প্রশ্ন সমাধান: ভারতকে ‘ইন্ডিয়া’ বলা হয় কেন?,ভারত কে কেন India বলা হয় , ভারত থেকে India নামকরণের ইতিহাস,India বা ইন্ডিয়া নামকরণের ইতিহাস,Hindusthan নামকরণ,ভারত কেন ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া কেন ভারত,ভারত কেন India?,ভারতকে ‘ভারতবর্ষ’ বলা হয় কেন?
ভারত নাকি ইন্ডিয়া! আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত কে কখনও বলছি ভারত আবার কখনও ইন্ডিয়া। কিন্তু কখনো কি মাথায় প্রশ্ন এসেছে কেন একটি দেশের দুটি নাম কিংবা ভারত কে কেন India বলা হয় ? আপনি যে কোন দেশের কথাই মাথায় আনুন না কেন তাদের নাম সব সময় একটিই বলা হয়ে থাকে। কিন্তু এর ব্যাতিক্রম শুধু কয়েকটি দেশ যেমন মিশর, ভারত কিংবা আরো অল্প কয়েকটি দেশ। আমাদের পূর্বের আলোচনায় আমরা মিশর বা ইজিপ্ট দুটি নাম হওয়ার বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের আজকের আয়োজনে তাই শুধুমাত্র ভারত কে India বা ইন্ডিয়াকে ভারত অর্থাৎ আমাদের প্রতিবেশী দেশটির দুটি নাম হওয়ার কারণ বিস্তারিত আলোচনা করব, জানব ভারত কে কেন India বলা হয় ।
আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত। ভারতের India নাম হওয়ার ইতিহাসটি বেশ চমকপ্রদ। মূলত মহাভারতের ঐতিহাসিক একটি চরিত্র থেকে ভারতের ”ভারত” নামটি এসেছে। মহাভারতের সেই কাহিনীটি নাহয় আরেকদিন বলা যাবে। আজ আলোচনা করা যাক ভারত থেকে দেশটার নাম ইন্ডিয়া হয়ে উঠার ইতিহাস নিয়ে।
Hindusthan নামকরণ
India বা ইন্ডিয়া নামটি এসেছে মূলত ইরান এবং গ্রিস এ দুটি দেশের কল্যাণে। ইন্ডিয়া নামটি উৎপত্তির ইতিহাস আলোচনার পূর্বে বলা যাক ভারতের আরেকটি নাম “Hindustan” বা হিন্দুস্থান নাম হওয়ার ইতিহাস। বাংলা মিডিয়ামে পড়ুয়া আমাদের সকলেরই সমাজ বিজ্ঞান বইয়ের কল্যাণে সিন্ধু সভ্যতা নিয়ে কম বেশি ধারণা রয়েছে কিংবা ধারণা না থাকলেও নামটি অবশ্যই শুনেছি। তৎকালীন সময়ে সিন্ধু নদীর অববাহিকা জুড়ে যে এক বিশাল জনগোষ্ঠীর বাস ছিলো, সেই পুরো জনগোষ্ঠীকে চিন্হিত বা নির্দিষ্ট করে বোঝানোর জন্য সিন্ধু নামে ডাকা হতো। আর সেই বিশাল জনগোষ্ঠীর অধিবাসীরাই আমাদের বর্তমানের ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভূটান ও নেপালের বাসিন্দা।
একটু কষ্ট করে গুগল ম্যাপে সার্চ করলেই খেয়াল করবেন যে সিন্ধু নদী টি বয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের পাশ দিয়ে। মুখল শাসকগন যখন সিন্ধু অঞ্চলে আসে তখন থেকে তাদের পার্সিয়ান বা ফার্সি ভাষা এর কল্যানে “সিন্ধু” নামটি হিয়ে গেলো “হিন্দু” নামে। ফার্সি বা পার্সিয়ান ভাষায় সিন্ধু কে বলা হয় হিন্ধু। আর সেই থেকেই মুঘলরা এ অঞ্চলটির নাম রাখলো Hindustan বা হিন্দুস্থান। ফার্সি ভাষায় stan মানে হলো ইংরেজিতে land of। অর্থাৎ সে অনুযায়ী Hindustan শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় land of Hindus অর্থাৎ বাংলায় হিন্দু/ সিন্ধুদের আবাসস্থল। একই ভাবে এই ফার্সি stan শব্ধটির প্রভাবেই অনেক মুসলিম প্রভাবিত দেশের নামের শেষেই stan শব্দটি ব্যবহার হয় যেমন, Pakistan, Afghanistan, Kazakhstan ইত্যাদি।
সিন্ধু নামটি যেহেতু ফার্সি শব্ধের মাধ্যমে বিকৃত হয়ে হিন্দু তে পরিণত হয়েছে সে হিসেবে আমরা সিন্ধু জনগোষ্ঠীর বাসিন্দা হিসেবে সবাইকেই সিন্ধু/হিন্দু বলা যায়। কেননা সিন্ধু শব্দটিই পরিবর্তীত হয়ে হয়েছে হিন্দু। এবং এটিই হলো হিন্দু এবং হিন্দুস্তান নামটির আসল ইতিহাস। বর্তমানে প্রচলিত হিন্দু শব্দটি যা ধর্মের পরিচয় হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে তার শুরু হয়েছে আরো অনেক পরে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
India বা ইন্ডিয়া নামকরণের ইতিহাস
এবার আসা যাক ইন্ডিয়া নামকরণের ইতিহাসে। আর এই নামের পেছনে মূল অবদান গ্রীকদের। পারস্য সম্রাজের অন্য পাশের প্রতিবেশি গ্রীকদের কল্যানে পার্সিয়ান ভাষা অনুযায়ী দেয়া Hindu শব্দটিই গ্রীকদের কল্যাণে হয়ে যায় “Indos” (ইন্দোস)। এরপর Indos বা ইন্দোস শব্দটি রোমানদের কল্যাণে রূপ লাভ করে “Indus” (ইন্ডাস) এ। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান ইংরেজি ভাষাভাষীদের কাছে সিন্ধু নদ পরিচিত হয়ে উঠে Indus River নামে। আর সর্বশেষ এই Indus এর উপর শেষ পেরেক ঠুকে Indus কে India রূপদান করে ল্যাটিন ভাষা। ল্যাটিন শব্দ ia এর মানে হলো ইংরেজিতে land of। যেমন অনেক দেশের নামের পেছনে এই ল্যাটিন ia. যুক্ত রয়েছে যেমন, Arabia, Bolivia, Malaysia। অর্থাৎ Malaya এর সাথে ia যুক্ত হয়ে land of Malaya হয়েছে Malaysia। ঠিক তেমনি Land of Indus বুঝাতে ia যুক্ত হয়ে হয়েছে India।
পরবর্তীতে ব্রিটিশরা যখন ভারতবর্ষে আসে এবং শাসন ক্ষমতা দখল করে তারা এই India শব্দটিকেই গ্রহন করে এবং অফিসিয়াল ভাবে এর ব্যবহার শুরু করে। প্রথমদিক অনেক ভারতীয়দেরই এই India বা ইন্ডিয়া নামটি নিয়ে আপত্তি ছিল। ব্রিটিশদের দেয়া এই নামটি ব্যবহারে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলো। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার India নামটি ঢালাওভাবে এবং ব্যপকহারে ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে India নামটির গ্রহনযোগ্যতা তৈরী হয়। এবং সর্বশেষ ১৯৪৭ সালে ভারতের সংবিধানে “ভারত” এবং “India” দুটি নামকেই বৈধতা ও সমান মর্যাদা প্রদান করা হয়।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- ইজারা দাতার প্রত্যক্ষ ইজারার অর্থায়ন পদ্ধতি ধারণা সহ আলোচনা কর
- ইজারা ও মালিকানা পার্থক্য । ইজারা vs মালিকানা পার্থক্য
- ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ, ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো বিস্তারিত আলোচনা কর
- ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর
- অপারেশন চুক্তি কি ও ব্ল্যাক সোলস মডেল ব্যাখ্যা কর
- ফাইন্যান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে কি বুঝ উদাহরণসহ বিস্তারিত আলোচনা কর