মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান,চাকরির পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন

মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান,চাকরির পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন

মাদারীপুর মধ্য বাংলাদেশের একটি জেলা যা ঢাকা বিভাগে অবস্থিত। এটি উত্তরে ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরিশাল ও গোপালগঞ্জ জেলা, পূর্বে শরীয়তপুর জেলা এবং পশ্চিমে ফরিদপুর জেলা দ্বারা বেষ্টিত। জেলার মোট আয়তন ১,১৪৫ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি।

মাদারীপুর প্রধানত মুসলিম অধ্যুষিত একটি জনসংখ্যার বেশিরভাগ গ্রামীণ জেলা। মানুষের প্রধান পেশা কৃষি, মাছ ধরা এবং ছোট ব্যবসা। এই জেলাটি প্রাচীন সোনারগাঁ শহরের ধ্বংসাবশেষ, সুফি সাধক সৈয়দ বদিউদ্দীন আহমেদ জিন্দা শাহ মাদারের সমাধি এবং মাদারীপুর বিল, একটি বৃহৎ জলাভূমি এলাকা যা একটি জনপ্রিয় গন্তব্য সহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থানের আবাসস্থল। পাখি দেখার জন্য।

মাদারীপুর একটি উন্নয়নশীল জেলা যার মধ্যে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা এবং পরিবেশগত অবনতি সহ বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যাইহোক, এই জেলার বেশ কিছু সম্পদ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অল্পবয়সী জনসংখ্যা, একটি উর্বর জমি এবং একটি কৌশলগত অবস্থান। যথাযথ বিনিয়োগ ও উন্নয়নের মাধ্যমে মাদারীপুর একটি সমৃদ্ধ ও প্রাণবন্ত জেলায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ সংশোধিত ও জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন ও সমাধান টি আপডেটের করা হয়েছে ২০২৪

বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৪

মাদারীপুর সদর উপজেলা (মাদারীপুর জেলা)  আয়তন: ২৮৩.১৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৬´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০১´ থেকে ৯০°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শিবচর ও জাজিরা উপজেলা, দক্ষিণে কালকিনি ও কোটালিপাড়া উপজেলা, পূর্বে শরিয়তপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে রাজৈর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩৪৫৭৬৪; পুরুষ ১৭১৩২৯, মহিলা ১৭৪৪৩৫ । মুসলিম ৩২১১৭৫, হিন্দু ২৪৪৭৫, বৌদ্ধ ২৪, খ্রিস্টান ৭৯ এবং অন্যান্য ১১।

জলাশয় আড়িয়াল খাঁ, ঘাঘর ও কুমার নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯৪৬ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভাইউনিয়নমৌজাগ্রামজনসংখ্যাঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)শিক্ষার হার (%)
শহরগ্রামশহরগ্রাম
১৫১৪৭১৮৫৬২৬৯০২৮৩০৭৪১২২১৭৩.১৪৬.১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি)ওয়ার্ডমহল্লালোকসংখ্যাঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)শিক্ষার হার (%)
১৪.২২৩৪৬২৬৯০৪৪০৯৭৩.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোডআয়তন (একর)লোকসংখ্যাশিক্ষার হার (%)
পুরুষমহিলা
কালিকাপুর ৪১৫১৮৬১০৫৭৬৯৮০৭৪৬.০
কুনিয়া ৫৯৪০৯৪৮৮৯৫৯০৯৮৪৬.১
কেন্দুয়া ৪৭৫৮৯০১২৩৪৭১২৩২৩৪৫.৫
খোয়াজপুর ৫৩৬৩৮৭১১৪৪৪১১৭৮৫৪২.০
ঘটমাঝি ২৯৪১৬৭১২৮৮৫১২৮০৩৪৮.০
ছিলার চর ১১৫৩৭২৮৫৭৩৯৪১৯৪৪.৯
ঝাউদি ৩৫৪৬৭৭১১৯৩৯১২৩৫৪৪২.০
দুধখালী ২৩৩৭৩৩৭৫৬১৮১৫৮৫৪.৮
ধুরাইল ১৭৩২৯৩৪১০৩৪৪৮৪৪১.০
পাঁচখোলা ৭৭৬০৪৫১১৮৫৬১১৮৭৩৫২.০
পেয়ারপুর ৮৩৩৪৫০৭০৯৫৭৬০৭৪৯.৪
বাহাদুরপুর ১০২৫৩১৫৩৬৩৫৪৭৫৪৭.৪
মস্তফাপুর ৭১৪৪১২১১৯৮৩১১৭৬৫৪১.১
রাস্তি ৮৯১৮০৬৭৫৭৪৭৪৮৫৪৬.৫
শিরখাড়া ৯৪৫২৫২৮০৬৫৮৩৭৯৪৫.৬

2016 – 2024 সালের সকল নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান পেতে ক্লিক করুন

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আলগী কাজীবাড়ি মসজিদ (সতের শতক), কূলপদ্মী দুর্গামন্দির, শশী রায়ের মন্দির, ঝাউদি গিরি, আউলিয়াপুর নীলকুঠি, শাহ মাদার দরগাহ।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী আবদুর রশীদ খানকে সপরিবারে হত্যা করে। কমান্ডার খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে ‘খলিল বাহিনী’ নামে পরিচিত স্থানীয় একটি মুক্তিবাহিনী এলাকায় একাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ৮-১০ ডিসেম্বর খলিল বাহিনী মাদারীপুর টেকেরহাট সড়কে সোমাদ্দার ব্রিজে এক যুদ্ধে ১জন মেজর ও ১জন ক্যাপ্টেনসহ মোট ৪০জন পাকসেনাকে বন্দি করে। মুক্তিযুদ্ধে এ উপজেলার ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলায় হাওলাদার জুট মিলস, মিঠাপুর সাহাবাড়ি এবং চরকুলপন্দী নামক স্থানে ৩টি গণকবর রয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন মাদারীপুর সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৭৯৩, মন্দির ১২, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.১%; পুরুষ ৫৩.৯%, মহিলা ৪৮.৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ (১৯৪৮), চরমুগুরিয়া কলেজ (১৯৭৮), সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজ (১৯৮৪), সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ (১৯৮৯), মাদারীপুর পাবলিক ইনস্টিটিউশন (১৯৫৩), মাদারীপুর হাইস্কুল (১৮৮৫), ডনোভান সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৪), মিঠাপুর এলএস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), চরমুগুরিয়া মার্চেন্টস হাইস্কুল (১৯৩১), ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি হাইস্কুল (১৯৫০), তাঁতীবাড়ি ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৪), এসি নর্থ কলাগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), ঘটকচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩), বাহাদুরপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), জুলিও কুরি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), চরনাচনা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১২)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: সুবর্ণগ্রাম (১৯৯৮), প্রান্ত (২০০১), মাদারীপুর নিউজ (২০০৬), বিশ্লেষণ (২০০৯); সাপ্তাহিক: সুপ্রভাত (১৯৯১), শাহ মাদার (১৯৯৩), শরীয়তউল্লাহ (১৯৯৬), আজকাল (১৯৯৯), গণসচেতনতা (২০০৬), সুবার্তা (২০০৭); মাসিক: যুগচেতনা (১৯৯১), পোস্টার (১৯৯১), শান্তি সাময়িকী (১৯৯২), জাবল-ই-নূর (২০০৫); সাহিত্য পত্রিকা: সন্দীপন, কিশলয়, বৈশাখী, ক্যানভাস, বর্ণমালা, নবপ্রভাত; অবলুপ্ত: দৈনিক দিগন্ত (১৯৬০), সাপ্তাহিক জননী বাংলা (১৯৭২), সাপ্তাহিক মাদারীপুর বার্তা (১৯৮৬), সাপ্তাহিক আড়িয়াল খাঁ (১৯৮৯), পাক্ষিক বালারঞ্জিকা (১৮৬৩)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৩, নারী সংগঠন ৩, সিনেমা হল ৪, সাংস্কৃতিক সংগঠন ১৪।

