সাহিত্যপাঠ বইয়ের ‘অপরিচিতা’ গল্পে মাকাল ফলের উল্লেখ আছে

মাকাল বা মাকাল ফল (ইংরেজি: Redball snakegourd) (Trichosanthes tricuspidata) হচ্ছে Cucurbitaceaeপরিবারের Trichosanthes গণের একটি লতানো উদ্ভিদ।

মাকাল শব্দটি বাংলা প্রবাদে বাজে অর্থে ব্যবহৃত হলেও এর প্রাচীন নাম ছিল মহাকাল যা ভেষজ গুণে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই নামটি বিকৃত হয়ে কালে কালে ‘মাকাল’ নামে বাংলায় স্থান হয়েছে।

ভারতীয় চিকিৎসকরা মনে করেন যে মাকাল ফল এক সময় হাঁপানি, নাক-কানের ঘা এমন কি কুষ্ঠ রোগেও ব্যবহৃত হয়েছে।

যুগ যুগ পুরনো মাথা ব্যথার জন্যে তেল দিয়ে মিশ্রিত মাকালের শিকড় খুব উপযোগী। গাছে ধরা অবস্থায় মাকাল ফলের মতো সুন্দর ফল সত্যি খুব কম দেখা যায়, তবে ভেতরটা খুবই কদর্য।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

পৃথিবীতে এই পরিবারের ৪২টি প্রজাতি পাওয়া যায়। এর মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ১২টি প্রজাতি। এ গাছের জন্মস্থান তুর্কি। তুর্কি থেকে এশিয়া মহাদেশ ও আফ্রিকা মহাদেশে গাছটির বিস্তার ঘটে। এটি একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। মাকাল ফলের গাছ জঙ্গল বা বাড়ির বড় বড় গাছকে আঁকড়ে ধরে বেড়ে ওঠে। একটি পরিপূর্ণ গাছ ৩০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর পাতায় থাকে অনেক খাঁজ। চৈত্র-বৈশাখ মাসে মাকালগাছে সাদা ধবধবে ফুল ধরে। শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে ফল সম্পূর্ণ পরিপক্ব হয়।

মাকাল ফল দেখতে গোলাকৃতির। কাঁচা অবস্থায় গাঢ় সবুজ, কিছুদিন পর হলুদ এবং ফলটি পাকার পরে লাল রং ধারণ করে। পাকা মাকাল ফলের সৌন্দর্য যে কাউকে বিমোহিত করে। কিন্তু এই ফলের ভেতরটা দুগন্ধ ও শাঁসযুক্ত। এই ফল খাওয়ার অনুপযোগী।

বাংলা বাগধারায় মাকাল ফল একটি বিশেষ উপমা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। যে মানুষগুলো দেখতে সুন্দর কিন্তু তাদের দিয়ে কোনো কাজ হয় না, তাদেরই মাকাল ফলের সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। তবে বিশেষ উপমা হিসেবে ব্যবহার হলেও এই ফলটি কিন্তু একেবারে অপ্রয়োজনীয় নয়। মাকাল ফল ও গাছের রয়েছে ঔষধি গুণ। তা ছাড়া পাখিদের অন্যতম প্রিয় খাবার মাকাল ফল।

একসময় গ্রামবাংলার রাস্তার পাশে ঝোপঝাড়ে অনেক মাকালগাছ দেখা যেত। এটি একটি পরিবেশবান্ধব গাছ। মাকালগাছের শিকড় কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। কফ ও শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে, নাক ও কানের ক্ষত উপশমে মাকালগাছ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

জন্ডিস, দেহে পানি জমা, স্তনের প্রদাহ, প্রস্রাবের সমস্যা, বাত ব্যথা, পেট ফোলা ও শিশুদের অ্যাজমা নিরাময়ে মাকালগাছের ফল, মূল, কাণ্ড বিশেষ ভূমিকা রাখে। মাকাল ফলের বীজের তেল সাপের কামড়, বিছার কামড়, পেটের সমস্যা (আমাশয়, ডায়রিয়া), মৃগীরোগ এবং সাবান উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া মাকাল ফলের বীজের তেল চুলের বৃদ্ধি ও চুল কালো করতে কার্যকর।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Leave a Comment