বয়ঃসন্ধি কী?,বয়ঃসন্ধি কেন ও কীভাবে হয়?,বয়ঃসন্ধি কীভাবে কিশোর-কিশোরীদের দেহে ও মনে প্রভাব ফেলে?, কী করা উচিৎ বয়ঃসন্ধি ,বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন, কৈশোর ও বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যা এবং সমাধান,বয়ঃসন্ধি: কিশোর কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকাল কখন আসে

বিষয়: বয়ঃসন্ধি কী?,বয়ঃসন্ধি কেন ও কীভাবে হয়?,বয়ঃসন্ধি কীভাবে কিশোর-কিশোরীদের দেহে ও মনে প্রভাব ফেলে?, কী করা উচিৎ বয়ঃসন্ধি ,বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন, কৈশোর ও বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যা এবং সমাধান,বয়ঃসন্ধি: কিশোর কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকাল কখন আসে, বয়ঃসন্ধিতে কিশোর-কিশোরীদের দৈহিক পরিবর্তন কেন ঘটে?,বয়ঃসন্ধিকাল কাকে বলে?, বয়ঃসন্ধিকালে পরিবর্তন ও পরিবর্তিত

শৈশব পেরিয়ে তারুণ্যে পা রাখার আগে প্রতিটি ছেলে-মেয়ের দেহে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় যা তাকে পরবর্তীতে প্রজননক্ষম পূর্ণাঙ্গ পুরুষ বা নারীতে পরিণত হতে সাহায্য করে। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখে না কিংবা ভুল ধারণার জন্ম দেয়। কোনোভাবেই তারা বুঝতে চান না যে এটা একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা। যা পৃথিবীর প্রতিটি নারী-পুরুষের জীবনে ঘটে থাকে।

এখনো কি বলবেন বয়ঃসন্ধিতে শারীরিক পরিবর্তনের জন্য কিশোর-কিশোরীরা দায়ী?
বয়ঃসন্ধি কী?

ছেলেদের ক্ষেত্রে সাধারণত ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে পরিলক্ষিত হলেও মেয়েদের বেলায় পরবির্তনের সময়কালটা কিছুটা আগে। সাধারণত ১১-১২ বছর বয়সে একজন মেয়ে তার দেহে পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে তা ৮-৯ বছরেও দেখা দিতে পারে। অনেকের আবার কিছুটা দেরিতে যেমন ১৩ বছর বয়স থেকে শারীরিক পরিবর্তন আসে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় দেহে বিশেষ হরমোন নিঃসরণ শুরু হওয়ার ফলেই এই শারীরিক পরিবর্তন আসতে শুরু করে।

বয়ঃসন্ধিতে কেন ও কীভাবে হয়?

ছেলে মেয়ে উভয়ই একটা বয়সে উপনীত হলে মস্তিষ্ক গোনাডোট্রপিন (জিএনআরএইচ) নামক হরমোন নিঃসরণ শুরু হয়। এই হরমোন দেহের পিটুইটারি গ্রন্থিতে এসে আরো দুটি হরমোন নিঃসরিত করে যা রক্তস্রোতে মিশে দেহে নতুন উদ্দীপিনা সৃষ্টি করে। হরমোনজনিত এই প্রক্রিয়া একই হলেও এই হরমোনগুলো ছেলে ও মেয়ের দেহের ভিন্ন ভিন্ন অংশে কাজ করে। এর ফলে দেহে যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টির পাশাপাশি বিপরীত লিঙ্গ (কখনো কখনো সমলিঙ্গ) এর প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধির পাশাপাশি কন্ঠস্বরে পরিবর্তন কিংবা ঠোঁটের উপর গোঁফের রেখা লক্ষ্য করা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রজঃস্রাব আরম্ভ হওয়ার পাশাপাশি স্তনসহ শরীরের আকৃতিগত পরিপূর্ণতা আসে।

বয়ঃসন্ধিতে কীভাবে কিশোর-কিশোরীদের দেহে ও মনে প্রভাব ফেলে?

ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের দেহে ও মনে বয়ঃসন্ধিজনিত পরিবর্তনের প্রভাব বেশি। শৈশবের নির্ভেজাল সময় পেরিয়ে এসে হঠাৎ এই শারীরিক পরিবর্তন মোকাবেলার মানসিক শক্তি অর্জন করা অনেক মেয়ের জন্যই দুরহ হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে যদি যোগ হয় রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থা তবে তা যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঁ। শারীরিক এই পরিবর্তন সম্পর্কে আগে থেকে পরিষ্কার কোনো ধারণা না থাকায় বয়ঃসন্ধির প্রথম দিকটায় এদেশের অধিকাংশ মেয়েদেরই বেশ বিব্রতকর সময় পার করতে হয়। শহরাঞ্চলে এই বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলেও গ্রামীন জনপদে অবস্থাটা এখনো শোচনীয়।

অভিভাবকদের অনাগ্রহ, সঠিক শিক্ষা এবং তথ্যের অভাবে এসব অঞ্চলের মেয়েরা বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে প্রচন্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকে। এর সঙ্গে ঋতুস্রাবের মতো শারীরিক উপসর্গের কারণে অধিকাংশ কিশোরীর মনে অজানা ভয় কাজ করে। মনের মধ্যে নানা ভয় এবং প্রশ্নের উদ্রেকের ফলে কিশোরীর আত্মবিশ্বাসের পারদটা যে তলানিতে গিয়ে ঠেকে তা বলাই বাহুল্য।

এছাড়া এই সময়টায় ছেলে এবং মেয়ের উভয়েরই আচরণ এবং আবেগীয় পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়। বয়ঃসন্ধি নিয়ে মনে নানা সংকোচ এবং চিন্তাধারায় পরিবর্তনের কারণে নিয়মিত পরিবর্তিত আচরণ দেখা যায়। অনেক সময় অল্পতে রেগে যাওয়া কিংবা খিটখিটে মেজাজও লক্ষ্য করা যায়। এই সময়টায় ব্যক্তি নতুনরুপে আত্মপ্রকাশ করে বলে আত্মমর্যাদাবোধও বেড়ে যায়। এর ফলে অল্পতেই প্রতিক্রিয়া দেখানোটাও স্বাভাবিক আচরণে পরিণত হয়। এছাড়া অন্য কারো সাথে নিজের শারীরিক গঠনের তুলনা করে বা অন্যের আচরণ নকল করতে গিয়ে হতাশায় ডুবে যায় তারা।

কী করা উচিৎ বয়ঃসন্ধিতে?

বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে। অথচ এ সময়টায় অভিভাবকদের সঙ্গ সবচেয়ে বেশি দরকার। এই সময়টায় বন্ধু বা সঙ্গ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অসৎ সঙ্গের পাল্লায় পড়ে পর্নোগ্রাফি এবং ইভ টিজিংয়ের মতো বিকৃত কাজে লিপ্ত হয় অনেক কিশোর। উভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণের অক্ষমতার কারণে আত্মবিধ্বংসী কাজে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। তাই সন্তানকে বন্ধুর মত বোঝাতে হবে যে এটা শুধুই একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। এই সময়ে কিশোর-কিশোরীরা আবেগ অনেক বৃদ্ধি পায়। তাই শুধু বকাঝকা না করে সঠিকভাবে তাকে সামনের দিনগুলোর জন্য উৎসাহ দিতে হবে। আর কখনোই মনে করা যাবে না এই শারীরিক পরিবর্তনের পেছনে অন্য কোনো বিষয় রয়েছে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

Leave a Comment