সুস্থতা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত, সুস্থতা একটি বড় নিয়ামত

সুস্থতা একটি বড় নিয়ামত

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টিকর্তা। যিনি আমাদের জীবন ধারণের জন্য সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য উপকরণ। আমাদেরকে দান করেছেন অসংখ্য নিয়ামত। আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহ তায়ালার দেওয়া নিয়ামতগুলো উপভোগ করি। সর্বক্ষণই গ্রহণ করি পানি, আলো, বাতাস, অক্সিজেন ইত্যাদি। উদাহরণত এখানে এ কয়েকটি উল্লেখ করা হলো। পবিত্র কুরআনে কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেনÑ আর যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতগুলো গণনা করো, তা নির্ণয় করতে পারবে না। -সুরা নাহল ১৮

সত্যিই মহান আল্লাহ তায়ালার এমন অসংখ্য নিয়ামত রয়েছে, যেগুলো গুনে শেষ করার মতো নয়। যে নিয়ামতগুলো গ্রহণ করেই আমরা বেঁচে আছি এই পৃথিবীর বুকে। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা বলেন- যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তবে অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য বৃদ্ধি করে দেব। আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার শাস্তি কঠিন। -সুরা ইব্রাহিম ০৭

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাছিরে লেখা হয়েছে- কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিয়ামতসমূহ আরও বাড়িয়ে দিবেন। বলা বাহুল্য নয় যে, মানুষের শারীরিক সুস্থতা একটি বিরাট নিয়ামত। অসুস্থ রোগাক্রান্ত মাত্রই উপলব্ধি করেন সুস্থতা কি জিনিস। তাই প্রত্যেকটি মানুষেরই উচিত সুস্থতার মতো নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা।

বর্তমান সময়ে বৈশি^ক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে পুরো পৃথিবীতে। থমকে গেছে অনেক পরাশক্তি। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়। হ্রাস পেয়েছে অনেক কর্মসংস্থান। অসংখ্য মানুষ চলে গেছে না ফেরার দেশে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে কেউবা আবার ফিরে পেয়েছে জীবন। হয়ে উঠেছে পরিপূর্ণ সুস্থ। সুস্থতার গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা বুঝতে পারি অসুস্থ হলে।

বুখারিসহ আরও একাধিক হাদিসের কিতাবে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনÑ দুটি নিয়ামত এমন রয়েছে, অধিকাংশ মানুষই যে দুটি সম্পর্কে ক্ষতিগ্রস্থ বা উদাসীন। আর তা হচ্ছে- ১. সুস্থতা ২. অবসর সময়।

করোনা ভাইরাসের মতো বৈশি^ক মরণব্যধি এই মহামারি শেষ না হতেই আমাদের পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে সম্প্রতি দেখা দিয়েছে আরেক মহামারি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। সংবাদ সূত্রে জানা গেছে,

ভারতের রাজস্থান সরকার এটিকে মহামারি বলে আখ্যায়িত করেছেন। অর্থবিত্তহীন একটি নিম্ম আয়ের দেশ বাংলাদেশ। আমাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাও কিন্তু অন্যান্য উন্নত দেশের স্বাস্থ্যসচেতনতার চেয়ে তুলনামূলক কিছুই না। আলহামদুলিল্লাহ, এর পরও আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের চাইতে এখনও সুস্থ জীবন যাপন করছি।

যা মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি বড় নিয়ামত। আমরা যদি এখনও কৃতজ্ঞ না হই। আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া জ্ঞাপন না করি। হয়ত তিনি আমাদেরকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা এর চেয়ে বড় কোনো মহামারির সম্মুখীন করবেন। তাই আসুন, আমরা আল্লাহকে ভয় করি। সুস্থতার মতো বড় একটি নিয়ামতের মূল্যায়ণ করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সুস্থতার সঙ্গে জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : [ মীযান মুহাম্মদ হাসান] ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

Leave a Comment