দুর্বল ধরনের বাজার দক্ষতার গবেষণামূলক পরীক্ষাসমূহ আলোচনা কর, দুর্বল বাজার দক্ষতার গবেষণামূলক পরীক্ষাগুলো আলোচনা কর

দুর্বল ধরনের বাজার দক্ষতার গবেষণামূলক পরীক্ষাসমূহ আলোচনা কর, দুর্বল বাজার দক্ষতার গবেষণামূলক পরীক্ষাগুলো আলোচনা কর

দুর্বল দক্ষ বাজার দক্ষতা ব্যাখ্যা করে যে, বর্তমান বাজার মূল্য ইতোমধ্যে সকল তথ্যের প্রতিফলন ঘটিয়েছে যা অতীত শেয়ার মূল্যের ধারাবাহিকতার অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূল্যের নতুন হ্রাস বৃদ্ধি পুরোপুরি দৈব এবং শেয়ার মূল্য নতুন তথ্যের ভিত্তিতে সৃষ্টি ও অতীত মূল্যের পরিবর্তনের উপর নির্ভরশীল বা সম্পৃক্ত নয়। সুতরাং অতীত মূল্যের ধারাবাহিক অনুশীলনের আলোকে সিকিউরিটির লেনদেন অস্বাভাবিক আয় এনে দিতে পারে না । এই ব্যাখ্যা কৌশলগত বিশ্লেষণকে অর্থহীন হিসেবে প্রমাণ করে ।

১. অনুক্রমিক বা ধারাবাহিক সহসম্বন্ধ পরীক্ষা : যেহেতু দুর্বল দক্ষ বাজার অনুকল্প শেয়ারের ধারাবাহিক মূল্য পরিবর্তনকে স্বতন্ত্র বা স্বাধীন হিসেবে দাবি করে সেহেতু মূল্য পরিবর্তনের এই স্বাধীনতা বা দৈবিকতা একই শেয়ারের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মূল্য পরিবর্তন এবং অন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের মূল্য পরিবর্তনের মধ্যে সহসম্বন্ধ নির্ণয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করা যায়। সহসম্বন্ধের মান-১ থেকে ১ পর্যন্ত হতে পারে। ধনাত্মক মান প্রত্যক্ষ সম্পর্ক, ঋণাত্মক মান বিপরীত সম্পর্ক এবং শূন্য কোন সম্পর্কই নেই এমনটা নির্দেশ করে। সুতরাং সহসম্বন্ধের মান শুন্য হলে শেয়ারের মূল্য পরিবর্তনকে ধারাবাহিকভাবে স্বাধীন বা দৈবিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২. গতি বা ধারা পরীক্ষা : এটি আরেকটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে শেয়ার মূল্য পরিবর্তনকে দৈবিক হিসেবে প্রমাণ করা যায়। এই পরীক্ষা অনুযায়ী মূল্য পরিবর্তনের পরম মানকে বিবেচনা করা হয় না, বরং মূল্য পরিবর্তনের ধারাকে বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধিকে + চিহ্ন ও মূল্য হ্রাসকে চিহ্ন দ্বারা উপস্থাপন করা হয়। আবার অপরিবর্তিত অবস্থায় ০ (শূন্য) ব্যবহার করা হয়। ধারাবাহিক অনুক্রমের ক্ষেত্রে একই চিহ্ন ব্যবহার করে একটা ধারা বা গতি গঠিত হয়।

যেমন, ++++ চিহ্ন দ্বারা দুইটি ধারা বোঝায়। অন্যভাবে বলা যায় নতুন নতুন চিহ্ন নতুন নতুন ধারা নির্দেশ করে। যেমন, ++ o +++++ চিহ্নগুলো দ্বারা পাঁচটি ধারা বোঝানো হয় অর্থাৎ প্রথমটি তিনটি ‘-‘ এর একটি ধারা, দ্বিতীয়টি দুইটি ‘+’ এর একটি ধারা, তৃতীয়টি একটি ‘o’ এর একটি ধারা, চতুর্থটি তিনটি ‘-‘ এর একটি ধারা, পঞ্চমটি চারটি ‘+’ এর একটি ধারা নির্দেশ করে।

ধারা পরীক্ষায় শেয়ার মূল্য পরিবর্তন সারির প্রকৃত ধারা সংখ্যা করা হয় এবং এদের মধ্যে যদি কোনো পার্থক্য না থাকে তবে সিকিউরিটির মূল্য পরিবর্তনকে প্রকৃতিগতভাবে দৈবিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।

৩. বিশোধন পরীক্ষা : যদি সিকিউরিটির মূল্য পরিবর্তন প্রকৃতিগতভাবে দৈবিক হয় সেক্ষেত্রে একটি পরীক্ষা যাতে এগুলোর বৈধতা ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা যায় ।

এটি প্রায়ই বিশ্বাস করা হয় যে, রাজার নতুন তথ্য না আসা পর্যন্ত শেয়ার দৈবিকভাবে প্রদর্শনী মূল্যের আশেপাশে ওঠানামা করে। নতুন তথ্য আগমনের সাথে সাথে নতুন ভারসাম্য মূল্য নির্ধারিত হয়। যদি তথ্যগুলো অনুকূল বা সন্তোষজনক হয় তাহলে শেয়ার মূল্য পূর্বের চেয়ে বেশি হবে এবং নতুন ভারসাম্য স্থাপিত হবে। এই অবস্থায় বিনিয়োগকারী শেয়ার ক্রয় করলে লাভবান হবেন ।

একইভাবে প্রতিকূল তথ্যের ক্ষেত্রে শেয়ার মূল্য পূর্বের চেয়ে কম হবে এবং ভারসাম্য তৈরি করবে এই অবস্থায় বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রয় করলে পুনরায় শেয়ার মূল্য হ্রাসের ক্ষতি থেকে পরিত্রাণ পাবে। বিশ্লেষকগণ উপরিউক্ত নিদর্শনের উপর ভিত্তি করে অতিরিক্ত উপার্জন করার জন্য একটি লেনদেন কৌশল ঠিক করেছে যাতে বিশোধন নিয়ম বলা হয়।

এই নিয়ম অনুযায়ী শেয়ার মূল্য নির্দিষ্ট হারে পূর্বের চেয়ে বেশি হলে ক্রয় ও মূল্য নির্দিষ্ট হারে পূর্বের চেয়ে হ্রাস পেলে বিক্রয় করা হয়। এই কৌশলের বিকল্প হচ্ছে পরোক্ষ ক্রয় ও ধারণ কৌশল। বিশোধন নিয়ম অনুযায়ী লেনদেন কৌশলের মাধ্যমে অর্জিত আয় ক্রয় এবং ধারণ কৌশলে অর্জিত আয়ের সাথে তুলনা করা হয়। যদি বিশোধন নিয়মের মাধ্যমে অর্জিত আয় বেশি হয় তাহলে শেয়ারের মূল্য পরিবর্তন দৈবিক নয় ও দুর্বল দক্ষ বাজার অনুকল্প বাতিল বলে গণ্য হবে।

৪. বিন্যাস নমুনা : এটি একটি পরিসংখ্যানিক নিয়ম, যা অনুযায়ী দৈবিক ঘটনার বিন্যাস একটি স্বাভাবিক বিন্যাসের অনুরূপ হবে। তারপর, যদি মূল্য পরিবর্তন দৈবিক হয় তাহলে তাদের বিন্যাসও সাধারণ হবে। সুতরাং এখন মূল্য পরিবর্তনের বিন্যাস অনুশীলন করে দৈবিকতা পরীক্ষা করতে হবে।
১৯৬০ সালে দক্ষ বাজার তত্ত্ব দৈব সঞ্চালন তত্ত্ব হিসেবে পরিচিতি ছিল এবং শেয়ার মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি সম্পর্কে অনেক গবেষণামূলক অনুশীলন করে প্রমাণিত হয়েছে যে, এটি দৈব সঞ্চালন তত্ত্বই অনুসরণ করে ।

১৯৫৯ সালে প্রকাশিত Roberts এবং Osborne এর দুটি প্রবন্ধ অনেক তর্ক-বিতর্কের পর দৈব সঞ্চালন তত্ত্ব হিসেবে অ্যাখ্যা পায়। Robcts দৈব সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত চলক Dow Jones Industrial Average (আমেরিকা স্টক বাজার সূচি) এর হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে তুলনা করে খুঁজে পান যে, দুটি প্রক্রিয়াই একই নুমনা বা নিদর্শন উৎপন্ন করে। অন্যদিকে Osborne-এর গবেষণাও একই রকম তথ্য প্রদান করে বলে যে, শেয়ার মূল্যের পরিবর্তন দৈবিক এবং মূল্যের অতীত হ্রাস বৃদ্ধি কোনো প্রকার পূর্বাভাস প্রদান করতে পারে না ।

১৯৬০ সালে সহ-সম্বন্ধ পরিক্ষা ব্যাপকভাবে অনুশীলন করা হয়। Moore সাপ্তাহিক মূল্য পরিবর্তনের জন্য গড় সারি সহ- সম্বন্ধের মান খুঁজে পান ০.০৬ এবং Fama, Dow Jones Industrial Average-এর ত্রিশটি সিকিউরিটির জন্য পাঁচ বছর ধরে গবেষণা করে গড় সারি সহ-সম্বন্ধের মান খুঁজে পান ০.০৩, যে মানগুলো শূন্যের কাছাকাছি। সুতরাং এ দুটি গবেষণাও দৈব সঞ্চালন তত্ত্বকে স্বীকৃতি দেয় ।

পরবর্তীতে Fama, Moore-এর ধারা পরীক্ষা (Run Test) নিয়ে গবেষণা Hagerman, Richman-এর সারি সহ-সম্বন্ধ নিয়ে গবেষণা ঐ দৈব সঞ্চালন তত্ত্বকেই স্বীকৃত দেয় ।

বিশোধন নিয়মের লেনদেন কৌশলের সাহায্যে গড় আয়ের অতিরিক্ত উপার্জন করা যায় কিনা তা নিয়ে অনেক গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। আমেরিকার Alexander, Fama এবং Blume, ইংল্যান্ডের Dryden অস্ট্রেলিয়ার Praetz একই ধরনের গবেষণার পর উপনীত হয়েছেন যে, বিশোধন কৌশল গড় আয়ের অতিরিক্ত উপার্জনে সক্ষম নয়। সুতরাং সকল গবেষণা পরিসংখ্যানিক নির্ভরশীলতা এবং মূল্য নমুনা খুঁজে না পাওয়ার ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছায় এবং দুর্বল বাজার অনুকল্পকে সত্য বলে।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ দুর্বল ধরনের বাজার দক্ষতার গবেষণামূলক পরীক্ষাসমূহ আলোচনা কর, দুর্বল বাজার দক্ষতার গবেষণামূলক পরীক্ষাগুলো আলোচনা কর

Leave a Comment