পহেলা বৈশাখ মুসলমানদের জন্য পালন করা কি জায়েজ?,পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ইসলাম যা বলে, ইসলাম যা বলে ‘পহেলা বৈশাখ’ পালন সম্পর্কে,কুরআন ও হাদীছ শরীফ-এর আলোকে পহেলা বৈশাখ, পহেলা বৈশাখ ইসলাম কি বলে

বিষয়: পহেলা বৈশাখ মুসলমানদের জন্য পালন করা কি জায়েজ?,পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ইসলাম যা বলে

 একজন মুসলিম মাত্রই সহজে বুঝবার কথা – পহেলা বৈশাখ কিংবা নববর্ষ পালন ইসলামে জায়েজ নেই। কারণে উত্সবের সাথে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রীতিনীতি বিধর্মীদের কাজ এগুলো কখনো কোনো মুসলমানের কাজ হতে পারেনা। এমনসব কাজ বা তার অনুকরণ ও ইসলামের বিধানের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

ঘটা করে পহেলা বৈশাখের শুরু-ই করা হয় কুফরী ও শিরকের মতো আচার পালনের মাধ্যমে। রমনা বটমূলে সূর্য ওঠার সাথে সমবেত কন্ঠে রবীন্দ্র সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে নতুন বর্ষকে বরণ করে নেয়া হয়। বাহ! ফজরের সালাতের পরিবর্তে ছেলেমেয়ে একসাথে বসে সংগীতের মাধ্যমে দিন শুরু করেন।

কপালে লাল টিপ, সিথিতে সিঁদুর দেয়া মেয়েরা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি সহ ধুতি-পাঞ্জাবী পরা ছেলেদের হাত ধরে শহরময় ঘুরে বেড়ান। দ্বীন ইসলামে ‘পর্দা’ নামে যে একটি বিষয় আছে – সেদিন বুঝার কোন উপায় থাকে না।

চারুকলা থেকে এরপর বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা নামক একটি ভয়ানক বিষয়। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল মোটামুটি লাইভ দেখায় এই শিরকী মিছিল। ঢোল-তবলা-ডুগডুগি বাজিয়ে, জীব-জানোয়ারের মুখোশ পরে কিংবা মাথায় নিয়ে, ছেলেমেয়ে একসাথে হুল্লোড় করতে করতে নাচতে থাকে মিছিলে। মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল উপাদ্য থাকে “সমাজ থেকে অশুভ শক্তি বিদায়” করা। মাথায় করে নিয়ে বেড়ানো এইসব জীবজন্তুকে তারা অশুভ শক্তি দূর করার প্রতীক বলে মানেন! সত্যি অবাক করা মতো!

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নতুন ডিজাইনের জামাকাপড় আসে মার্কেটে। নতুন জামা না কিনলে প্রেস্টিজ থাকে না তরুণ-তরুনীদের। কেনাকাটা, সেই উপলক্ষে ঘুরে বেড়ানো ঈদের চেয়ে কোন অংশে কম মনে হয় না। বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানি গুলো উন্মুক্ত কনসার্টের আয়োজন করে। নারীপুরুষ কোন ভেদাভেদ ছাড়াই সেখানে ভিড় করে গান শুনে, নাচে, উল্লাস প্রকাশ করে। এমনসব অনুষ্ঠানকে আপনি কি ভাবে দেখবেন বলেন?

উপরের সব কয়টি ‘কাজ’ পবিত্র কুরআন এবং হাদীসের আলোকে স্পষ্টতঃ শিরক, কুফর, হারাম ও বিদ’আত। রাসুলুল্লাহ (সা.), তার সাহাবীরা, পরবর্তী তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ দের কেউ এই জাতীয় কোন অনুষ্ঠান পালন করেছেন বলে খুঁজে পাওয়া যায় নি। ইসলামি শরীয়াহতে এই সব আচারের কোন বিধান নেই। এই সব অনুষ্ঠানের সাথে যাবতীয় সম্পৃক্ততাকে ইজমা’র পরিপ্রেক্ষিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন সম্মানিত উলামারা।

মুসলমান কেন এমন শিরকী অনুষ্ঠান বর্জন করবে না? এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন-


قُلْ أَنَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُنَا وَلَا يَضُرُّنَا وَنُرَدُّ عَلَىٰ أَعْقَابِنَا بَعْدَ إِذْ هَدَانَا اللَّهُ كَالَّذِي اسْتَهْوَتْهُ الشَّيَاطِينُ فِي الْأَرْضِ حَيْرَانَ لَهُ أَصْحَابٌ يَدْعُونَهُ إِلَى الْهُدَى ائْتِنَا ۗ قُلْ إِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الْهُدَىٰ ۖ وَأُمِرْنَا لِنُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ


-হে মুহাম্মাদ ! তাদেরকে জিজ্ঞেস করুণ, আমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকবো, যারা আমাদের উপকারও করতে পারে না, অপকারও করতে পারে না? আর আল্লাহ যখন আমাদের সোজা পথ দেখিয়ে দিয়েছেন তখন আবার কি আমরা উল্টো দিকে ফিরে যাবো? আমরা কি নিজেদের অবস্থা সে ব্যক্তির মতো করে নেবো, যাকে শয়তানরা মরুভূমির বুকে পথ ভুলিয়ে দিয়েছে এবং সে হয়রান, পেরেশান ও উদ্ভান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে? অথচ তার সাথীরা তাকে চীৎকার করে ডেকে বলছে, এদিকে এসো, এখানে রয়েছে সোজা পথ? বলো, আসলে আল্লাহর হেদায়াতই একমাত্র সঠিক ও নিভুর্ল হেদায়াত এবং তাঁর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছে, বিশ্ব জাহানের প্রভুর সামনে আনুগ্রত্যের শির নত করে দাও। [সূরা আনআম-৭১]

রাসুল ﷺ বলেন,
من تشبه بقوم فهو منهم
– যে ব্যাক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরন করবে সে তারই অন্তরভুক্ত হবে।

রাসুল ﷺ আরো বলেছেন,
-যে আমার সুন্নতকে ভালবাসলো সে যেনো আমাকে ভালবাসল্,আর যে আমাকে ভালবাসলো সে জান্নাতে আমার সাথে থাকবে।

এবিষয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে কারীমে এরশাদ করেন : “যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।”
[সুরা আল ইমরান, ৮৫]

আল্লাহ আরো বলেন : ‘তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি।’
[সুরা আল মায়িদাহ, আয়াত ৪৮]

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদ’আত এবং প্রত্যেক বিদ’আত ভ্রষ্টতা।”
[সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৯৯১ ও জামে তিরমিযী, হাদীস ২৬৭৬]

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী মহান আল্লাহ্‌র কিতাব (কুরআন) এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদ’আত এবং প্রত্যেক বিদ’আত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।”
[সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৩৫ ও সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৫৬০]

হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) মদীনাতে আগমন করলেন, আর মদীনাবাসীর দুটি দিন ছিল যাতে তারা বিনোদন বা খেলাধুলা করত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “এই দিন দুটি কি?” তারা বলল, ‘আমরা এই দিনে জাহিলি যুগে খেলা ধুলা করতাম।’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “মহান আল্লাহ তোমাদেরকে এই দিন দুটির পরিবর্তে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। আর তা হলো ঈদুল ফিতরের দিন ও ঈদুল আযহার দিন।”
[সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৪]

উপরের হাদীসের মাধ্যমে ইসলাম ও অন্য ধর্মের যাবতীয় উৎসবের মধ্যে পার্থক্যকারী হিসেবে সামনে এসেছে বৎসরে দু’টি মাত্র দিন; ঈদুল ফিতরের দিন ও ঈদুল আযহার দিন।

অনেকেই প্রশ্ন করবেন বলে রেডি হয়ে আছেন নিশ্চিত – “পহেলা বৈশাখ তো আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। এটি তো ধর্মীয় কোন উত্সব নয়। তাহলে এইটা কেন বিদ’আত হবে? বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। আমাদের বাংলা বর্ষ শুরুর দিনে আমরা তো একটু আনন্দ করতেই পারি।“

(১) ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। মুসলমানদের জন্য উত্সবের দিন ২ টি। এর বাইরে কোন একটি দিনকেও উত্সব আকারে নেয়ার কোন উপায় নেই আমাদের। উপরের শেষ হাদীসটি-ই যথেষ্ট এই বিষয়টি প্রমান করার জন্য।

(২) রাসুলুল্লাহ (সা.) মদীনায় যাবার পরে যে দুইটি উত্সব বাতিল ঘোষণা করে মুসলিমদের দুই ঈদের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার একটি ছিল “নওরোজ বা নতুন বর্ষের উত্সব”!

আর কিছু কি বলার আছে এতো কিছুর পরে? তারপরেও অনেক ভাইবোন এর বিপরীতে যুক্তির পাহাড় দাঁড় করাবেন। অবশ্যই এই যুক্তির পাহাড় এর ভিত্তি তাক্বওয়ার উপরে নয়। অনিবার্য ধ্বংসই এর পরিনতি।

আমরা একমাত্র মহান আল্লাহর কাছে দু’আ করি – তিনি যেন মুসলিমদেরকে তাদের দ্বীনের ব্যাপারে গর্বিত করেন এবং ইসলামকে দৃঢ়ভাবে মেনে চলতে সাহায্য করেন।

উৎসব সাধারণত একটি জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়। উৎসবের উপলক্ষগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে প্রবাহিত ধর্মীয় অনুভূতি, সংস্কার ও ধ্যান-ধারণার ছোঁয়া। আর এজন্যই ইসলাম ধর্মে নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) পরিষ্কারভাবে মুসলিমদের উৎসবকে নির্ধারণ করেছেন। আমাদেরকে ইসলামে স্বীকৃত উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। অন্যদের উৎসব মুসলিমদের সংস্কৃতিতে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ঈদ রয়েছে। আর এটি আমাদের ঈদ। [সহীহ বুখারী, মুসলিম]

.

আনাস ইবনে মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন (মদীনায়) আসলেন তখন তাদের দুটো উৎসবের দিন ছিল। তিনি বললেনঃ এ দুটো দিনের তাৎপর্য কি? তারা বললঃ জাহিলিয়াতের যুগে আমরা এ দুটো দিনে উৎসব করতাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে এদের পরিবর্তে উত্তম কিছু দিয়েছেন, ইয়াওমুদ্দুহা (ঈদুল আযহা) ও ইয়াওমুল ফিতর (ঈদুল ফিতর)। [সুনান আবু দাউদ]

.

এ হাদীস থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ইসলাম আগমনের পর ইসলাম বহির্ভূত সকল উৎসবকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং নতুনভাবে উৎসবের জন্য দুটো দিনকে নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সাথে অমুসলিমদের অনুসরণে যাবতীয় উৎসব পালনের পথকে বন্ধ করা হয়েছে।

.

বাংলা অথবা ইংরেজি নববর্ষ পালন করা মূলত কাফিরদের সংস্কৃতির একটি অংশ। আর কাফিরদের অনুসরণ অনুকরণ করা কিংবা তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা সম্পূর্ণরূপে হারাম। রাসূল (ﷺ) বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভুক্ত। [সুনানে আবু দাউদ ৪০৩১, আলবানী “সহীহ সুনানে আবি দাউদ” গ্রন্থে হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন]

.

ইবন কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ কোন মুসলিমের সুযোগ নেই কাফেরদের সামঞ্জস্য গ্রহণ করা, না তাদের ধর্মীয় উৎসবে, না মৌসুমি উৎসবে, না তাদের কোন ইবাদতে। কারণ আল্লাহ তা’আলা এ উম্মতকে সর্বশেষ নবী দ্বারা সম্মানিত করেছেন, যাকে পরিপূর্ণ ও সর্বব্যাপী দ্বীন দেয়া হয়েছে। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/১৪২]

.

নববর্ষের অনুষ্ঠানাদিঃ শয়তানের পুরোনো কূটচালের নবায়ন

.

আমাদের সমাজে নববর্ষ যারা পালন করে, তারা কি ধরনের অনুষ্ঠান সেখানে পালন করে আর সেগুলো সম্পর্কে ইসলামের বক্তব্য কি? নববর্ষের অনুষ্ঠানাদির মধ্যে রয়েছে পটকা ফুটিয়ে বা আতশবাজি পুড়িয়ে রাত ১২টায় হৈ হুল্লোড় করে পরিবেশ ও প্রতিবেশির শান্তি বিনষ্ট করে নববর্ষকে স্বাগত জানানো, ব্যান্ড সঙ্গীত বা অন্যান্য গান-বাজনার ব্যবস্থা, সম্ভ্রান্ত পল্লীর বাড়ীতে বা ক্লাবে গান-বাজনা, মদ্যপান ও ব্যভিচারের আয়োজন ইত্যাদি। এছাড়া রেডিও টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠান ও পত্র-পত্রিকার বিশেষ ক্রোড়পত্র ও রাশিফল প্রকাশ। শয়তান নির্দেশিত এ সমস্ত কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে ইসলাম বিরোধী। ইসলামের সাথে এসবের কোন সম্পর্ক নেই।

.

নতুন দিন তথা সূর্যকে স্বাগত জানানোঃ

.

এ ধরনের কর্মকান্ড মূলত সূর্য পূজারী ও প্রকৃতি পূজারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অনুকরণ মাত্র, যা আধুনিক মানুষের দৃষ্টিতে পুনরায় শোভনীয় হয়ে উঠেছে। সূর্য ও প্রকৃতির পূজা বহু প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন জাতির লোকেরা করে এসেছে। যেমনঃ খ্রীস্টপূর্ব ১৪ শতকে মিশরীয় অ্যাটোনিসম মতবাদে সূর্যের উপাসনা চলত। এমনি ভাবে ইন্দো-ইউরোপীয় এবং মেসো-আমেরিকান সংস্কৃতিতে সূর্য পূজারীদেরকে পাওয়া যাবে। ১৯ শতাব্দীর উত্তর-আমেরিকায় কিছু সম্প্রদায় গ্রীষ্মের প্রাক্কালে পালন করত সৌর-নৃত্য এবং এই উৎসব উপলক্ষে পৌত্তলিক প্রকৃতি পূজারীরা তাদের ধর্মীয়-বিশ্বাসের পুনর্ঘোষণা দিত। মানুষের ভক্তি ও ভালবাসাকে প্রকৃতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টির সাথে আবদ্ধ করে তাদেরকে শিরক বা অংশীদারিত্বে লিপ্ত করানো শয়তানের সুপ্রাচীন “ক্লাসিকাল ট্রিক” বলা চলে। শয়তানের এই কূটচালের বর্ণনা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে তুলে ধরেছেনঃ আমি তাকে ও তার জাতিকে দেখেছি তারা আল্লাহকে ছেড়ে সূর্যকে সিজদা করছে এবং শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের জন্য শোভনীয় করেছে। [সূরা নামল, আয়াত ২৪]

.

নারী সম্পর্কিত বিভিন্ন অশ্লীলতাঃ

.

নববর্ষের পার্টি বা “উদযাপন আয়োজনের” অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে নারীর সহজলভ্যতা। নববর্ষের অনুষ্ঠানাদির মধ্যে সমাজ-বিধ্বংসী যে বিষয়গুলো পাওয়া যাবে, তার মাঝে অন্যতম হচ্ছে নারীকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীলতা। নববর্ষের পার্টি বা উদযাপন আয়োজনের সবর্ত্রই সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী নারীকে পুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশায় লিপ্ত দেখা যাবে। নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নারীর যে অবাধ উপস্থিতি, সৌন্দর্য প্রদর্শন এবং পুরুষের সাথে মেলামেশা তা পরিপূর্ণভাবে ইসলাম বিরোধী, তা কতিপয় মানুষের কাছে যতই লোভনীয় বা আকর্ষণীয়ই হোক না কেন। এই অনুষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের ধ্বংসের পূর্বাভাস দিচ্ছে।

.

ব্যভিচারের প্রতি আহ্বান জানানো শয়তানের ক্লাসিকাল ট্রিকগুলোর অপর একটি, যেটিকে কুরআনে “ফাহিশাহ” শব্দের আওতায় আলোচনা করা হয়েছে। শয়তানের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেনঃ হে মানুষ, পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র বস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার করো আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তো তোমাদের নির্দেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন সব বিষয় বলতে যা তোমরা জান না। [সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৮-১৬৯]

.

এছাড়া যা কিছুই মানুষকে ব্যভিচারের দিকে প্রলুব্ধ ও উদ্যোগী করতে পারে, তার সবগুলোকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে কুরআনের এই আয়াতের দ্বারাঃ তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। অবশ্যই এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পন্থা। [সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ৩২]

.

সঙ্গীত ও বাদ্যঃ

.

নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকে সংগীত ও বাদ্য। ইসলামে নারীকন্ঠে সংগীত নিঃসন্দেহে নিষিদ্ধ। সাধারণভাবে বাদ্যযন্ত্রকেও ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা মদ, জুয়া ও সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন। [বায়হাক্বী, হাদিস সহীহ; মিশকাত, হাদিস নং ৪৫০৩]

.

আবু মালেক আশআরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি নবী (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেনঃ অবশ্যই আমার উম্মতের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায় হবে যারা ব্যভিচার, রেশম বস্ত্র, মদ এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হালাল মনে করবে। [সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৫৫৯০; হাদীস সম্ভার, হাদিস নং ২৩০৭]

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

Leave a Comment