সামরিক শাসন কাকে বলে?, সামরিক শাসন বলতে কী বোঝো?,১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন, ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির কারণ

প্রশ্ন সমাধান: সামরিক শাসন কাকে বলে?, সামরিক শাসন বলতে কী বোঝো?,১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন, ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির কারণ

সামরিক শাসন কাকে বলে?

রাজনৈতিক অঙ্গনে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের ইতিহাস সুপ্রাচীন। সময় ও অবস্থার সঙ্গে এর প্রকৃতিতে ভিন্নতা বিদ্যমান। তবে বিশ শতকেতে স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এর ব্যাপকতা দৃশ্যমান হয়। বহুবিধ সামরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রে যখন বিরাজ করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি; তখনই নানা অজুহাতে বেসামরিক সরকারকে বন্দুকের নলের সাহায্যে সরিয়ে দিয়ে সামরিক বাহিনী শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।

সামরিক শাসনের সংজ্ঞাঃ সাধারণ অর্থে দেশের সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনা করাকেই বলা হয়ে থাকে সামরিক শাসন। অন্যভাবে বলা যায়, দেশের সশস্ত্র সামরিক বেসামরিক প্রশাসনকে বিতাড়িত করে নিজেরাই যখন রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্ব দখল করে তখন তাকে সামরিক শাসন বলে। সামরিক শাসনামলে রাষ্ট্র সামরিক আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। বন্দুকের নলই তাদের ক্ষমতার উৎস।

এস. ই. ফাইনার (S.E.Finer)-বলেন, ‘‘যে শাসনব্যবস্থায় অসামরিক কর্তৃপক্ষের জায়গায় সামরিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং এরই মাধ্যমে বেসামরিক কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে সামরিক কর্তৃত্বের শাসন কায়েম হয় তাকে সামরিক শাসন বলে।”

জে. সি. জোহারি (J.C.Johari)-এর মতে, ‘‘ যখন বেসামরিক পরিবেশ থাকে না এবং সামরিক নেতাগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার ভোগ করেন, তখন তাকে সামরিক শাসন বলে।”

জে. আই. জনসন (J. I. Hohnson)-এর মতে, ‘‘সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতার পর আপাতদৃষ্টিতে অনুশীলনযোগ্য বিকল্প ব্যবস্থা হলো সামরিক শাসন।”

সামরিক শাসন হলো সামরিক বাহিনীর ক্ষমতার উচ্চাভিলাষের ফলবিশেষ। যখন কোনো সামরিক জান্তা বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাসনভার গ্রহণ করে এবং সংবিধানকে স্থগিত ঘোষণা করে ও বিভিন্ন সামরিক আইন জারির মাধ্যমে শাসনকার্যে পরিচালনা করে তখন তাকে সামরিক শাসন বলে।


আরো ও সাজেশন:-

১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন

পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শাসনব্যবস্থায় একধরনের স্বৈরতান্ত্রিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া এর সাথে যুক্ত হয় সেনাবাহিনীর প্রভাব। পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ক্রমেই বাড়তে থাকে। সেনাবাহিনী শাসন ক্ষমতা দখল করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। ১৯৫৬ সালের ২৩ মার্চ জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা পাকিস্তান ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রম প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন। তাঁর সময়কালে সামরিক বাহিনী রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব রাখা শুরু করে। ইস্কান্দার মির্জা নানাভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাঁধা সৃষ্টি করেন। তার ষড়যন্ত্রে কয়েকবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পতন হয়। এদিকে পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ ও কৃষক-শ্রমিক পার্টির দ্বন্দ্ব চরমে উঠে। একপর্যায়ে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদে বিরোধী দল কৃষক-শ্রমিক পার্টির আক্রমণে ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী মাথায় আঘাত পেয়ে নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর ফলে সৃষ্ট গোলযোগ ইস্কান্দার মির্জার পক্ষে সেনা শাসন প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ তৈরি করে দেয়।

১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা মালিক ফিরোজ খানের সংসদীয় সরকার উৎখাত করে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন। তিনি দেশের সংবিধান বাতিল করেন, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইন পরিষদ ভেঙে দেন এবং মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয় সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়ুব খানকে। মেজর জেনারেল ওমরাও খান পূর্ব বাংলার সামরিক প্রশাসক নিযুক্ত হন। এর কিছুদিনের মধ্যে ২৭ অক্টোবর জেনারেল আইয়ুব খান ইস্কান্দার মির্জাকে অপসারণ করে নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন।

আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র

জেনারেল আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর পাকিস্তানের শাসন ও রাজনৈতিক কাঠামোর আমূলপরিবর্তন করার উদ্যোগ নেন। তিনি প্রচলিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতি পরিত্যাগ করে এক অদ্ভুত ও নতুন নির্বাচন কাঠামোপ্রবর্তন করেন। তাঁর এই নির্বাচনের মূলভিত্তি ছিল ‘মৌলিক গণতন্ত্র’। মৌলিক গণতন্ত্র হচ্ছে একধরনের সীমিত গণতন্ত্র, যাতে কেবল নির্দিষ্টসংখ্যক লোকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অধিকার ছিল। ১৯৫৯ সালে মৌলিক গণতন্ত্র প্রবর্তনের আদেশ জারি করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় মৌলিক গণতন্ত্র ছিল একটি চার স্তরবিশিষ্ট ব্যবস্থা।

নিম্ন থেকে উচ্চ পর্যন্ত স্তরগুলো ছিল:

(১) ইউনিয়ন পরিষদ (গ্রামে) এবং টাউন ও ইউনিয়ন কমিটি (শহরে),

(২) থানা পরিষদ (পূর্ব বাংলায়), তহশিল পরিষদ (পশ্চিম পাকিস্তানে),

(৩) জেলা পরিষদ,

(৪) বিভাগীয় পরিষদ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

এই পরিষদগুলোতে নির্বাচিত ও মনোনীত উভয় ধরনের সদস্য থাকত। মৌলিক গণতন্ত্রের আওতায় পাকিস্তানের উভয় অংশে ৪০০০০ করে মোট ৮০০০০ নির্বাচনী ইউনিট নিয়ে দেশের নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয়। নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরা মৌলিক গণতন্ত্রী বা বিডি মেম্বার ছিল। জনগণের মৌলিক গণতন্ত্রী নির্বাচন করা ছাড়া কোন দায়িত্ব ছিল না। বিডি মেম্বার ছিল প্রকৃত নির্বাচক। তারাই প্রেসিডেন্ট, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচন করতেন। এই মৌলিক গণতন্ত্রীদের আস্থা ভোটে আইয়ুব খান ১৯৬০ সালে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি সংবিধান প্রণয়নের ক্ষমতাও লাভ করেন। ১৯৬২ সালের ১ মার্চ নতুন সংবিধান ঘোষণা করা হয় এবং ৮ জুন সামরিক আইন প্রত্যাহার করা হয়।

সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন

১৯৬২ সালের ৩০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এ খবর পূর্ব পাকিস্তানে প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে ছাত্ররা সরকারবিরোধী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ধর্মঘট ডাকে এবং মিছিল বের করে। একনাগাড়ে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধর্মঘট চলে। এভাবেই পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। ৭ ফেব্রুয়ারি সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। ছাত্রদের ওপর পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড় ও নির্যাতন নেমে আসে। ১ মার্চ আইয়ুব নতুন সংবিধান ঘোষণা দিলে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ বিক্ষোভ-সমাবেশ ও ক্লাস বর্জন করে। ছাত্রদের সংবিধান বিরোধী এ আন্দোলনে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, রাজনীতিবিদদের অনেকে সমর্থন ব্যক্ত করেন। আইয়ুব খান ও পূর্ব বাংলার গভর্নর মোনায়েম খান ছাত্রদের ওপর কঠোর দমন নীতি চালান।

১৯৬২ সালের আগস্ট মাসে শরীফ কমিশনের শিক্ষাসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে ছাত্র আন্দোলন নতুন রূপ লাভ করে। এ প্রতিবেদনের সুপারিশে ছাত্রদের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। ফলে কঠোর আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দালন ‘বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন’ নামে পরিচিত। ১৫ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর হরতাল পালনকালে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন নিহত এবং কয়েক শত আহত হয়। এ আন্দোলনের ফলে শরীফ কমিশনের সুপারিশ স্থগিত হয়। এই আন্দোলনের ফলে ছাত্ররা আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তিতে পরিণত হয়।

১৯৬২ সালের ৮ জুন সামরিক আইন স্থগিত করা হলে দলীয় রাজনীতির অধিকার ফিরে আসে। আইয়ুব খান নিজেই কনভেনশন মুসলিম লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এসময় সোহরাওয়ার্দী সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে আইয়ুববিরোধী মোর্চা গঠনের আহ্বান জানান। ফলে আওয়ামী লীগ, নেজামে ইসলাম, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, কাউন্সিল মুসলিম লীগ ও নূরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ মিলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা এন.ডি.এফ গঠিত হয়। এ ফ্রন্টের উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ১৯৫৬ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া। খুব তাড়াতাড়ি এ ফ্রন্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে সোহরাওয়ার্দী ইন্তেকাল করেন। ১৯৬৪ সালের শুরুতেই আওয়ামী লীগ এনডিএফ থেকে বেরিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নতুন যাত্রা শুরু হয়। এর ফলে এনডিএফ নিস্ক্রীয় হয়ে পড়ে। ১৯৬৫ সালের ২ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আইয়ুব খানবিরোধী একক প্রার্থী দেওয়ার জন্য আবার আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কাউন্সিল মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম প্রভৃতি দল মিলে একটি জোট গঠন করে। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহকে কপ-এর পক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করা হয়। নির্বাচনে মৌলিক গণতন্ত্রীদের পূর্ব থেকেই আইয়ুব খান নিজের অনুকূলে নিয়ে আসেন। জনগণ ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা প্রকাশ করে। কিন্তু নির্বাচনে আইয়ুব খান জয়ী হন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয়। সেখানেও আইয়ুব খানের কনভেনশন মুসলিম লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান জন্ম নিলে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে তাদের মাঝে বৈরিতার সূত্রপাত হয়। ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করত। ১৯৪৭ সালেই তাদের মাঝে কাশ্মীরকে নিয়ে প্রথম যুদ্ধ বাধে। কিন্তু জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে তার অবসান হয়। কাশ্মীরকে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ভারত পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে ১৯৬৫ সালে। আইয়ুব খানের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল ভারত আক্রমণ করে কাশ্মীর দখল করা। ১৯৬৫ সালে কাশ্মীরী নেতা শেখ আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করা হলে ভারতের কাশ্মীরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আইয়ুব এ সুযোগ গ্রহণ করেন।

প্রমে সশস্ত্র গেরিলাদের কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করিয়ে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করেন। অবশেষে ৬ আগস্ট পাকিস্তান বাহিনী ভারত আক্রমণ করলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের শুরু থেকেই ভারতীয় বাহিনী প্রাধান্য লাভ করে। তারা পাকিস্তানি বাহিনীকে অপসারণ করে লাহোরের দিকে এগিয়ে যায়। পাকিস্তানিদের চরম এ দুর্দিনে বাঙালি সেনারা অসীম সাহসের সাথে যুদ্ধ করে লাহোর রক্ষা করে। পাকিস্তানের শোচনীয় অবস্থার মুখে পাশ্চাত্য শক্তি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের হস্তক্ষেপে ১৭ দিনের মাথায় যুদ্ধ বন্ধ হয়। ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসে সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী কোসিগিনের মধ্যস্থতায় তাসখন্দ শহরে ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্য দিয়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান হয়। এ যুদ্ধের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী চেতনা প্রবল ভাবে জাগ্রত হয়। কারণ যুদ্ধে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে পূর্ব পাকিস্তানের কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছিল না। অরক্ষিত এ অঞ্চল যেকোনো সময় ভারতের আক্রমণের শিকার হতে পারত।

এমনকি এ সময় প্রশাসনিক দিক থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের যোগযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বাঙালি সেনারা জীবন বাজি রেখে লাহোর রক্ষা করলেও আইয়ুব খান পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। এছাড়া, যুদ্ধের সময় গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন পূর্ব পাকিস্তানে খাদ্যসংকট দেখা দেয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অত্যধিক বেড়ে যায়। ফলে সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নির্ভরশীলতাসহ পূর্ব পাকিস্তানের দুর্বলতা প্রকট হয়ে দেখা দেয়, যার প্রতিফলন দেখা যায় ছয় দফা আন্দোলনে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment