বাংলা বইয়ের ‘সুন্দরবনের প্রাণী’ প্রবন্ধে ইগলের উল্লেখ আছে

ঈগল একপ্রকার বৃহৎ আকার, শক্তিধর, দক্ষ শিকারি পাখি। ঈগল সাধারণত বনে বা ঘন জঙ্গলে বসবাস করে থাকে। বানর, ছোট জাতের পাখি, টিকটিকি, হাস-মুরগী খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে।

একটি পূর্ণবয়স্ক ঈগলের ওজন প্রায় ৩০ কেজি এবং লম্বায় প্রায় ৩০-৩৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো একটি পূর্ণবয়স্ক সুস্থ ঈগল ১১,০০০ ফুট উপরে উঠতে পারে। শীতকালে এরা তুলনামুলক কম শীত এলাকা বা দেশে চলে যায়।

এরা জনমানব এলাকার বাইরে এবং কমপক্ষে ১০০ ফুট উপরে বাসা তৈরি করে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একত্রে বসবাস করে প্রজনন ঘটায়।

তাদের জীবন রক্ষার জন্য বড় হাতিয়ার তাদের পায়ের নখ। নখগুলো এতই তীক্ষ্ণ যে নিমিষের মধ্যে শিকারকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। তবে এরা এখন বিলুপ্তির পথে।

বাংলাদেশে এদের দেখা পাওয়া যায়না বললেই চলে। যদিও বাংলাদেশে একসময় সাদা বুকের সমুদ্র ঈগল (Haliacetus Leucogaster), কুড়া বা পলাশ মেছো ঈগল (Haliacetus leucoryphus), কুল্লে বা সাপখেকো ঝুঁটি ঈগল (Spilornis cheela) ছোটনখের ঈগল দেখা যেত কিন্তু অধুনা তারা বিলুপ্তির পথে।

ইগল এক ধরনের শিকারি পাখি। অ্যান্টার্কটিকা বাদে বিশ্বের সর্বত্রই এদের দেখা যায়। সাধারণত এরা বনে বা ঘন জঙ্গলে বাস করে। শীতকালে তুলনামূলক শীত কম এমন এলাকা বা দেশে পাড়ি জমায়। পৃথিবীতে বর্তমানে ৭৪ প্রজাতির ইগল রয়েছে। এর মধ্যে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশে রয়েছে ৬০টি প্রজাতি এবং বাকি ১৪টি প্রজাতি পৃথিবীর বাকি মহাদেশগুলোয় রয়েছে।

স্টেলার্স সি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইগল। ইগল ওজনে প্রায় ৫ থেকে ৯ কেজি এবং ডানা ছড়ানো অবস্থায় ৭ ফুট ২ ইঞ্চি থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। সবচেয়ে ছোট ইগল সাউথ নিকোবার সারপেন্ট। এর ওজন প্রায় ৪৫০ গ্রাম এবং লম্বায় ৪০ সেন্টিমিটার। 

ইগল দিনের বেলা শিকার করে। এর ঠোঁট বড়শির মতো; বড় ও বাঁকানো। এই ঠোঁট দিয়ে ছোঁ মেরে শিকার ধরে। এদের দৃষ্টিশক্তি প্রখর। আকাশ থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের শিকারকেও এরা দেখতে পায়। অনেক উঁচু থেকেই নিজের শিকারকে খুঁজে নিতে পারে।

ইগল অনেক উঁচু কোনো গাছের মগডালে মাটি থেকে কমপক্ষে ১০০ ফুট ওপরে বাসা তৈরি করে। অনেক ইগল বাসা বানায় দুর্গম পর্বতের চূড়ায়। এরা জীবিত প্রাণী খায়। ঝড়ের মধ্যেও শিকার করতে পারে।

সাধারণত বয়স বাড়ার বিভিন্ন পর্যায়ে ইগলের ডানার পালক নতুন করে গজায়। পাথরের ফাঁকে ডানা রেখে পুরনো পালক তুলে ফেলে। শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে এদের বাসার বাইরের দিক কাঁটা দিয়ে তৈরি করে। বানর, ছোট জাতের পাখি, টিকটিকি, হাঁস-মুরগি খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে।

একটি পূর্ণবয়স্ক সুস্থ ইগল ১১ হাজার ফুট ওপরে উঠতে পারে। শীতকালে এরা তুলনামূলক কম শীতের এলাকা বা দেশে চলে যায়। জীবন রক্ষার জন্য এদের বড় হাতিয়ার পায়ের নখ। নখগুলো এতই তীক্ষ যে নিমেষে শিকারকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। প্রজাতিভেদে ইগলের আয়ু বিভিন্ন রকম। বল্ড ইগল সাধারণত ২০ বছরের মতো আয়ু পায়।

বিশ্বে আজ ইগলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বাংলাদেশে একসময় বেশ কিছু প্রজাতির ইগল যেমন—সাদা বুকের সমুদ্র ইগল, কুড়া বা পলাশ মেছো ইগল, কুল্লে বা সাপখেকো ঝুঁটি ইগলের দেখা মিললেও এখন সচরাচর চোখে পড়ে না।

শিক্ষা

Leave a Comment