ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করবেন যেভাবে,ব্যবসা প্রসারে ফেসবুকের ব্যবহার ,ফেসবুকের মাধ্যমে কিভাবে আপনার ব্যবসার প্রচার করবেন, ফেসবুকের মাধ্যমে ইকমার্স ব্যবসার পূর্ণাংগ গাইড, কিভাবে ফেসবুক পেজ এর মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করবেন!

আজকের বিষয়: ফেসবুকের মাধ্যমে ইকমার্স ব্যবসার পূর্ণাংগ গাইড, কিভাবে ফেসবুক পেজ এর মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করবেন!

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এফ কমার্স বা ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসা বেশ জনপ্রিয় ও চাহিদা সম্পন্ন হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির মধ্যে অনেকেই ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসায় চালু করেছেন। যদিও ফেসবুকে ব্যবসা পরিচালনার নিয়ম কানুন অনেকেই ঠিক মত জানেন না। ফলে কয়েকদিন পরেই দেখা দেয় নানা বিপত্তি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যবসায় মুনাফা কমে যাওয়া। তাহলে চলুন আজ জেনে নিই, ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করার কায়দা কানুন-

প্রথমেই ফেসবুক বিজনেস পেজ চালু করতে হবে। ফেসবুক পেজ চালু হলে ব্যবসা সম্পৃক্ত কনটেন্ট তৈরি এবং কাস্টমারের সংখ্যা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। কাস্টমার বাড়ানোর জন্য অনেকেই বুস্ট (ফেসবুক প্রমোশন) করেন। এছাড়াও একটি বিজনেস পেজকে সচল রাখার জন্য আপনাকে নিয়মিত কিছু কাজ করতে হবে। যেমন-

কীভাবে ফেসবুক থেকে অর্থ আয়ের সম্ভাবনা তৈরি করবেন

চাইলেই রাতারাতি ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করার আশা করতে পারেন না। ফেসবুক থেকে ভালো উপার্জন করতে চাইলে আপনাকে পরিকল্পিত উপায়ে কিছু কাজ করতে হবে। আয়ের আগে আপনাকে আয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে হবে। কীভাবে ফেসবুক থেকে নগদ অর্থ উপার্জন করা যায় তার কিছু কৌশল নিচে তুলে ধরা হলো।

নিজেকে উপযুক্ত হিসেবে তৈরি করা

ফেসবুক থেকে উপার্জনের প্রথম পদক্ষেপটি হবে নিজেকে যথাযোগ্য তথা মানানসই হিসেবে তৈরি করা বা উপস্থাপন করা। আপনার উপস্থাপনা আবেগ বা দক্ষতা যেমন লেখালেখি, গ্রাফিক ডিজাইন বা কোনো ধরনের স্থানীয় ব্যবসায় যেমন বুটিক, হোম ডেলিভারির মতো বিষয়গুলো হতে পারে। যখন আপনি এ বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা বা কৌশলের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হবেন তখন এ মাধ্যমটির মাধ্যমে আপনার অর্থ উপর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

ফেসবুক পেজ অথবা গ্রুপ তৈরি করা

ফেসবুক থেকে আয়ের জন্য প্রথমেই একটি পেজ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার নিজের আগ্রহের পাশাপাশি অন্যদের আগ্রহকেও প্রাধান্য দেয়া উচিত। ফেসবুক পেজ হতে পারে যেকোনো ধরনের। যেমন- ফুড রিভিউ, ট্রাভেল পেজ, নিউজ পোর্টাল কিংবা ট্রেন্ডি কোনো ট্রল পেজ। ট্রল পেজের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যেন এটি কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে আঘাত না করে বা কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না করে।

অডিয়েন্স তৈরি

পেজ তৈরির পর আপনার প্রথম কাজই হচ্ছে অন্যান্য ফেসবুক ইউজারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এর জন্য আপনাকে মানসম্মত কনটেন্ট পোস্ট করে যত বেশি সম্ভব পেজটাকে অ্যাংগেজ রাখতে হবে। যখনই আপনার পেজটি ভালো সাড়া পেতে শুরু করবে, অর্থাৎ আশানুরূপ লাইক, কমেন্ট, শেয়ার হবে, তখনি আপনি পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তত হবেন। আপনার সাইটে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য আর্টিকেল লিখে ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে থাকুন এবং আর্টিকেলগুলো ফেসবুক পেজে নিয়মিত পোস্ট করুন।

ফেসবুক থেকে আয়ের জন্য আপনার ওয়েবসাইটটি অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে এবং কিছুতেই কোনো আর্টিকেল কোথাও থেকে কপি করতে পারবেন না। কপি করা আর্টিকেল দিয়ে কোনো দিনই আপনি সফলতা পাবেন না।

ইনফ্লুয়েন্সার হোন

একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে আপনার সাধারণ ফেসবুক প্রোফাইল থেকেই আয় করতে পারেন। ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার বিষয়টা অনেকটা আধুনিক ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের মত। নামকরা কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা প্রচারণার জন্য স্বনামধন্য ও খ্যাতিমান ব্যক্তিদেরকে তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত করে। ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার হতে হলে প্রথমেই আপনাকে প্রোফাইলে মানসম্মত কিছু কন্টেন্ট ও যথেষ্ট সংখ্যক ফ্যান-ফলোয়ার থাকতে হবে। অবশ্যই আপনার ফেসবুক এক্টিভিটিতে সার্বিকভাবে ফলোয়ারদের সন্তোষজনক প্রতিক্রিয়া থাকা উচিত। এরপর Hireinfluence, BlogMint, Fromote এর মতো ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেট এজেন্সির ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পরপরই আপনি কোনো এক ব্র্যান্ডের প্রতিটি পোস্টের জন্য নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করবেন এবং পরবর্তীতে ওইসব ব্র্যান্ডের পোস্ট প্রচার করার মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন।

দক্ষতা শিখুন

আপনার যদি স্থানীয় কোনো ব্যবসা না থাকে এবং আপনি এখনও ফেসবুকের সাহায্যে উপার্জন করতে চান তবে অবশ্যই গ্রাফিক ডিজাইন, ফটোগ্রাফি, কনটেন্ট লেখা, প্রোগ্রামিং প্রভৃতি নির্দিষ্ট বিষয়গুলোর প্রতি দক্ষতা থাকতে হবে। যাতে আপনার তৈরি করা কনটেন্টগুলো সবার কাছে আকৃষ্ট হয়।

কীভাবে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করবেন

যখন আপনি আপনার ফেসবুক পেজে নির্দিষ্ট কিছু শ্রোতা তৈরি করতে পেরেছেন তখন আপনি ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য প্রস্তুত। আসুন এবার ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জনের কিছু পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক।

পণ্য বিক্রয়

অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার জন্য ফেসবুক একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পণ্যের ছবি, সাইজ, দাম দিয়ে সহজেই বিক্রি করতে পারেন। ফেসবুক থেকে আয়ের জন্য এটি অত্যন্ত সহজ এবং সুলভ একটি পদ্ধতি। অনলাইনে এমন অনেক গ্রুপ আছে যারা নিজেদের ব্যবসার প্রসার বা পরিচিতির জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম কনটেন্ট দিয়ে থাকে। এদের মূল উদ্দেশ্যই থাকে নিজের গ্রুপ, পেজ, পণ্য বা কোম্পানির পরিচিতি বাড়ানো। কারণ ফেসবুকে বিনামূল্যে ভিজিটর পাওয়া যায় এবং ভাইরাল হওয়ার মতো একটা অপশন তো আছেই!

এ সমস্ত কনটেন্টে আপনার কাজ হবে সর্বোচ্চ সংখ্যক বন্ধুদের ট্যাগ দেয়া, ইনভাইট করা, লাইক-কমেন্ট-শেয়ার করা। অর্থাৎ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় প্রচার কাজটি সম্পন্ন করা। আপনার পারফরমেন্সের ওপর আপনাকে কনটেন্ট উইনার ঘোষণা করা হবে এবং এখান থেকে প্রাইজ হিসেবে আপনি আয় করতে পারেন। বেশি ফলোয়ার, বেশি লাইক ও অধিক গ্রুপ মেম্বার সমৃদ্ধ যেকোনো কিছু আপনি অন্যদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আপনাকে সম্পূর্ণ ইউনিক আইডি এবং অন্যান্য মার্কেটিং মেটেরিয়াল প্রদান করবে। আপনার বিজনেস জেনারেটরের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে এখান থেকে আপনি অর্থ পাবেন। সুতরাং, এক্ষেত্রে ফেসবুক থেকে আয় করার জন্য একটি ভালো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট খুঁজে নেয়া জরুরি।

আপনি যদি একজন অ্যাফিলিয়েট হিসেবে কোনো কোম্পানির মার্কেটিং করতে চান, তবে কোম্পানির সাইট সার্চ দিয়ে রিকয়্যারমেন্ট ফর্ম পূরণ করুন। এটা আপনি ফ্রি এবং অল্প সময়েই করতে পারবেন।

প্রত্যেকটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের জন্য আলাদা আলাদা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলুন। এতে কোনো ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলক একটি পেজ থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন খুঁজে বের করতে হবে না। বরং নিজের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনোটাকে ফলো করতে পারবে।

প্রতিদিন পোস্ট করুন এবং অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করুন নিখুঁতভাবে। ফলোয়ার বাড়ানোর মাধ্যমেই প্রচার বাড়ানো সম্ভব। যখন কেউ আপনার পোস্টে ক্লিক করবে এবং আপনার অ্যাফিলিয়েট থেকে কিছু কিনবে, তখন আপনি আয় করবেন।

ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

কোনো বিষয়ে নিজেকে এক্সপার্ট হিসেবে অনলাইনে মানুষের ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে পারাকেই ইনফ্লুয়েন্সার বলে। ইনফ্লুয়েন্সার হলে মার্কেটিং করার কষ্ট কমে যায়। অল্প কষ্টে বেশি লাভ করা যায়। ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার টেকনিক জানা থাকতে হবে।

যদি আপনার ওয়ালের পোস্টগুলোতে মানসম্মত লাইক-কমেন্ট-শেয়ার থাকে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে ফেসবুক থেকে আয় করা আপনার জন্য সহজ হবে। এমনকি আপনার যদি যথেষ্ট ফ্যান-ফলোয়ার থাকে এবং আপনার নিজস্ব প্রোফাইলে তাদের সন্তোষজনক প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তবে BlogMint অথবা Fromote এ ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাকাউন্টে সাইন আপ করে আয় করতে পারেন সহজেই। সাইন আপ করার পর আপনার প্রোফাইলের তথ্য দিয়ে একটা ফর্ম পূরণ করবেন এবং ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে নিজস্ব প্রাইস নির্ধারণ করে দেবেন।

ফেসবুকে ক্রয় বিক্রয়

বাসায় অব্যবহৃত একটি ফোন পড়ে আছে? সময়ের অভাবে আপনার প্লেস্টেশনটি চালানো হচ্ছে না? পুরাতন ডিজিটাল ক্যামেরাটা বিক্রি করে নতুন একটি ডিএসএলআর কিনতে ইচ্ছুক? এরকম হাজারো খুঁটিনাটি জিনিস কিন্তু আমরা চাইলেই ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করে দিতে পারি। ফেসবুকে কেনাবেচার (Buy and Sell) অসংখ্য গ্রুপ রয়েছে। কোনো কোনো গ্রুপ নির্দিষ্ট পণ্য কেনাবেচার জন্য, আবার কোনোটিতে পণ্য বিক্রি সম্পর্কে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। এসব গ্রুপে আপনার অব্যবহৃত যেকোনো পণ্যের জন্য সহজেই সঠিক ক্রেতা খুঁজে পেতে পারেন। তবে অনলাইনে এসব ক্রয় বিক্রয়ের সময় সতর্ক থাকতে হয়, যেকোনো লেনদেনের পূর্বে ক্রেতা সম্পর্কিত সকল ধরনের তথ্য নিশ্চিত করতে হবে, একইসাথে নিশ্চিত করতে হবে টাকা আদান-প্রদানের সুরক্ষিত মাধ্যমও। কম সময়ে বেশি লোকের কাছে পৌঁছানোর জন্য ফেসবুক পেজ বুস্টিংয়ের মাধ্যমেও অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন তৈরি করার সময় ভৌগলিক অবস্থান, বয়স, লিঙ্গ প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়গুলোর উপর খেয়াল রাখতে হবে।

ফেসবুক মার্কেটিং হিসেবে কাজ করুন

ব্যবসায়িক পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে যে কোনো বিজনেসের সাধারণ ফরমূলাটা অনেকটা এরকম ‘প্রোডাক্টটাকে যত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যাবে, তত বেশি সেল জেনারেট করা যাবে।’ তাই ফেসবুক মার্কেটিংয়ের প্রথম লক্ষ্য হবে কীভাবে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করলে রিচ বেশি হবে। ফেসবুকের এলগরিদম এংগেইজমেন্ট নির্ভর। অর্থাৎ একজনের কনটেন্টে যদি আপনি কমেন্ট করেন তাহলে আপনার বন্ধুদের নিউজফিডেও সেই কনটেন্ট শো হবে। এভাবে যত এংগেইজমেন্ট জেনারেট করা যাবে, তত ভিজিবিলিটি বাড়বে। যত ভিজিবিলিটি বাড়বে, তত বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে।

একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে কাজ করুন

আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রোপাইটর হন তবে আপনি এটিকে একটি পেশা হিসেবে নিতে পারেন (যাকে বলে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার’) এবং বেতন পেতে পারেন। কোনো সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের দায়িত্ব হলো করপোরেট সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর (যেমন ফেসবুক) অ্যাকাউন্টগুলো পোস্ট করার সময়সূচী অন্তর্ভুক্ত করা, শ্রোতা তৈরি করা, প্রচারের সাফল্য পর্যবেক্ষণ করা, গ্রাফিক্স তৈরি করা ইত্যাদি। অনেক ব্র্যান্ড এবং সংস্থাগুলো ব্র্যান্ড প্রচারের জন্য পেশাদার সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার নিয়োগ দেয় এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করে থাকে।

ফেসবুকে বিনিয়োগ করুন

আপনি হয়তো জানেন যে ফেসবুককে ন্যাসডাক কম্পোজিটে (Nasdaq Composite) একটি সার্বজনীনভাবে পরিচালিত সংস্থা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। অন্য শেয়ার বাজারের বিনিয়োগের মতো আপনি ফেসবুকের স্টক শেয়ার ‘এফবি’ কিনে আয় করতে পারবেন। তবে, এফবি স্টকের দাম প্রতিদিন ওঠানামা করতে পারে, তাই বুদ্ধিমত্তার সাথে বিনিয়োগ করতে হবে।

অন্যান্য

এতক্ষণ ফেসবুক থেকে আয় করার কিছু উপায় হাইলাইট করা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও ফেসবুক ব্যবহার করে আরও কিছু মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সুযোগ আছে। অনেক কোম্পানি এবং ব্র্যান্ড তাদের পোস্ট অন্য ফেসবুক পেজে শেয়ার করে থাকে। এসব ক্ষেত্রেও আপনি বিনিয়োগ করতে পারেন। সেখান থেকেও আপনি অর্থ উপার্জন করতে পরেবেন।

এছাড়াও যে কোনো ফেসবুক ফ্যান পেজ বা গ্রুপে বেশি পরমিাণ ফলোয়ার থাকলে বিক্রয়যোগ্য পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সুতরাং, আপনার সেরকম ফেসবুক পেজ থাকলে বিক্রি করে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অনেকে আবার ফেসবুক লাইক বিক্রি করেও আয় করে থাকেন যদিও অনেকে এটাকে ভালো চোখে দেখে না। এছাড়াও ব্যক্তিগত ইমেজ, চাকরি খোঁজাসহ নানান কাজে ফেসবুক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সবশেষ ভাবনা

ফেসবুক একটি আপগ্রেডিং সামাজিক মিডিয়া প্লাটফর্ম যার কোনো ভৌগলিক সীমারেখা নেই। এর মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কোনো সময় যে কারো কাছে ছবি, ভিডিও, বিজ্ঞাপন এবং পণ্য বিক্রি করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে।

তবে, স্থায়ী উপায়ে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করতে আপনার ফ্যান বা ফলোয়ারদের জীবনকে পণ্য হিসেবে মনে না করে তাদের বন্ধু, পরামর্শদাতা এবং সহযোগী হিসেবে মনে করে কাজ করতে থাকুন।

মনে রাখতে হবে, ফেসবুকের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু আইটেম যেমন, তামাক, অ্যালকোহল জাতীয়, অবৈধ ওষুধ, অস্ত্র, জুয়াড় সামগ্রী, বন্য প্রাণী প্রভৃতি পণ্যগুলো বিক্রির মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সুযোগ নেই। সবমিলিয়ে আপনি যদি দক্ষতার সাথে কৌশলগতভাবে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এটি হতে আপনার অর্থ উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম।

নিয়মিত মেসেজের উত্তর দিন

পেজের ইনবক্সে কেউ মেসেজ দিলে দ্রুত সময়ে মধ্যে উত্তর দিতে হবে। কেউ যদি মেসেজ করে উত্তর না পান, তাহলে ব্যবসায়িক সুনাম নষ্ট হয়। এতে ব্যবসায়ী নিজেই ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এছাড়া কোনও কনটেন্টে যদি গ্রাহকরা মন্তব্য করেন তবে ব্যবসায়ীর উচিত সেই মন্তব্যের জবাব দেওয়া।

অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে কত জন কনটেন্টটি দেখেছে তার ওপর। পেজ ভিউ, রিচ, এনগেজমেন্ট এবং আরও অনেক কিছু ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য জরুরি। গুগল অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে সহজেই এসব বোঝা সম্ভব। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবসায়ের গতি বোঝার জন্য অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন।

পাবলিশিং টুলস ব্যবহার করুন

ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট শিডিউল করে রাখার কাজে ব্যবহৃত হয় পাবলিশিং টুলস। ভবিষ্যতে কোনও সময়ে লাইভে গেলে কিংবা ব্যবসার বিজ্ঞাপন ও ইভেন্টের প্রচারের জন্য ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে শিডিউল করে রাখলে ভবিষ্যতে সেটা পোস্ট হয়ে যাবে। 

টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে জানুন

ফেসবুকে অনেক টার্গেটিং টুলস রয়েছে। যখন আপনি কোনও পোস্ট বুষ্ট করবেন, তখন আপনাকে নির্দিষ্ট ডেমোগ্রাফি, লোকেশন এবং গ্রুপকে টার্গেট করতে হবে। একটি সফল বিজ্ঞাপন তৈরির জন্য টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরি।

গ্রাহকদের উপযোগী বিজ্ঞাপন তৈরি করুন

গ্রাহকরা আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখার জন্য বসে নেই। তাই কেবল প্রচারের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন নয়, সেটিকে গ্রাহকদের উপযোগী করে তুলুন।

