধিক প্রচলিত। এটি মুরলি, মোহনবাঁশি ও বেণু নামেও পরিচিত।

বাঁশিকে অনেক প্রাচীন হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন মন্দিরের চিত্র ও ভাস্কর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের চিত্রায়ণে বাঁশি একটি অপরিহার্য অঙ্গ। কৃষ্ণ ও রাধার প্রেমকাহিনির সঙ্গে বাঁশি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বংশী কৃষ্ণের পবিত্র অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী বাদ্যযন্ত্র হিসেবেও খ্যাত। মধ্যযুগীয় কিছু গ্রন্থ অনুযায়ী বাঁশির বাদককে বংশীকা এবং বাংলায় তাদের বংশীবাদক বলে। বাঙালি কিছু বিখ্যাত বংশীবাদক হচ্ছেন—পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পান্নালাল ঘোষ, হাজী আবদুল হাকিম, আজিজুল ইসলাম, বারী সিদ্দিকী প্রমুখ।                

J.S.C

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

1 thought on “৮ম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে বাঁশির উল্লেখ আছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *