শিল্পোদ্যোগের ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা কর,শিল্পোদ্যোগের সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা কর,শিল্পোদ্যোগের ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা কর

প্রশ্ন সমাধান: শিল্পোদ্যোগের ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা কর,শিল্পোদ্যোগের সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা কর,শিল্পোদ্যোগের ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা কর,

শিল্পোদ্যোগের ব্যষ্টিক উপাদানসমূহ : ব্যবস্থাপনা কার্যাবলির উপর ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :

১. মালিক : সাধারণভাবে বলা যায়, যে ব্যক্তি বা দল ব্যবসায়ে সরাসরি মূলধন বিনিয়োগ করে তাকে মালিক বলা হয়। মালিক ব্যবস্থাপক নিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ের যাবতীয় কার্যাবলি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে থাকে। ব্যবসায়ের যাবতীয় কার্যাবলির জন্য ব্যবস্থাপনা মালিকের নিকট দায়বদ্ধ থাকে। মালিকের যেকোনো সিদ্ধান্ত ব্যবসাকে ইতিবাচক ও নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে বলে মালিককে অভ্যন্তরীণ উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয় ।

২. শ্রমিক ও কর্মী : শ্রমিক কর্মী যেকোনো সংগঠনের অভ্যন্ত রে নিয়োজিত থেকে সরাসরি উৎপাদনের সাথে জড়িত হয়। ব্যবস্থাপনার যেকোনো সিদ্ধান্ত শ্রমিক কর্মচারীরা বাস্তবায়ন করে । শ্রমিক কর্মীদের কোনো কার্যাবলি ও সিদ্ধান্ত সংগঠনের উপর সরাসরি প্রভাব সৃষ্টি করে। তাই ব্যবস্থাপনাকে শ্রমিক কর্মীদের দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে ব্যবস্থাপকীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। শ্রমিক-কর্মীরা ব্যবস্থাপনার অভ্যন্তরীণ উপাদান হওয়ায় তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য নানা রকম কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় ।

৩. পরিচালনা পর্ষদ : সংগঠনের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার হোল্ডারদের প্রতিনিধিত্ব করে । কোম্পানির সঠিক ও বাস্তবসম্মত পরিচালনার স্বার্থে পরিচালনা পর্ষদ দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কোম্পানির ভীষণ ও মিশন নির্ধারণ, মৌলিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকে। কোম্পানির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যে কোনো ব্যাপারে পরিচালনা পর্ষদ সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে।

৪. সাংগঠনিক সংস্কৃতি : দাঘাদন সংগঠনের নিজস্ব কিছু ধ্যান ধারণা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, আচার অনুষ্ঠান ও শিল্পবোধের জন্য নেয়। এ সমস্ত সাংগঠনিক মূল্যবোধ ও আচার-অনুষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে সংগঠনের যাবতীয় কার্যাবলি পরিচালিত হয়। অতএব সাংগঠনিক সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে ব্যবসায়িক সংগঠনের কার্যাবলির উপর।

৫. অভ্যন্তরীণ সংগঠনের সুযোগ-সুবিধা : সংগঠনের ব্যবস্থাপকীয় কার্যাবলি পরিচালনার জন্য অভ্যন্তরীণ সুযোগ সুবিধার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংগঠনের সার্বিক অবকাঠামো, আর্থিক অবস্থা, আধুনিক ও উন্নতমানের যন্ত্রপাতি, শ্রমিকদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সংগঠনের কার্যাবলির উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে। তাই সংগঠনের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তুলনামূলক সুবিধা অর্জনের স্বার্থে অভ্যন্তরীণ সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি ও উন্নত করে।


আরো ও সাজেশন:-

শিল্পোদ্যোগের সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহ : সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহ নিচে বর্ণনা করা হলো :

১. সাধারণ পরিবেশের উপাদানসমূহ উপাদানসমূহ সংগঠনের বাহিরে অবস্থান করে কিন্তু সংগঠনের উপরে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে, সেই সমস্ত উপাদানসমূহকে কার্যভিত্তিক উপাদান বলে। নিম্নে কার্যভিত্তিক পরিবেশের উপাদানসমূহ আলোচনা করা হলো :

(ক) ক্রেতা : টাকা বা টাকায় পরিমাপযোগ্য যেকোনো মুদ্ৰা বা বস্তু দিয়ে যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পণ্য দ্রব্য ও সেবার মালিকানা লাভ করে তাকে ক্রেতা বলে। ক্রেতারা সংগঠনের বাহিরে অবস্থান করলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। ক্রেতা যদি কোনো পণ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে সে সংগঠনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। অতএব ক্রেতারা সংগঠনের কার্যাবলি উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান ।

(খ) সরবরাহকারী : কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অন্য কোনো সংগঠনের আদেশ অনুযায়ী পণ্য দ্রব্য বা কাঁচামাল সরবরাহ করে তাকে সরবরাহকারী বলা হয়। সংগঠনের ব্যবস্থাপকীয় কার্যাবলি কত দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করা সম্ভব তা নির্ভর করে তাদের কাঁচামাল সরবরাহের উপর ।

(গ) প্রতিযোগি : সমজাতীয় পণ্য দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন ও সরবরাহকারী একে অপরের প্রতিযোগী। বর্তমান প্রতিযোগিতা মূলক বাজার ব্যবস্থায় প্রতিযোগি সংগঠনগুলোর উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ তথা সার্বিক সাংগঠনিক কৌশলের উপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি প্রভাবিত হয়।

(ঘ) নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা : সরকার বা সরকারি সংস্থাগুলো সংগঠনের বাহিরে থাকলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। সরকারের করনীতি, শুল্কনীতি, বাণিজ্যনীতি, শিল্পনীতি, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎনীতি ইত্যাদি সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের উপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কোনো অবস্থায় সরকারি নিয়মনীতি ভঙ্গ করে ব্যবসায়েক কার্যাবলি পরিচালনা করা যাবে না অতএব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলোর কথা অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।

(ঙ) কৌশলগত অংশীদার : প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তুলনামূলক সুবিধা অর্জন করার জন্য সমজাতীয় অন্যান্য সংগঠনকে নিয়ে যে জোট গঠন করা হয় তাকে কৌশলগত জোট বা অংশীদার বলে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

২. কার্যভিত্তিক পরিবেশের উপাদানসমূহ : ব্যবসায় মানুষের | জীবিকা অর্জনের অন্যতম উপায়। যে পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ পরোক্ষভাবে ব্যবসায়ের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাকেই ব্যবসায়ের সাধারণ পরিবেশ বলে।

নিম্নে ব্যবসায় উদ্যোগের উপর সাধারণ পরিবেশের উপাদানসমূহ চিত্রে উপস্থাপনপূর্বক আলোচনা করা হলো :

(ক) প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক পরিবেশ : পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অবস্থান, জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, পর্বত, বনজ সম্পদ, খনিজ সম্পদ ইত্যাদির সমন্বয়ে সে দেশের | প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে উঠে। আর প্রাকৃতিক এসব উপাদান যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ ও ব্যবসা বাণিজ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে।

(খ) অর্থনৈতিক পরিবেশ : ব্যবসায়ী পরিবেশের সবচেয়ে | গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিবেশ। কোনো দেশের বিনিয়োগ, মূলধন, বাজার পরিস্থিতি, ভোক্তার প্রবণতা, প্রতিযোগিতা, অর্থনৈতিক কাঠামো, দেশের বাজেট, শুল্ক ও কর কাঠামো, জাতীয় আয়, জাতীয় উৎপাদন, কৃষি, শিল্প ও সেবার প্রভাব, মূল্য স্তর, উৎপাদন ব্যবস্থা, বণ্টন, সঞ্চয় ও ঋণ গ্রহণের প্রবণতা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যয় ও ভোগ ইত্যাদি অর্থনৈতিক উপাদানসমূহের উপর ব্যবসায়ী পরিবেশের অবস্থা নির্ভর করে। এই অর্থনৈতিক পরিবেশেই মানুষের জীবনধারায় বৈচিত্র্য আনয়ন করে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

(গ) সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবেশ : সমাজে বসবাসকারী মানবগোষ্ঠীর চিন্তাধারা, ধ্যান-ধারণা, আচার-আচরণ শিক্ষা-দীক্ষা, সভ্যতা-সংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, নীতি-নীতি, নিয়ম-কানুন ইত্যাদি নিয়েই সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি। সামাজিক পরিবেশের এসব উপাদান অনুকূল হলে কারবার তথা ব্যবসায় বাণিজ্যে প্রসার ঘটে।

(ঘ) রাজনৈতিক পরিবেশ : দেশের সরকারের স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক চিন্তা চেতনা, রাজনৈতিক দর্শন, রাজনীতিবিদদের আচরণ ইত্যাদি উপাদান নিয়েই রাজনৈতিক পরিবেশ। এসব পরিবেশ দ্বারা দেশের আইন শৃংখলা, নিরাপত্তা, সরকারি নিয়ম নীতি, রাজস্বনীতি, বিনিয়োগ নীতি, আদমানি-রপ্তানি নীতি ইত্যাদি প্রভাবিত হয়। তাই রাজনৈতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকলে ব্যবসায় বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। বাংলাদেশের অসুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ কারবারকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

(ঙ) প্রযুক্তিগত পরিবেশ : উন্নত প্রযুক্তি যেকোনো দেশের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে সহায়ক। প্রযুক্তিগত কারণে মানুষের মনে নিত্যনতুন পণ্যদ্রব্যের ধ্যান-ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব নতুন পণ্যদ্রব্য উৎপাদন ও বণ্টনের মাধ্যমেই কারবারের পথ প্রশস্ত হচ্ছে। প্রযুক্তিগত কারণেই জাপান ও আমেরিকার বিশ্ব বাণিজ্যের একটা বৃহৎ অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদানসমূহ হলো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ও সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি আমদানির সুযোগ, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার সুযোগ, দেশের বিজ্ঞান চর্চার পরিবেশ, বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি ।

(চ) আইনগত পরিবেশ : একটি দেশের আইনগত পরিবেশ দ্বারাও ব্যবসায়ী কার্যকলাপ প্রভাবিত হয়। একটি দেশের আইনগত কাঠামো, আইনের যথাযথ প্রয়োগ, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা ইত্যাদি অবস্থার উন্নতি হলে সুষ্ঠু ব্যবসায় পরিবেশ বিরাজ করে। আর অবনতি হলে ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে ব্যবসায় সম্পর্কিত আইনসমূহ ব্যবসায়ীদের জন্য কিরূপ প্রণয়ন করে তাও ব্যবসায়ীদের বিবেচনা করতে হয়। ব্যবসায়িক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ আইনসমূহ হলো চুক্তি আইন, সমবায় আইন, অংশীদারি আইন, শিল্প আইন, কোম্পানি আইন, শ্রম আইন, পরিবেশ আইন, বৈদেশিক বিনিময় সংক্রান্ত আইন, আয়কর আইন, পরিবহণ বিষয়ক আইন ইত্যাদি ।

আন্তর্জাতিক পরিবেশ : ব্যবসায় পরিবেশ বর্তমানে শুধুমাত্র একটি দেশের ভৌগোলিক সীমারেখার মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। এটি ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। বিশ্বের কোনো দেশই এখন নিজেদেরকে আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে দাবি করতে পারে না। প্রতিটি দেশের ব্যবসায়ের একটি বিশাল অংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

তাই প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক পরিবেশকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশের উপাদানসমূহ হলো আন্তর্জাতিক লেনদেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, অর্থনৈতিক জোট, বিশ্বায়ন, ভৌগোলিক অবস্থান, আত্মনির্ভরশীলতা, আন্ত র্জাতিক সংস্থা, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চুক্তি, পারস্পরিক বিবাদ ও মৈত্রী, পারস্পরিক চুক্তি ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment