দারিদ্র্যের শ্রেণীবিভাগ বিশ্লেষণ কর, দারিদ্র্যের প্রকারভেদ আলোচনা কর

দারিদ্র্য বলতে আমরা মানুষের সে অবস্থাকে বোঝায়, যাতে একজন মানুষ তার মৌল মানবিক চাহিদার কিঞ্চিত পরিমাণ পূরণ করতে পারে, সম্পূর্ণ নয় ।

দারিদ্র্যের শ্রেণীবিভাগ বিশ্লেষণ কর, দারিদ্র্যের প্রকারভেদ আলোচনা কর

→ দারিদ্র্যের প্রকারভেদ : দারিদ্র্যকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. অনপেক্ষ দারিদ্র্য ও ২. আপেক্ষিক দারিদ্র্য।

১. অনপেক্ষ দারিদ্র্য : অনপেক্ষ দারিদ্র্য বলতে মানুষের মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণের অক্ষমতাকে বুঝায়। মানুষের মৌলিক চাহিদা পাঁচটি। যথা- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এই চাহিদাগুলো পূরণের অক্ষমতাই হলো অনপেক্ষ দারিদ্র্য। অনপেক্ষ দারিদ্র্য আবার দুভাগে ভাগ করা যায়।
যথা- (ক) চরম দারিদ্র্য ও (খ) দারিদ্র্যসীমার নিচে।

(ক) চরম দারিদ্র্য : বিশ্বব্যাংক ১৯৯০ সালে মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৩৭০ ডলারের মাপকাঠি ধরে বিশ্বব্যাপী এর পরিমাপ করেছে। এই মাপকাঠি অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ১৫০ কোটি লোক চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। আবার দৈনিক মাথাপিছু ক্যালরি গ্রহণের ভিত্তিতে বলা যায়, যারা দৈনিক মাথাপিছু ১৮০৫ কিলো-ক্যালরির কর্ম খাদ্য গ্রহণ করে তারাই চরম দরিদ্র।

বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান রবার্ট ম্যাকনামারার মতে, “চরম দারিদ্র্য এমন এক অবস্থা যা অপুষ্টি, নিরক্ষরতা, রোগ- ব্যাধি, নোংরা পরিবেশ, শিশু মৃত্যুর উচ্চ হার, কম আয়ুষ্কালের নিগড়ে বন্ধি, যে অবস্থা মানবিক উৎকর্ষের কোন যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে পড়ে না।”

(খ) দারিদ্র্যসীমার নিচে : বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরো দৈনিক মাথাপিছু ক্যালরি গ্রহণের ভিত্তিতে দারিদ্র্যের বিস্তৃতি প্রাককলন করে । বাংলাদেশের সামর্থ্যের অভাবে দৈনিক ২১-২২ কিলো-ক্যালরির কম খাদ্য গ্রহণকারীদের অবস্থান “দারিদ্র্যসীমার নিচে” ধরা হয়।

২. আপেক্ষিক দারিদ্র্য : আপেক্ষিক দারিদ্র্য সমাজের ন্যূনতম মাপকাঠিতে পরিমাপ করা হয়। এতে শিশু মৃত্যু, আয়ুষ্কাল, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃপ্রণালীর সুযোগ, স্বাক্ষরতা ইত্যাদি বিষয় পরিমাপক হিসেবে ধরা হয়। এছাড়াও জীবনের সার্বিক মানকে প্রভাবিত করার মত মানুষের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়ও বাড়তি মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এসব সামাজিক প্রাপ্তির নিরীখে বিচার করলে দেখা যায়, অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ চরম দারিদ্র্য না হলেও আপেক্ষিক দারিদ্র্যের আওতাভুক্ত।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, দারিদ্র্য মূলত দু’প্রকার। অন্যপেক্ষ দারিদ্র্য ও আপেক্ষিক দারিদ্র্য। উৎস ধরনের দারিদ্র্যই দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে ।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ বাংলাদেশে কর্মরত দারিদ্র্যের শ্রেণিবিভাগ লিখ, দারিদ্র্যের এর প্রকারভেদ,দারিদ্র্যের কয় প্রকার ও কী কী,দারিদ্র্যের কয় প্রকার ও কী কী ব্যাখ্যা কর

Leave a Comment