ব্যক্তি সমাজকর্মের ধারণা, উপাদান, নীতিমালা উল্লেখপূর্বক ব্যক্তি সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া উপস্থাপন করুন, hsc উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১১শ শ্রেণির সমাজকর্ম ১ম পত্র ৪র্থ অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান ২০২১

শ্রেণি: ১১শ/ hsc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: সমাজকর্ম ১ম পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 04 বিষয় কোডঃ 1862
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ ব্যক্তি সমাজকর্মের ধারণা, উপাদান, নীতিমালা উল্লেখপূর্বক ব্যক্তি সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া উপস্থাপন করুন।

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

ব্যক্তি সমাজকর্মের ধারণা

ব্যক্তি সমাজকর্ম সমাজের ক্ষুদ্রতম একক ব্যক্তিকে নিয়ে কাজ করে। ব্যক্তি সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের এমন একটি মৌলিক পদ্ধতি, যা সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সুপ্ত প্রতিভা, দক্ষতা ও ক্ষমতার বিকাশ সাধন করে নিজস্ব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিকে এমনভাবে স্বাবলম্বী করে তোলে যাতে ব্যক্তি নিজেই নিজের সমস্যার কার্যকর মোকাবিলা করে সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে সামাজিক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়। ব্যক্তি সমাজকর্ম মূলত ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমস্যা মোকাবিলায় উদ্ভব হয়েছে।

ব্যক্তি সমাজকর্মের ধারণায় এই পদ্ধতিরই উদ্ভাবক ম্যারি ই. রিচমণ্ড বলেন, ব্যক্তি সমাজকর্ম হলো সেই সকল প্রক্রিয়ার সমষ্টি, যা ব্যক্তিকে তার সামাজিক পরিবেশ ও সমাজের অন্যান্য মানুষের সাথে সচেতনভাবে কার্যকর সামঞ্জস্যবিধানের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে।

ওয়ার্নার বোহেমের মতে, ব্যক্তি সমাজকর্ম সমাজকর্মের এমন একটি পদ্ধতি যা ব্যক্তির কার্যসম্পাদন ক্ষমতা উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যক্তির সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার উন্নয়ন, পুনরুদ্ধার এবং বৃদ্ধির জন্য ব্যক্তির মনো-সামাজিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে। আর এই হস্তক্ষেপ তখনই ঘটে যখন ব্যক্তি বা তার দল ও সমষ্টির কোনো সদস্য মনে করে যে, ব্যক্তির কার্য সম্পাদন ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বা ণ্ডমকির সম্মুখীন হয়েছে।

উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর বিশ্লেষণের প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ব্যক্তি সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের এমন একটি পদ্ধতি যা ব্যক্তিকে তার নিজস্ব ও সমষ্টির সম্পদের সাহায্যে মনো-সামাজিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম করে তোলে যাতে ব্যক্তি উন্নততর সামঞ্জস্যবিধান ও স্বাভাবিক সামাজিক ভূমিকা পালন করতে পারে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদান

ব্যক্তি সমাজকর্ম কতগুলো অপরিহার্য বিষয়কেন্দ্রিক আবর্তিত সাহায্যপ্রক্রিয়া। আর এ প্রক্রিয়ায় যে সকল বিষয় অপরিহার্য তাই ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদান। ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদানসমূহ চিহ্নিত করতে গিয়ে এইচ. এইচ. পার্লম্যান

১। ব্যক্তি : ব্যক্তি সমাজকর্মের মূল উপাদান হলো ব্যক্তি। যাকে কেন্দ্র করে মূলত ব্যক্তি সমাজকর্ম পরিচালিত হয়। পেশাগতভাবে ব্যক্তি হলো ক্লায়েণ্ট বা সাহায্যার্থী। তবে ব্যক্তি সমাজকর্মে ব্যক্তি বা কøায়েণ্ট বা সাহায্যার্থী বলা যাবে এমন ব্যক্তিকে যার মধ্যে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ বিদ্যমান থাকে।

ক. সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক বা আর্থিক সমস্যাগ্রস্ত যে কোনো বয়সের ব্যক্তি;

খ. যখন ব্যক্তি নিজের প্রচেষ্টায় সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয় এবং সমস্যা মোকাবিলায় অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হয়;

গ. ব্যক্তি নিজে বা তার পরিবার বা সমাজের যে কোনো সদস্য এই সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সমাজকর্মীর সাহায্য কামনা করে।

এ প্রসঙ্গে এইচ. এইচ. পার্লম্যান বলেন, ব্যক্তিটি হলেন একজন পুরুষ, মহিলা বা শিশু যে কেউ, যে মনে করে বা যার সম্পর্কে মনে করা হয় যে, তার সামাজিক বা আবেগীয় ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে সাহায্যের প্রয়োজন। তা হতে পারে দৃশ্যমান, হতে পারে পরামর্শমূলক। যখন ব্যক্তি এ ধরনের সাহায্য নিতে শুরু করে তখন তাকে ক্লায়েণ্ট বা সাহায্যার্থী বলা হয়।

২। সমস্যা : ব্যক্তি সমাজকর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সমস্যা। সমস্যা হলো ব্যক্তির অস্বাভাবিক আর্থ- সামাজিক ও মনো-দৈহিক অবস্থা, যা ব্যক্তিকে তার স্বাভাবিক ভূমিকা পালনে বাধা সৃষ্টি করে সামগ্রিক জীবনব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। আর এ অবস্থা থেকে ব্যক্তি পরিত্রাণ পেতে চায়। ব্যক্তির এ সমস্যা দুধরনের হতে পারে। যথা : ক. ব্যক্তির চাহিদার অপূরণজনিত সমস্যা। যেমনÑ শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন ও আর্থিক সমস্যা, যা ব্যক্তির স্বচ্ছল জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি করে।

খ. বিভিন্ন চাপমূলক অবস্থার ফলে সৃষ্ট সমস্যা। যেমনÑ অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা, সামাজিক বিচ্ছিনতা ও সামঞ্জস্যহীনতা, আন্তব্যক্তিক ও আন্তপারিবারিক দ্বন্দ্ব, ব্যক্তিত্বের প্রতিবন্ধকতা বা আচরণগত সমস্যা যা ব্যক্তির সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতাকে অকার্যকর করে তোলে।

৩। স্থান : ব্যক্তি সমাজকর্মের সেবাদান প্রক্রিয়া একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আওতায় পরিচালিত হয়। সমাজকর্মের পরিভাষায় একে বলা হয় স্থান বা ংড়পরধষ ড়িৎশ ধমবহপু। ব্যক্তি সমাজকর্ম প্রতিষ্ঠান হলো একটি সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠান যা ব্যক্তির সমস্যা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় বস্তুগত ও অবস্তুগতসেবা প্রদান করে থাকে। ব্যক্তি সমাজকর্মের সেবাদান

প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমনÑ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মুখ্য সামাজিক ও গৌণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ কার্যক্রম প্রতিষ্ঠান।

৪। পেশাদার প্রতিনিধি : ব্যক্তি সমাজকর্মের সামগ্রিক কার্যক্রম, যার দ্বারা পরিচালিত হয়, তাকেই পেশাদার প্রতিনিধি বলা হয়। পেশাদার প্রতিনিধি সমাজকর্মী হিসেবে অধিক পরিচিত। ব্যক্তি সমাজকর্ম প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত পেশাদার ব্যক্তিকে ব্যক্তি সমাজকর্মী বলা হয়। যিনি ব্যক্তি সমাজকর্মের জ্ঞান, দক্ষতা এবং কলাকৌশল সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত থাকেন। এছাড়া তিনি ব্যক্তি সমাজকর্মী প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য, নীতি, কর্মসূচি, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত থাকেন এবং ব্যক্তি সমাজকর্মের জ্ঞান, দর্শন, দক্ষতা, কৌশল প্রয়োগে দক্ষ তিনি ব্যক্তির সমাধানে সমাজকর্মের নৈতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে থাকেন।

৫। প্রক্রিয়া : ব্যক্তি সমাজকর্মের সর্বশেষ উপাদান হলো প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তি সমাজকর্মের সামগ্রিক সেবা কার্যক্রমকে শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে পরিচালিত হতে সাহায্য করে। ব্যক্তি সমাজকর্ম প্রক্রিয়া হলো সাহায্যার্থীকে সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার জন্য কতগুলো পর্যায়ক্রমিক কার্যক্রমের সমষ্টি। আর এ কার্যক্রম পাঁচটি স্তরে সম্পন্ন হয়। যথাÑ ক) মনো-সামাজিক অনুধ্যান, খ) সমস্যা নির্ণয়, গ) সমাধান, ঘ) মূল্যায়ন এবং ঙ) অনুসরণ। এ স্তরগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তি সমাজকর্মীর সাথে সাহায্যার্থীর পেশাগত সম্পর্ক সৃষ্টি হতে শুরু করে সমস্যা নির্ণয়, সমাধান ব্যবস্থায় বস্তুগত ও অবস্তুগত সেবা সবকিছুই পর্যায়ক্রমিক ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ব্যক্তি সমাজকর্মের নীতিমালা

ব্যক্তি সমাজকর্ম হলো সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের এক গতিশীল সেবাদান প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী সেবাদানের কতিপয় নির্দেশনামূলক নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যক্তি সমাজকর্ম অনুশীলন করে থাকেন। নিচে ব্যক্তি সমাজকর্মের নীতিসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. গ্রহণ নীতি : ব্যক্তি সমাজকর্মে গ্রহণ নীতি বলতে বোঝায় সাহায্যার্থীকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে তাকে সম্মান প্রদর্শন, ব্যক্তি মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব প্রদান, সমস্যার যথাযথ মূল্যায়ন এবং তার প্রতি সেবাদানের সদিচ্ছা নির্দেশ করে সমাজকর্মী কর্তৃক তাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করা। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি সমাজকর্মের সফলতা অনেকাংশেই গ্রহণনীতির উপর নির্ভরশীল। তাই গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তি সমাজকর্মীর মধ্যে আন্তরিকতা, শ্রদ্ধাবোধ, মনোযোগ, আগ্রহ, সততা, অন্যের অনুভূতিকে ভাগাভাগি করে নেয়ার সদিচ্ছা থাকতে হবে। এটি যেহেতু একটি দ্বিমুখী প্রক্রিয়া তাই এক্ষেত্রে সমাজকর্মী ও ব্যক্তি উভয়েরই প্রতিক্রিয়া আবশ্যক।

২. যোগাযোগ নীতি : সাধারণভাবে যোগাযোগ বলতে তথ্যের আদানপ্রদানকে বোঝানো হয়। সমাজকর্মে যোগাযোগ বলতে সাহায্যার্থী ও সমাজকর্মীর মধ্যে সমস্যা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি, ধারণা, অনুভূতির আদানপ্রদানকে বোঝায়। ব্যক্তি সমাজকর্মে যোগাযোগ নীতি অনুসরণের ফলে সমাজকর্মী ও সাহায্যার্থী একে অপরের বক্তব্য, অভিব্যক্তি এবং প্রতীকী আচরণের অন্তর্নিহিত বিষয় উপলব্ধি করতে পারে।

৩. অংশগ্রহণ নীতি : ব্যক্তি সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য হলো ব্যক্তিকে তার সমস্যা সমাধানে সক্ষম করে তোলা। এক্ষেত্রে সমাধান প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি আবশ্যক। ব্যক্তির সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ এবং হারানো ক্ষমতার পুনরুদ্ধার ও সুসংহতকরণের মাধ্যমে তার ভূমিকাকে সচল করে তোলার লক্ষ্যে সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক। এছাড়া সাহায্যার্থীর মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করতে সক্রিয় অংশগ্রহণ সহায়তা করে। আবার সমস্যাটি যেহেতু ব্যক্তির নিজের তাই তা সমাধানের বিষয়টি সমাজকর্মী ও সাহায্যার্থী উভয়েরই সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে হওয়া বাঞ্ছনীয়।

৪. গোপণীয়তার নীতি : ব্যক্তি সমাজকর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো সাহায্যার্থীর বিভিন্ন তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা। ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সমাজকর্মী ব্যক্তি, তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী বা সহকর্মী বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যক্তির বিভিন্ন গোপণীয় বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তি তার সমস্যার যথাযথ সমাধান যেমন প্রত্যাশা করে, তেমনি প্রদেয় তথ্য যাতে গোপণ রাখা হয় সেটিও দৃঢ়ভাবে কামনা করে।

৫. ব্যক্তিস্বাতন্ত্রীকরণ নীতি : সমাজকর্মের দৃষ্টিকোন থেকে প্রত্যেকটি মানুষ একটি স্বতন্ত্র সত্ত্বা। ক্ষমতা, বুদ্ধি, আবেগ, অনুভূতি, যোগ্যতা, সামর্থ্য ইত্যাদি অনুযায়ী প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা আলাদা। যার ফলে ব্যক্তির সক্ষমতা, দুর্বলতা, উপযোজন ক্ষমতা, সমস্যা সম্পর্কে অনুভূতি ও ধারণা একে অন্যের থেকে ভিন্ন প্রকৃতির। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে আলাদা ও স্বতন্ত্র বিবেচনায় এনে সমস্যা সমাধানে ব্যক্তি সমাজকর্ম সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

