মূল্য সংযোজন করের বৈশিষ্ট্য ,মূল্য সংযোজন করের শ্রেণিবিভাগ,মূল্য সংযোজন করের সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা কর

প্রশ্ন সমাধান: মূল্য সংযোজন করের বৈশিষ্ট্য ,মূল্য সংযোজন করের শ্রেণিবিভাগ,মূল্য সংযোজন করের সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা কর

মূল্য সংযোজন করের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর, মূল্য সংযোজন করের প্রকৃতি তুলে ধর!

ভূমিকা : মূল্য সংযোজন কর হচ্ছে মোট উৎপাদিত পণ্যের মূল্যের উপর নির্দিষ্ট হারে আরোপিত কর হতে মোট উপকরণের মূল্যের উপর নির্দিষ্ট হারে আরোপিত করলে বিয়োগফল ।

অর্থাৎ উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সংযোজনের উপর যে কর ধার্য করা হয় তাকে মূল্য সংযোজন কর বলে। নিম্নে মূল্য সংযোজন করের বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হলো :

১. পূর্ব করের প্রতিস্থাপন : বাংলাদেশের প্রচলিত মূল্য সংযোজন কর মূলত : আমদানিকৃত পণ্যের উপর আরোপিত বিক্রয় কর এবং দেশীয় পণ্যের উপর আরোপিত আবগারি শুল্ককে প্রতিস্থাপিত করেছে।

২. সমহার : বাংলাদেশের সকল প্রকার করযোগ্য পণ্য ও সেবার উপর সাধারণ সমহারে অর্থাৎ মূল্য সংযোজনের উপর ১৫% হারে করারোপ করা হয়।

৩. রপ্তানি উৎসাহিত : বাংলাদেশে প্রচলতি মূল্য সংযোজন করের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রপ্তানি উৎসাহিতকরণ । রপ্তানিকৃত পণ্যের উপর শূন্য হারে মূল্য সংযোজন কর আরোপিত এবং রপ্তানিকৃত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণের জন্য প্রদত্ত মূল্য সংযোজন সরসহ অন্যান সকল কর ফেরত দেয়া হয় ।

৪. আমদানি নিরুৎসাহিকত : আমদানিকৃত পণ্যের উপর মূল্য সংযোজন কর আরোপের মাধ্যমে আমদানিকে নিরুৎসাহিতহ করা হয়েছে।

৫. বৈজ্ঞানিক কর ব্যবস্থা : মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা আসলে একটি উন্নত ও বিজ্ঞানভিত্তিক কর ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় করের ভার অন্যের ওপর সরানো যায় ।

৬. করের প্রকৃতি : মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা আমদানি পণ্যের বিক্রয় কর এবং বেশির ভাগ দেশজ উৎপাদিত পণ্যের উপর আবগারি শুল্ককে প্রতিস্থাপিত করে। আসলে এ কর বিক্রয় ও আবগারি শুল্কের সংমিশ্রণে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা মাত্র।

উপসংহার : উপরের আলোচনার আলোকে বলা যায় যে, মূল্য সংযোজন করের উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা অতীব জরুরি।


আরো ও সাজেশন:-

মূল্য সংযোজন করের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।

১৯৯১ সালে বাংলাদেশে প্রবর্তিত মূল্য সংযোজন কর আইনে ভিন্ন ধরনের কর প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যথা :

১. মূল্য সংযোজন কর : যদি কোন উৎপাদনকারী আমদানিকারক, সেবা সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বিক্রয় ৭০ লক্ষ্য টাকা বা তদূর্ধ্ব হয় তাহলে তাকে সংযোজিত মূল্যের উপর ১৫% মূসক (VAT) প্রদান করতে হয় ।

২. টার্নওভার কর : যদি কোনো করযোগ্য উৎপানকারী বা পণ্য সরবরাহকারী বা সেবা প্রদানকারী বার্ষিক বিক্রয় ৭০ লক্ষ্য টাকার কম হয় তাহলে তাকে বার্ষিক বিক্রয়ের উপর ৩% হারে টার্নওভার কর প্রদান করতে হবে।

৩. সম্পূরক কর : যে সকল বিলাস সামগ্রী অত্যাবশ্যকীয় নয় এবং সামাজিকভাবে অনভিপ্রেত এমন সব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ঐ সকল পণ্যের উপর মূল্য সংযোজন করের অতিরিক্ত বিভিন্ন হারে যে করা আরোপ করা হয় তাকে সম্পূরক কর বলা হয় ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মূল্য সংযোজন করের ইতিবাচক দিকগুলো উল্লেখ কর।

কাঁচামাল আহরণ হতে শুরু করে পণ্য দ্রব্য উৎপাদন ও বিতরণের প্রতিটি পর্যায়ে সংযোজিত মূল্যের উপর প্রদত্ত করই মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। এটা রাজস্ব আদায়ের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস ৷

নিচে এঁর সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলো :

১. ব্যাপকতা : ভ্যাট করের ভিত্তি প্রসারিত করেছে। সাময়িকভাবে কিছু কিছু পণ্য ব্যতিরেকে সকল পণ্য ও সেবার উপর এটা আরোপ করার ফলে সরকারের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আদায় হচ্ছে।

২. সরলতা : কর পরিশোধকারী, কর নির্ধারণকারী, ভোক্তাসহ সকলের নিকট এটা অত্যন্ত সহজবোধ। কারণ এটা বিক্রয় মূল্যের উপর একটি নির্দিষ্ট হারে পরিশোধ করতে হয় । তাছাড়া এটা স্বয়ং নির্ধারণীর ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে।

৩. ফাঁকি রোধ : ভ্যাট বিভিন্ন পর্যায়ে আরোপ করা হয় বলে এর ভার অপেক্ষাকৃত কম হয়। তাছাড়া, বিক্রেতা নিজের জন্যই ভ্যাট সংগ্রহ করবে, কারণ সংগৃহীত কর প্রদত্ত উপকরণ করের সাথে সমন্বয় করে করের আঘাত হতে মুক্তি পাবে।

৪. শিল্প রক্ষা : আমদানির উপর ভ্যাট ধার্য করে এবং | রপ্তানির উপর শূন্য হারে ভ্যাট ধার্য করে ধার্য করে দেশীয় শিল্প
রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

৫. নিরপেক্ষতা : একটি নির্দিষ্ট হারে আরোপ করা হয় বলে বিভিন্ন ধরনের করদাতার মধ্যে কোন প্রভেদ সৃষ্টি করে না ।

৬. মিতব্যয়িতা : ভ্যাট নির্ণয় ও আদায় অত্যন্ত সহজ বলে এটা পরিকল্পনার ব্যয় অত্যন্ত কম।

৭. দ্বৈত কর পরিহার : এ কর ব্যবস্থায় শুধুমাত্র সংযোজিত মূল্যের উপর কর দিতে হয় । ফলে একবার যে মূল্যের ।

উপসংহার : (উপকরণ ব্যয়) উপর দেয়া হয় পুনরায় উক্ত মূল্যের উপকর দেয়ার প্রয়োজন হয় না। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সরকারের রাজস্ব আদায়ের জন্য ভ্যাট অতীব গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ভ্যাট ব্যবস্থা চালু করবার ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভ্যাট সচেতনতা সাধারণ লোকের নিকট বৃদ্ধি পাচ্ছে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

মূল্য সংযোজন করের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ কর

কাঁচামাল আহরণ হতে শুরু করে পণ্য দ্রব্য উৎপাদন ও বিতরণের প্রতিটি পর্যায় সংযোজিত মূল্যের উপর প্রদত্ত করই মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। এটা রাজস্ব আদায়ের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এর বহুবিধ সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা রয়েছে যা নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি : মূল্য সংযোজন কর আরোপের ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। যে সকল পণ্যের উপর কোন কর ছিল না সে সকল পণ্যের উপর মূল্য সংযোজনা কর আরোপের ফলে স্বাভাবিকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় এবং এর সাথে যুক্ত হয় অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা

২. সেবার মূল্য বৃদ্ধি : মূল্য সংযোজন কর আরোপের ফলে সেবার মূল্যও বৃদ্ধি পায়। মূল্য সংযোজন করের ধোয়া তুলে তুলনামূলকভাবে বেশি হারে সেবার মূল্য বৃদ্ধি করা হয় ।

৩. জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি : মূল্য সংযোজন কর পরোক্ষ কর বিধায় এর ভার সাধারণ জনগণকে বহন করতে হয় যার ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পায় ।

৪. ব্যয়বহুল ও ঝামেলাপূর্ণ : মূল্য সংযোজন করের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন রকমের বইপত্র ও হিসাব সংরক্ষন করতে হয়। যা অনেক সময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যয়বহুল ও ঝামেলাপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় ।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, মূল্য সংযোজন করের কিছু অসুবিধা থাকলেও সরকারি রাজস্ব সংগ্রহ এবং দেশের উন্নয়নের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণভাবে সাহায্য করে থাকে। এই জন্য বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে মূল্য সংযোজন করের অধিক প্রচলন রয়েছে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment