বাংলা সাহিত্য বইয়ের ‘দেনাপাওনা’ গল্পে চন্দনগাছের উল্লেখ আছে

চন্দন ছোট থেকে মাঝারি ধরনের সুগন্ধি চিরহরিৎ বৃক্ষ। সাধারণত ১৫-১৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। শ্বেত ও রক্ত দুই ধরনের চন্দনগাছ আছে।

শ্বেতচন্দনের বৈজ্ঞানিক নাম Santalum album এবং রক্তচন্দনের বৈজ্ঞানিক নাম Pterocarpus santalinus। এদের সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ভারতে। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশ ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশেও এই সুগন্ধি গাছ পাওয়া যায়।

জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কাটিং পদ্ধতিতে চন্দনের চারা করার উপযুক্ত সময়। চারা রোপণের ক্ষেত্রে একটু উঁচু জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। চন্দন সাধারণত একটু শৌখিন ও খরাসহিষ্ণু গাছ। আমাদের দেশের সব এলাকায় এর চাষ করা সম্ভব। শ্বেতচন্দনগাছের তেমন কোনো রোগবালাই নেই। চন্দন কাঠের সুগন্ধ মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হলেও পোকা-মাকড়ের কাছে আকর্ষণীয় নয়।

চন্দনগাছ শত বছর বাঁচে। গাছের পাতার ওপরের অংশ উজ্জ্বল সবুজ থাকে। এটি পাতলা এবং দেখতে অনেকটা ডিম্বাকৃতি। এ গাছে লাল রঙের ছোট ছোট ফুল ফোটে, ফুল শেষে ফল হয়। প্রাচীন ভারতে চন্দনকে, বিশেষ করে শ্বেতচন্দনকে পুণ্য অর্জনের উপকরণ হিসেবে সম্মান করা হতো।

চন্দন কাঠের চাষ বেশ লাভজনক। সেই প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে আজও এর চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্বেতচন্দন আমাদের কাছে সুগন্ধি কাঠ হিসেবে পরিচিত হলেও চন্দন কাঠের নির্যাস সাবান, পাউডার, আতর, ক্রিম, দাঁত মাজার পেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এর বহুল ব্যবহার আছে। চন্দনের আছে হাজারো ঔষধি গুণ। অতিরিক্ত রক্তচাপ, ব্রংকাইটিস, এমনকি পেনিসিলিন আবিষ্কারের বহু আগেই ভেষজ চিকিৎসকরা গনোরিয়া রোগের জন্য শ্বেতচন্দন ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া খাদ্য হজম, ডায়রিয়া, আমাশয়, ঘামাচি, বসন্তসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে চন্দনের ব্যবহার আছে। রূপচর্চায় শ্বেতচন্দন ব্যবহারে জাদুকরী উপকার পাওয়া যায়।

প্রাচীনকালে রূপচর্চার অন্যতম একটি উপাদান ছিল চন্দন। বর্তমান সময়েও বিভিন্ন রকম কসমেটিকস ও সুগন্ধিতে চন্দন কাঠের গুঁড়া ব্যবহৃত হয়। চন্দন ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় বেশ উপকারী।

এতে আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মুখের বলিরেখা দূর করতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং রোদে পোড়া দাগ দূর করতে চন্দন ব্যবহার করা হয়।

Leave a Comment