পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের সুন্দরবনের প্রাণী প্রবন্ধে মদনটাকের উল্লেখ আছে

মদনটাক সিকোনিডাই পরিবারভুক্ত লেপ্টোপ্টাইলোস (Leptoptilos) গণের এক বৃহদাকৃতির জলচর পাখি। ইংরেজিতে এই পাখিটি Lesser Adjutant নামে পরিচিত এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Leptoptilos javanicus। লেপ্টোপ্টাইলোস গণের অন্যান্য প্রজাতির মতো মদনটাক পাখিটির নগ্ন ঘাড় ও মাথা রয়েছে।

সাধারণত এরা একাকী থাকতে ও চলাফেরা করতে ভালোবাসে। মদনটাক বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। প্রায়ই এদের বড় ধরনের নদ-নদী ও হ্রদ এলাকায় দেখা যায়। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া এদের প্রধান আবাসস্থল।

বৃহদাকৃতির মদনটাকের সম্মুখাংশে নগ্ন বা টেকো মাথা এবং ঘাড় ছাড়াও বড় ধরনের অনুজ্জ্বল হলদে চোখ রয়েছে।

গড়পড়তায় এদের দৈর্ঘ্য ৮৭-৯৩ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজন ৪ থেকে ৫.৭১ কিলোগ্রাম এবং পায়ের উচ্চতা ১১০-১২০ সেন্টিমিটার। মদনটাকের আরেক জাতের নাম হাড়গিলা।

এরা বড় মদনটাক নামেও পরিচিত। মহাবিপন্ন পাখির তালিকায় থাকা হাড়গিলা এ দেশের প্রকৃতিতে এখন আর দেখা যায় না।

প্রাপ্তবয়স্ক মদনটাকের পিঠের দিক উজ্জ্বল কালো। শরীর সাদা বর্ণের। ডানার গোড়ায় কালো রং থাকে। পালকহীন মুখের চামড়া ও ঘাড় লালচে। গলা হলদে বা লালচে। চোখ সাদা কিংবা ধূসর, পা লম্বা, পায়ের পাতা, নখ ও পা সবুজে ধূসর থেকে কালো। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড়ে বিক্ষিপ্ত ঘন পালক থাকে।

মদনটাক সরীসৃপ, মাছ, ব্যাঙ এবং অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণী খেয়ে থাকে। কদাচিৎ এরা গলিত পচা মাংসও খায়। এ ছাড়া এরা ছোট ছোট পাখি এবং ইঁদুরজাতীয় প্রাণীও প্রজনন মৌসুমের খাবার হিসেবে গ্রহণ করে।

ভারতের দক্ষিণাংশে ফেব্রুয়ারি থেকে মে এবং উত্তর-পূর্বাংশে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বড় বড় ডালপালা দিয়ে উঁচু বৃক্ষের শাখায় এরা বাসা বাঁধে ও ডিম পাড়ে। বাসার ব্যাসার্ধ এক মিটারের চেয়েও অধিক হয়ে থাকে। মেয়ে মদনটাক তিন থেকে চারটি পর্যন্ত ডিম পাড়ে। ২৮ থেকে ৩০ দিন পরই ডিম থেকে বাচ্চা হয়।

গোপান রোগ

2 thoughts on “পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের সুন্দরবনের প্রাণী প্রবন্ধে মদনটাকের উল্লেখ আছে”

Leave a Comment