হার্জবার্গের প্রেষণা ও রক্ষণাবেক্ষণ উপাদানসমূহ,হার্জবার্গের রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান,হার্জবার্গের প্রণোদনা বা প্রেষণামূলক উপাদান,হার্জবার্গের দ্বি-উপাদান তত্ত্ব

হার্জবার্গের প্রেষণা ও রক্ষণাবেক্ষণ উপাদানসমূহ,হার্জবার্গের রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান,হার্জবার্গের প্রণোদনা বা প্রেষণামূলক উপাদান,হার্জবার্গের দ্বি-উপাদান তত্ত্ব

শিক্ষা প্রশ্ন সমাধান

Google Adsense Ads

প্রশ্ন সমাধান: হার্জবার্গের প্রেষণা ও রক্ষণাবেক্ষণ উপাদানসমূহ,হার্জবার্গের রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান,হার্জবার্গের প্রণোদনা বা প্রেষণামূলক উপাদান,হার্জবার্গের দ্বি-উপাদান তত্ত্ব

প্রেষণার দ্বি-উপাদান তত্ত্বের জনক বলা হয় প্রখ্যাত মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ফ্রেডরিখ হার্জবার্গকে। তাঁর এই তত্ত্বকে Motivation and Maintenance of Hygiene theory of Two-Factor Theory of Motivation বলে। ফ্রেডরিখ হার্জবার্গ ১৯৫৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিটাসবার্গ অঞ্চলের ১১ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ২০০ জন প্রকৌশলী ও হিসাবরক্ষকের উপর এক গবেষণা করেন। এ গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে হার্জবার্গ কার্যসন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির সাথে সম্পর্কিত উপাদানগুলোকে ক) অন্তর্নিহিত বা বিষয়গত উপাদান এবং খ) বাহ্যিক বা প্রেক্ষিত উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। উক্ত উপাদানসমূহের ভিত্তিতে তিনি প্রেষণার দু’প্রকার উপাদানের কথা বলেছেন। এগুলো হচ্ছে-

ক) প্রেষণামূলক উপাদান (Motivational Factors) খ) রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান (Maintenance Factors)

ক) প্রেষণামূলক বা প্রণোদনা উপাদান

মানুষ তথা কর্মীর কার্যসন্তুষ্টির সাথে সম্পৃক্ত উপাদানগুলোকে প্রেষণামূলক উপাদান বলে। এ উপাদানগুলো কর্মীদের কাজে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে, কার্যসন্তুষ্টি আনয়ন করে এবং কর্মীকে কার্যে প্রণোদিত করে। প্রেষণার এ উপাদানগুলো মূলত কর্মকেন্দ্রিক। প্রেষণামূলক উপাদানগুলো নিম্নরুপ:

১) সাফল্য

২) স্বীকৃতি

৩) প্রবৃদ্ধি অর্জন ও অগ্রগতি

৪) ব্যক্তিগত উন্নয়নের সম্ভাবনা

৫) দায়িত্ব

৬) কাজের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য

খ) রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান

যেসব উপাদান কর্মীর কার্য অসন্তুষ্টির সাথে সম্পৃক্ত তাকে রক্ষণাবেক্ষণমূলক বা হাইজিন উপাদান হিসেবে অভিহিত করা হয়। এ উপাদানসমূহ কর্মীদের কাজে অনুপ্রাণিত করে না, বরং এগুলোর অনুপস্থিতি কর্মীদের মাঝে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করে। এসব উপাদানকে সংরক্ষণকারী উপাদানও বলা হয়। কারণ এসব উপাদান মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদানগুলো নিম্নরুপ:

১) প্রতিষ্ঠানের নীতি ও প্রশাসন

২) চাকরির নিরাপত্তা

৩) বেতন

৪) শ্রম-ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক

৫) তত্ত্বাবধান

৬) কার্যের শর্তাবলি

৭) পদমর্যাদা

৮) ব্যক্তিগত জীবন ও কার্যপরিবেশ

৯) অধীসন্থদের সাথে সম্পর্ক

১০) সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক


আরো ও সাজেশন:-

নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে হার্জবার্গের দ্বি-উপাদান তত্ত্ব দেখানো হলো-

1

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

হার্জবার্গ কর্মীদের প্রেষণা গবেষণায় যেসব তথ্যাদি পেয়েছেন তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

১) কর্মীদের প্রেষণার ক্ষেত্রে দুটি পরস্পর বিরোধী উপাদান রয়েছে। এর একটি হলো প্রেষণামূলক উপাদান। এ উপাদান কার্যক্ষেত্রে কর্মীদের ইতিবাচক মনোভাব গঠন এবং উৎপাদন কার্যে বিশেষভাবে সহায়তা করে। প্রেষণার অন্য উপাদান হলো রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান। এ উপাদানসমূহের অনুপস্থিতিতে কর্মীদের মাঝে অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হয়।

২) কার্যক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদানগুলোর যথাযথ উপস্থিতি কর্মীদের মাঝে অসন্তুষ্টি দূরীকরণে সহায়তা করে। কিন্তু প্রেষণাদানের ক্ষেত্রে এ উপাদানগুলোর গুরুত্ব নেই বললেই চলে।

৩) প্রেষণামূলক উপাদানের অনুপস্থিতিতে কর্মীদের মাঝে তেমন কোন নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয় না। তবে এ উপাদানগুলো প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান থাকলে কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কার্যে মনোনিবেশ করে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

সমালোচনা

কার্যক্ষেত্রে কর্মীর মনোবল উন্নয়নে হার্জবার্গ প্রদত্ত দ্বি-উপাদান তত্ত্বের গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও এ তত্ত্বটি বিভিন্ন গবেষক কর্তৃক সমালোচিত হয়েছে। নিম্নে এ তত্ত্বের সমালোচনা উল্লেখ করা হলো-

১) এ তত্ত্বে প্রেষণামূলক ও রক্ষণাবেক্ষণমূলক দুটি ভিন্নমুখী উপাদানের অস্তিত্ব দেখানো হয়েছে যা প্রকৃতপক্ষে পরস্পর বিরোধী নয়, বরং তা পরস্পর পরিপূরক হিসেবে গণ্য।

২) এ তত্ত্বে কার্যসন্তুষ্টি লাভে ব্যক্তিক পার্থক্য, কার্যপরিবেশ ও পরিস্থিতির পার্থক্য এবং কার্যের প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের কথা বিবেচনা করা হয়নি।

৩) এ তত্ত্বে বিশেষ দুটি শ্রেণীর উপর গবেষণা চালানো হয়েছে। অথচ বাস্তবে আরো কতিপয় পেশাজীবী শ্রেণী রয়েছে। তাই এ তত্ত্বটি সকল শ্রেণীর কর্মীর প্রেষণাদানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপযোগী নয়। সুতরাং এটি এ তত্ত্বের একটি অন্যতম দূর্বলতার দিক।

৪) হার্জবার্গ প্রদত্ত মডেলে যেসব উপাদানকে প্রেষণামূলক উপাদান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে তা অনেক কর্মীর নিকট রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান হিসেবে বিবেচিত। আবার যেসব উপাদানকে রক্ষণাবেক্ষণমূলক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয় তা কোন কোন কর্মীর নিকট প্রেষণামূলক উপাদান হিসেবে গণ্য হয়।

৫) দ্বি-উপাদান তত্ত্বের বেতন, মর্যাদা এবং শ্রম-ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক প্রভৃতি প্রেষণামূলক উপাদানে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। অথচ এ উপাদানগুলো কার্যক্ষেত্রে কর্মীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।

হার্জবার্গ প্রদত্ত দ্বি-উপাদান তত্ত্বের বিভিন্ন সমালোচনা থাকলেও আধুনিক ব্যবস্থাপক মহলে এর গুরুত্ব কোন অংশে কম নয়। কারণ প্রতিষ্ঠানের কার্যপরিবেশ ও কাজের মানোন্নয়নে এ তত্ত্বের যে অবদান রয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *