Advertisement
প্রশ্ন সমাধান: বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা- পথের পাঁচালী, পথের পাঁচালী কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি পথের পাঁচালী,পথের পাঁচালী বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,পথের পাঁচালী
পথের পাঁচালী: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রথম প্রকাশ: ১৯২৯
প্রকাশক: বিশ্বসাহিত্য ভবন
প্রথম প্রকাশিত হয়: ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায়।
চরিত্র: অপু, দুর্গা, সর্বজয়া(অপু-দুর্গার মা), হরিহর(অপু-দুর্গার বাবা), ইন্দিরঠাকুরণ (হরিহরের দূরসম্পর্কের দিদি)
আত্মজীবনের ছায়ায় ব্যক্তির পারিবারিক জীবন বর্ণনায় ভারতবর্ষের প্রকৃতির সূক্ষ্ম ও অপরূপ বর্ণনা সমৃদ্ধ উপন্যাস পথের পাঁচালী।
এ উপন্যাসটি তিনটি পর্বে বিভক্ত।
‘বল্লালী-বালাই’,
‘আম-আঁটির ভেঁপু’
‘অক্রূর-সংবাদ’।
কাহিনির মূলে আছে বিশ শতকের শুরুর দিকে নিশ্চিন্দিপুরে নামক বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অপু ও তাঁর পরিবারের জীবনযাত্রার কথা। অপুর বাবা হরিহর রায় পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্দিপুরে বসবাস করতেন। তিনি পেশায় পুরোহিত, আয় সামান্য। লেখা পড়া জানেন বলে অত্যন্ত ভাল যাত্রাপালা লিখে অধিক উপার্জনের স্বপ্ন দেখেন।
অত্যন্ত ভালো এবং লাজুক প্রকৃতির লোক হওয়ায় নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে নিজের পরিশ্রমের প্রাপ্য টাকা আদায় করে নিতে পারেন না।
হরিহরের স্ত্রী সর্বজয়া তার দুই সন্তান দুর্গা ও অপু এবং হরিহরের দূর সম্পর্কের পিসি ইন্দির ঠাকুরনের দেখাশুনা করেন। তীব্র দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে সংসার চালাতে হয় বলে নিজের সংসারে বৃদ্ধ ইন্দির ঠাকুরনের ভাগ বসানোটা তিনি ভালভাবে নিতে পারেন না।
দুর্গা প্রতিবেশির বাগান থেকে ফলমূল চুরি করে আনে এবং ইন্দির
ঠাকুরনের সাথে ভাগাভাগি করে খায়। প্রতিবেশিরা এসে সর্বজয়াকে গঞ্জনা দেয় এবং তাদের দারিদ্র্যের সুযোগে ধনী প্রতিবেশিরা এসে দুর্গাকে চোর সাবস্ত্য করতেও দ্বিধাবোধ করে না।
ভাই বোন অপু ও দুর্গার মধ্যে খুব ভাব। দুর্গা ভাই অপুকে খুব ভালবাসে তবে
মাঝে মধ্যে তাকে ক্ষেপিয়ে তুলতেও ছাড়ে না। তারা কখনো কখনো চুপচাপ
গাছতলায় বসে থাকে, কখনো মিঠাইওয়ালার পিছু নেয়, কখনো ভ্রাম্যমাণ
বায়োস্কোপওয়ালার বায়োস্কোপ দেখে বা যাত্রাপালা দেখে। সন্ধ্যাবেলা দু’জনে
দূরাগত ট্রেনের বাঁশি শুনতে পায়।
আরো ও সাজেশন:-
Advertisement
একদিন তারা বাড়িতে না বলে ট্রেন দেখার জন্য অনেক দূর চলে যায়। আবার একদিন জঙ্গলের মধ্যে খেলা করতে গিয়ে তারা গাছতলায় ইন্দির ঠাকুরনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।
অন্যদিকে গ্রামে ভাল উপার্জন করতে না পেরে আপুর বাবা হরিহর ভাল কাজের আশায় শহরে যায়। হরিহরের অনুপস্থিতিতে বাড়ির অর্থ সংকট তীব্রতর হয়। সর্বজয়া একাকীত্ব বোধ করতে থাকে। বর্ষাকালে একদিন দূর্গা অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাধায়। ঔষধের অভাবে তার জ্বর বেড়েই চলে এবং ঝড়ের রাতে দুর্গা মারা যায়।
এরপর একদিন হরিহর ফিরে আসে। শহর থেকে যা কিছু নিয়ে আসে সর্বজায়াকে দেখাতে থাকে। দূর্গার জন্য একটা লাল টুকটুকে শাড়ি নিয়ে আসেন। প্রথমে সর্বজয়া চুপ করে থাকে পরে স্বামীর পায়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। হরিহর বুঝতে পারে যে সে তার
একমাত্র কন্যাকে হারিয়েছে। তারা ঠিক করে যে গ্রামের পৈত্রিক ভিটা ছেড়ে
জীবিকার সন্ধানে অন্য কোথাও চলে যাবে।
তারা কাশীতে গিয়ে বসবাস শুরু করে। তাদের জীবনে কিছুটা সচ্ছলতা আসতে না
আসতেই মারা যায় পিতা হরিহর। সর্বজয়া অন্যের বাড়ীতে রান্নার ঠাকুর হিসেবে কাজ নেয়। অপু বড় হতে থাকে প্রকৃতির প্রতি দুর্বার আকর্ষণ নিয়ে এবং তার মন
পরে থাকে নিশ্চিন্দিপুরে।
এসবের মধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাফেরা তার
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তু নিয়ে ‘পথের পাঁচালী’ সমৃদ্ধ। গ্রাম বাংলার প্রকৃতি এ উপন্যাসের
বিশেষ চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
এই উপন্যাসে সবচেয়ে প্রাণ সঞ্চারী খন্ড আম আঁটির ভেঁপু। এতে তিলে তিলে বড় হয় অপু। আর তার নিষ্পাপ মন ও কৌতূহলী চোখ দিয়ে পাঠক দেখে সমাজের কঠিন কিছু প্রথা, কিছু রঙিন স্বপ্নবিলাসিতা, কিছু আহ্লাদিত অভিমান – সর্বোপরি মানবশিশুর দৃষ্টিতে ধীরে ধীরে উন্মোচিত কঠিন বিশ্ব। নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের আনাচে কানাচে ছুটে ফিরে দুই ভাই বোন আর তাদের বাবা-মায়ের চলে অফুরন্ত জীবন সংগ্রাম। এরই মাঝে তারা স্বপ্ন দেখে, আশাহত হয় আবার নতুন কল্পনার বীজ রোপণ করে। মানুষের আসা যাওয়ার মাঝে প্রকৃতিই কেবল নীরব নিঠুর দর্শক হয়ে সবকিছুকে জড়িয়ে রাখে।
উপন্যাসের শেষ অংশে গ্রামীণ খেলাঘর ছেড়ে বাস্তবতার পাঠ নিতে শহুরে জীবন শুরু করা অপুর পদে পদে ঠোকর খাওয়া যেন বারবার এই-ই বলে যে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের নিত্য চক্র শ্বাপদের ন্যায় উদ্যত। প্রকৃতির এই নিষ্ঠুরতাকে আশ্রয় করেই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেন নিজ কলমের খোঁচায় প্রধান পাঁচটি চরিত্রের তিনটিকেই কেড়ে নিলেন।
আর অদৃষ্টের খেয়ালী রসিকতাকে মূর্ত করে তুলতেই কী লেখক সব হারানো স্ত্রীলোকটির নাম দিয়েছিলেন ‘সর্বজয়া’? করুণ মৃত্যু, অসহায়ত্ব, কুটিলতা, অকৃত্রিম সরলতা, ক্ষুদ্র হতে বৃহৎ কপটতা, সীমাহীন দরদ আবার হৃদয়হীনতা, কখনো সৃষ্টিছাড়া উল্লাস, কোথাও আবেগী সম্প্রকাশে লেখক অনাড়ম্বর গতিতে এগিয়ে নিয়ে গেছেন উপন্যাসটিকে।
তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, “পথের পাঁচালী’ বইখানা দাঁড়িয়ে আছে আপন সত্যের জোরে।”
পাঁচালী-ই বটে, পথেরই গান এটি। বনফুলের রেণু, আর ক্ষুদ্র ঘাসের মুকুলে যেখানে একাকার হয়ে আছে অতি সাধারণ জীবন আর অতি সূক্ষ্ম ভাববোধ। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে পাঠক খুঁজে পাবেন তার দীর্ঘকালের উপলব্ধি, আর পাবেন অপরাজিত এক স্পৃহা। যে স্পৃহার সৃষ্টি অপুর মনে, বনদেবতার অভয়বাণী ‘সামনে এগিয়ে যাওয়াই জীবন’ থেকে। উপন্যাস শেষে তাই গভীর জীবনবোধ, আর বিষণ্ন মমতায় ভেজা চোখে পাঠক পরের খণ্ডে খুঁজবেন ‘অপরাজিত’ অপুকে!
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
Advertisement 5
Advertisement 2
- What do you near by Business communication?, Explain the concept of business communication
Advertisement 5
- Describe the barriers to effective communication in business organization
- সমাজদর্শন ও রাষ্ট্র দর্শনের সম্পর্ক, সমাজদর্শ ও রাষ্ট্রদর্শনের সম্পর্ক, Relation between Social Philosophy & Political Philosophy
- দর্শনের বিষয়বস্তুকে প্রধানত কয় ভাগে ভাগ করা যায়?, দর্শনের বিষয়বস্তু হিসেবে অধিবিদ্যা আলোচনা করুন।
- দর্শনের প্রকৃতি ও স্বরূপ আলোচনা কর
- দর্শন বলতে কী বোঝো?, দর্শনের বৈশিষ্ট্য ,দর্শন ও বিজ্ঞানের সাদৃশ্য ,“দর্শনের প্রত্যয়”- পাশ্চাত্য দর্শন
Advertisement 2
Advertisement 3