টুরসের যুদ্ধের সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ,টুরসের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

টুরসের যুদ্ধের সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ ও কারণ ও ফলাফল

 ভূমিকা : মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে ৭৩২ খ্রিস্টাব্দে টুরস ও পয়টিয়াস এর মধ্যবর্তী স্থানে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় তা ইতিহাসে টুরসের যুদ্ধ নামে পরিচিত। এটি ছিল ইউরোপের ভাগ্য নির্ধারণকারী যুদ্ধ।

→ টুরসের যুদ্ধ : আব্দুর রহমান আল গাফেকী ৭৩০ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তিনি স্পেনে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে সমগ্র ইউরোপ জয়ের পরিকল্পনা করেন। এর অংশ হিসেবে আব্দুর রহমান আল গাফেকী ফ্রান্স দখলের পরিকল্পনা হাতে নেয়। 

তার নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী পিরেনীজ পর্বতমালা অতিক্রম করে অ্যাকুইটেনের বিরুদ্ধে অভিযান করেন। তিনি বর্ডোর ডিউক ইউডিসকে বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন। 

অতঃপর আনবাসার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য টুরসে শিবির স্থাপন করেন। এতে ভীত হয়ে ইউডিস ফ্রান্সের রাজা চার্লস মাটেলের সাহায্যে কামনা করেন। 

টুরস ও পয়টিয়াস এর মধ্যে ক্লেন ও ভিয়েন এর সংযোগস্থলে চার্লস মাটেল বাহিনীর সাথে দেখা। সাতদিন ধরে উভয় বাহিনীর মধ্যে খণ্ড যুদ্ধ হয়। ৭৩২ খ্রিস্টাব্দে যুদ্ধ আরম্ভ হয়। এ যুদ্ধে আব্দুল রহমান খ্রিস্টান বাহিনীর নিকট পরাজয় বরণ করেন ।


আরো ও সাজেশন:-

টুরসের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

হিশামের উত্তরাধিকারী আব্দুর রহমান আল গাফেকী সমগ্র জাতি ও গোত্রের সাহায্য নিয়ে স্পেন বিজয়ী তারিক বিন জিয়াদ এবং মুসা বিন নুসায়ের এর পদাংক অনুসরণ করে ইউরোপীয় ভূখন্ডে মুসলিম আধিপত্য বিস্তার করতে অগ্রসর হন। এর ফলে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় তাকে টুরসের যুদ্ধ বলে।

→ টুরসের যুদ্ধ : ৭৩১ খ্রিস্টাব্দে খলিফা হিশাম আব্দুর রহমান আল গাফেকীকে স্পেনের গভর্নর নিযুক্ত করেন। আরব শাসক উসমান তার শ্বশুর ইউডিজের সাথে একত্রিত হয়ে আরব শাসনের বিরোধিতা করে। ফলে আব্দুর রহমান তাদেরকে পরাজিত করে ফ্রান্সের রাজধানীর দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর ডিউড ফ্রান্সের রাজা চার্লস মার্টেলের সহায়তায় ৭৩২ সালে আব্দুর রহমানের গতিরোধ করে। ফলে টুরস নামক স্থানে মুসলিমদের সাথে খ্রিষ্টানদের যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় তাকে ইতিহাসে টুরসের যুদ্ধ বলা হয় ।

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

যুদ্ধের গতি প্রকৃতি : যুদ্ধের প্রথম দিকে মুসলিম বাহিনী অগ্রগামী ছিল কিন্তু দশম দিনে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে শত্রুরা মুসলিম শিবিরে প্রবেশ করে লুণ্ঠন শুরু করেছে। গুজবে বিশ্বাস করে মুসলিম সৈন্যরা নিজ নিজ তাবুর দিকে ছুটতে থাকে। আব্দুর রহমান আপ্রাণ চেষ্টা করেও যুদ্ধে গতি ফিরিয়ে আনতে পারেননি । তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হন।

যুদ্ধের ফলাফল : ঐতিহাসিক টুরসের যুদ্ধ ছিল ইউরোপীয় মুসলিম ইতিহাসে একটি ভাগ্য নিয়ন্ত্রকারী যুদ্ধ। মুসলিমরা এই যুদ্ধে পরাজয় বরণ না করলে সমগ্র ইউরোপে আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হতো। তাই ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, On the plains tours The Arabs lost the emopire of the world when almost in there grasp. Ref History of the seracens.

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আসলে টুরসের যুদ্ধে যদি মুসলিমরা বিজয়ী হতো তাহলে ইউরোপে মুসলিম আধিপত্য এবং সংস্কৃতির প্রতিস্থাপন হতো। হয়তো মন্দিরের কংকন ধ্বনির বিপরীতে ভেসে উঠত আল্লাহর একত্ববাদের আযান ।

Leave a Comment