বাংলা সাহিত্য বইয়ের ‘বইপড়া’ প্রবন্ধে দাতাকর্ণের উল্লেখ আছে

মহাভারতের একটি কেন্দ্রীয় চরিত্র মহাবীর কর্ণই দাতাকর্ণ নামে পরিচিত। নিজের নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও যিনি প্রাণরক্ষাকারী কবচ-কুণ্ডল দান করতে দ্বিধা করেননি, তিনিই হলেন কর্ণ। তিনি জন্মেছিলেন স্বর্ণময় কবচ-কুণ্ডল নিয়ে। সূর্যাকৃতির কবচ-কুণ্ডল গুণে তিনি ছিলেন অপরাজেয়।

পুরো মহাভারতে খুঁজেও এমন দানবীর আর দেখতে পাওয়া যায় না। অঙ্গ (বর্তমান ভাগলপুর ও মুঙ্গের) রাজ্যের রাজা দাতাকর্ণ ছিলেন মহাভারতে বর্ণিত সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধাদের একজন এবং তিনিই ছিলেন একমাত্র যোদ্ধা যিনি মহাভারতের আরেক শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা অর্জুনকে যুদ্ধে পরাজিত করতে সক্ষম ছিলেন।

কর্ণকে দানবীর আখ্যা দেওয়ায় একবার বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অর্জুন। তিনি শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করেন যে কেন কর্ণকেই দাতা বলা হয়। গরিব-দুঃখীকে দান করতে অর্জুন নিজেও যে আগ্রহী সে কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুন ও কর্ণকে এক পাহাড় সোনা গ্রামবাসীর মধ্যে বিলি করতে দিয়ে অর্জুনকে বুঝিয়ে দেন কেন কর্ণ দানবীর।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

অর্জুন সোনা বিলি করেছেন; কিন্তু কাকে কতটা দেবেন সেই সিদ্ধান্ত নিজের হাতে রেখেছেন তিনি। সোনা বিলির সময় গ্রামবাসীর জয়ধ্বনিতে আত্মতৃপ্তি লাভ করেছেন। কিন্তু কর্ণ কোনো কিছুর প্রত্যাশা না করেই সম্পূর্ণভাবে দান করতে পারেন। তাঁর দানের পেছনে প্রতিদানে কিছু পাওয়ার কোনো রকম প্রত্যাশা থাকে না। সে কারণেই তিনি দানবীর।

কর্ণ ছিলেন সূর্যদেব ও কুন্তীভোজের পালিত কন্যা রাজকুমারী কুন্তীর সন্তান এবং সেই সূত্রে পাণ্ডবদের বড় ভাই। বিয়ের আগে কর্ণের জন্ম হওয়ায় কুন্তী লোকনিন্দার ভয়ে শঙ্কিত হয়ে সমাজে নিজের সম্মান রক্ষার তাগিদে শিশুপুত্রকে একটি বেতের পেটিকায় শুইয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেন। ভীষ্মের রথের সারথি অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী রাধা দেবী তাঁকে উদ্ধার করেন। তাঁরা কর্ণকে পুত্রস্নেহে পালন করেন।

বাল্যকাল থেকে কর্ণ ধনুর্বিদ্যায় আগ্রহী ছিলেন। তিনি কুরুরাজকুমারদের অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যের কাছে শিক্ষালাভ করেন। পরবর্তীকালে মহর্ষি ভার্গব পরশুরামের কাছে দৈবাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে দাতাকর্ণ অর্জুনের অঞ্জলিক বাণের আঘাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।          

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Leave a Comment