প্রশ্ন সমাধান: শিল্পোদ্যোক্তার বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা কর, একজন সফল উদ্যোক্তার গুণাবলি আলোচনা কর , শিল্পোদ্যোক্তার গুণাবলি বর্ণনা কর, সফল উদ্যোক্তার গুণাবলি গুলো কি কি?
ব্যবসায় ও শিল্প সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও একটি দেশের পরিচালনা যিনি করেন তাকে উদ্যোক্তা বলা হয় । শিল্প বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্যোক্তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যবসায় উদ্যোক্তার সক্রিয় ও গঠনমূলক ভূমিকাই একটি দেশের অর্থনীতিকে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে নিয়ে যায়। ব্যবসায় সাফল্য উদ্যোক্তার বলিষ্ঠ গুণাবলির উপর নির্ভর করে। অধিকতর দক্ষ ও গুণাবলি সম্পন্ন উদ্যোক্তার তত্ত্বাবধানে অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও বৃহদায়তন ব্যবসায়ে রূপ নিয়ে থাকে। তাই দেখা যায় ব্যবসায় সফলতা উদ্যোক্তার গুণাবলির উপর নির্ভর করে ।
সফল উদ্যোক্তার গুণাবলি : ব্যবসায় সফলতা একজন সফল উদ্যোক্তার উপর নির্ভরশীল। নিম্নে একজন সফল উদ্যোক্তার গুণাবলি উল্লেখ্য করা হলো :
১. সাংগঠনিক ক্ষমতা : একজন সফল উদ্যোক্তার অন্যতম গুণ হলো সাংগঠনিক ক্ষমতা। ব্যবসায়ের লক্ষ্য অর্জনের জন্য উদ্যোক্তার সাংগঠনিক ক্ষমতা থাকা দরকার। উদ্যোক্তা উৎপাদনের উপকরণগুলোকে একত্রিত করে সুসংগঠিত করে। উদ্যোক্তার সুষ্ঠু ও কার্যকর সংগঠনের উপর ব্যবসায় সাফল্য নির্ভর করে। তাই উদ্যোক্তার সাংগঠনিক ক্ষমতা ও দক্ষতা থাকা দরকার ।
২. শিক্ষা : উদ্যোক্তাকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। ব্যবসায়ের রীতি-নীতি ব্যবস্থাপনা | সম্পর্কে জ্ঞান ও সমস্যাবলি সমাধান সম্পর্কে উদ্যোক্তার উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। এজন্য উদ্যোক্তাকে ব্যবসায়িক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হয় ।
৩. উদ্যম ও সাহস : ব্যবসায় সফল হতে হলে উদ্যোক্তাকে | উদ্যমী ও সাহসী হতে হবে। কারণ ব্যবসায় নানাবিধ ঝুঁকি, অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে। উদ্যোক্তাকে কঠিন পরিস্থিতিতে সকল সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। তাই একজন সফল উদ্যোক্তাকে উদ্যমী ও সাহসী হতে হবে।
আরো ও সাজেশন:-
৪. ধৈর্যশীল : একজন সফল উদ্যোক্তার অন্যতম গুণ হলো | ধৈর্যশীলতা। ধৈর্য্য উদ্যোক্তার একটি বিশেষগুণ। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনায় একজন উদ্যোক্তাকে অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও সাহষ্ণু হতে হয়। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ধৈর্যের সাথে নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা সফলতা অর্জন করতে পারে ।
৫. নেতৃত্বসুলভ যোগ্যতা : একজন সফল উদ্যোক্তার অন্যতম গুণ হলো নেতৃত্বসুলভ যোগ্যতা। অধ্যাপক মার্শাল একজন উদ্যোক্তাকে শিল্পের নেতা হিসেবে আখ্যা করেছেন। ব্যবসায় নিয়োজিত মানব সম্পদ ও অন্যান্য উপায়-উপকরণ সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য উদ্যোক্তার মাঝে উপযুক্ত নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকা উচিত।
৬. ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা : সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা বিদ্যমান। ব্যবসায় ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়। ব্যবসায় ক্ষেত্রে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা রয়েছে। একজন উদ্যোক্তার এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করার ক্ষমতা থাকতে হবে। একজন উদ্যোক্তা তখনই সফল হবে যখন সে ঝুঁকি গ্রহণ করার ক্ষমতা অর্জন করবে।
৭. পরিশ্রমী : পরিশ্রম ব্যতীত সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। একজন সফল উদ্যোক্তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। যেকোন কাজের চেয়ে ব্যবসায়িক কাজে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রবাদ আছে, পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। উদ্যোক্তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও শক্তিশালী হতে হবে ।
৮. সতর্কতা : একজন উদ্যোক্তাকে সর্বসময় সতর্ক থাকতে হয়। উদ্যোক্তা ব্যবসায়ের সর্বদিক সম্পর্কে সতর্ক থাকে। কারণ উদ্যোক্তার সামান্য অসতর্কতা ব্যবসায় অনেক ক্ষতি সাধন করে। যেমন সাভারে রানা প্লাজার দুর্ঘটনা এর বড় উদাহরণ ।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
৯. উদ্ভাবনী ক্ষমতা : একজন সফল উদ্যোক্তার অন্যতম গু হলো উদ্ভাবনী ক্ষমতা। উদ্যোক্তা ব্যবসায় উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কৌশল উদ্ভাবন করেন। সফল উদ্যোক্তাকে উদ্ভাবনী ক্ষমতার অধিকারী হতে হয়। বারসায়ের নিত্য-নতুন ক্ষেত্র ও কলাকৌশল উদ্ভাবন, নতুন নতুন পণ্য আবিষ্কার, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মৌলিক জ্ঞান উদ্যোক্তার উদ্ভাবনী ক্ষমতার উল্লেখযোগ্য দিক।
১০. মানসিক শক্তি ও সামর্থ্য : মানসিক শক্তি মানুষের কর্মে স্পৃহা যোগায়। ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য একজন উদ্যোক্তার মানসিক শক্তি ও সামর্থ্য থাকা দরকার। তাই প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে ব্যাপক মানসিক শক্তির অধিকারী হতে হবে।
১১. চারিত্রিক দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় যে উদ্যম ও উৎসাহের প্রয়োজন হয়, তার জন্য উদ্যোক্তার চারিত্রিক দৃঢ়তা, মনোবল ও আত্মবিশ্বাস থাকা অপরিহার্য। উদ্যোক্তার চরিত্র ভালো হলে ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব। চরিত্রহীন ব্যবসায় ব্যবসায় সফলতা লাভ করতে পারে না।
১২. স্বাধীনচেতা : উদ্যোক্তার অন্যতম গুণ হলো স্বাধীনচেতা। উদ্যোক্তা স্বাধীনভাবে তার ব্যবসা পরিচালনা করেন। স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণেই তারা নিজে কোন কিছু উদ্ভাবন করতে ভালবাসেন। তাই উদ্যোক্তা স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে ।
Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Stories | উত্তর লিংক |
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেল | উত্তর লিংক |
১৩. সময়ানুবর্তিতা : সময়ানুবর্তিতা উদ্যোক্তার অন্যতম গুণ। যথাসময়ে যথাযথ কাজ সম্পাদনের উপর ব্যবসায় সফলতা নির্ভরশীল। ব্যবসায় সফলতা উদ্যোক্তার সময়ানুবর্তিতার উপর নির্ভরশীল। জ্ঞানী লোকেরা সময়ের কাজ সময়ে সম্পাদন করে ৷
১৪. আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব একজন সফল উদ্যোক্তা ব্যক্তিত্বে আকর্ষণীয় হবে। কারণ উদ্যোক্তা ব্যবসায় বিভিন্ন কাজ শ্রমিক- কর্মচারীদের দিয়ে করিয়ে থাকেন। উদ্যোক্তার ব্যক্তিত্ব আকর্ষণীয় হলে তার প্রতি সকলে শ্রদ্ধা করেন। তাই ব্যবসায় সফলতা উদ্যোক্তার ব্যক্তিত্বের উপর নির্ভর করে।
১৫. সুযোগের স্ল্যবহার: ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অনেক সময় বড় বড় সুযোগ আসে। একজন সফল উদ্যোক্তা যেকোনো সুযোগ লুফে নেয়। কথায় আছে সুযোগ বার বার আসে না। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেও একথাটি অনেকাংশে সত্য। বুদ্ধিমত্তার সাথে উদ্যোক্তা যেকোনো সুযোগ গ্রহণ করেন।
১৬. সিদ্ধান্ত গ্রহণ : একজন সফল উদ্যোক্তা যেকোনো পরিস্থিতিতে ব্যবসায় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিভাবে উৎপাদন করতে হবে, কি পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
১৭. দূরদর্শিতা : ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে জানার মত দূরদর্শিতা উদ্যোক্তার থাকতে হবে। একজন সফল উদ্যোক্তার মধ্যে দূরদর্শিতাগুণ বিদ্যমান। উদ্যোক্তা দক্ষ হাতে ব্যবসায় পরিচালনা করে উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্যোক্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, একজন সফল উদ্যোক্তার মধ্যে উপরের গুণাবলি বিদ্যমান থাকে। একজন উদ্যোক্তার মধ্যে উপরের গুণাবলি থাকলে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও সে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তাই বর্তমানকালে ব্যবসায় সফলতা জন্য উদ্যোক্তাকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উদ্যোক্তার এসব গুণাবলি থাকলে একজন অত্যন্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও সাফল্যের উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারে
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- ইজারা ও মালিকানা পার্থক্য । ইজারা vs মালিকানা পার্থক্য
- ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ, ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো বিস্তারিত আলোচনা কর
- ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর
- অপারেশন চুক্তি কি ও ব্ল্যাক সোলস মডেল ব্যাখ্যা কর
- ফাইন্যান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে কি বুঝ উদাহরণসহ বিস্তারিত আলোচনা কর
- বিভিন্ন প্রকার অপারেশন চুক্তি এর বর্ণনা সহ আলোচনা করো, অপারেশনাল-স্তরের চুক্তি