ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নে বিবেচ বিষয়গুলো লিখ, ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিকল্পনা প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী,ব্যবসায় পরিকল্পনার উপাদানসমূহ ব্যাখ্যা কর, ব্যবসায় পরিকল্পনার হাতিয়ারগুলো আলোচনা কর

প্রশ্ন সমাধান: ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নে বিবেচ বিষয়গুলো লিখ, ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিকল্পনা প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী,ব্যবসায় পরিকল্পনার উপাদানসমূহ ব্যাখ্যা কর, ব্যবসায় পরিকল্পনার হাতিয়ারগুলো আলোচনা কর

যে-কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিকল্পনার গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যবসায় সফলতা অর্জনের উদ্দেশ্যে পূর্ব হতেই সুপরিকল্পিত উপায়ে ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পাদনের জন্য যে প্রতিবেদন বা নকশা তৈরি করা হয় তাকে ব্যবসায় পরিকল্পনা বলা হয়। যেহেতু একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন সম্পূর্ণভাবে ব্যবসায় পরিকল্পনার উপর নির্ভরশীল তাই এই ব্যবসায় পরিকল্পনাতে এর বিভিন্ন উপাদান বা দিকসমূহ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকা দরকার। একটি ব্যবসায় পরিকল্পনায় যে সকল উপাদান বা দিক সাধারণত থাকে, নিম্নে সেগুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো :

১. প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট উপাদান : নিম্নে আলোচনা করা হলো :

(ক) ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি : যে-কোনো প্রতিষ্ঠানের সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উপরে। ব্যবসায় পরিকল্পনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চিত্র, ধরন, ব্যবস্থাপনা দর্শন ইত্যাদি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। প্রতিষ্ঠানের কর্মী বাহিনী কিভাবে নিয়োজিত হবে, তাদেরকে কিভাবে নির্দেশনা প্রেষণা দিতে হবে, সংগঠন কাঠামো কিরূপ হবে ইত্যাদি বিষয়ের সুষ্ঠু ব্যাখ্যা ব্যবসায়, পরিকল্পনায় উল্লেখ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ব্যাখ্যা থাকে :

২. সাংগঠনিক লক্ষ্য : লক্ষ্য হলো পরিকল্পনার অভিপ্রেত ফলাফল। ব্যবসায় পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যের স্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকে ।

৩. সংগঠন : বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের সাংগঠনিক কাঠামো অনুসরণ করা হয়। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো অনুসরণ করা হয়। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো কিরূপ হবে তা উল্লেখ থাকে ।


আরো ও সাজেশন:-

৪. কর্মী সংস্থান : কর্মী বাহিনী একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সঞ্জীবনী শক্তি হিসেবে কাজ করে। কিভাবে কোথা থেকে কর্মী সংগ্রহ করা হবে, কিভাবে কর্মী নির্বাচন করা হবে কর্মী প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ থাকবে কিনা; কর্মী উন্নয়ন ও মূল্যায়নের পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়ার ব্যবসায় পরিকল্পনার উল্লেখ থাকবে। সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় এমন অবস্থানই হবে ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান। যেমন কাঁচামালের সহজ প্রাপ্তি, পর্যাপ্ত মূলধন প্রাপ্তি ক্রেতা সমাহার ইত্যাদি। মোট কথা ব্যবসায়ের মূল উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ব্যবসার অবস্থান কোথায় হবে তা ব্যবসার পরিকল্পনায় উল্লেখ থাকবে।

(খ) সেবা বা পণ্য সম্পর্কিত উপাদান : ব্যবসায় মানেই পণ্য বা সেবা উৎপাদন ও বণ্টন সংক্রান্ত কার্যসম্পাদনের মাধ্যমে মুনাফার্জন । অতএব, কোনো ধরনের পণ্য বা সেবার ব্যবসা করা হবে সে সম্পর্কিত তথ্য ব্যবসায় পরিকল্পনার অন্যতম গুরুতপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচতি হবে। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর উল্লেখ থাকে ।

১. ব্যবসায় উদ্যোক্তার পণ্য বা সেবার ধরন কি হবে?

২.এই পণ্য বা সেবাতে কি কি সুবিধা বিদ্যমান ?

৩. পণ্যের বিক্রয় উত্তর সেবা প্রদান করা হবে কিনা?

৪. পণ্যের কোনো ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি আছে কিনা?

৫. নগদ মূল্যে ক্রয়ে কোনো সুবিধা আছে কিনা?

৬. পণ্য বা সেবার বিশেষ কোনো বিশেষত্ব আছে কি?

উপরিউক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও পণ্যের প্যাটেন্ট স্বত্ব বা ট্রেডমার্ক সম্পর্কে তথ্য ব্যবসায় পরিকল্পনায় উল্লেখ থাকে।

(গ) অর্থসংস্থান উপাদান : অর্থ ছাড়া কোনো ব্যবসায় কার্যাবলি সম্পাদিত হতে পারে না। একটি ব্যবসায় পরিকল্পনায় অর্থ সংক্রান্ত কতিপয় গুরুত্ব পূর্ণ উপাদান উল্লেখ থাকে।

১. অর্থায়ন বা বিনিয়োগ : ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিনিয়োগের পরিমাণ কত হবে, ে বিনিয়োগযোগ্য মূলধনের মধ্যে উদ্যোক্তার নিজস্ব মূলধন, ঋণকৃত তহবিলের পরিমাণ, সম্ভাব্য অতিরিক্ত মূলধনের পরিমাণ, উদ্যোক্তার ইক্যুইটি, অর্থ সংস্থানের উৎস ইত্যাদি বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যবসায় পরিকল্পনায় থাকবে।

২. আর্থিক অবস্থা : ব্যবসায়ের বর্তমান আর্থিক অবস্থা ব্যবসায় পরিকল্পনার অন্যতম একটি উপাদান হিসেবে বিবেচিত হবে। বিগত বছরের লাভ ক্ষতির পরিমাণ, সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ ইত্যাদি একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা জানার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণত নিম্নোক্ত পক্ষগণের উদ্দেশ্যকে আর্থিক ব্যবসায় পরিকল্পনার

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

উপাদান হিসেবে বিবেচনায় আনা হয় :
১. নিয়ন্ত্রণকারী (Regulator);
২. ঋণদাতাগণ (Debt holders ) ;
৩. শেয়ার ক্রয় সাপেক্ষে মালিক (Woner’s by share holder)

৪. ব্যবস্থাপক পক্ষ ( Management )

(ঘ) বেতন, ভাতা ও ক্ষতিপূরণ : ব্যবসায় পরিকল্পনায় উল্লেখিত বিভিন্ন প্রকার উপাদানের মধ্যে বেতন ভাতা ও ক্ষতিপূরণ হলো অন্যতম একটি আর্থিক উপাদান। এ প্রতিষ্ঠানে কোনো Level কতজন শ্রমিক কাজ করবে কার বেতন ভাতা কেমন হবে, তাদের অঙ্গহানি বা তদ্রুপ কোনো ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ কিরূপ হবে। ইত্যাদি তথ্যসহ স্থায়ীদের বোনাস, অতিরিক্ত ভাতা ওভার টাইম ইত্যাদি তথ্য ব্যবসায় পরিকল্পনায় উল্লেখ থাকবে ।

৪. বাজার সম্পর্কিত উপাদান : একটি আদর্শ ব্যবসায় পরিকল্পনায় বাজার সম্পর্ক উপাদান অবশ্যই অন্তর্ভূক্ত থাকবে। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ক্রেতা, প্রতিযোগী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ভোক্তার চাহিদা ও রুচি, শেয়ার বাজার অবস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

বাজার সম্পর্কিত উপাদানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো :

(ক) শিল্প : একই জাতীয় পণ্য উৎপাদনকারী শিল্পের বর্তমান অবস্থা, উদ্যোক্তার ধরন, বাজার আয়তন, বাজার প্রতিযোগীদের অবস্থান ও কলাকৌশল, তাদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর গুণাগুণ, বিশেষ বৈশিষ্ট্য, তাদের প্রবৃদ্ধির হার ইত্যাদি বিষয়ের উল্লেখ ব্যবসায় পরিকল্পনায় থাকবে।

(খ) ভোক্তা : ব্যবসায় পরিকল্পনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো বর্তমান ও সম্ভাব্য ক্রেতা। ক্রেতারা বর্তমানে কি পণ্য ব্যবহার করছে, তাদের রুচি কি হবে, তাদের রুচির কিভাবে পরিবর্তন হচ্ছে, তারা কোন ধরনের পণ্য প্রত্যাশা করে, ক্রেতাদের অবস্থান, আর্থিক অবস্থা ইত্যাদির তথ্য ব্যবসায় পরিকল্পনায় থাকতে হবে।

(গ) প্রতিযোগিতা : ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিযোগী কারা তাদের তালিকা, তাদের শেয়ার বাজার, তাদের কলাকৌশল, শক্তি ও দুর্বলতাসহ ইত্যাদি বিষয় ব্যবসা পরিকল্পনায় থাকতে হবে।

৫. ঝুঁকি : ব্যবসায় মানেই ঝুঁকি বিদ্যমান। প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য ঝুঁকিসমূহ আগেই নির্ধারণ করতে হবে এবং ব্যবসায় পরিকল্পনায় সেগুলোর উল্লেখ থাকতে হবে। যে সমস্ত কারণে ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে সেগুলোর একটি তালিকা যেমন- প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, মানুষের আয় ক্ষমতা হ্রাস, সরকারি নীতি, নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ ইত্যাদি ঝুঁকিগত উপাদানগুলো ব্যবসায় পরিকল্পনায় উল্লেখ থাকবে ।

৬. সম্ভাব্য বিক্রয় : ব্যবসায় পরিকল্পনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্ভাব্য বিক্রয়ের পরিমাণ। সম্ভাব্য বিক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখ থাকায় উৎপাদন সে অনুযায়ী করা যায়। মুনাফার পরিমাণও নির্ধারণ করা সহজ হয়।

৭. লাভ লোকসান বণ্টন : ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় মূলত মুনাফার্জনের উদ্দেশ্যে। প্রত্যাশিত মুনাফার কি পরিমাণ লভ্যাংশ হিসাবে প্রদান করা হবে, ঋণ পরিশোধ হবে কিভাবে, অবশিষ্ট মুনাফাকে পুণঃবিনিয়োগ করা হবে কোথায় ইত্যাদি তথ্য ব্যবসায় পরিকল্পনায় থাকবে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ব্যবসায় পরিকল্পনা একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যঅর্জনের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। এর সাথে সম্পৃক্ত থাকে বিভিন্ন পক্ষ । অর্থাৎ ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবসায় পরিকল্পনায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই একটি ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সহায়তা গ্রহণ করা উচিত। যাতে সকল উপাদান বিবেচনায় এনে একটি সুন্দর ব্যবসায় পরিকল্পনা তৈরি হয় ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment