বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজারের

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজারের

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

 ভূমিকা : বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব মূলধন অত্যন্ত অল্প । তাই মূলধন বাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ঋণপত্র ইস্যু এবং বিক্রয় করে তাদের মূলধন চাহিদার সিংহভাগ মিটাতে সক্ষম হতে পারে । এজন্য এসব দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজারের ভূমিকা : নিম্নে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজার কিভাবে সহায়তা করে তা আলোচনা করা হলো :

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজারের ভূমিকা আলোচনা কর

১. প্রকৃত সম্পদ ও আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে : বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসমূহ মূলধন বাজারের বেশিরভাগ লেনদেন সংরক্ষিত ঋণপত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায় । এতৎসত্ত্বেও নতুনভাবে ইস্যুকৃত ঋণপত্রের লেনদেনের উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ।

বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক ঋণপত্র হলে তা নতুন সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি বুঝায় , তাছাড়া উদ্বৃত্ত অর্থনৈতিক ইউনিট থেকে ঘাটতি অর্থনৈতিক ইউনিটের তহবিল স্থানান্তর নির্দেশ করে থাকে ।

প্রাথমিক ঋণপত্রের বাজার এভাবে ঋণ দানযোগ্য তহবিলের প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ঋণপত্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের বাজার বিরাজমান আর্থিক সম্পদ ও দায়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের পুনর্বণ্টনে সহায়তা করে । এ দুটি উপায়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের মূলধন বাজার অর্থনীতির প্রকৃত সম্পদ এবং আয় উন্নীতকরণে সহায়তা করে থাকে ।

২. বিনিয়োগযোগ্য মূলধন গঠনে সহায়তা : বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে মূলধন বাজারের তহবিলের মূল উৎস নিম্নরূপ :

ক . জনসাধারণ , যাদের বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ আছে ।

খ . বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন- বাণিজ্যিক ব্যাংক , বিভিন্ন উন্নয়ন ব্যাংক , পেনশন তহবিল , বিভিন্ন ট্রাস্ট ইত্যাদি । মূলধন বাজারের তহবিলের সিংহভাগ আসে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের বিনিয়োগযোগ্য সঞ্চয় থেকে ।

যে কোন ব্যক্তি , ব্যাংক অথবা ঋণপত্রের ব্রোকারের মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির নতুনভাবে ইস্যুকৃত বিভিন্ন ধরনের শেয়ার ডিবেঞ্চার বা বন্ড ক্রয় করতে পারে । মূলধন বাজারের এরূপ বিনিয়োগের মাধ্যমসমূহ নতুন মূলধনের যোগান বৃদ্ধি করে ।

অন্যদিকে , বীমা কোম্পানিগুলো প্রিমিয়ামের সাহায্যে দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একীভূত করার কাজে লিপ্ত রয়েছে । একত্রিত এ বিপুল সঞ্চয় তারা বিভিন্ন ধরনের শেয়ার , স্বল্পমেয়াদি ঋণপত্র , বন্ড , ডিবেঞ্চার ইত্যাদি ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগ করে থাকে ।

এভাবে মূলধন বাজারের বিভিন্ন হাতিয়ার বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগযোগ্য মূলধন গঠনে সহায়তা করে ।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজারের গুরুত্ব

৩. সম্পদের দক্ষ কটনে সহায়তা : একটি দেশে সম্পদের প্রাচুর্যতা থাকলেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় না । এক্ষেত্রে সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টনের উপর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকটা নির্ভর করে ।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসমূহে সম্পদ অপ্রতুল থাকা সত্ত্বেও যদি এসব সম্পদ দক্ষভাবে বিভিন্ন উৎসে বণ্টন করা যায় তাহলে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হতে পারে ।

মূলধন বাজার সর্বোচ্চ বিনিয়োগজনিত আয়ের দিকে সঞ্চয়কে প্রবাহিত করে সম্পদের দক্ষ বণ্টনে সহায়তা করে থাকে । তাছাড়া মূলধন বাজার ন্যূনতম ব্যয়ে উদ্বৃত্ত অর্থনৈতিক ইউনিট থেকে ঘাটতি ইউনিট তহবিল স্থানান্তর করে সম্পদের দক্ষ ব্যবহারে সহযোগিতা করে থাকে ।

এভাবে একটি গতিশীল মূলধন বাজার বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ তহবিলের কাম্য বণ্টনই নিশ্চিত করবে না , পাশাপাশি এটি অর্থনীতিতে অতিরিক্ত সঞ্চয় ও বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে সক্ষম ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে আমরা একথা বলতে পারি যে , বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি সম্পদের দক্ষ বণ্টন ও ব্যবহার মূলধন বাজার সক্রিয় সহযোগিতা করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে ।

এক্ষেত্রে একটি সুসংগঠিত ও সুসংহত মূলধন বাজার দেশের শিল্পোন্নয়নে এক বিরাট অবদান রাখতে পারে । অতএব বাংলাদেশ একটা উন্নয়নগামী দেশ হিসেবে তার শিল্পোন্নয়নে মূলধন বাজার যদি সুসংগঠিত হয় তবে দেশে শিল্পোন্নয়নের সাথে সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে ।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মূলধন বাজারের

Leave a Comment