বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা- নিষিদ্ধ লোবান, নিষিদ্ধ লোবান কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিষিদ্ধ লোবান,নিষিদ্ধ লোবান বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,নিষিদ্ধ লোবান

প্রশ্ন সমাধান: বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা- নিষিদ্ধ লোবান, নিষিদ্ধ লোবান কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিষিদ্ধ লোবান,নিষিদ্ধ লোবান বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,নিষিদ্ধ লোবান

গ্রন্থ: নিষিদ্ধ লোবান
লেখক: সৈয়দ শামসুল হক

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত বাংলা
উপন্যাসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’।

উপন্যাসে লেখক মুক্তিযুদ্ধের বিশৃঙ্খল পটভূমিতে বিলকিস নামের এক নারীর সংগ্রামের কাহিনিকে কেন্দ্র করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের খণ্ডচিত্র তুলে ধরেছেন।
উপন্যাসটি উত্তরাঞ্চলের পটভূমিতে রচিত ।

এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বিলকিস ও পাকিস্তানী মেজর সরফরাজ।

বিলকিস মুসলমান ঘরের সন্তান। উপন্যাসের শুরুতেই দেখা যায়, মা, ভাই, বোন ও বোনের সন্তানদের দেখার জন্য বিলকিস একাকী ঢাকা থেকে নিজগ্রাম রংপুরের জলেশ্বরীর দিকে ট্রেনে যাত্রা করে। কিন্তু তারই ছোট ভাই খোকনের দল এদিকে একটি রেল ব্রিজ উড়িয়ে দেওয়ায় নির্দিষ্ট স্টেশনে পৌঁছার আগেই তাকে ট্রেন থেকে নামতে হয়। দৃঢ় চিত্ত বিলকিস পাঁচ মাইল পথ হেঁটেই এগিয়ে চলে বাড়ীর পথে।

খোকন বাহিনীর এক তরুণ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ বিলকিসের যাত্রাসঙ্গী হয়। বাড়ি গিয়ে নানা ঘটনার পাশাপাশি নিজের বাড়ী লুট হওয়া ও তার মামার উপর মিলিটারি-রাজাকারদের নির্যাতন দেখে শিউরে উঠে। অতঃপর ডামাডোলে জীবনের সকল সূত্র হারানো বিলকিস একমাত্র ভাই খোকনকে দেখবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অপেক্ষায় থাকে।
কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, এরই মধ্যে মিলিটারি-বিহারীরা হত্যা করে খোকনকে। তার সাথে আরো অনেক লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। মিলিটারিরা


আরো ও সাজেশন:-

ঘোষণা দেয় কেউ তাদের দাফন করতে পারবে না। তখন বিলকিস প্রতিজ্ঞা করেভাইয়ের লাশ দাফন করার।
উপন্যাসের শেষ দিকে খোকনের লাশ দাফন করতে গিয়ে পাকিস্তানী মেজরের হাতে ধরা পরে বিলকিস আর সিরাজ। বিলকিসকে মেজর তার রুমে নিয়ে নানাভাবে অপমান করে। বিলকিসকে স্বেচ্ছায় তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করতে বলে। বিলকিস কোন উত্তর না দিয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে। একপর্যায়ে সিরাজকেও মেজরের রুমে নিয়ে আসা হয়, তখনই জানা যায় সিরাজ আসলে হিন্দু।

তার প্রকৃত নাম প্রদীপ। প্রদীপকে গুলি করে হত্যা করে মেজর বিলকিসের সাথে। শারিরীক সম্পর্ক করতে চায়।
তখন বিলকিস বলে প্রদীপের সৎকার করে সে নিজের ইচ্ছায়ই মেজরকে তৃপ্ত করবে। মেজর রাজি হয়। পরদিন খুব সকালে হিন্দু রীতি অনুযায়ী চিতা প্রস্তুত করে প্রদীপের সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রদীপের সেই চিতায় বিলকিস পাকিস্তানী সেনাকে জড়িয়ে ধরে ঝাঁপ দেয়। নিজের সম্ভ্রমরক্ষার জন্য সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।

বিলকিস নিজে তো আত্মাহুতি দেয়ই সেই সাথে দেশের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য একজন বর্বর পাক সেনাঅফিসারকে শেষ করে দেয়।

উপন্যাসটিতে দেখানো হয়েছে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে বেশির ভাগ মানুষেরই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান ছিল। তখন কোন জাত পাত ছিল না, হিন্দু-মুসলিম ছিল না। সবাই সবাইকে সাহায্য করেছে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে। অনেকন হিন্দু পরিবাকে আশ্রয় দিয়েছে কট্টর মুসলিম পরিবার।

পাকিস্তানী হানাদাররা কতটা ভয়ংকর ছিল এবং ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি তাদের মনোভাব কেমন ছিল তার স্পষ্ট বর্ণনা আছে উপন্যাসটিতে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

একজন বাঙালী নারী ও হিন্দু যুবকের চরিত্র চিত্রায়নের মাধ্যমে লেখক একাত্তরে নারী ও হিন্দুদের ওপর পাকিস্তানী হায়েনাদের অত্যাচারের বীভৎস রূপ তুলে ধরেছেন। বাঙালি নারী মাত্রই তাদের কাছে ছিল ভোগপণ্য।

তারা বলত- ‘তোমাদের রক্ত শুদ্ধ করে দিয়ে যাব, তোমাদের গর্ভে খাঁটি পাকিস্তানী রেখে যাব।’ আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেখা মাত্রই গুলি করে ‘ভারত’ পাঠিয়ে দিতে হবে, পাকিস্তানি মেজরের মুখ থেকে এই ধরনের সংলাপ বের করে এনে লেখক সামাগ্রিকভাবে একাত্তরে পাকিস্তানী হায়নাদের মনোভাব ফুটিয়ে তুলেছেন। আর প্রদীপ ছেলেটির সিরাজ নাম ধারণ করাকে লেখক কৌশল হিসেবে দেখিয়েছেন।

তখনকার পরিস্থিতিতে জীবনের প্রয়োজনে সেটি দরকার ছিল।
উপন্যাসটি খুব দীর্ঘ নয়। দুই আড়াই দিনের গল্প। কিন্তু এর সম্মোহনী শক্তি
পাঠককে একটানে নিয়ে যাবে শেষের পাতায়। সবমিলিয়ে বলা যায় উপন্যাসে একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার সামগ্রিক বাস্তব চিত্র প্রতিফলিত হয়েছ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment