আমাদের প্রতিদিনের জীবনের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে টেলিভিশন ও মোবাইল ফোন। বিশেষ করে শিশুদের প্রধান সঙ্গী এখন এ দু’টি বস্তু। এগুলো তাদের বিনোদনের যেমন প্রধান মাধ্যম, তেমনি এতে রয়েছে তাদের জন্য ভয়েরও কিছু বিষয়।
আমার তিন বছরের মেয়ে এখনও বাংলা ভাষার সঠিক উচ্চারণ করতে পারে না। কিন্তু তার মুখে যখন গান শুনি, তখন পৃথিবীর অন্য কোনো সঙ্গীত শিল্পীর গান আমার আর ভালো লাগে না। ইদানিং একটা গানের সে এতো ভক্ত যে পড়ার টেবিল থেকে শুরু করে খাওয়ার টেবিল পর্যন্ত একটু অবসর পেলেই গাওয়া শুরু করে। প্রথমে তার আধো বুলিতে গাওয়া গানের লিরিক্স আমি পুরোপুরি বুঝতে পারিনি। ছেলে আমাকে ব্যাখ্যা করে বলল, বাবা ওতো গাল্লি বয়ের
‘শিক্ষার আলো নাকি ঘরে ঘরে জ্বলবে’ গান গাচ্ছে। আমার ছেলে ইউটিউব থেকে গানটি শুনালো। এত সুন্দর একটা গান। অফিস থেকে বাসায় গেলে মেয়ের সাথে খুনসুটির ফাঁকে ফাঁকে আমিও গানটি গাই।
গানটির রচয়িতাকে অনেক ধন্যবাদ। সম্প্রতি খবরের কাগজে দেখলাম, গানটির জন্য প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারও দিয়েছেন। বাইরের বিনোদনের সুযোগের অভাব থাকায় শিশুরা সারাদিন টিভি আর ইউটিউব এ মত্ত থাকে। কিচ্ছু করার নাই। তাদেরওতো সময় কাটাতে হবে। শিশুদের বিনোদন এখন প্রায় উঠেই গেছে। আগে ছোটদের জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর গান হতো। এখন তার অনেকটাই ঘাটতি। বাংলাদেশের প্রায় ৩০টির মতো টিভি চ্যানেল আছে। এর মধ্যে দুরন্ত টিভিই শিশুদের নিয়ে গঠনমূলক কিছু ভালো অনুষ্ঠান করে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বলা হয়ে থাকে, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সত্যিকার অর্থে ভবিষ্যৎ গড়তে শিশু বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রয়োজন শিশুর সৃজনশীলতা বিকাশের অনুকূল পরিবেশ। সৃজনশীল কাজ শিশুর বিকাশে অনন্য ভূমিকা পালন করে। একজন মানুষ যত সৃজনশীল, সে তত সফল, আত্মবিশ্বাসী এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তাই শিশুকে তার সম্ভাবনার সর্বোচ্চ বিকাশে
সহায়তা করতে, তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে তাকে নানা ধরনের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতে হবে।
বই পুস্তকের পাশাপাশি শিশুর চিন্তা ও কল্পনাশক্তি বৃদ্ধির প্রতিও আমাদের নজর দেয়া উচিত। সৃজনশীল মানুষ প্রকৃতির সৃষ্টি প্রতিটি জিনিসের মনস্তাত্ত্বিক রূপ প্রদানে সক্ষম হয়। মানুষের এই সৃজনশীলতা শিশুকাল থেকেই তৈরি হয়। পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিশু তার নিজের অনুভূতি থেকে যে কাজ
করে, তাই শিশুর সৃজনশীলতা। শিশুরা যে শুধু প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শেখে তা নয় বরং সামাজিক পরিবেশ থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা অর্জন করে। তার চারপাশের লোকজন কী করছে, তা সে পর্যবেক্ষণ করে।
আমাদের এমন কিছু করতে হবে, যা শিশুদের উন্নত জীবন গঠনের সহায়ক হয়। শিশুর সৃজনশীলতা শিশুর পড়ালেখায় বিশেষ ইতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে। কোনো শিশু যদি গানে ভালো হয়, শিক্ষক বা অভিভাবক তার গানের উদাহরণ দিয়ে তাকে উৎসাহিত করতে পারেন যে তুমি গানে অনেক ভালো; তুমি পড়ালেখাও ভালো করবে। যে শিশুকাল থেকেই ছোট ছোট সফলতার আনন্দ উপভোগ করার ক্ষমতা অর্জন করে, পরিণত বয়সেও সে কোনো না কোনোভাবে সাফল্যের পথে হাঁটবে। সে উচ্চ শিক্ষিত না হতে পারলেও সৃজনশীল কাজে তার মেধার প্রমাণ ঘটবেই। কার ভেতর কী প্রতিভা লুকিয়ে আছে, তা আমাদের
- ১৫টি লাভজনক নতুন পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া,ছোট ব্যবসার আইডিয়া,ঝুঁকিহীন ব্যবসার আইডিয়া
- Jomir khajna Online Payment, জমির খাজনা পরিশোধের নিয়ম,জমির খাজনা,জমির খাজনা কিভাবে দিতে হয়
- ঈশ্বরের সাথে মানুষের সম্পর্ক বিষয়ক মতবাদগুলো আলোচনা কর,ঈশ্বরের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকার অর্থ কি
- দর্শনের প্রধান কাজ আলোচনা কর,দর্শনের মূলনীতি, দর্শনের প্রধান কাজগুলোর বর্ণনা কর,দর্শনের কার্যাবলি আলােচনা কর
- বাংলা নববর্ষের ইতিহাস,কিভাবে ১লা বৈশাখ উদযাপন রীতি এলো?, বাংলা নববর্ষের ইতিকথা
অজানা। শুধু দরকার প্রত্যেকটি শিশুর জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা। নিজেদের ভাবনা শিশুদের ওপরে চাপিয়ে দিলে হবে না। পড়ালেখার ফাঁকে শিশুরা কোন বিষয়ে আগ্রহী, তা আমাদের লক্ষ্য করতে হবে। তাদের পছন্দের জায়গা খুঁজতে হবে এবং সে বিষয়ে শিশু যেন আরও আগ্রহী হয়, তার অনুপ্রেরণা দিতে হবে। একই সাথে ভাবতে হবে তারা যেন মুক্ত চিন্তায় তাদের পছন্দের কাজগুলো করতে পারে। এখানে শিক্ষক ও অভিভাবকের দায়িত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ বা শৃঙ্খলায় শিক্ষার পদ্ধতি শিশুর শিক্ষাকে অনেক সংকীর্ণ করে। সে হয়তো ভালো শিক্ষার্থী হতে পারে, কিন্তু পরিপূর্ণ শিক্ষার্থী হতে পারে না।
শিশুর বিকাশে সৃজনশীলতার বিকল্প নেই। শিশুরা একই রকম কাজ বারবার না করে নতুন নতুন কাজ করতে চায়, নতুন নতুন জিনিস নিয়ে নতুন নতুন খেলা
খেলতে চায়, নতুন নতুন জিনিস বানাতে চায়। তাদের এ ধরনের কাজে বাধা না দিয়ে আরো উৎসাহ দেওয়া উচিত। এতে করে তারা আরো সৃজনশীল হয়ে উঠবে। তাই শিশুকে তার সম্ভাবনার সর্বোচ্চ বিকাশে সহায়তা করতে, তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে তাকে নানা ধরনের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতে হবে।
