সূরা আছর ডাউনলোড, নামাজের শেষে সুরা আছর পাঠের গুরুত্ব,সূরা আছর কোথায় অবতীর্ণ হয়

আজকের বিষয়: সূরা আছর ডাউনলোড, নামাজের শেষে সুরা আছর পাঠের গুরুত্ব,সূরা আছর কোথায় অবতীর্ণ হয়,নামাজে সুরা আছর পড়ার নিয়ম

নামকরণ :

প্রথম আয়াতের “ আল আসর ” ( আরবী ————) শব্দটিকে এর নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

নাযিলের সময় – কাল

মুজাহিদ , কাতাদাহ ও মুকাতিল একে মাদানী বলেছেন । কিন্তু মুফাসসিরগণের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ একে মক্কী সূরা হিসেবে গণ্য করেছেন। আর এই সূরার বিষয়বস্তু সাক্ষ দেয় , এটি মক্কী যুগেরও প্রথামিক পর্যায়ে নাযিল হয়ে থাকবে। সে সময় ইসলামের শিক্ষাকে সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী বাক্যের সাহায্যে বর্ণনা করা হতো। এভাবে শ্রোতা একবার শুনার পর ভুলে যেতে চাইলেও তা আর ভুলতে পারতো না এবং আপনা আপনি লোকদের মুখে তা উচ্চারিত হতে থাকতো।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য

এ সূরাটি ব্যাপক অর্থবোধক সংক্ষিপ্ত বাক্য সমন্বিত বাণীর একটি অতুলনীয় নমুনা। কয়েকটা মাপাজোকা শব্দের মধ্যে গভীর অর্থের এমন এক ভাণ্ডার রেখে দেয়া হয়েছে যা বর্ণনা করার জন্য একটি বিরাট গ্রন্থও যথেষ্ট নয়। এর মধ্যে সম্পূর্ণ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের এবং তার ধ্বংস ও সর্বনাশের পথ বর্ণনা করা হয়েছে। ইমাম শাফেঈ যথার্থই বলেছেন , লোকেরা যদি এই সূরাটি সম্পর্কে চিন্তা – ভাবনা করে তাহলে এই একটি সূরাই তাদের হেদায়াতের জন্য যথেষ্ট। সাহাবয়ে কেরামের দৃষ্টিতে এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হিসন দারেমী আবু মাদীনার বর্ণনা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণের মধ্য থেকে দুই ব্যক্তি যখন পরস্পর মিলিত হতেন তখন তারা একজন অপরজনকে সূরা আসর না শুনানো পর্যন্ত পরস্পর থেকে বিদায় নিতেন না। ( তাবারানী )


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالْعَصْرِ﴾

১) সময়ের কসম৷
﴿إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ﴾

২) মানুষ আসলে বড়ই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে৷
﴿إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ﴾

৩) তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করতে থেকেছে এবং একজন অন্যজনকে হক কথার ও সবর করার উপদেশ দিতে থেকেছে ৷

তাফসীরঃ

১. অর্থাৎ কালের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যারা ঈমান ও সৎকর্ম থেকে বঞ্চিত থাকে, তারা মহা ক্ষতিগ্রস্ত। কেননা এ রকম বহু জাতিকে দুনিয়াতেই আসমানী আযাবের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাছাড়া প্রত্যেক যুগে আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত কিতাব ও তাঁর প্রেরিত নবীগণ মানুষকে সতর্ক করেছেন যে, যদি ঈমান ও সৎকর্ম অবলম্বন না করা হয়, তবে আখেরাতের কঠিন শাস্তি মানুষের জন্য অপেক্ষা করছে।

তাফসীরঃ

২. এ আয়াত শিক্ষা দিচ্ছে আখেরাতের মুক্তির জন্য কেবল নিজেকে শোধরানোই যথেষ্ট নয়। বরং নিজ-নিজ প্রভাব বলয়ের ভেতর অন্যদেরকে সত্য-সঠিক বিষয়ে তাগিদ করা ও সবর অবলম্বন করতে উপদেশ দেওয়াও জরুরি। পূর্বেও কয়েক জায়গায় বলা হয়েছে যে, ‘সবর’ কুরআন মাজীদের একটি পরিভাষা। এর অর্থ হল, যখন মানুষের মনের চাহিদা ও কামনা-বাসনা তাকে কোন ফরয কাজ আদায় থেকে বিরত রাখতে চায়, কিংবা কোন গুনাহের কাজে লিপ্ত হতে উৎসাহ যোগায়, তখন মনের সে ইচ্ছাকে দমন করা আর যখন কোন অনাকাঙ্খিত বিষয় সামনে এসে যায়, তখন আল্লাহ তাআলার ফায়সালায় খুশী থাকা ও সে সম্পর্কে কোন রকম অভিযোগ তোলা হতে নিজেকে বিরত রাখা। অবশ্য তাকদীর সম্পর্কে অভিযোগ না তুলে সেই অনাকাঙ্খিত বিষয় থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টা করা এবং বৈধতার সীমার ভেতর থেকে সেজন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সবরের পরিপন্থী নয়। এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য সূরা আলে-ইমরানের শেষ আয়াতের টীকা দেখুন। করাচি। ১২ই রমযানুল মোবারক ১৪২৯ হিজরী (অনুবাদ শেষ হল আজ ২৮ শে মহররম ১৪৩২ হিজরী মোতাবেক ৪ঠা জানুয়ারি ২০১১ খ্রি.)।

Leave a Comment