প্রতিযোগিতার আয়োজন করুন

ফেসবুকে ট্র্যাফিক পাওয়া সহজ নয়। তবে নিয়মিত প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে সেটি সহজ হয়। তবে ফেসবুকে প্রতিযোগিতার আয়োজনের সময় বেশ কিছু নীতিমালা মানতে হবে। নইলে পড়তে হবে ঝামেলায়।

ইভেন্টের প্রচার করুন

ফেসবুকে আপনি ইভেন্ট তৈরি করতে পারেন। সেখানে আপনি যেকোনো মানুষকে ইনভাইট করতে পারেন। এতে আপনার ইভেন্ট এবং ব্যবসা সম্পর্কে একসঙ্গে অনেক মানুষ জানতে পারবেন। গ্রাহকদের কাছে আনার জন্য অনেকেই ইভেন্ট তৈরি করেন।

প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট শেয়ার করুন

ব্যবসার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক এমন কনটেন্ট শেয়ার করুন। কনটেন্টটিতে কপি-পেস্ট লেখা থাকা যাবে না। ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গতি নেই এমন কনটেন্ট পেজে প্রকাশ করলে রিচ এবং এনগেজমেন্ট কমে যায়।

মন্তব্যের জবাব দিন

কনটেন্টের ব্যাপারে কেউ কোনও মন্তব্য করলে অথবা কারও কোনও প্রশ্ন থাকলে তার জবাব দিতে হবে। এতে কনটেন্টের রিচ বাড়তে থাকে। অনুসরণকারীদের প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দিলে তারা আপনার পণ্য কিনতে উৎসাহী হবে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ফেসবুক নিউজফিড অ্যালগরিদমে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেয়। এসব পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম ছিল পারসোনাল কানেকশন এবং এনগেজমেন্ট। তাই কনটেন্টের কানেক্টিভিটি এবং এনগেজমেন্ট বাড়ানো জরুরি। 

কোম্পানির মাইলস্টোন তুলে ধরুন

কোম্পানির মাইলস্টোন এবং ফেসবুকের অ্যানিভার্সারিগুলো শেয়ার করতে থাকুন। এর মাধ্যমে অনুসরণকারীদের বেশি বেশি এনগেজ করা সম্ভব।

ফেসবুক অ্যাড ব্যবহার করুন

ফেসবুক অ্যাডের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা যায়। তবে এর জন্য কিছু অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। অ্যাডের জন্য আপনি বাজেট তৈরি করতে পারেন।

ফেসবুক ভিডিও তৈরি করুন

ফেসবুকে অসংখ্য ভিডিও প্রকাশ হয়ে থাকে। কোম্পানির প্রচারের জন্য আপনিও ভিডিও প্রচার করতে পারেন। টার্গেট অডিয়েন্সের ওপর ভিত্তি করে ভিডিও তৈরি করুন। এতে আপনার পণ্য বা কোম্পানি সম্পর্কে একসঙ্গে অনেক মানুষ জানতে পারবেন। 

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক থেকে আয় করা যায় কীভাবে এমন প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনে উঁকি দেয়। করোনা মহামারি ও লকডাউনের কারণে গৃহবন্দী সময়কে কাজে লাগিয়ে সহজেই ফেসবুকের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। কীভাবে? সে বিষয়ে আপনাকে জানাবো- 

ফেসবুক পেজ

ফেসবুক খুললেই আমাদের চোখে পড়ে হরেক রকমের পেজ। কনটেন্টের মান ভালো হলে ফেসবুক নিউজফিডে সহজেই প্রাধান্য পায়। ফেসবুক পেজ থেকে আয় করতে হলে প্রথমেই একটি পেজ খুলে নিতে হবে। ফুড রিভিউ, ট্র্যাভেল পেজ, নিউজ পোর্টাল কিংবা ট্রেন্ডি কোনো ট্রল পেজসহ বিভিন্ন ধরনের ফেসবুক পেজ খুলতে হবে।

ফেসবুক পেজ খোলার পর সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুর ওপর। কারণ আপনার কনটেন্টের ওপর পেজটিতে ফ্যানবেস নির্ভর করবে। আকর্ষণীয় শিরোনাম এবং ছবি বা ফুটেজ থাকলে সহজেই ব্যবহারকারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হবে। ফেসবুক পেজে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করার মাধ্যমে ভিজিটর বাড়ানোর যায়। ব্লগস্পট, ওয়ার্ডপ্রেস, টাম্বলারের লিংক পেজে পোস্ট করে আয় করা যায়। এছাড়া অ্যাডসেন্স নামে গুগলের একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। যেটি ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয় করা যায়। অ্যাডসেন্সের কাজ ওয়েবসাইটে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন সরবরাহ করা। এর বিনিময়ে ওয়েবসাইট পরিচালনাকারীদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে থাকে তারা। 

ফেসবুক পেজে কনটেন্ট তৈরির কাজ শেষ করার পর সেগুলো বিক্রি করতে হবে। শপসামথিং ডট কম নামে অনলাইনে একটি ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে ফেসবুক পেজের বিভিন্ন পোস্ট বিক্রি করা যায়। 

ফ্রিল্যান্সিং

বাংলাদেশের নেটিজেনদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং একটি পরিচিত নাম। ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করেন। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো সবসময় হাতের কাছে কাজ থাকে না। ফ্রিল্যান্সিংয়ে প্রায় দেখা যায়, নিজের পছন্দ এবং যোগ্যতা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সাররা কাজ পাচ্ছেন না। কনটেন্ট তৈরি, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, অনলাইন মার্কেটিংয়ের মতো ফ্রিল্যান্সিংয়ের আরও অনেক শাখো-প্রশাখা রয়েছে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ বা পেজের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ পাওয়া যায়। 

অনলাইন কনটেস্ট

অনলাইন কনটেস্ট বা প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য কোম্পানির প্রোমোট করা। প্রায় সময়েই ফেসবুকে বিভিন্ন কনটেস্ট দেখা যায়। নতুন কোনো ক্যাম্পেইন, পণ্য, মার্কেট প্ল্যানিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ফেসবুককেই বেছে নেয় এসব কোম্পানি। অনলাইন কনটেস্টে পুরস্কার হিসেবে কখনো মোটা অঙ্কের অর্থ, কখনো প্রাইজবন্ড, কখনো ইন্টার্নশিপ বা চাকরির সুযোগ। এতে অংশ নিলে আপনার কাজ হবে বেশি বেশি লাইক, শেয়ার এবং বন্ধুদের ট্যাগ করা। 

ডিজিটাল মার্কেটিং

অর্থ উপার্জনের জনপ্রিয় একটি উপায় হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। ফেসবুককে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস রয়েছে। ইদানিং ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন শপ গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন গ্রুপ বা পেজে পণ্যের ছবি, বিবরণ, সাইজ এবং মূল্য লেখা থাকে। ইনবক্সে অথবা কমেন্টে গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো পণ্য অর্ডার করে। কোনো কোনো কোম্পানিতে অর্ডার করার সময়েই ক্রেডিট কার্ড বা বিকাশের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে হয়। 

ইনফ্লুয়েন্সার

এটি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের মতো। ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার হতে হলে আপনার প্রোফাইলে মানসম্মত কিছু কনটেন্ট এবং অনেক বেশি ফ্যান-ফলোয়ার থাকতে হবে। এর পাশাপাশি ফেসবুক অ্যাক্টিভিটিতে সার্বিকভাবে ফলোয়ারদের সন্তোষজনক প্রতিক্রিয়া থাকতে হবে। এরপর হায়ারইনফ্লুয়েন্স, ব্লগমিন্ট, ফ্রোমোটের মতো ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেট এজেন্সির ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গেলে কোনো এক ব্র্যান্ডের প্রতিটি পোস্টের জন্য নির্দিষ্ট মূল নির্ধারণ করতে হবে এবং পরে এসব ব্র্যান্ডের পোস্ট প্রচার করার মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন। 

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment