গল্প টা শুধু তোমার আমার লেখিকা: সাদিয়া আফরিন

গল্প টা শুধু তোমার আমার লেখিকা: সাদিয়া আফরিন

এই মারিয়া তর কি হয়েছে রে আজকাল কারো সাথে কথা বলিস না তেমন একটা চুপচাপ কেন?স্নেহার জন্য?পান্না মুখে স্নেহার নাম শুনে আমি প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে গেলাম।

যেটা মন থেকে মুছে ফেলতে চাই সেটাই বারবার মনে পড়ে কেন কেন? আল্লাহ আমার সাথেই কি এমন হয়? সবাই ভাবছেন তো কি হয়েছে আমার কেন স্নেহার কথা শুনে আমি এমন করলাম তাহলে প্রথম থেকেই বলি আমি তাড়াতাড়ি করে হেঁটে যেতে লাগলাম স্নেহা এসে আমাকে বলল কি ব্যাপার তুমি কি আমাকে ভুলে গেলে নাকি আমাকে দেখে ও না দেখার ভান কর। আমি কই না তো আমি তো আমার প্রাইভেটে এ যাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি করছি‌।আর আজকাল অনেক বিজী থাকি বাড়িতে মেহমান এসেছে সেজন্য আমি তোমাকে ফোন করতে পারিনি কিন্তু আমি সবসময় তোমাকে মিস করছিলাম বন্ধু।শুন ঐদিন লিয়া তুমাকে নিয়ে অনেক কিছু বলছে।

কি বলছে বল আমাকে। দাঁড়াও বলছি।বলছে তুমি নাকি ওকে অনেক বিরক্ত কর তোমার এসব ন্যাকামি ওর ভালো লাগে না। ওহ্ লিয়া আমাকে এভাবে বলতে পারল তুমি বল আমি ওর সব কথা মেনে চলি আর ও সবসময়ই টুম্পা কে নিয়ে বিজী ওর সব কথা মেনে চলে।দুঃখ পেয়ো না আমি আছি তোমার পাশে। সবসময়ই থাকবে তো আমার পাশে? হুম থাকবো ইনশাআল্লাহ। পরের দিন সকালে প্রাইভেটে স্নেহার সাথে দেখা হয়। আমি আর স্নেহা একসাথেই বসে ছিলাম।

আমি স্নেহাকে বললাম শুন বান্ধবী কালকে তোমাকে আমাদের বাড়িতে দাওয়াত রইল তোমাকে কিন্তু আসতেই হবে। ওকে কিন্তু আগে মাকে জিজ্ঞেস করে নিই যদি মা অনুমতি দেয় তাহলে তোমাকে ফোন করে বলব। আমি বললাম ওকে ঠিক আছে। আমি তাহলে এখন আসি আল্লাহ হাফেজ। রাতে স্নেহা আমাকে ফোন করে জানাল যে সে কালকে আমাদের বাড়িতে আসবে। আমি খুব খুশী হলাম।

পরের দিন বিকালে সে আমাদের বাড়িতে আসল।আমরা দুজনে একসাথে খেলাম খুব গল্প করলাম। আমাদের বন্ধুত্ব টাও আরও গভীর হলো। কিন্তু স্নেহার আসলে লিয়াকে খুব ভালো লাগে সবসময়ই ওর সাথে মিশতে চায় ওর জন্য অনেক কিছু করার চেষ্টা করে।সে লিয়াকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতে চায় কিন্তু লিয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড টুম্পা। অবশ্য টুম্পা ও আমার খুব ভালো বন্ধু ।

কিন্তু এখন আমি স্নেহাকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতে চাইছিলাম কারণ ওকে আমার খুব ভালো লেগেছে।সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে এসব দেখে আমার ওকে খুব ভালো লাগেছে যেহেতু আমি নিজেও পর্দা করি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি আর এসব কারণে ওর ও আমাকে ভালো লাগে। এখন আমারা খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছি যেদিন আমি ওদের বাসায় গিয়েছিলাম সেদিন ও আমাকে বলেছিল যে এখন থেকে আমি ওর বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমারা কথা দিয়েছিলাম যে আমাদের বন্ধুত্ব সারাজীবন থাকবে তখন থেকেই আমারা প্রতিদিন স্কুলে, প্রাইভেট এ একসাথে ই যেতাম একসাথে বসতাম । আমি প্রতিদিন ওদের বাসায় গিয়ে ওকে স্কুলে নিয়ে যেতাম।ওর সাথে সময় কাটাতে আমার খুব ভালো লাগতো।

নিজের কস্ট গুলো কে ওর সাথে শেয়ার করতাম আমি। এইটুকু জীবনে আমার যে বেদনার পাহাড় জমে আছে সেটা শুধু আমিই জানি তবে এখন কিছু কস্ট স্নেহার সাথে শেয়ার করি। আসলে আমার কস্টের সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমার বাবা আর আমার ছোট বোন। আমি এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি আমার বাবাকে দ্বিতীয়ত আমার ছোট বোনকে।সবাই নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন আমার কথা শুনে কিন্তু এটাই সত্য। তাহলে বলি কেন আমি আমার বাবা আর বোন কে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি.