৬. আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার নীতি : ব্যক্তি সমাজকর্মের এই নীতিটি সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির নিজস্ব পছন্দ- অপছন্দ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতাকে নির্দেশ করে। সমাজকর্ম যেহেতু একটি অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম সেহেতু ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। এক্ষেত্রে সাহায্যার্থী তার সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ, চিন্তা-চেতনা, সমাধান ব্যবস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রে তার মতামত প্রদান করে থাকে এবং তার মতামতকে যথেষ্ট অগ্রাধিকার দিয়ে যথাযথ মূল্যায়নও করা হয়। ব্যক্তি সমাজকর্মী এক্ষেত্রে সাহায্যর্থীকে যথাযথভাবে সহায়তা ও দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকে।

৭. আত্মসচেতনতার নীতি : সমাজকর্মের এই নীতিটি শুধুমাত্র ব্যক্তি সমাজকর্মীর জন্য প্রযোজ্য। এই নীতিটি মূলত সমাজকর্মীর নিজস্ব সফলতা ও দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন হওয়াকে নির্দেশ করে। একজন মানুষ হিসেবে সমাজকর্মীর মধ্যে আবেগ, হিংসা, দ্বেষ, পক্ষপাতিত্ব, পছন্দ ও অপছন্দ থাকতে পারে। কিন্তু এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমাজকর্মীকে সাহায্যার্থীর সমস্যা সমাধানে ব্রতী হতে এ নীতি সহায়তা করে। একজন সমাজকর্মীকে কতগুলোা বিষয়ে সচেতন হতে হয়। যেমনÑ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা; চেহারা, পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি যত্নবান হওয়া; সাহায্যার্থীর মর্যাদাহানির আচরণ থেকে বিরত থাকা এবং ব্যক্তিগত বদ অভ্যাস ও কাজের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া

ব্যক্তি সমাজকর্ম মূলত একটি সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া। একজন সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে যেসব কৌশলনির্ভর কার্যক্রম পরিচালিত হয় সমন্বিতভাবে সে সকল কার্যক্রমকে ব্যক্তি সমাজকর্ম প্রক্রিয়া বলা হয়। ব্যক্তি সমাজকর্মে এ প্রক্রিয়া মূলত সাহায্যার্থীর মনো-সামাজিক সমস্যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। ব্যক্তি সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার পদক্ষেপগুলোর প্রকৃতি ও কার্যকারিতা বিবেচনায় নিম্নোক্তভাবে উপস্থাপন করা যায়।

ক) মনো-সামাজিক অনুধ্যান : ব্যক্তি সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ স্তর হলো সাহায্যার্থীর সমস্যার যথাযথ অনুধ্যান। মনো-সামাজিক অনুধ্যান হচ্ছে ব্যক্তির মানসিক ও সামাজিক সমস্যার স্বরূপ নির্ণয়ের পাশাপাশি সেগুলোর যথাযথ সমাধান পরিকল্পনা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কৌশল। এক্ষেত্রে সমাজকর্মীকে সাহায্যার্থীর যেসব বিষয়ের তথ্য সংগ্রহ করতে হয় তা হলো :

প্রথমত : সাহায্যার্থী যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা কীরূপ এবং এক্ষেত্রে সাহায্যার্থী কী চায় বা তার উদ্দেশ্য কী?

দ্বিতীয়ত : মনস্তাত্ত্বিক, শারীরিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও তার পরিবারের উপর সমস্যা কীরূপ প্রভাব ফেলছে?

তৃতীয়ত : কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে এবং সমস্যাকে ত্বরান্বিত করতে কোন বিষয়টি কাজ করছে?

চতুর্থত : সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা কী এবং ব্যক্তির নিজস্ব কী ধরনের সম্পদ রয়েছে?

পঞ্চমত : সাহায্যার্থীর এজেন্সিতে আসার উদ্দেশ্য কী এবং এজেন্সির কী ধরনের সম্পদ রয়েছে?

খ) সমস্যা নির্ণয় : এ পর্যায়ে মনো-সামাজিক অনুধ্যানের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যাবলীর আলোকে সাহায্যার্থীর সমস্যার স্বরূপ ও প্রকৃতি নির্ণয় করা হয়। ব্যক্তি সমাজকর্মে সমস্যা নির্ণয় হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে সাহায্যার্থীর সমস্যা সম্পর্কিত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যক্তির সমস্যা, সামাজিক অবস্থা এবং ব্যক্তি সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয় যা সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করে। সমস্যা নির্ণয় কর্মপ্রয়াসকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথাÑ ১) গতিশীল সমস্যা নির্ণয় প্রক্রিয়া, ২) চিকিৎসামূলক সমস্যা নির্ণয় প্রক্রিয়া এবং ৩) সমস্যার উৎপত্তি সংক্রান্ত সমস্যা নির্ণয় সংক্রান্ত প্রক্রিয়া ।

গ) সমাধান ব্যবস্থা : এ পর্যায়ে ব্যক্তি ও তার পরিবারের সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের প্রচেষ্টা গৃহীত হয়।

অর্থাৎ সমস্যার কারণ ও প্রকৃতি নির্ণয়ের পর প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে সমস্যার সমাধান পরিকাল্পনা গৃহীত হয়। ব্যক্তি সমাজকর্মে সমাধান পরিকল্পনা এমন একটি স্তর যেখানে একটি সুশৃঙ্খল কাঠামোর আওতায় ব্যক্তি ও তার পরিবারকে সক্ষম করার জন্য প্রচেষ্টা গৃহীত হয়, যাতে তারা (সাহায্যার্থী ও তার পরিবার) সামাজিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রগুলোর সাথে ভালোভাবে উপযোজন করতে পারে। সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে ব্যক্তি সমাজকর্মের সমাধান প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। যথাÑ

১. সমর্থনমূলক সমাধান পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে সাহায্যার্থীকে তার সমস্যা মোকাবিলায় সামঞ্জস্যবিধান ও সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার উন্নয়নে সহায়তা করা হয়। এতে ব্যক্তির সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ও অভ্যন্তরীণ সম্পদের সদ্ব্যবহারে সহায়তা করা হয়।

২. সংশোধনমূলক সমাধান পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে সাহায্যার্থীর আচরণের বাহ্যিক ধরন এবং অভ্যন্তরীণ নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে সংশোধন আনয়নের প্রচেষ্টা চালানো হয়। এ পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হলো সাহায্যার্থীর আচরণ ও মনোভাবের মধ্যে সংশোধন আনয়ন।

৩. বস্তুগত সাহায্যদান পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে সাহায্যার্থীর সমস্যার প্রকৃতি ও ধরন অনুযায়ী বৈষয়িক সাহায্য প্রদান করা হয়। অর্থাৎ সাহায্যার্থীর সামঞ্জস্যবিধান ও সামাজিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে যদি কোনো বস্তুগত সাহায্যের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

ঘ) মূল্যায়ন: ব্যক্তি সমাজকর্মের অন্যতম ধাপ হলো মূল্যায়ন, যার মাধ্যমে গৃহীত কার্যক্রমের সফলতা ও ব্যর্থতা পরিমাপ করা যায়। এটি মূলত সমস্যা সমাধানের একটি ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া, যা সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার শুরু হতে শেষ অবধি চলমান। মূল্যায়ন সাধারণত দু’ভাগে করা হয়ে থাকে। যথা :

১. ক্রমাগত মূল্যায়ন : সাহায্যার্থীর সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ অবধি মূল্যয়ন চলতে থাকে।

২. মেয়াদী মূল্যায়ন : সেবাদানের নির্দিষ্ট মেয়াদে এ মূল্যায়ন করা হয়। এতে উদ্দেশ্য অর্জনের সাফল্য ও ব্যর্থতা যাচাই করা যায়। মূল্যায়নের প্রেক্ষিতেই সমস্যা সমাধান ব্যবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটে।

সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যার কারণ/স্বরূপ এবং সমাধানের লক্ষ্যে আরো কিছু আনুসাঙ্গিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। সমস্যার কার্যকর সমাধানে এ পদক্ষেপগুলো সহায়ক বিধায় এগুলোকে সহায়ক স্তর/পদক্ষেপ বলা হয়। এগুলো হলো :

ক) অন্তরবর্তীকালীন ব্যবস্থা, খ) অনুসরণ ও গ) প্রেরণ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

  • ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

Leave a Comment