ডব্লিউএইচও : সেরে ওঠা রোগী পুনরায় পজিটিভ হলেও সেটা সংক্রমণ নয়

অনেক সেরে ওঠা রোগী দ্বিতীয়বার করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন।

তার হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ফুসফুসের মৃত কোষ বেরিয়ে আসছে, যদিও তার মধ্যে নতুন করে আর সংক্রমণের লক্ষণ নেই বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গত মাসে এমন ১০০টির বেশি ঘটনার কথা জানিয়ে সেরে ওঠা রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

নির্দিষ্টভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার ঘটনা উল্লেখ না করে ডব্লিউএইচওর একজন মুখপাত্র এএফপিকে বলেছেন, কিছু রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর পুনরায় তাদের করোনাভাইরাস পজিটিভ আসার বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি।

আমরা বর্তমানে যা জানি এবং খুব সাম্প্রতিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এটা মনে হচ্ছে, ভাইরাসটি থেকে সেরে ওঠার অংশ হিসেবে তাদের ফুসফুসের মৃত কোষ বেরিয়ে আসছে। আর এটার জন্যই ফলাফল পজিটিভ আসছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের এক সপ্তাহ বা সংক্রমণ ও লক্ষণগুলো দেখা দেয়ার পর তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয় কিনা এবং যদি তা হয় তবে এ প্রতিরোধক্ষমতা কতদিন স্থায়ী হয়।

সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, সেরে ওঠা রোগীদের পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসার কয়েক সপ্তাহ পর আবার পজিটিভ আসার ব্যাপারে আরো গবেষণা প্রয়োজন।

শরীরে কতক্ষণ ভাইরাসটি স্থায়ী হয়, তা আরো ভালোভাবে বুঝতে আমাদের সেরে ওঠা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা প্রয়োজন। আমাদের বুঝতে হবে এ অবস্থায় ভাইরাসটি অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে কিনা। ভাইরাসটি শরীরে বিদ্যমান থাকার অর্থ এই নয় যে এটা অন্য ব্যক্তিদের সংক্রমিত করতে পারে।

সম্প্রতি ডব্লিউএইচও এর জরুরি স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের সংক্রামক রোগের মহামারী বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরোভ বিবিসিকে মৃত কোষের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, নিরাময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের কিছু অংশ থেকে মৃত কোষগুলো বেরিয়ে আসে। এগুলো ফুসফুসের টুকরো, যা আসলে পরীক্ষায় পজিটিভ আসছে। এটা সংক্রামক ভাইরাস নয় এবং এগুলো পুনরায় সক্রিয় হতে পারে না,

বাস্তবে এটা সেরে ওঠার প্রক্রিয়ার একটি অংশ। তবে এর মানে তাদের প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে? বা তাদের কি পুনরায় সংক্রমণের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সুরক্ষা আছে? আমরা এখনো এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানি না।

হামের মতো ভাইরাসের ক্ষেত্রে যারা সংক্রমিত হন, আজীবনের জন্য তাদের শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়।

আবার সার্সের মতো অন্য করোনাভাইরাসগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিরোধক্ষমতা কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

নতুন করোনাভাইরাস এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং ৪০ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে।

যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, দেশগুলো ভাইরাসটিতে মৃত্যু ও আক্রান্তের যে সংখ্যা সরবরাহ করছে, বাস্তবিক সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি।

তাদের যুক্তি, বেশির ভাগ দেশ কেবল হাসপাতালে মৃতুর সংখা গণনা করছে এবং খুব বেশি লক্ষণ দেখা না দিলে পরীক্ষা করছে না।

Leave a Comment