‘মুযারাবা’ তথা ‘একজনের অর্থ আরেকজনের শ্রম’ ভিত্তিতে ব্যবসা করার পদ্ধতি ও বিধিবিধান

‘মুযারাবা’ তথা ‘একজনের অর্থ আরেকজনের শ্রম’ ভিত্তিতে ব্যবসা করার পদ্ধতি ও বিধিবিধান
▬▬▬▬◉◈◉▬▬▬▬
প্রশ্ন: এক ব্যক্তি নিজে ব্যবসা করতে পারে না বিধায় আরেকজনকে ব্যবসার জন্য অর্থ দিল। এখন যদি ব্যবসা কারী তার ইচ্ছেমত অর্থ দাতাকে কিছু লভ্যাংশ দেয় তাহলে কি তা বৈধ হবে না কি তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে? এভাবে ব্যবসা করার বিধান কি?

উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে ’একজনের অর্থ আরেকজনের শ্রম’ ভিত্তিতে ব্যবসা করা জায়েজ আছে। ফিকহের পরিভাষায় এটাকে বলা হয় ’মুযারাবা’।
● এ ক্ষেত্রে ব্যবসায় লাভ হলে উভয়ে চুক্তি অনুযায়ী লাভের অংশ ভাগাভাগি করে নিবে। (দ্রষ্টব্য: আল মাউসূআতুল ফিকহিয়াহ বা ফিকাহ বিশ্বকোষ ৮/১১৬)

● ব্যবসায় যদি মূলধন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে যার অর্থ সে পরিপূর্ণ ক্ষতি বহন করবে কিন্তু যে ব্যক্তি শুধু শ্রম দিয়েছে সে আর্থিক কোনো ক্ষতি বহন করবেন না। কারণ তার শ্রম বিফলে যাওয়ায় ইতোমধ্যে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

● আর যদি লাভ-লোকসান কোনোটাই না হয় তাহলে যার মূলধন সে তা ফেরত নিবে।

আরো

লাইসেন্স বিহীন অনলাইন ব্যবসা এবং ভেজাল পণ্য বিক্রয়ের বিধান

‘মুযারাবা’ তথা ‘একজনের অর্থ আরেকজনের শ্রম’ ভিত্তিতে ব্যবসা করার পদ্ধতি ও বিধিবিধান

এ পদ্ধতিতে ব্যবসা করায় ইসলামে কোনো বাধা নেই।
আবু নুয়াঈম প্রমুখ বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাদিজা রা.কে বিয়ে করার পূর্বে এই মুযারাবা পদ্ধতিতে তার মালামাল মক্কা থেকে শাম (সিরিয়া) নিয়ে ব্যবসা করেছেন। সাহাবীদের যুগেও এটি প্রচলিত ছিলো। মূলত: এ ব্যবসা প্রথাটি জাহেলী যুগ থেকেই প্রচলিত। পরবর্তীতে ইসলাম তার অনুমোদন দিয়েছে।

এ ধরণের ব্যবসার ক্ষেত্রে শর্ত হল, দু জনের মধ্যে কে কী পরিমাণ লাভ নিবে অবশ্যই তা পূর্বেই নির্ধারণ করতে হবে। যেমন: ৪০%, ৫০%, ৬০% ইত্যাদি। যে শ্রম দিয়ে ব্যবসা করছে তার ইচ্ছার উপর লাভের পরিমাণ ছেড়ে দেয়া শরিয়ত সম্মত নয়।

অন্যথায় সময়ের ব্যবধানে উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য ও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। আর ইসলাম চায় স্বচ্ছতা। তাই এ সমস্যা থেকে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবসা শুরু করার পূর্বেই লাভের পার্সেন্টিজ নির্ধারণ করা জরুরি। আল্লাহু আলাম।

▬▬▬▬◉◈◉▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব

Leave a Comment