সিন্ধু সভ্যতার আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিশ্লেষণপূর্বক এ সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সাথে তােমার নিজ এলাকার নগর পরিকল্পনার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন

অ্যাসাইনমেন্ট:  সিন্ধু সভ্যতার আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিশ্লেষণপূর্বক এ সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সাথে তােমার নিজ এলাকার নগর পরিকল্পনার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন।

শিখনফল/ বিষয়বস্তুঃ

১. সিন্ধুসভ্যতার আবিষ্কারের কাহিনী ও ভৌগােলিক অবস্থান জানতে পারবে;

২. সিন্ধুসভ্যতার রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে;

৩. সভ্যতার বিকাশে সিন্ধুসভ্যতার নগর। পরিকল্পনা, শিল্পকলা ও ভাস্কর্যের বর্ণনা করতে পারবে;

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

১. সিন্ধুসভ্যতার পটভূমি বর্ণনা, ভৌগােলিক অবস্থান চিহ্নিতকরণ এবং সময়কাল নির্ণয় করা;

২. সিন্ধুসভ্যতার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ;

৩. সিন্ধুসভ্যতার নগর (হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারাে) এবং তােমার নিজ এলাকার (ওয়ার্ড/পৌর শহর/উপজেলা শহর) নগর পরিকল্পনার সাদৃশ্য সৃজনশীলতার সাথে বিশ্লেষণ করা;

৪. সিন্ধুসভ্যতার নগর (হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারাে) এবং তােমার নিজ এলাকার (ওয়ার্ড/পৌর শহর/উপজেলা শহর) নগর পরিকল্পনার বৈসাদৃশ্য বিশ্লেষণ করে ছকের মাধ্যমে তুলে ধরা।

উত্তর সমূহ:

পটভূমি : সিন্ধুনদের অববাহিকা অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল বলে এই সভ্যতার নাম রাখা হয় সিন্ধু সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতার নাম সিন্ধু সভ্যতা হলেও এর বিস্তৃতি ছিল বিশাল এলাকা জুড়ে। মহেঞ্জোদারাে ও হরপ্পাতে এই সভ্যতার নিদর্শন সবচেয়ে বেশি আবিষ্কৃত হয়েছে। তা সত্ত্বেও ঐ সভ্যতা শুধু সিন্ধু নদীর অববাহিকা বা ঐ দুটি শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পাকিস্তানের পাঞ্জাব, সিন্ধু প্রদেশ, ভারতের পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাটের বিভিন্ন অংশে এই সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে পাঞ্জাব থেকে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভৌগােলিক এলাকা জুড়ে সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।

সময়কাল : সিন্ধু সভ্যতার সময়কাল সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। পণ্ডিতগণের মতে, খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ পর্যন্ত এ সভ্যতার উত্থান-পতনের কাল। ঐতিহাসিকরা মনে করেন, আর্য জাতির আক্রমণের ফলে খ্রিষ্টাব্দপূর্ব ১৫০০ অথবা ১৪০০ অব্দে সিন্ধু সভ্যতার অবসান ঘটে। তবে সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের সম্পর্কেও ভিন্ন মতও রয়েছে। মর্টিমার হুইলার মনে করেন,এই সভ্যতার সময়কাল হচ্ছে খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ থেকে খ্রিষ্ট পূর্ব ১৫০০ অব্দ পর্যন্ত।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপি বা চুরি করা থেকে বিরত থাকুন (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা : সিন্ধু সভ্যতার জনগণের রাজনৈতিক জীবন ও শাসনপ্রণালি সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। মহেঞ্জোদারাে হরপ্পার নগর বিন্যাস প্রায় একই রকম ছিল।এগুলাের ধ্বংসাবশেষ দেখে নিশ্চিতভাবে বােঝা যায় যে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী উঁচু ভিতের উপর শহরগুলাে নির্মাণ করা হয়েছিল। শহরগুলাের এক পাশে উঁচু ভিত্তির উপর একটি করে নগরদুর্গ নির্মাণ করা হতাে। চারদিক থাকত প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত। নগরের শাসনকর্তারা নগর দুর্গে বসবাস করতেন। প্রশাসনিক বাড়িঘরও দুর্গের মধ্যে ছিল। নগরের ছিল প্রবেশদ্বার।

দুর্গ বা বিরাট অট্টালিকা দেখে মনে হয় একই ধরনের। কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা যুগ যুগ ধরে নগর দুটিতে প্রচলিত ছিল।এই প্রশাসন জনগণের জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করত। সিন্ধু সভ্যতার যুগে মানুষ সমাজবদ্ধ পরিবেশে বসবাস করত।সেখানে একক পরিবার পদ্ধতি চালু ছিল। সিন্ধু সভ্যতার যুগে সমাজে শ্রেণীবিভাগ ছিল। সব লােক সমান সুযােগ-সুবিধা পেত না। সমাজ ধনী ও দরিদ্র দুই শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। কৃষকেরা গ্রামে বসবাস করত। শহরে ধনী এবং শ্রমিকদের জন্য আলাদা-আলাদা বাসস্থানের নিদর্শন পাওয়া গেছে।

পােশাক : পরিচ্ছদের জন্য তারা মূলত সুতা ও পশম ব্যবহার করত। সিন্ধু সভ্যতার সমাজব্যবস্থা ছিল মাতৃতান্ত্রিক। মহিলারা খুবই শৌখিন ছিল। তাদের প্রিয় অলংকারের মধ্যে ছিল হার, বালা, আংটি, দুল, বিছা, বাজুবন্ধ চুড়ি, বালা, পায়ের মল ইত্যাদি। তারা নকশা করা দীর্ঘ পােশাক পরত, ব্যবহার করত। ফজের পুরুষরাও অলংকার।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপি বা চুরি করা থেকে বিরত থাকুন (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

অর্থনৈতিক অবস্থা : সিন্ধু সভ্যতার অর্থনীতি ছিল মূলত কৃষি এবং উৎপন্ন ফসলের উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া অর্থনীতির আর একটি বড় দিক ছিল পশুপালন। কৃষি ও পশুপালনের পাশাপাশি মৃৎপাত্র নির্মাণ ধাতুশিল্প, বয়নশিল্প, অলংকার নির্মাণ, পাথরের কাজ ইত্যাদিতেও তারা যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছিল। এই উন্নতমানের শিল্প পণ্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সিন্ধু সভ্যতার বণিকরা বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যােগাযােগ রক্ষা করে চলত। বণিকদের সাথে আফগানিস্তান, বেলুচিস্তান, মধ্য এশিয়া, পারস্য, মেসােপটেমিয়া, দক্ষিণ ভারত, রাজপুতনা, গুজরাট প্রভৃতি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যােগাযােগ ছিল।

সিন্ধু সভ্যতার অবদান : পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতাগুলাের মধ্যে একটি হচ্ছে। সিন্ধু সভ্যতা। নিম্নে এই সভ্যতার অবদান আলােচনা করা হলাে।

নগর পরিকল্পনা : সিন্ধু সভ্যতার এলাকায় তার মধ্যে হরপ্পা ও মহেঞ্জোহর আবিস্কৃত হয়েছে। বড় শহর। ঘরবাড়ি সবই পােড়া মাটির বা রােদে পােড়ানাে ইট দিয়ে তৈরি। শহরগুলাের বাড়িঘরের নকশা থেকে সহজেই বােঝা যায় যে সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা উন্নত ধরনের নাগরিক সভ্যতায় ভাস ছিল। হরপা ও মহেঞ্জোদারাের নগর পরিকল্পনা একই রকম ছিল। নগরীর ভেতর দিয়ে চলে গেছে পাকা রাস্তা রাস্তাগুলাে ছিল সােজা। প্রত্যেকটি বাড়িতে খােলা জায়গা, কূপ ও স্নানাগার ছিল। জল নিষ্কাশনের জন্যে ছােট ছােট নর্দমা সংযুক্ত করা হতাে মূল নর্দমা বা পয়ঃপ্রণালির সাথে রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হতাে। পথের ধারে ছিল সারিবদ্ধ ল্যাম্পপােস্ট।

শিল্প : সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীদের শিল্প সম্পর্কে আলােচনা করতে গেলে প্রথমেই মৃৎশিল্পের কথা বলতে হয়। তারা কুমারের চাকার ব্যবহার জানত এবং সাহায্যে সুন্দর মাটির পাত্র বানাতে পারত। পাত্রও গায়ে অনেক সময় সুন্দর সুন্দর নকশা আঁৰ থাকত। তাঁতিরা ধাতুর সাহায্যে আসবাবপত্র, অস্ত্র এবং অলংকার তৈরির করা হতাে। তারা তামা ও বয়নশিল্পে পারদশ’স্পোদিস ও ফ্রি টিনের মিশ্রণে ব্রোঞ্জ তৈরি করতে শিখেছিল। কারিগররা রূপা, তামা, ব্রোঞ্জ প্রভৃতির তৈজসপত্র তৈরি করত।

তাছাড়া সােনা, রূপা, তামা ইলক্ট্রাম ও ব্রোঞ্জ ইত্যাদি ধাতুর অলংকার তৈরিতে তারা পারদর্শী ছিল। অলংকারের মধ্যে আংটি, বালা, নাকফুল, গলার হার, কানের দুল, বাজুবন্দ ইত্যাদি ছিল উল্লেখযােগ্য। সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা লােহার ব্যবহার জানত না।ধাতু ছাড়া দামি পাথরের সাহায্যে অলংকার নির্মাণ শিল্পেরও বিকাশ ঘটে। হাতির দাঁতসহ অন্যান্য হস্তশিল্পেরও দক্ষ কারিগর ছিল।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল কপি বা চুরি করা থেকে বিরত থাকুন (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

স্থাপত্য ও ভাস্কর্য : সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ এবং চমৎকার স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন রেখে গেছে। সেখানে দুই কক্ষ থেকে পঁচিশ কক্ষের বাড়ির সন্ধানও পাওয়া গেছে। আবার কোথাও দুই তিন তলা ঘরের অস্তিত্ব আবিস্কৃত হয়েছে। মহেঞ্জোদারাের স্থাপত্যের উল্লেখযােগ্য উদাহরণ হলাে ‘বৃহৎ মিলনায়তন’ যে মিলনায়তনটির ৮০ ফুট জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছিল।তাছাড়া বিরাট এক প্রাসাদের সন্ধান পাওয়া গেছে। হরপ্পাতে বিরাট আকারের শস্যাগারও পাওয়া গেছে। মেহেঞ্জোদারােতে একটি বৃহৎ স্নানাগার’-এর নিদর্শন পাওয়া গেছে যার মাঝখানে বিশাল চৌবাচ্চাটি ছিল সাঁতার কাটার উপযােগী।ভাস্কর্যশিল্পেও সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীদের দক্ষতা ছিল। পাথরে খােদিত ভাস্কর্যের সংখ্যা কম হলেও সেগুলাের শৈল্পিক ও কারিগরি দক্ষতা ছিল উল্লেখ করার মতাে। এ যুগে মােট ১৩টি ভাস্কর্য মূর্তি পাওয়া গেছে। চুনাপাথরে তৈরি একটি শক্তিমাখা পাওয়া গেছে।

সিন্ধু সভ্যতার নগরায়ন শিল্প, ভাস্কর্য ও স্থাপত্যের সাথে আমার গ্রামের নগরায়ন শিল্প ও ভাস্কর্যের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিম্নে তুলে ধরা হলােঃ

নগরায়ন : সিন্ধু সভ্যতায় ছিল পােড়ামাটির তৈরি ঘর কিন্তু বর্তমানে আমার গ্রামের বাড়ীঘরগুলাে পাকা বিল্ডিং ও বাঁশের তৈরি। সিন্ধু সভ্যতায় রাস্তায় বাতির খুটি লক্ষ্য করা গেছিল আমার গ্রামে ও রাস্তায় বাতি দেওয়া হয়েছে। আর চারিদিকে দেওয়াল করা নেই সিন্ধু সভ্যতায় কিন্তু হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারাের চারিদিকে দেওয়াল করা ছিল।

শিল্প : সিন্ধু সভ্যতায় পােড়ামাটির ফলক তৈরি করা হয় মাটি দিয়ে এবং মৃত শিল্প তৈরি করা হতে দেখা গেছে। তবে আমাদের গ্রামে এ ধরনের মৃৎশিল্প প্রায় উঠে গেছে। এখন বড় বড় কলকারখানা, দোকানপাট লক্ষ্য করা যায়। সিন্ধু সভ্যতায় তামা ও ব্রোঞ্জ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অলংকার সামগ্রী তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে আমাদের সমাজে তামা ও ব্রোঞ্জ এর প্রচলন খুবই কম। এখন স্বর্ণ রূপা তৈরি জিনিস ছাড়া সমাজের মানুষের চলেই না।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল  কপিরাইট: (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • ২০২১ সালের SSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের ৯ম/১০ শ্রেণি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
  • ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
  • ৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক
  • ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ লিংক

এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।

আমাদের YouTube এবং Like Page

Leave a Comment