প্রশ্ন সমাধান: গ্রেসামের বিধি কি গ্রেসামের বিধি আলোচনা কর, গ্রেসামের বিধি এবং আমাদের করোটি, গ্রেশামের বিধি, গ্র্যাসামের সূত্র ও আমাদের সমাজ, গ্রেসামের মুদ্রা বিধি ব্যাখ্যা করো, গ্রেশামের বিধি কি, গ্রেশামের বিধি, গ্রেশামের বিধি – উইকিপিডিয়া
অর্থনীতিতে গ্রেশামের বিধি হল একটি অর্থ ও মুদ্রাবিষয়ক নীতি। (ইংরেজি Gresham’s law)। এই নীতির মূল বিষয় হল, “খারাপ টাকা ভাল টাকাকে বাজার থেকে হটিয়ে দেয়।” ইংরেজ ফিন্যান্সিয়ার স্যার টমাস গ্রেশামের নামে বিধিটির নামকরণ করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, যদি একটি বাজারে দুই ধরনের মুদ্রা প্রচলিত থাকে, এবং আইনত যাদের মূল্যমান সমান, তবে বাহ্যধারনায় একটি মুদ্রা অন্যটির চেয়ে ভাল মুদ্রাটি ক্রমেই বাজার থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। Henry Dunning Macleod, ১৮৬০ সালে স্যার টমাস গ্রেসাম এর নামে অর্থনীতির এই নিয়মটির নামকরণ করেন। স্যার টমাস গ্রেসাম ছিলেন ১৫১৯ থেকে ১৫৭৯ সাল পর্য়ন্ত টিউডর রাজবংশের শাসনামলে একজন ধনীক ব্যক্তি ছিলেন। তবে এর পূর্বেও আরো অনেকে এই ধারনার অবতারনা করেছিলেন। সর্বপ্রথম এই বিষয়টি উল্লেখ করেন নিকোলাস কোপার্নিকাস। কদাচিৎ কোপার্নিকাস ল’ নামেও পরিচিত।
গ্রেসামের বিধি কি? গ্রেসামের বিধি আলোচনা কর
সময়কাল ১৫০০ শতাব্দী, ইংল্যান্ডে রানী প্রথম এলিজাবেথ রানী হয়ে বসে আছেন। সেই সময়ে বাজারে নানা প্রকার নিকৃষ্ট মুদ্রা প্রচলিত ছিলো। এলিজাবেথের আগেই টিউডর বংশের রাজারা বাজারে নানা রকম নিকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন করে রেখেছিলেন আগে থেকেই। এই অবস্থায় রানী এলিজাবেথ বাজারে নতুন মুদ্রা অর্থাৎ উৎকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন করে পুরনো এবং নিকৃষ্ট মুদ্রা তাড়িয়ে দিতে চাইলেন। এখন প্রশ্ন হলো উৎকৃষ্ট আর নিকৃষ্ট মুদ্রা কি ? আমরা সবাই জানি অনেক অনেক আগে, ধাতু দ্বারা নির্মিত মুদ্রা অর্থাৎ স্বর্ণ এবং রৌপ্য মুদ্রার বহুল প্রচলন ছিলো। ( কাগজী মুদ্রা এসে এই ধাতু নির্মিত মুদ্রার ব্যবহার তুলে দেয়, কেনো দেয়,কখন দেয় সেটাও এক ইতিহাস, আমাদের এই লেখার জন্যে সেই ইতিহাসরে প্রয়োজন নেই )।
এখন কথা হলো, দেশে যদি এক ধাতুমান মুদ্রা ব্যবস্থা ( অর্থাৎ একই ধরণের ধাতু দ্বারা নির্মিত মুদ্রা ) বাজারে প্রচলিত থাকে তাহলে, পুরনো এবং ক্ষয়প্রাপ্ত নিকৃষ্ট মুদ্রাকে নিকৃষ্ট এবং নতুন প্রচলিত মুদ্রাকে উৎকৃষ্ট মুদ্রা বলা হয়। অথবা দেশে যদি দ্বি-ধাতুমান মুদ্রা ( দুই ধরণের ধাতু দ্বারা নির্মিত মুদ্রা ) প্রচলিত থাকে, তাহলে যেটার ধাতব মূল্য বেশি সেটা উৎকৃষ্ট এবং যেটার ধাতব মূল্য কম সেটা নিকৃষ্ট মুদ্রা হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। যেমন বাজারে যদি স্বর্ণ এবং রৌপ্য দুই ধরণের মুদ্রাই প্রচলিত থাকে এবং তাদের বিনিময় অনুপাত যদি ১:৮ অর্থাৎ একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে ৮ টা রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়, তাহলে স্বর্ণ মুদ্রাই উৎকৃষ্ট মুদ্রা বলে বিবেচিত হবে। যদি ধাতব এবং কাগজী দুই ধরণের মুদ্রাই প্রচলিত থাকে তাহলে ধাতব মুদ্রা উৎকৃষ্ট এবং কাগজী মুদ্রা নিকৃষ্ট বলে বিবেচিত হবে … ইত্যাদি ইত্যাদি।
রানী এলিজাবেথের সময় কাগজী মুদ্রারই আবিষ্কার হয়নি। ফলে তখন উৎকৃষ্ট স্বর্ণ এবং নিকৃষ্ট রৌপ্য দুই ধরণের মুদ্রা অথবা পুরনো হালকা ওজনের স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা ( নিকৃষ্ট ) এবং ভারি ওজনের নতুন স্বর্ণ বা রেপ্য মুদ্রা ( উৎকৃষ্ট) – সব ধরণের মুদ্রা প্রচলিত ছিলো। রানী চাইছিলেন, বাজারে উৎকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন ঘটিয়ে নিকৃষ্ট মুদ্রাগুলোকে তাড়ানোর এক প্রাণান্তকর চেষ্টা শুরু করণে । কিন্তু কি আশ্চর্য, তিনি দেখলেন, তিনি যতই চেষ্টা করছেন নিকৃষ্ট মুদ্রা তাড়িয়ে উৎকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন ঘটাতে, ততই যেন উৎকৃষ্ট মুদ্রা বাজার থেকে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। রানীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। ডাকলেন, সেই সময়ে মুদ্রা নিয়ে কারবার করেন বা বোঝেন এমন বিশেষজ্ঞকে – নাম সার টমাস গ্রেসামকে।
গ্রেসামের বিধি এবং আমাদের করোটি
গ্রেসাম দেখলেন, দুষ্টু মানুষ স্বর্ণালঙ্কার বানাতে গেলে কম ওজনের পুরনো স্বণ মুদ্রা ( অর্থাৎ নিকৃষ্ট ) না গলিয়ে বেশি ওজনের নতুন স্বর্ণমুদ্রা ( অর্থাৎ উৎকৃষ্ট) গলিয়ে অলঙ্কার বানাচ্ছে। অথবা সোনার বাজার দর বেড়ে গেলে, সোনা গলিয়ে রৌপ্য মুদ্রা সংগ্রহ করছে, কেননা তখন একই স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে বেশি সংখ্যায় রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া জমানোর জন্যে দুষ্টু মানুষ স্বর্ণ মুদ্রাকেই বেশি পছন্দ করছে। এখনও আমরা যেমন, পকেটে নতুন নোট থাকা সত্বেও, পুরনো নোটটা দিয়েই সবকিছু কিনি।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
যাক, এভাবে গ্রেসাম সাহেব দেখলেন, এতো মহা মুশকিল। মানুষ জাত তো ভীষণ পাজি জাত। তিনি পুরো বিষয়টা বুঝতে পারলেন এবং রানী সাহেবাকে সব খুলে বললেন এবং সারমর্ম দিলেন এভাবে – “ বাজারে যখন পাশাপাশি উৎকৃষ্ট এবং নিকৃষ্ট মুদ্রার প্রচলন থাকে, তখন নিকৃষ্ট মুদ্রা উৎকৃষ্ট মুদ্রাকে বাজার থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেয় ” – অর্থনীতিতে এটাই গ্রেসামের বিধি নামে পরিচিত। এসব শোনার পর রানী সাহেবা কি করেছিলেন আমাদের জানার দরকার নেই। কিন্তু যেটা বোঝার দরকার, সেটা হলো, ছোট্ট এই বিধি থেকে দুর্দান্ত এক দর্শন গ্রেসাম সাহবে আমাদের ধরিয়ে দিলেন।
সমাজে যখন ভালো এবং মন্দ মানুষ পাশাপাশি বসবাস করেন, তখন এই দুইয়ের মাঝে অর্থাৎ ভালো এবং মন্দের মধ্যে যখন ভালো মানুষের চেয়ে মন্দ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যায়, তখন মন্দ মানুষগুলো ঐ নিকৃষ্ট মুদ্রার মতো, ভালো মানুষদের অর্থাৎ উৎকৃষ্টদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেয়। আমাদের সমাজে যেভাবে মন্দ মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটছে, জানিনা ভালো মানুষগুলো আর কতদিনই টিকে থাকতে পারবে। আসুন আমরা একটু ভালো হবার, সৎ হবার, স্বচ্ছ হবার চেষ্টা করি এবং সেই সঙ্গে নিকৃষ্টদের উৎকৃষ্ট করার চেষ্টা করি
গ্রেসামের বিধি ভাল মুদ্রা ও খারাপ মুদ্রা
ভাল মুদ্রা হল সেই মুদ্রা যার পণ্য মূল্য (commodity value অর্থাৎ, যে ধাতু দ্বারা মুদ্রাটি তৈরী তার মূল্য, প্রায়ই নিকেল আথবা তামার মতো মূল্যবান ধাতু দ্বারা মুদ্রা প্রস্তুত করা হত।) এবং প্রকৃত মূল্য ( যা মুদ্রার গায়ে লেখা থাকে) এই দুই মূল্যমানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বা থাকলেও তা খুব সামান্য।
রচনা ,প্রবন্ধ | উত্তর লিংক | ভাবসম্প্রসারণ | উত্তর লিংক | Paragraph | উত্তর লিংক |
আবেদন পত্র ও Application | উত্তর লিংক | অনুচ্ছেদ রচনা | উত্তর লিংক | Composition | উত্তর লিংক |
চিঠি ও Letter | উত্তর লিংক | প্রতিবেদন | উত্তর লিংক | CV | উত্তর লিংক |
ইমেল ও Email | উত্তর লিংক | সারাংশ ও সারমর্ম | উত্তর লিংক | Seen, Unseen | উত্তর লিংক |
Essay | উত্তর লিংক | Completing Story | উত্তর লিংক | Dialog/সংলাপ | উত্তর লিংক |
অনুবাদ | উত্তর লিংক | Short Stories/Poems/খুদেগল্প | উত্তর লিংক | Sentence Writing | উত্তর লিংক |
আপনার জন্য আমাদের ক্যাটাগরি
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
- ইজারার চলতি ও ইজারার অচলতি পার্থক্য । ইজারার চলতি vs ইজারার অচলতি পার্থক্য
- ইজারাদাতার অবশিষ্ট মূল্য সম্পর্কে আলোচনা কর
- ইজারা গ্রহীতার বইয়ের হিসাব সংরক্ষণের প্রক্রিয়া আলোচনা কর
- ইজারা দাতার প্রত্যক্ষ ইজারার অর্থায়ন পদ্ধতি ধারণা সহ আলোচনা কর
- ইজারা ও মালিকানা পার্থক্য । ইজারা vs মালিকানা পার্থক্য
- ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ লিখ, ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো বিস্তারিত আলোচনা কর