দর্শনীয় স্থান আলগী কাজীবাড়ি মসজিদ, পর্বতের বাগান, শকুনি লেক, শাহ্ মাদার দরগ, চরমুগুরিয়া বন্দর, আউলিয়াপুর নীলকুঠি, মিঠাপুর জমিদার বাড়ি।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫২.২৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০৩%, শিল্প ০.৯৪%, ব্যবসা ১৮.০১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.২৬%, চাকরি ৯.৯৯%, নির্মাণ ১.৭৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৮৬% এবং অন্যান্য ৯.৭১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.৭৭%, ভূমিহীন ৩২.৯৩%। শহরে ৪২.৯৩% এবং গ্রামে ৭১.৬৮% পরিবারের কৃষিভূমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, ডাল, গম, পিঁয়াজ, মিষ্টি আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নীল, পান, তরমুজ।

প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, আম, পেঁপে, নারিকেল, সুপারি, কলা।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৭৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৪৫ কিমি; নৌপথ ৩৩ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা জুটমিল ২, বরফকল ৩, আটামিল ৫, বিস্কুট ফ্যাক্টরি ৫।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, দারুশিল্প, নকশীকাঁথা।

হাটবাজার ও মেলা মাদারীপুর, চরমুগুরিয়া, হবিগঞ্জ, কূলপদ্মী, কেন্দুয়া, মাদ্রা, খোয়াজপুর ও ঘটমাঝি হাট এবং দুর্গাপূজা, ফটিক সাধু, বাহাদুরপুর ও কলাগাছিয়া মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট ও পাটজাত দ্রব্য, সুপারি, সুতা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৮.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৫%, ট্যাপ ২.০% এবং অন্যান্য ২.৫%। উপজেলার প্রায় ৭৮.৮৪% নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৬১.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৭.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সরকারি হাসপাতাল ১, ক্লিনিক ১০, যক্ষ্মা হাসপাতাল ১, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১৩।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, কেয়ার, আশা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ। [কাজী নাজমুল ইসলাম]

আরো ও সাজেশন:-

এক নজরে মাদারীপুর

বিষয়বিবরণ
জেলা সৃষ্টি১লা মার্চ, ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দ
আয়তন১১২৫.৬৯ বর্গ.কি.মি. (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
নির্বাচনী এলাকা২১৮ মাদারীপুর-১, ২১৯ মাদারীপুর-২, ২২০ মাদারীপুর-৩
মোট ভোটার সংখ্যা (পুরুষ ও মহিলা)১০,৬৬,৯১৫ জন ( পুরুষ-৫,৫৩,৫৬৭, মহিলা-৫,১৩,৩৩৬ ও হিজড়া-১২)   [সর্বশেষ হালনাগাদ ২৪/১২/২০২৩]
লোকসংখ্যা১২,৯৩,০২৭ জন (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
উপজেলা৫ টি (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
থানা০৫ টি
পৌরসভা৪ টি (বাংলাদেশ জিওকোড, জুন ২০১৭)
ইউনিয়ন৫৯ টি (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
গ্রাম১১০৮ টি (বাংলাদেশ জিওকোড, জুন ২০১৭)
মৌজা৪৫১ টি (বাংলাদেশ জিওকোড, জুন ২০১৭)
নদী৯টি (বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড)
বদ্ধ জলমহাল (২০ একর এর উর্দ্ধে ও অনুর্ধ্ব ২০ একর)৮ টি
উন্মুক্ত জলমহাল১৩টি।
ইউনিয়ন ভূমি অফিস৫৯ টি।
মোট আবাদি জমি৮৪,৩৭০ হেক্টর
মোট জমি১,১৭,১২১ হেক্টর
হাট বাজার১১৩ টি
শিক্ষার হার৭৪.৮৪% (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
মোট রাসত্মার দৈর্ঘ্য১৮৬২.১৫ কি:মি:
পাকা রাস্তা১৬৩ কিঃমিঃ
কাচা  রাস্তা৪০১০ কিঃ মিঃ
আবাসন/আশ্রায়ণ প্রকল্প১৫ টি ( ৬টি + ৯টি)
আদর্শ গ্রামনেই
খেয়াঘাট/নৌকা ঘাট৪৪ টি (নৌ শুমারির প্রাথমিক জরিপ)
দর্শনীয় স্থান২০টি।
নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠি৫০৮ জন (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
জনসংখ্যার ঘনত্ব১১৪৯ জন (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)
সংসদীয় আসন৩ টি
পরিবেশপ্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রবণ এলাকা
জেনারেল হাসাপাতাল০১ টি ১০০ শয্যা বিশিষ্ট (২৫০ শয্যায় উন্নিত করন করা হয়েছে)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স০৩ টি 
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র৫০ টি
কলেজের সংখ্যা২৮ টি (৮টি সরকারিসহ)
মাদ্রাসার সংখ্যা৭০ টি
মাধ্যামিক বিধ্যালয়১৭৩ টি (৫ টি সরকারিসহ)
জুনিয়র হাইস্কুল২৭ টি
প্রাথমিক বিদ্যালয়৭১৯ টি
পাবলিক লাইব্রেরি০৫ টি
সার্কিট হাউজ০১ টি
ডাকবাংলো (জেলা পরিষদ)০৬ টি

আয়তন

১১২৫.৬৯ বর্গ কিলোমিটার।

অবস্থান

২৩˙০০‌‌˝ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২০˙-৩০‌‌˝ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯˙-৫৬˝ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৯০˙-২১˝ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।

সীমানাঃ

উত্তরেফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা।
পূর্বেশরিয়তপুর জেলা।
পশ্চিমেফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ
দক্ষিনেগোপালঞ্জ ও বরিশাল

জনসংখ্যা

১২,৯৩,০২৭ জন (জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)

নদ-নদী

আড়িয়াল খাঁ, কুমার, লোয়ার কুমার, কাঁটা কুমার, কৃর্ত্তীনাশা, পদ্মা, বিল পদ্মা, ময়নাকাটা, টরকী।

জলবায়ু

মাদারীপুর জেলার বার্ষিক সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্র ৩৫.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২১০৫ মিলিমিটার।

জীব-বৈচিত্র্য

উষ্ণ ও আদ্র। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২১০৫ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্র ৩৫.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রী সেঃ। আবহাওয়া-স্বাস্থ্যকর।

জীব-বৈচিত্র্য

পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার কারণে জীব বৈচিত্র্য নষ্ট হতে চলেছে। বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি, গাছপালা ও মৎস হারিয়ে যাচ্ছে।

মাদারীপুরে মূল্যবান গাছের সংখ্যা খুবই কম। এখানে কোন রাষ্ট্রীয় বনভূমি নেই। জেলায় নারিকেল, সুপারি খেজুর ও তালগাছ প্রচুর জন্মে। মাদারীপুরের খেঁজুরের গুড় খুবই বিখ্যাত।

বিলুপ্ত প্রায় বন্য প্রানীদের মধ্যে রয়েছে-খেঁকশিয়াল, বাগডাসা, খাটাস, বেজি, গুইসাপ, রক্তচোষা, বাদুর ইত্যাদি।

বিলুপ্ত প্রায় পাখিগুলো হচ্ছে- শঙ্খচিল, দাড়কাক, তিলাঘুঘু, কাটঠোকরা, লক্ষ্মীপেঁচা, কানাকুয়া, ডাহুক, পানকৌড়ী, ভাতশালিক ইত্যাদি।

এছাড়া চিতল, বোয়াল, পাবদা ও মাগুর সহ প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাওয়ার পথে।

মাদারীপুর নামকরণ ও জেলার ইতিহাস

মাদারীপুর জেলার নামকরণ করা হয় সুফি সাধক সৈয়দ বদিউদ্দিন আহমেদ জিন্দা শাহ মাদার (মৃত্যু ১৪৩৪ খ্রি.) এর নামানুসারে। তিনি ছিলেন একজন পারস্য সুফি সাধক যিনি ভারতীয় উপমহাদেশ ও মধ্য এশিয়া জুড়ে ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি ১৫ শতকের গোড়ার দিকে মাদারীপুরে আসেন এবং সেখানে একটি খানকাহ (সুফি লজ) প্রতিষ্ঠা করেন বলে জানা যায়। খানকাহ একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থানে পরিণত হয় এবং মাদারীপুর শহর এর চারপাশে বেড়ে ওঠে।

জেলা ১৮৫৪ সালে বাকেরগঞ্জ জেলার একটি মহকুমা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭৩ সালে এটি বাকেরগঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং ফরিদপুর জেলার সাথে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৮৪ সালে মাদারীপুর জেলায় উন্নীত হয়।

মাদারীপুর বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত একটি ছোট জেলা। এর উত্তরে ফরিদপুর জেলা, পশ্চিমে গোপালগঞ্জ, দক্ষিণে বরিশাল এবং পূর্বে শরীয়তপুর জেলাগুলি অবস্থিত। পদ্মা নদী জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এবং এর পশ্চিম সীমানা তৈরি করেছে।

মাদারীপুর একটি উর্বর কৃষি জেলা। জেলায় উৎপাদিত প্রধান ফসল ধান, পাট ও শাকসবজি। জেলাটিতে পাটজাত দ্রব্য, বস্ত্র এবং সিরামিক তৈরি সহ বেশ কয়েকটি শিল্পের আবাসস্থলও রয়েছে।

মাদারীপুর একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এই জেলায় শাহ মাদারের মাজার, ঝাউদি গিরি পাহাড় এবং প্রণব মঠ সহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থান রয়েছে। মাদারীপুর শকুনি লেক এবং সেনাপতি দীঘি সহ এই জেলাটি অনেকগুলি প্রাকৃতিক আকর্ষণের আবাসস্থল।

মাদারীপুর জেলার উপজেলা/থানা সমূহ

মাদারীপুর জেলায় মোট ৪টি থানা/উপজেলা রয়েছে, যেগুলো হলো:

  1. মাদারীপুর সদর উপজেলা
  2. শিবচর উপজেলা
  3. কালকিনি উপজেলা
  4. রাজোইর উপজেলা।

মাদারীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

এখানে মাদারীপুর জেলার কিছু পর্যটন/দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে দেওয়া হলো:

শাহ মাদারের দরগাহ

এটি ১৫ শতকে বসবাসকারী একজন সুফি সাধক শাহ মাদারকে উৎসর্গ করা একটি উপাসনালয়। মাজারটি মাদারীপুর শহরে অবস্থিত এবং মুসলমানদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান।

শোকুনি দীঘি

মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এটি একটি বিশাল লেক। হ্রদটি সাঁতার, বোটিং এবং মাছ ধরার জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান।

মিঠাপুর জমিদার বাড়ি

এটি ১৯ শতকে নির্মিত একটি জমিদার প্রাসাদ। প্রাসাদটি এখন একটি জাদুঘর এবং জমিদার যুগের নিদর্শনগুলির একটি সংগ্রহের আবাসস্থল।

রাজারাম মন্দির

এটি একটি হিন্দু মন্দির যা ১৮ শতকে তৈরি করা হয়েছিল। মন্দিরটি হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত।

কালীখোলা জমিদার বাড়ি

এটি ১৯ শতকে নির্মিত আরেকটি জমিদার প্রাসাদ। প্রাসাদটি এখন একটি হোটেল এবং পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় স্থান।

সেনাপতি দীঘি

এটি কালকিনি গ্রামে অবস্থিত একটি বড় জলাশয়। ট্যাঙ্কটি সাঁতার, বোটিং এবং মাছ ধরার জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান।

আউলিয়াপুর নীলকুঠি

এটি ১৯ শতকের একটি বিল্ডিং যা একসময় ভ্রমণকারীদের জন্য বিশ্রামের স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হত। ভবনটি এখন একটি জাদুঘর এবং মুঘল যুগের নিদর্শনগুলির একটি সংগ্রহের আবাসস্থল।

ঝাউদি গিরি

এটি ঝাউদি গ্রামে অবস্থিত একটি পাহাড়। পাহাড়টি হাইকিংয়ের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান এবং আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের প্যানোরামিক দৃশ্য দেখায়।

মোস্তফাপুর পার্বতের বাগান

মোস্তফাপুর গ্রামে অবস্থিত এটি একটি বাগান। বাগানটি বিভিন্ন ধরণের ফুল, গাছপালা এবং গাছের আবাসস্থল।

মাদারীপুর জেলার পাবলিক পার্ক সমূহ

মাদারীপুর জেলার কয়েকটি পাবলিক পার্ক গুলোর মধ্যে রয়েছে:

মাদারীপুর পৌরশহর শিশু পার্ক

এটি মাদারীপুর শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পার্ক। এটি পরিবার এবং শিশুদের জন্য বাইরে সময় কাটানোর জন্য একটি চমৎকার জায়গা। পার্কটিতে একটি খেলার মাঠ, একটি সুইমিং পুল এবং বিভিন্ন ধরণের গাছ এবং ফুল রয়েছে।

তালতলা

এটি বেন্স পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত একটি ছোট পার্ক। নদীর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত জায়গা। পার্কটিতে কয়েকটি বেঞ্চ এবং একটি ছোট খেলার মাঠ রয়েছে।

কাজী ফিশ প্রজেক্ট

এটি মাদারীপুর শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি সরকারি মাছের খামার। খামারটিতে একটি বড় পুকুর রয়েছে যেখানে দর্শনার্থীরা বিভিন্ন ধরনের মাছ দেখতে পারেন। খামারটিতে একটি খেলার মাঠ এবং কয়েকটি বেঞ্চ সহ একটি ছোট পার্কও রয়েছে।

মিঠাপুর জমিদার বাড়ি

মিঠাপুর গ্রামে অবস্থিত এটি একটি ১৯ শতকের অট্টালিকা। প্রাসাদটি বিভিন্ন ধরণের গাছ এবং ফুলের সাথে একটি বড় বাগান দিয়ে ঘেরা।

কালীখোলা জমিদার বাড়ি

এটি কালিখোলা গ্রামে অবস্থিত ১৯ শতকের একটি প্রাসাদ। প্রাসাদটি বিভিন্ন ধরণের গাছ এবং ফুলের সাথে একটি বিশাল বাগান দ্বারা বেষ্টিত।

সেনাপতি দীঘি

এটি সেনাপতি গ্রামে অবস্থিত একটি বিশাল জলাধার। জলাধারটি বিভিন্ন ধরণের গাছ এবং ফুল দিয়ে একটি পার্ক দ্বারা বেষ্টিত।

যে কারনে মাদারীপুর জেলা বিখ্যাত

মাদারীপুর জেলা অনেক কিছুর জন্য বিখ্যাত, যার মধ্যে রয়েছে:

  • খেজুরের গুড়: মাদারীপুর খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত, যা বাংলায় “পাটালিগুড়” নামে পরিচিত। এই গুড়টি খেজুরের রস থেকে তৈরি করা হয় এবং বিভিন্ন খাবার যেমন মিষ্টান্ন, তরকারি এবং চাটনিতে ব্যবহৃত হয়।
  • মিষ্টি: মাদারীপুর তার মিষ্টির জন্যও পরিচিত, যা খেজুরের গুড়, গুড় এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়। মাদারীপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু মিষ্টির মধ্যে রয়েছে “মিষ্টি দোই” (মিষ্টি দই), “গুলাব জামুন” (গোলাপের শরবতে দুধের ডাম্পলিং) এবং “রসমালাই” (সিরাপে রসালো দুধের ডাম্পলিং)।
  • পাট: মাদারীপুর এক সময় পাট শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। পাট হল একটি প্রাকৃতিক আঁশ যা ব্যাগ, বস্তা এবং রাগগুলির মতো বিভিন্ন পণ্য তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে মাদারীপুরের পাট শিল্প হ্রাস পায়, তবে জেলাটি এখনও পাটজাত পণ্যের জন্য পরিচিত।
  • ঐতিহাসিক স্থান: মাদারীপুরে শাহ মাদারের দরগাহ, বাজিতপুর প্রোনবান্দা মন্দির এবং কাদম্বরী গণেশ পাগল মন্দির সহ অনেক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। এই সাইটগুলি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং মাদারীপুরের ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি আভাস প্রদান করে।
  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: আড়িয়াল খা নদী, মাদারীপুর লেক এবং ঝাউদি গিরি পাহাড় সহ মাদারীপুর একটি সুন্দর জেলা। এই আকর্ষণগুলি সাঁতার, বোটিং, ফিশিং এবং হাইকিংয়ের সুযোগ দেয়।

সামগ্রিকভাবে, মাদারীপুর একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে একটি আকর্ষণীয় জেলা। খেজুরের গুড়, মিষ্টি, ঐতিহাসিক স্থান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহ বিভিন্ন কারণে এটি দেখার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা।

আজকের : মাদারীপুর জেলা সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর , মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে প্রশ্ন,মাদারীপুর জেলার তথ্য,
মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে জানতে চাই

Leave a Comment