আজ থেকে ২৫ বছর আগের কথা যখন আমার মা-বাবার বিয়ে হয় । বিয়ের দিন নববধূর সাজে খুব সুন্দর লাগছে হুরকে সে বিয়ের আগে নিজের স্বামীর মুখও দেখেনি ওর মা বাবা ই ওর বিয়েটা ঠিক করে। প্রতি টি মেয়ের নিজের বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন থাকে তেমনি হুরের ও অনেক স্বপ্ন ছিল। তার স্বামী ওকে খুব ভালোবাসবে ,ওর সব আবদার পূরণ করবে।

কিন্তু বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় ওর অন্ধকার জীবন।ওর স্বামী মাসুদ ওকে বিয়ে করে নিজের বড় ভাইয়ের বাড়িতে উঠেছিল। ওদের বিয়েটা মাসুদের বড় ভাই মাহাবুব ঠিক করে ছিল। বিয়ের পর থেকেই হুর এই বাড়িতে কাজের লোকের মতো আছে।হুরের স্বামী মাসুদ হুরকে একদমই টাইম দেয় না সারাদিনই ভাবি ভাবি করে। মাহবুব এর স্ত্রী মিসেস শিরিন সারাদিন নিজের দেওরের সাথে কথা বলে হাসাহাসি করে। মাসুদ প্রায়ই তার ভাবি শিরিন কে নিয়ে মার্কেট করতে যায় কিন্তু ওর স্ত্রী হুর সারাদিন বাসার সব কাজ করে ওর কোথাও বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই।

একদিন হুরের সামনে ওর স্বামী মাসুদ ওর ভাবী শিরিন কে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় ভিতর থেকে হাসাহাসির শব্দ শুনে হুরের বুকের ভিতর টা ছেদ করে ওঠে আল্লাহ আমার সাথেই কেন এমন হয়। নিজের স্বামীকে এভাবে মেনে নেওয়া সব স্ত্রীর জন্যই কস্টকর। কিন্তু ওর চোখের পানি দেখার মতো কেউ নেই।হুর গ্রামের মেয়ে যদি কোন কারণে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তাহলে সবাই হুরকেই দোষ দিবে যে এই মেয়েরই কোন দোষ ছিল নাহলে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে আসতো না। আমাদের সমাজটাই এমন যে সবসময়ই সব দোষ মেয়েদের উপর পড়ে। তাই হুরকে সবকিছু সহ্য করতে হতো।

এখানে সব কাজ একাই করতো হুর একদিন নিজের স্বামীকে জিগ্গেস করলো যে আমি কেন সব কাজ একা করব আপু কেন কাজ করেন না।উওরে মাসুদ বলে তুই ছোট তাই তকেই করতে হবে সব কাজ যদি করতে পারিস তাহলে থাক নাহলে বাপের বাড়ি চলে যা আমার কোন আপত্তি নেই।এসব শুনে হুরের চোখে পানি চলে আসে কিন্তু কিছু করার নেই কারণ সে শহরের মেয়েদের মতো এত শিক্ষিত নয়,চাকরীজীবী নয়। মাসুদ একজন ডক্টর মাসে বেতনাও খুব ভালো। কিন্তু বেতনের একটা টাকাও আজ পর্যন্ত হুর পাই নি সব মাসূদের ভাবি শিরিনের কাছে আছে। কিছু দিন পর জানতে পারলো যে শিরিনের বাচ্চা হবে সবাই খুব খুশি বাচ্চা হওয়ার কথা শুনে শুধু খুশি হতে পারে নি হুর।

কয়েকদিন পর ———

আজকে শিরিনের বাচ্চা হবে। মাসুদের খুশিটাই যেন সবথেকে বেশী হুরের চোখে পড়ছে। মাহাবুব চাকরির জন্য বাড়িতে বেশি টাইম দিতে পারে না।

আজকে মাহাবুব খুব খুশি নিজের বউয়ের বাচ্চা হওয়ার জন্য।এক মাসের ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছে মাহাবুব।

শিরিনের একটা ফুটফুটে ছেলে হয়েছে দেখতে ঠিক মাসুদের মতো হয়েছে।আর হুরের মনে সন্দেহ জাগে বাচ্চা টাকে নিয়ে এটা আবার মাসুদের বাচ্চা না তো। বাচ্চা হওয়ার পর থেকেই ওই বাচ্চার সব কাজ মাসুদ করে মাহাবুবের কিছু করার প্রয়োজন পড়ে না।

আজ তিন বছর হয়ে গেল হাবিবের তবুও সমসবয় হাবিব মাসুদের সঙ্গেই থাকে ও যখন নিজের চেম্বারে যায় তখনও ওকে নিয়ে যায়। সবকিছু জেনেও হুরকে চুপ থাকতে হয় কারণ ও তো একটা মেয়ে আসলে মেয়েদের জীবনটাই এমন সবকিছু চুপচাপ মেনে নিতে হয়। কিছু দিন পর মাসুদের টিচার এর চাকরি হয়।সে জন্য তাকে চট্টগ্রামে চলে যেতে হবে।তাই শিরিনের অনেক মন খারাপ কিন্তু হুর মনে মনে অনেক খুশি হয় যে এতদিন তো স্বামীর এই নিজের একটা ফার্মেসি ছিল এখান থেকে মোটামুটি ভালো রোজগার হলেও এটা তো সরকারি চাকরি নয় আর রোজগারের সব টাকাই মাসুদ মাস শেষে শিরিনের হাতে তুলে দেয় এখন ওর নিজের একটা সরকারি চাকরি হয়েছে আর সেটাও এখান থেকে অনেক দূরে চট্টগ্রাম এ ।

চট্টগ্রাম থেকে ওর হুরের শুশুর বাড়ি কাছেই কিন্তু মাসুদ অনেক আগে থেকেই ওর বড় ভাই,ভাবির সাথে থাকে‌‌। নিজের মা বাবার সাথে এসে দেখা করে যায় মাঝে মাঝে। এখন থেকে হুরকে ওর শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে । কিন্তু এখানে এসেও হুরের কপালের দুঃখ দূর হয় নি বরং

হুরের শাশুড়ি ছিল খুব খারাপ মহিলা।ওর শাশুড়ি ওকে দিয়ে বাড়ির সব কাজ করাতো তবে ওকে ঠিকমতো খেতে দিত না। মাসুদরা ছিল পাঁচ ভাই তার মধ্যে মাসুদ ছিল ৩ নম্বর। এখানে হুর তার শাশুড়ি আর মাসুদের ছোট দুই ভাই এর সাথে থাকতো। মাসুদের ছোট ভাইয়ের নাম দানিয়েল আর সবার ছোট ভাই এর নাম ছিল আরিফ। দানিয়েল বিবাহিত ছিল কিন্তু আরিফ এখনো বিয়ে করেননি। মাহবুবের ছোট ভাই মেঘ অথাৎ মাসুদের বড় আরেক ভাই ছিল সে লাভ ম্যারেজ করেছিল কিন্তু ওর মা সেটা মেনে নেয় নি তাই সে নিজের স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়।

মাসুদ রা ছিল পাঁচ ভাই কিন্তু ওদের কোন বোন ছিল না।মেঘ আর নীলার সংসার জীবন ভালোই চলছিল ওদের এখন পাঁচ বছরের একটা মেয়ে আর এক বছরের একটা ছেলেও আছে। কিন্তু হঠাৎ একদিন নীলাকে সাপে এ কাটে আর নীলার মৃত্যু হয়। তখন থেকেই নীলার মেয়ে নূর ওর দাদুর কাছে থাকে মিসেস জায়েদা খাতুন এর কোন মেয়ে ছিল না তাই নিজের ছেলের মেয়েকেই ছোট থেকে নিজের কাছে মানুষ করেন কিন্তু নূরের ভাই রুহুল এর জীবন এ নেমে আসে দুঃখ ওকে ওর নানুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সেখানে কেউ ওর যত্ন নিত না জায়েদা খাতুন ওর ছেলে এভাবেই অনেক বছর কেটে যায় রুহুল কে এখন একটা দোকানে কাজ করতে হয় কিন্তু নূর ওর দাদুর কাছে খুব ভালো ভাবেই আছে।ওর দাদু ওকে কখনও মায়ের অভাব বূজতে দেয় না। এখন নূর অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে।

নূর পুরোপুরি ওর দাদুর মতো হয়েছে স্বার্থপর, খারাপ স্বভাবের আজকে হুর এই বাড়িতে এসেছে কিন্তু আজকেই নূর ওর সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয়। এই পরিবারের সব কাজ ওকে একাই করতে হয় তখন হুর খুব বিরক্ত হয়ে যায় আর যখন মাসুদ বাড়ীতে আসে তখন ওকে বলে সাথী তো আমার ছোট তাহলে ও কেন কোন কাজ করে না আমাকেই কেন সব কাজ করতে হবে যখন আমি মাহাবুব ভাইয়ের বাসায় থাকতাম তখন তো শিরিন আপুর সব কাজ আমি করতাম আর উনি আরাম করতেন তাহলে সাথী কেন আমার কাজ করে দেয় না উল্টো আমিই ওর সব কাজ করে দিই। তখন মাসুদ বলে একটা কথা কানে খুলে শুনে রাখ তকে আমি ঘরে বসিয়ে খাওনোর জন্য বিয়ে করি নি এখানে থাকতে হলে সব কাজ তাকেই করতে হবে মন চাইলে থাক না হলে বাপের বাড়ি চলে যা ।

হুরের দুঃখ বুঝার মতো কেউ নেই শুধু চোখের পানি ফেলা ছাড়া কিছুই করার নেই ওর। পরবর্তী তে যা হয়েছিল হুরের সাথে তা আরো ভয়ানক

চট্টগ্রাম থেকে ওদের বাড়ি অনেক আছে তাই মাসুদ কিছু দিন পর পর বাড়িতে আসত। এখন রমজান মাস তাই একমাসের ছুটি পেয়েছে মাসুদ।তাই সে এখন নিজের বাড়িতে এসেছে। এখন তো মাসুদ কে হুরের সাথেই সময় কাটাতে হয় বাড়িতে আসলে কিন্তু হুরের শাশুড়ির তা মোটেও সহ্য হয় না সে সকাল সকাল নিজের ছেলে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে চলে যায় এটা সেটা বলে ওকে হুরের থেকে দূরে রাখে। কিন্তু রাতে তো তাকে হুরের সাথেই ঘুমাতে হয়। মাসুদ খেয়াল করছে সে যেন আজকাল হুরের প্রতি কেমন একটা আকর্ষণ অনুভব করে।

সে হুরকে নিজের কাছে টেনে নেয় দুজনের ভালোবাসায় ডুবে যায়। কিন্তু দিন পর মাসুদ বুঝতে পারে হুর মা হতে চলেছে এই সংবাদ টা পেয়ে ওর অনেক খুশি হওয়ার কথা কিন্তু সে খুশি হতে পারে নি।পরের দিন সকালে হুরকে ঘুম থেকে উঠিয়ে একটা ওষুধ দিয়ে খেতে বলে হুর কিছু বুঝতে পারছে না কেন তাকে ওষুধ দিয়েছে কিন্তু সে জানে মাসুদের কথা না মানলে ওর কপালে দুঃখ আছে তাই বাধ্য হয়ে খেতে হলো ওষুধ টা খাওয়ার পর পরই হুরের পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হয়।সে বুঝতে পারে এটা কিসের ওষুধ ।পরের দিন সকালে আবার ওষুধ খেতে দিলে হুর বলে আমি এই ওষুধ টা খাবো না। এতে মাসুদ হুরের প্রতি অনেক রেগে যায় আর…

মাসুদ হুরকে অনেক মারে হুরের সারা শরীরে রক্তের কালশিটে দাগ পড়ে যায় সে সারাদিন ঐভাবেই এখানে পড়ে থাকে।পরের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সে বাতার শশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজের বড় বোনের বাসায় চলে যায়। নিজের বড় বোন শেফালি কে সবকিছু খুলে বলে শেফালির স্বামী শরীফ ও তাদের সাথেই ছিল শরীফ বলৃ তুমি এতদিন ধরে আমাদের কে কিছু বল নি কেন এই জানোয়ারের সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করলা কেন তুমি।

এখন যখন সবকিছু জানতে পারছি তখন তুমি দেখ আমি এই জানোয়ারের কি অবস্থা করি।শরীফ এর এক বন্ধু ছিল যাকে সবাই ভয় পায় সে অনেক ক্ষমতাশালী ছিল।শরীফ তার কাছে গিয়ে বলল বন্ধু আমার একটা হেল্প করতে পারবি শরীফ তার বন্ধু কে সবকিছু খুলে বলে।শরীফের বন্ধু বলল আচ্ছা ঠিক আছে আমি এর ব্যবস্থা করতেছি তুই কিছু ভাবিস না। মাসুদ মনে মনে খুশিই হলো মনে মনে ভাবছে আপদ বিদায় হয়েছে ভালোই হয়েছে। শরীফের বন্ধুর লোকজন মাসুদের এমন হাল করলো যে ও পরের দিন ই হুরকে আনতে শেফালী দের বাড়িতে যায়। কিন্তু হুর কিছুতেই যেতে চাইছে না মাসুদের সঙ্গে।

মাসুদ জানে হুর যদি এখন তার সাথে না যায় তাহলে ওর কপালে দুঃখ আছে। তাই সে হুরকে অনেক কস্টে রাজি করাল নিজের সাথে নিয়ে যেতে। কিন্তু শরীফ বলল নিয়ে যাওয়ার আগে এখানে একটা সাইন করতে হবে তোমার তুমি আর কোন দিন হুরকে মারতে পারবে না আর যদি কখনো জানতে পারি যে তুই ওকে কিছু করছিস তাহলে তর খবর আছে এই বলে দিলাম। মাসুদ বাধ্য হয়ে হুরকে নিজের সাথে নিয়ে যায় আর ওকে কাগজের সাইন করতে হয়েছিল। মাসুদ মনে মনে ভাবছে তুই আমাকে সবার সামনে অপমান করলি তো তকে একবার বাড়িতে নেই তারপর তর মজা বের করব।

মাসুদ নিজের সাথে হুরকে নিয়ে তো এসেছে কিন্তু সে এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না যে সবার সামনে অপমান সহ্য করতে হয়েছে। মাসুদ খুব বেশি অপমান বোধ করছিল তাই সে একদম চুপচাপ হয়ে পড়েছে ঘর থেকে একদম বেড়োয় না। সারাদিন ঘরেই বসে থাকে কিন্তু হুরের সাথে একটা কথাও বলে না।হুরের খুব কষ্ট হচ্ছে মাসুদ ওর সাথে কথা বলছে না একসাথে থাকার পরেও দুজনের মধ্যে অনেক দূরত্ব। এর মধ্যে সাথীর একটা মেয়ে হয়। মেয়ে হওয়ার পর সাথী আরো মহারানী হয়ে গেছে হুরের উপর ছুড়ি ঘুরায় আপু এটা রান্না কর আপু ঐটা রান্না কর এটা এইভাবে রাধ ঐটা ঐ ভাবে রাধ।সাথী অনেক ভালো ভালো খাবার খায় সবসময়।সবাই ওর অনেক খেয়াল রাখে।সবার খাওয়া হওয়ার পর যদি কিছু থাকে তাহলে সেটা হুর খায় না হলে ওকে না খেয়েই থাকতে হয়।

হুর সবকিছু রান্না করে আর সাথী সবাইকে সেটা পরিবেশ করে এই বিষয় টা অনেক কস্টের আমি সবকিছু রান্না করব আর পরিবেশন করবে আরেকজন।হুরের এই সময় অনেক ভালো পরিবেশ এ থাকার প্রয়োজন কিন্তু সে তো ওর জন্য প্রয়োজনীয় খাবার ও পায় না। মাসুদ বলে একটু কম খেলে তুই কিংবা তর এই বাচ্চা মরে যাবে না। এভাবেই হুরের দিন কাটতে লাগলো।নয় মাস পর হুর নিজের বাপের বাড়িতে যায় কারণ এখন তার বাচ্চা হওয়ার সময় এসেছে এখন ওকে খুব সাবধানে থাকতে হবে।সে চায় না তার বাচ্চার কোন ক্ষতি হোক। আজকে হুর খুবই খুশি কারণ আজকে সে প্রথম মাতৃত্বের স্বাদ অনুভব করছে।

কিন্তু মাসুদ যায় নি ওর বাচ্চাকে দেখতে। মাসুদ পাঁচ দিন পর নিজের সব আত্মীয় স্বজন সবাইকে নিয়ে হুরদের বাড়িতে যায়।হুরের ভাইরা সবাইকে অনেক ভালো ভাবে আপ্যায়ন করে সবাইকে যাওযার সময় নতুন জামা কাপড় দিয়ে দেয়। মাসুদ কিন্তু আসতে চায় নি হুরের এখানে তবে ওর আত্মীয় স্বজন সবাই ওকে জোর করতে থাকে তর বাচ্চা কেমন হয়েছে আমাদের তো একটা ছবিও দেখালি না। আমরা তর বাচ্চাকে দেখতে চাই। এজন্যই বাধ্য হয়ে সে সবাইকে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। বাচ্চা হওয়ার পর আরো পাঁচ মাস হুর নিজের বাপের বাড়িতে থাকে। তারপর হুরের ভাই হুমায়ূন ওকে ওর শশুর বাড়িতে দিয়ে যায় কিন্তু মাসুদ একবার ও ওর বাচ্চাকে কোলে নেয় নি।

হুরকে একাই নিজের সন্তানের দেখভাল করতে হয়।মাসুদ আবার চট্টগ্রাম চলে যায়। একবার ফোন ও করে না।হুরের শাশুড়ি এর মধ্যে হুরের সাথে ঝগড়া লাগায় হুরও প্রচুর রেগে ছিল তাই সে সেদিন কোন ভয় না পেয়ে সবকিছুর প্রতিবাদ করতে লাগলো এতে হুরের শাশুড়ি অত্যন্ত রেগে যায় এবং হুরকে বলে তুই আমার জন্য অনেক করছিস এখন আর তর সেবা লাগবে না তুই এখন থেকে আলাদা থাকবি। এতে হুরের অবশ্য ভালোই হয় কারণ তাকে এখন আর সবার জন্য কাজ করতে হবে না। মাসুদের চাকরি টা এর মধ্যে চলে যায় এজন্য সে আবার বাড়িতে চলে আসে। চাকরি চলে যাওয়ার কারণে মাসুদ অনেক ভেঙ্গে পড়েছে হুর মাসুদকে সান্তনা দেয় এবং ওর ভাইয়ের কাছ থেকে এক লাখ টাকা এনে দেয় নতুন করে কাজ শুরু করতে বলে।

মাসুদ এখন কিছু টা খুশি হলো এখন সে হুরের সাথে আগের মতো খারাপ ব্যবহার করে না। এখন এক লাখ টাকা দিয়ে মাসুদ নতুন করে আরেকটা ফার্মেসি খুলে এবং সেখান থেকে ভালোই ইনকাম করতে থাকে। কিন্তু মাসুদের প্রথম সন্তানের প্রতি ঘৃণা দূর হয় নি। একদিন হুর রান্না করছিল তখন হুরের মেয়ে মারিয়া ওর কুল থেকে নেমে খেলতে খেলতে অনেক দূরে চলে যায়।এটা দেখে মাসুদ বলে নিজের মেয়েকে যখন দেখে রাখতে পারিস না তাহলে ওর জন্ম দিয়েছিস কেন। মাসুদ সেখান থেকে মারিয়াকে তুলে এনে এক বালতি পানির মধ্যে ওর মুখ চাপা দিয়ে ধরে হুর প্রথমে সেটা খেয়াল করে নি সে মনে করছিল ভালো হয়েছে এতদিন পর হলেও তো মেয়ে তার বাবার কাছে যেতে পেরেছে।


হুর যখন দেখল তখন সে দৌড়ে সেখানে যায় এবং অনেক টানাটানি করে নিজের মেয়েকে বাঁচাতে পেরেছে।

হুরের সাথে এভাবেই দিনগুলো কাটতে থাকে। পরবর্তী তে হুরের আরেকটা মেয়ে হয় তার নাম মাইশা। মাসুদ তার বড় মেয়ে মারিয়া কে দেখতে না পারলেও মাইশা তার খুব আদরের মেয়ে ‌মাসুদ মাইশা কে অনেক আদর করে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু মারিয়াকে জন্মের সময় থেকেই সে অবহেলা করে।


এখন আমার বয়স ১৬ বছর আমি এতদিন ধরে আমার বাবার আমার সাথে এমন ব্যবহারের কারণ টা জানতাম না। আজকে আমি আমার একটা বই খুঁজতে গিয়ে একটা ডাইরি পেলাম যেটার উপরে লেখা ছিল গল্প টা শুধু তোমার আমার। আমি ডাইরিটা সমর্পণ পড়লাম। তারপর আমার মায়ের সাথে আমার বাবা মে অন্যায়গুলো করছে সবকিছু জানতে পারলাম আমার মাথা একদম ঠিক নেই নিজের বাবাকে একটা জানোয়ার মনে হচ্ছে।

আমার বাবা একটা খুনীর থেকে কম নয় কারণ সে ছোটবেলায় আমাকে খুন করতে চেয়েছিলেন। সেইজন্য আমি আমার বাবাকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি।আর নিজের বোনকেও কেননা সে এতদিন এই পশুটার সব গুণ পেয়েছে। সে আমার মায়ের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করত সে আমাকে সহ্য করতে পারে না। আমার বোনকে আমি ছোট বেলা থেকেই অনেক ভালোবাসি কিন্তু সে আমাকে সবসময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে।সে সবসময় আমাকে আমার মা বাবার সামনে ছোট করত। আমি ওর জন্য জীবনে এত আঘাত পেয়েছি বিনা দোষে কোন কারণ ছাড়াই। আমি আমার বাবা এবং বোনের চোখের কাঁটা। মাঝে মাঝে আমার খুব বেশি কস্ট হয় কারণ আমি যতটুকু জানি পরিবারের বড় মেয়ে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা পায় কারণ সে হলো প্রথম সন্তান কিন্তু আমার বেলায় ….।

তবে আমার মা আমাকে অনেক ভালোবসে এটাই আমার কাছে অনেক। আমার মা আমার সাথে বন্ধুর মতো ব্যবহার করে সেইজন্য আমার মা হলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার এখন একটাই স্বপ্ন আমি বড় হয়ে একটা ভালো চাকরি করে একটা নতুন বাড়ি কিনব সেখানে আমার মাকে নিয়ে থাকব।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

শেষ পর্ব (বর্ধিতাংশ)

আমার বোন যখন থেকে বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই সে আমাকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে কিন্তু আমি তো তা মনে করি নি। আমার বাবা তো এমনিতেই আমাকে ভালবাসেন না আর আমার মা যে আমাকে ভালবাসেন সেটাও ওর সহ্য হয় না তাই সে সবসময় আমার মা বাবার সামনে আমাকে আরো ছোট করার চেষ্টা করত। একদিন আমি আর ও পড়ছিলাম আমি ক্লাস টেন আমার বোন ক্লাস নাইনে দুজনের বই তাই একই ছিল। আমি দেখলাম সে আমার গাইডে কলম দিয়ে ওর ইচ্ছে মত দাগাচ্ছিল তাই আমার অনেক রাগ হয় এবং আমি ওর হাত থেকে কলম টা নিয়ে নেই কিন্তু সে আমাকে ফাঁসানোর জন্য কান্না করতে লাগলো আর উনি এসে বলল কি হয়েছে ।

এখানে আমার বোন বলল আমি নাকি তাকে পড়তে দেই না আমি ওর বই কলম এগুলো নিয়ে নিয়েছি এটা শুনে উনি টেবিলের উপর রাখা আমার নোটখাতা গুলো এবং আমার যেই বইগুলো ছিল ওগুলো সবগুলো পানিতে ফেলে দিয়েছেন।পরের দিন আমার পরীক্ষা ছিল আমি এসবের মধ্যে আর পড়তে পারি নি সকালে যখন আমি পরীক্ষা দিতে যাবো তখন আমার বাবা বললেন তর পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই তখন আমার মাথা নিজের কন্ট্রোলে ছিল না আমি বললাম কেন আমি পরীক্ষা দিব না আমি কি দোষ করছি বলেন কালকে ও আমার বই নস্ট করছিল আর আপনি তো আমার সবগুলো বই ফেলে দিয়েছেন বলেন কি দোষ আমার।

উনি বললেন তুই এটা আমাকে আগে বলবি না যে ও তর বই নস্ট করছিল আমি মনে মনে হাসলাম আর বললাম আমাকে বলার সুযোগ কি দিয়েছেন আপনি আর বললেও তো কোন লাভ হবে না সেটাও জানি ।

পরীক্ষায় যাওযার সময় পুরো রাস্তা কান্না করতে করতে গিয়েছি আমি আর পারছি না বিনা দোষে নিজের শাস্তি পেতে। আমার বোনের জন্মের পর উনি আমাদের সবাইকে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়।আমরা এখন উনার স্কুলেই পড়ি স্কুলের সবার কাছে আমার বাবা একজন আদর্শ শিক্ষক কিন্তু আমি জানি সে কেমন। একবার নিজের ভালো মানুষী দেখানোর জন্য পরীক্ষার হলে আমার পরীক্ষার খাতা ছিঁড়ে ফেলছিল কেন জানেন কারণ আমি আমার একটা ফেন্ড এর কাছ থেকে একটা প্রশ্নের উত্তর জিগ্গেস করে লিখেছিলাম উনি বলছে কেন আমি অন্যের টা দেখে লেখব নিজে যা পারি তাই লিখতে হবে।

কিন্তু আমার ছোট বোন মাইশা একবার নিজের নাম্বার বাড়ানোর জন্য ওর ক্লাসমেট এর পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত যে পেজগুলো নিয়েছিল সেগুলো ছিঁড়ে ফেলছিলো যাতে ওর নাম্বার সবচেয়ে বেশি হয় এই বিষয় টা আমি জেনে ফেলেছিলাম এবং আমার বাবাকে বিষয়টি বলছিলাম এটা জানার পর উনি আমাকে নিষেধ করেছিল আমি যেন এই ব্যাপারে কাউকে কিছু না বলি। তখন আমার এত কস্ট হয়েছিল যেটা বলে বুঝতে পারলাম না কারণ আমার বোনের কোন কিছুই দোষ নাই আর আমার সবকিছু দোষের বা রে বা। তারপর একদিন রোজার দিনে আমি পানি খাব তখন সে আমার হাত থেকে পানির গ্লাস টা টান দিয়ে ফেলে দেয় আর বাবার সামনে বলে আমি নাকি ওর মুখের পানি কেড়ে নিয়ছি উনি বললেন তরা যখন এসবই করবি তখন আর আমার কিছু খাওয়ার দরকার নেই।

বলে চলে গেল উনি সারাদিন রোজা রাখার পর খাবে না এটা তো আমার ভালো লাগছে না তাই আমি গিয়ে বললাম আমাকে মাফ করে দিন আমি আর কখনো এমন করব না যদিও আমার কোন দোষ ছিল না উনার সামনে আমার ছোট বোনের পা ধরে ও মাফ চাইলাম কিন্তু সে আমাকে একটা লাথি মেরে ফেলে দিয়ে ওখান থেকে চলে যায় ঐদিন আমার মাও আমাকে অনেক কিছু বলল তুই মরতে পারিস না মরলে তা আমি বেঁচে যাই।তর জন্য আজকে তর আব্বু কিছু না খেয়ে আছে যখন আমার ছোট বোন বলল খাওয়ার কথা তখন উনি এসে ইফতার করলেন।

আমি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলাম না তাই বাথরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষন কান্না করলাম আজকে সত্যিই মরে যেতে ইচ্ছে করছে তাই একটা সুইসাইড নোট লিখে রান্নাঘরে গেলাম সেখানে বিষের বোতল খুঁজতে লাগলাম তখন আম্মু সেখানে চলে আসছিল এবং আমাকে বাঁচিয়ে নেন। আমি পড়াশোনায় অনেক ভালো ছিলাম। আমি সবকিছু খুব সহজেই শিখে যেতাম।

তখন আমাদের প্রাইভেট এর একটা মেয়ের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয় ওর নাম স্নেহা যাইহোক সেও কিছু দিন পর আমাকে ছেড়ে চলে যায় আসলে ভালোবাসা যত সুন্দর তার চেয়েও বেশি সুন্দর বন্ধুত্ব তাই আমি এটা মেনে নিতে পারছিলাম না আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। অনেক কস্ট পেয়েছি ওর জন্য এখন ওর সাথে প্রতিদিন দেখা হয় কিন্তু আমি একটা কথাও বলি না সেও বলে না আমার ভীষণ কষ্ট হতো কিন্তু আমার কস্ট বুঝার মতো কেউ ছিল না। তাই আমি এখন মোবাইল নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখি সারাদিন গল্প পড়ি।

আমি শুনছিলাম ছেলে রা নাকি কখনো বন্ধু কে ছেড়ে যায় না ছেলেরা বন্ধুত্বের জন্য জীবন ও দিতে পারে। আমি কোন ছেলের সাথে মিশতাম না ছোটবেলা থেকেই। আমার পিছনে অনেক ছেলে পড়ে আছে কিন্তু আমি কাউকে পাত্তা দিতাম না। আমি একা একা আর পারছিলাম না তাই একটা ছেলের সাথে আস্তে আস্তে আমার বন্ধুত্ব হয়ে যায় আর তারপর ভালোবাসা কিন্তু প্রথম প্রথম সে আমার অনেক কেয়ার করত খুঁজ খবর নিত কিন্তু এখন সে আমাকে অনেক অবহেলা করে তাই আমি নিজেকে সবার থেকে অনেক দূরে করে নিয়েছি আমি এই পৃথিবীতে এখন আর কাউকে বিশ্বাস করি না শুধু আমার মাকে ই আমি বিশ্বাস করি।

আমাকে আজ পর্যন্ত সবাই অবহেলা করেছে আমার মা ছাড়া আমি কারো কাছে ভালোবাসা পাই নি। তাই এখন আমি আমার মাকে নিয়ে ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে চাই। এখন আমি সবকিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তে চাই আর আমি এটাও ঠিক করেছি যে আমি কোনদিন বিয়ে করব না ‌। আমি একটা এতিমখানা তৈরি করব যেখানে যাদের মা বাবা নেই তারা এখানে থাকবে‌। আমি ই এসব এতিম বাচ্চাদের মা বাবা হয়ে বেঁচে থাকতে চাই আর আমার পাশে থাকবেন আমার মা‌। সেখানে আমার বাবা আর বোনের কোন ছায়া থাকবে না।

অনেকেই তো অনেক গল্প লেখে আমি না হয় নিজের জীবনের গল্প টাই লিখলাম জানি না এই গল্পে কতটুকু আপনাদের মন জয় করতে পেরেছি কিন্তু আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।

সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমার স্বপ্ন যেন পূরণ হয়।

সমাপ্ত

Leave a Comment