কিন্তু সৃজনশীলতা আপনা-আপনি তৈরি হয় না। এটি চর্চা ও লালন করতে হয়। ছোটবেলা থেকেই সৃজনশীলতার চর্চা না করলে এই গুণ বিকশিত হয় না। তাই শুধু বই নির্ভর পাঠে শিশুদের আবদ্ধ না রেখে সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করা উচিত। শিশুরা সহজাতভাবেই কৌতূহলী। সে তার চারপাশের পরিবেশকে জানার অপার আগ্রহ প্রকাশ করে, অসংখ্য প্রশ্ন করে তার চারপাশে পরিবেশ ও জগত সম্পর্কে জানতে চায়। বড়রা অনেক সময় শিশুর হাজারো প্রশ্নে বিরক্ত হন। প্রশ্নের জবাব দেন না এবং শিশুদেরকে পরিবেশের সাথে শেখার সুযোগ করে দেন না। এটা মোটেই ঠিক নয়। শিশুদের তার চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে অবশ্যই উৎসাহিত করতে হবে, তাদের অনুসন্ধান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ দিতে হবে। শিশুদের শেখার আরেকটি শক্তিশালী উপায় হলো হাতে-কলমে শেখা।
এজন্য শিশুদের নিজে নিজ বিভিন্ন কাজ করে শেখার সুযোগ করে দিতে হবে। শিশুরা যে শুধু প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শেখে তা নয় বরং সে সামাজিক পরিবেশ থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিখন অর্জন করে। বড়রা কী করছে, তা সে পর্যবেক্ষণ করে, কাজেই বড়দেরও উচিত নয় এমন কাজ করা, যা দেখে শিশুরা নেতিবাচক কিছু শেখে। যেমন-যেখানে সেখানে থুথু ফেলা, ময়লা আবর্জনা ফেলা, কাউকে গালমন্দ করা, মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি। বড়দের এমন কিছু করতে হবে, যা শিশুদের উন্নত জীবন গঠনের সহায়ক হয়।
শিশুর বিকাশে শিক্ষকের বিকল্প নেই। শিক্ষক ছাড়া শিশুর বিকাশ সম্ভব নয়। শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। একজন শিক্ষক শিশুর বিকাশে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারেন। শিশুরা সেই শিক্ষকদের থেকেই বিকশিত হবে। শিক্ষকরা হচ্ছেন দেশ ও জাতির আলো। শিশুরা সেই শিক্ষকদের থেকে আলোকিত
হবে, বিকশিত হবে। এজন্য প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য কী? এর জবাবে বলা হয়েছে-শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, নান্দনিক, আধ্যাত্মিক ও আবেগিক বিকাশ সাধন এবং তাদের দেশাত্মবোধে, বিজ্ঞানমনস্কতায়, সৃজনশীলতায় ও উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্বুদ্ধ করা। শিশুর এসব ধরনের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে শিক্ষকদেরই। এজন্য শিক্ষকদের আগে বিকশিত হতে হবে। এজন্য শিক্ষককে হতে হবে মেধাবী, সুশিক্ষিত, সুদক্ষ, সুযোগ্য, কর্মঠ, ধার্মিক, সৎ ও মহৎ।
কারণ উক্ত গুণাবলী ছাড়া একজন লোক প্রকৃত শিক্ষক হতে পারেন না। আর প্রকৃত গুণের শিক্ষক ছাড়া সেই শিশুরা বিকশিত হতে পারবে না। একজন শিক্ষক মেধাবী হলে ছাত্রও মেধাবী হবে, একজন শিক্ষক সুদক্ষ, সৎ ও মহৎ হলে ছাত্রও তাই হবে। এক কথায় শিক্ষক হচ্ছেন শিশুর বিকাশের অনন্য চাবিকাঠি। শিক্ষকদের থেকেই শিশুরা উন্নত জীবন গঠনের প্রকৃত দিক নির্দেশনা পেয়ে থাকে।
- ১৫টি লাভজনক নতুন পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া,ছোট ব্যবসার আইডিয়া,ঝুঁকিহীন ব্যবসার আইডিয়া
- Jomir khajna Online Payment, জমির খাজনা পরিশোধের নিয়ম,জমির খাজনা,জমির খাজনা কিভাবে দিতে হয়
- ঈশ্বরের সাথে মানুষের সম্পর্ক বিষয়ক মতবাদগুলো আলোচনা কর,ঈশ্বরের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকার অর্থ কি
- দর্শনের প্রধান কাজ আলোচনা কর,দর্শনের মূলনীতি, দর্শনের প্রধান কাজগুলোর বর্ণনা কর,দর্শনের কার্যাবলি আলােচনা কর
- বাংলা নববর্ষের ইতিহাস,কিভাবে ১লা বৈশাখ উদযাপন রীতি এলো?, বাংলা নববর্ষের ইতিকথা
কবির ভাষায় ‘মানবকূলে জন্মে কি সবাই মানুষ হয়/আদর্শ মানুষ জন্ম দেয় আমাদের বিদ্যালয়’। আদর্শ মানুষ, সোনার মানুষ হতে হলে জীবনকে বিকশিত করতে হলে বিদ্যালয়ে যেতে হবে, শিক্ষকের সাহচর্য লাভ করতে হবে।
একজন শিশুর বিকাশে মাতা-পিতা যেসব পদ্ধতি উপস্থাপন করতে পারেন, এর চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ও মূল্যবান পদ্ধতি উপস্থাপন করতে পারেন একজন শিক্ষক। কেননা সাধারণত অনেক সময় একজন শিক্ষক জ্ঞান দক্ষতায় বাবা-মায়ের চেয়ে অনেক উচ্চমানের হয়ে থাকেন। যেসব ক্ষেত্রে শিশুর বিকাশ মাতা-পিতার দ্বারা করা সম্ভব হয় না, সেসব ক্ষেত্রে শিশুর বিকাশ ঘটানো সম্ভব হয় শিক্ষকের মাধ্যমেই।
এজন্য প্রয়োজন বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিশুর প্রতি শিক্ষকের আন্তরিক হওয়া, বিদ্যালয়ে প্রতিটি শিশুকে শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে পাঠদান করেন না বলেই অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা পিছিয়ে পড়ে। ফলে এসব শিশু জীবনে বিকশিত হতে পারে না।
বিদ্যালয়ে শিশুদের কারিকুলাম মোতাবেক পাঠদান করা শিশুর বিকাশের অন্যতম উপায়। কারিকুলাম মোতাবেক পাঠদান করা হয় না বলে শিশুরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারে না। নিয়মনীতি বহির্ভূত পাঠদান শিশু বিকাশের অন্তরায়। বিদ্যালয়ের শিশুদের বিকাশে শিক্ষকদের অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।
কেননা এটি সকল শিক্ষকের মহান দায়িত্ব।
শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। সেই শিশুদের বাদ দিয়ে পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। তাই সর্বাগ্রে শিশুর বিকাশে এগিয়ে আসা আমাদের সকলের উচিত।
মুত্তাকিন হাসান: কবি, প্রাবন্ধিক ও মানব সম্পদ পেশাজীবী
সূত্র/Barta24.com
- ১৫টি লাভজনক নতুন পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া,ছোট ব্যবসার আইডিয়া,ঝুঁকিহীন ব্যবসার আইডিয়া
- Jomir khajna Online Payment, জমির খাজনা পরিশোধের নিয়ম,জমির খাজনা,জমির খাজনা কিভাবে দিতে হয়
- ঈশ্বরের সাথে মানুষের সম্পর্ক বিষয়ক মতবাদগুলো আলোচনা কর,ঈশ্বরের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকার অর্থ কি
- দর্শনের প্রধান কাজ আলোচনা কর,দর্শনের মূলনীতি, দর্শনের প্রধান কাজগুলোর বর্ণনা কর,দর্শনের কার্যাবলি আলােচনা কর
- বাংলা নববর্ষের ইতিহাস,কিভাবে ১লা বৈশাখ উদযাপন রীতি এলো?, বাংলা নববর্ষের ইতিকথা