১৯৪৭ সালের অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠনের রূপরেখা তুলে ধর, ১৯৪৭ সালের অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠনের সংবিধানের রূপরেখা উল্লেখ কর, অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠনের রূপরেখা তুলে ধর

প্রশ্ন সমাধান: ১৯৪৭ সালের অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠনের রূপরেখা তুলে ধর, ১৯৪৭ সালের অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠনের সংবিধানের রূপরেখা উল্লেখ কর, অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠনের রূপরেখা তুলে ধর

সুপ্রাচীনকাল থেকে বাংলায় হিন্দু ও মুসলমানগণ সৌহার্দপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিল। একারণে ১৯৪৭ সালে বাংলা বিভক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শরৎচন্দ্র বসু বাংলার অখণ্ডতা রক্ষার জন্য এবং একটি স্বাধীন অখণ্ড বাংলা গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। এ প্রস্তাব অবিভক্ত বাংলার সকল অসাম্প্রদায়িক নেতা কর্তৃক সমর্থন লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা মনে করতেন এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায় অতীতে যেমন শত শত বছর ধরে পাশাপাশি অবস্থান করে নিজস্ব স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে তা বজায় রাখা সম্ভব হবে। কাজেই ১৯৪৭ সালের অবিভক্ত বাংলা গঠনের প্রচেষ্টা তৎকালীন সময়ে বাংলায় জনপ্রিয়তা ও সমর্থন লাভ করেছিল।
অখণ্ড স্বাধীন বাংলা গঠনের জন্য প্রণীত সংবিধানের রূপরেখা : হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শরৎ চন্দ্রবসু মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের সাথে একাধিক বৈঠক করে, বিশেষকরে জিন্নাহ ও মহাত্মা গান্ধীর সাথে বৈঠক করে কোনো আশার বাণী না পেয়ে শরৎ বসু ১৯৪৭ সালের ১২ মে ছয়দফা নীতিমালা নামে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে।
নীতিমালাটি নিম্নরূপ :
১. বাংলা হবে একটি সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ।
২. সংবিধান প্রণয়নের পর বাংলার আইন পরিষদ গঠিত হবে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে যৌথ নির্বাচনের মাধ্যমে;
৩.এভাবে নির্বাচিত আইন পরিষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যে, অবশিষ্ট ভারতবর্ষের সঙ্গে বাংলার সম্পর্ক কী হবে;
৪. বর্তমান মুসলিম লীগ মন্ত্রিপরিষদ বিলুপ্ত করা হবে এবং তদস্থলে একটি সর্বদলীয় মধ্যবর্তী মন্ত্রিপরিষদ গঠন কথা হবে;
৫. বাংলার পাবলিক সার্ভিস বাঙালিদের দ্বারা গঠিত হবে এবং সেখানে হিন্দু-মুসলমানের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে;
৬. সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি অস্থায়ী গণপরিষদ গঠন করা হবে যার সংখ্যা হবে ৬১ (৩১ জন হবে মুসলমান এবং ৩০ জন অমুসলমান)। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৭ সালের ২০ মে মুসলিম লীগ ও প্রাদেশিক কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ শরৎ বসুর বাসায় একটি বৈঠকে মিলিত হয়ে অবিভক্ত বাংলার একটি সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন করেন।

এ খসড়াটি নিম্নরূপ :


আরো ও সাজেশন:-

১. বাংলা হবে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, ভারতের অন্যান্য অংশের সঙ্গে তার সম্পর্ক কী হবে তা এ স্বাধীন রাষ্ট্রই স্থির করবে।
২. হিন্দু, মুসলমান জনসংখ্যার অনুপাতে আসন সংখ্যা বণ্টন করে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে যৌথ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলা আইন পরিষদ গঠিত হবে। জনসংখ্যার অনুপাতে হিন্দু ও তফশিলী সম্প্রদায়ের মধ্যে আসন সংখ্যা বণ্টন করা হবে, অথবা তারা যেভাবে মেনে নেন সেভাবে আসন সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
৩. স্বাধীন বাংলার এরূপ পরিকল্পনা ব্রিটিশ সরকার মেনে নিলে বা বাংলা ভাগ করা হবে না এরূপ ঘোষণা দিলে বাংলার বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হবে এবং সে স্থলে একটি অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। এ অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী পদ বাদে বাকি সদস্য পদ হিন্দু (তফসিল সহ) ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সমান বণ্টন হবে। এ মন্ত্রিসভার প্রধানমন্ত্রী হবেন একজন মুসলমান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন একজন হিন্দু।
৪. নতুন সংবিধান অনুযায়ী আইন পরিষদ ও মন্ত্রিসভা গঠিত না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ সকল চাকরি বাঙালিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে এবং বাংলার সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য চাকরিতে সমানসংখ্যক
বাঙালি হিন্দু ও মুসলমান নিয়োগ করতে হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


৫. বাংলার ভবিষ্যৎ সংবিধান রচনার জন্য যে গণপরিষদ হবে সে গণপরিষদে মোট ৩০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। তন্মধ্যে ১৬ জন মুসলমান ও ১৪ জন হিন্দু সদস্য হবেন। বর্তমান আইনসভার হিন্দু ও মুসলমান
সদস্যগণই উক্ত গণপরিষদের সদস্য নির্বাচন করবেন। গণপরিষদের সদস্য নির্বাচনকালে বর্তমানে আইনসভার ইউরোপীয় সদস্যগণের কোনো ভোটাধিকার থাকবে না।
৬. জনসংখ্যার ভিত্তিতে আইনসভায় সকল সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হবে।
৭. এ সংবিধান অনুযায়ী আগামী ১০ বছরের জন্য বলবৎ থাকবে। তাছাড়া এ সংবিধানের রূপরেখায় পূর্ণিয়া থেকে আসাম পর্যন্ত বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর বৃহৎ এলাকাকে নিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া এতে তিনটি অঞ্চলকে বাংলার সাথে যুক্ত করার কথা বলা হয়। এগুলো হলো :
ক. মধ্যবাংলা অবতল চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও প্রেসিডেন্সী বিভাগ এবং শ্রীহট্ট জেলা;
ঘ. পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ শ্রীহট্ট বাদে সমগ্র আসাম এবং
গ. পশ্চিমাঞ্চল বর্ধমান বিভাগ ও বিহারের পূর্ণিয়া জেলা।


উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, একটি স্বাধীন অখণ্ড বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব তৎকালীন সময়ে ছিল একটি যৌক্তিক পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে একটি স্বাধীন অখণ্ড বাংলা গঠন সম্ভব ছিল। কিন্তু তৎকালীন মুসলিম লীগের স্বার্থান্বেষী মনোভাব ও কংগ্রেসের বাংলা বিভক্তি মনোভাব শেষ পর্যন্ত অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা গঠন প্রস্তাব বানচাল হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভক্তি হয়, জন্ম হয় পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ।


রচনা ,প্রবন্ধ উত্তর লিংক ভাবসম্প্রসারণ উত্তর লিংক
আবেদন পত্র ও Application উত্তর লিংক অনুচ্ছেদ রচনা উত্তর লিংক
চিঠি Letter উত্তর লিংক প্রতিবেদন উত্তর লিংক
ইমেলEmail উত্তর লিংক সারাংশ ও সারমর্ম উত্তর লিংক
Paragraphউত্তর লিংক Compositionউত্তর লিংক
CVউত্তর লিংক Seen, Unseenউত্তর লিংক
Essayউত্তর লিংক Completing Storyউত্তর লিংক
Dialog/সংলাপউত্তর লিংক Short Stories/Poems/খুদেগল্পউত্তর লিংক
অনুবাদউত্তর লিংক Sentence Writingউত্তর লিংক

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment