নামাজ না পড়ার শাস্তি সমূহ

নামাজ না পড়ার শাস্তি সমূহঃ-

আল্লামা ইবনে হযরত মক্কী (রহঃ) ফাজায়েলে আ‘মাল মিনাল জাওয়াযের নামক গ্রন্থে একটি হাদিস উল্লেখ করেন। হাদিসটি হলো নিম্নরূপ : যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে অলসতা করে তাকে ১৫ ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে।

আল্লাহ্ পাকের ১৫ টি আজাব সমূহঃ

১.ছয়টি ধরনের শাস্তি দুনিয়াতে
২.তিন ধরনের শাস্তি মৃত্যুর সময়।
৩.তিন ধরনের শাস্তি কবরে।
৪.হাশরের মাঠে তিনটি আজাব

১.ছয়টি ধরনের শাস্তি দুনিয়াতে তাহার জীবনে কোনরূপ বরকত পাইবেনা । আল্লাহ্ তার চেহারা হইতে নেক লোকের চিহ্ন উঠাইয়া লইবেন। যে যাহা কিছু নেক কাজ করবে, তাহার ছওয়াব পাইবেনা। তাহার দোয়া আল্লাহ্ পাকের নিকট কবুলহইবে না।। আল্লাহ্ পাকের সমস্ত ফেরেশতা তাহার উপর অসন্তুষ্ট থাকবে। ইসলামের মূল্যবান নেয়ামত সমূহ হইতে বঞ্চিত করা হইবে ।

২.তিন ধরনের শাস্তি মৃত্যুর সময়। অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত হইয়া মৃত্যুবরণ করিবে। ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যু বরন করিবে। মৃত্যুকালে তাহার এত পিপাসা পাইবে যে,তাহার ইচ্ছা হইবে দুনিয়ার সমস্ত পানি পান করিয়া ফেলিতে ।

৩.তিন ধরনের শাস্তি কবরে যেমন- তাহার কবর এমন সংকীর্ণ হবে যে তাহার এক পাশের হাড় অপর পাশের হাড়ের সংগে মিলিত হইয়া চূর্ণবিচূর্ণ হইয়া যাইবে। তাহার কবরে, দিনরাত্রি সবসময় আগুন জ্বালাইয়া রাখা হবে। আল্লাহ্ তাহার কবরে একজন আজাবের ফেরেশ্তা নিযুক্ত করিবেন। তাহার হাতে লোহার মুগুর থাকবে। সে মৃত ব্যক্তিকে বলতে থাকবে যে,দুনিয়ায় কেন নামায পড় নাই। আজ তাহার ফল ভোগ কর। এই বলিয়া ফজর নামায না পড়ার জন্য ফজর হইতে জোহর পর্যন্ত, জোহর নামাযের জন্য জোহর থেকে আছর পর্যন্ত, আছরের নামাযের জন্য আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, মাগরিবের নামাযের জন্য মাগরিব হইতে এশা পর্যন্ত এবংএশার নামাযের জন্য এশা হইতে ফজর পর্যন্ত লোহার মুগুর দ্বারা আঘাত করতে থাকবে।

৪.হাশরের মাঠে তিনটি আজাব যেমন – একজন ফেরেশতা তাকে পা উপরের দিকে এবং মাথা নিচের দিকে অবস্থায় হাশরের মাঠে লইয়া যাইবে। আল্লাহ পাক তাহাকে অনুগ্রহের দৃষ্টিতে দেখবেন না। সে চির কালের জন্য দোযখী হয়ে নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে থাকবে। নবী করিম (সঃ) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে আট শ্রেণীর লোকের উপর কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট থাকবেন। তাহাদের মুখের আকৃতি অত্যন্ত কুশ্রী ও ভীষণাকার হবে। হাশরের মাঠে প্রত্যেক ব্যক্তি তাহাদিগকে দেখে ঘৃণা করবে। এই কথা শুনার পরে সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে সমস্ত লোক কারা?

নবী করীম (সঃ) বললেন —
১.জ্বেনা-কারী
২.অবিচারক বাদশাহ্ বা হাকিম।
৩.মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান।
৪.সুদ-খোর
৫.পরনিন্দাকারী
৬.অন্যায়কারী এবং অত্যাচারী
৭.মিথ্যা সাক্ষীদাতা।
৮ .বে-নামাজী।

এদের মধ্যে বে-নামাজীর শাস্তিই বেশী হবে। বে-নামাজীকে আগুনের পোশাক পড়িয়ে শিকলে বেঁধে আগুনের কোড়া মারতে থাকবে। বেহেশত তাহাকে বলতে থাকবে তুমি আমার দিকে অগ্রসর হয়োনা। দোজখ তাকে বলবে আমি তোমার জন্যই অপেক্ষা করছি। তোমার দ্বারা আমার পেটের ক্ষুধা নিবারণ করব। এই বলে দোজখ তার জিহ্বা দিয়ে ভিতরে নিয়ে যাবে। নবী করীম (সঃ) বলেছেন, জাহান্নাম দোযখের মধ্যে লমলম নামে একটি কুপ আছে। উহা অসংখ্য সাপ বিচ্ছুতে ভর্তি। প্রত্যেকটা সাপ একটি পাড়ের সমতুল্য এবং একটা বিচ্ছু হাতির সমতুল্য হবে।

সেই সমস্ত সাপ বিচ্ছু সবসময় বেনামাজীকে কামড়াতে থাকবে, একবার কামড়ালে সত্তর বছর পর্যন্ত তার যন্ত্রনা থাকবে এবং কারও মৃত্যু হবে না। আল্লাহু আকবার!!!কি ভয়ংকর!!! হে আল্লাহ, আমাদের সবাইকে পাঁচওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন আর আমাদের সবাইকে এইসব ভয়ংকর আজাব থেকে রক্ষা করুন, এবং আমাদের সবাইকে বিনা হিসাবে জান্নাত নসীব করুন-আমীন।

ধর্ম কম

2 thoughts on “নামাজ না পড়ার শাস্তি সমূহ”

Leave a Comment