বৈধ স্ত্রীর স্তনের দুধ খাওয়া কি জায়েজ

স্ত্রীর দুধপান এবং চোষা হারাম নয়। ত‌বে স্ত্রীর দুধপান করা বড় গোনা‌হের কাজ; অর্থাৎ নাজা‌য়েয। তাই স্ত্রীর দুগ্ধপান থে‌কে অবশ্যই বিরত থাক‌তে হ‌বে। আর স্ত্রীর স্তন চোষা বা হাত-মুখ দি‌য়ে আদর করায় কোন সমস্যা নেই; বরং এ‌তে স্ত্রী বে‌শি সুখলাভ ক‌রে।

ইসলামী‌ দৃ‌ষ্টি‌কোণ থে‌কে স্ত্রীর দুধ পান করা পা‌পের কাজ। আল্লাহ তায়ালা স্ত্রী জা‌তির দুধ তা‌দের অবুঝ সন্তানের জন্য নির্ধারিত ক‌রে দি‌য়ে‌ছেন। য‌দি কখনও স্ত্রীর স্তন চোষার ফলে, দুধ বেরিয়ে মুখে চলে আসে তাহলে সে দুধ কণ্ঠনালীতে যাওয়ার পূর্বেই ফেলে দিতে হবে। এজন্য স‌র্বোত্তম হ‌লো, স্তন থে‌কে দুধ বে‌রি‌য়ে আসার আশংকা থাক‌লে কিংবা স্ত্রীর স্ত‌নে দুধ থাকাবস্থায় স্তন চোষা থে‌কে বিরত থাকাই উত্তম কাজ। স্ত্রীর উ‌ত্তেজনা বা দম্প‌তির দাম্পত্য চা‌হিদা মেটাবার জন্য স্ত্রীর স্তন টিপুনি, মর্দন, ঠোট বোলা‌নো, চুম্বন করা জায়েয আছে।

আরো পড়ুন, স্ত্রীর সাথে আচরণ কেমন হবে
ইসলাম: স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের আচরণের উপর ভিত্তি করে কোন পরিবারের শান্তি অশান্তি। প্রতেক্যেরই কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্ব সচেতন হলে আর কোন অশান্তি থাকে ন। তাছাড়া নারীরা কোমল স্বভাবের। এজন্য শরীয়তে তাদের সাথে কোমল আচরণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তা না হলে হিতে বিপরীত হবে।

স্ত্রীদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে পুরুষদের লক্ষ্য করে বরেন, “তোমরা নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর, যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ তোমাদের জন্য অনেক কল্যাণ রেখেছেন।” (সুরা আন-নিসা ;১৯।) অন্য আয়াতে এসেছে, “পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। কিন্তু, নারীরদের ওপর পুরুষদের কর্তৃত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।” (সুরা আল- বাক্বারাহ; ২২৮।)

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “পূর্ণ ঈমানদার সেই ব্যক্তি যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর। আর তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।” (তিরমিযী; ১১৬২)

অন্য হাদীসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,“স্বামীকে খুশী রেখে যে স্ত্রীলোক মৃত্যুবরণ করে সে জান্নাতে যাবে।” (ইবনে মাযাহ, তিরমিযী ও হাকেম।) এইজন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষদেরকে খুব বেশি নসীহত করেছেন তাঁর উম্মতদেরকে, তারা যাতে করে তাদের স্ত্রীদের জন্য কল্যানকামী হয়, তাদের সাথে ভালো আচরণ করে।

ইমাম আহমদ আয়েশা (রাযি:) হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাকে খেতাব করে বলেছেন, হে আয়েশা! তুমি কোমলতা অবলম্বন করো; কেননা আল্লাহ তাআলা যখন কোনো পরিবারের কল্যাণ চান তখন তাদেরকে কোমলতার পথ দেখান, অন্য এক বর্ণনা মতে- আল্লাহ যখন কোনো পরিবারের কল্যাণ চান, তিনি তাদের মধ্যে কোমলতার প্রবেশ ঘটান।” (মুসনাদে আহমদ।)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “শুধুমাত্র সম্মানিত লোকেরাই নারীদের প্রতি সম্মানজনক আচরণ করে। আর যারা অসম্মানিত, নারীদের প্রতি তাদের আচরণও হয় অসম্মানজনক।

গোপান রোগ

স্ত্রীর বুকের দুধ পান করে ফেললে কি স্বামীর জন্য স্ত্রী হারাম হয়ে যায়?
প্রশ্ন:

নিজের স্ত্রীর বুকের দুধ খাওয়ার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি?.এখানে উল্লেখ্য যে,আমার একটি নবজাতক রয়েছে এবং সে খাওয়ার পরেও দুধ উদ্বৃত্ত্ব থেকে যায়… বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব.

জবাব:

بسم الله الرحمن الرحيم

নিজের স্ত্রীর দুধ পান করলে স্ত্রী স্বামীর উপর হারাম হয়না। কারণ সর্বোচ্চ ২বছর বয়সে দুধ পান করলে দুধ মায়ের সম্পর্ক স্থাপন হয়। এর পর পান করলে হয়না। তাই স্বীয় স্ত্রীর দুধ পান করার দ্বারা আপনার স্ত্রী আপনার উপর হারাম হয়ে যায়নি। কিন্তু স্ত্রী স্তনের দুধ পান করা একটি মারাত্মক গোনাহের কাজ। একাজ থেকে বিরত থাকুন।

দলিল:

قوله تعالى- وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلاَدَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَن يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ (سورة البقرة-233

وفى رد المحتار-( ولم يبح الإرضاع بعد مدته ) لأنه جزء آدمي والانتفاع به لغير ضرورة حرام على الصحيح (الدر المختار مع رد المحتار-كتاب النكاح، باب الرضاع-4/397

প্রামান্য গ্রন্থাবলী

১. সূরা বাক্বারা-২৩৩

২. সূরা আহকাফ-১৫

৩. ফাতওয়ায়ে শামী-৪/৩৯৭

৪. তাফসীরে মাযহারী-১/৩৫৬

৫. কেফায়াতুল মুফতী-৫/১৬২

والله اعلم بالصواب

গোপান রোগ