কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কলার মোচা , কলার মোচার পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ , যেসব রোগের ওষুধ কলার মোচা, শরীরের জন্য মোচা কী কী ভাবে উপকার করে? , কলার মোচা কেন খাবেন, কলার মোচার উপকারিতা

বিষয়: কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কলার মোচা , কলার মোচার পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ , যেসব রোগের ওষুধ কলার মোচা, শরীরের জন্য মোচা কী কী ভাবে উপকার করে? , কলার মোচা কেন খাবেন, কলার মোচার উপকারিতা, কলার মোচা খেলে কি কি অসুখ ভালো হবে , কলার মোচা বয়সের ছাপ দূর করে, কলার মোচা কেন খাবেন?

বাংলাদেশের বারমাসী সবজিগুলোর মধ্যে মোচা হলো কলা জাতীয় সবজি। এই কলা গাছ আমাদের দেশের সব অঞ্চলে পাওয়া যায় এবং এর ফলনও সহজেই হয়। তেমন কোনো যতেœর প্রয়োজন হয় না। একটু থাকার জায়গা পেলেই সে নিজেই নিজের খেয়াল রাখতে পারে। আমরা যারা গ্রামে কিংবা শহরে বসবাস করি সকলেই খুব ভালভাবে কলা গাছের থোড় ও কাঁচা কলা চেনেন। গাছে থাকা কলার কাঁদির একেবারে শেষ প্রান্তে থাকা না ফোটা ফুলে কুঁড়ির নাম হলো ‘মোচা’।

মোচার অগ্রভাগ সূঁচালো। মোচা বাইরে থেকে পরপর খোলার দ্বারা ঢাকা থাকে। এ খোলাটি দেখতে গাঢ় লাল। কলার মোচা ও রঙিন সবজিতে পুষ্টি উপাদান বেশি। মোচা সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে একে সারাবছরই বাজারে পাবেন। কলার মোচার পুষ্টিগুণ: মোচা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও সুস্বাদু। আবার পুষ্টিতেও অতুলনীয়।

প্রতি ১০০ গ্রাম মোচায় রয়েছে: প্রোটিন ১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩২ মিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৫.১ গ্রাম, ফসফরাস ৪২ মিগ্রাম, ভিটামিন ‘এ’ ২৭ আই.ইউ, লৌহ ১.৬ মিগ্রাম, ফ্যাট ০.৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ১৮৫ মিগ্রাম, রিবোফ্লেবিন .০২মিগ্রাম, ভিটামিন ‘সি’ ৪২০ মিগ্রাম, আঁশ ১.৩ গ্রাম, থায়ামিন .০৫ মিগ্রাম।

কলার মোচার উপকারিতা : মোচা কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় দেহ গঠনের কাজে সাহায্য করে। মোচায় লৌহ থাকায় এটি খেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দূর করতে দারুণ সহায়তা করে।

মোচার মধ্যে যেই পরিমাণে আঁশ পাওয়া যায় তাতে সহজে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মোচায় ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকায় এটি শিশুদের দাঁত ও হাঁড়ের লম্বাটে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকার কারণে মোচা খেলে হাই ব্লাডপ্রেসার কমে। কাঁচা কলা আমাদের শরীরে কি উপকার করে? কলার মধ্যে পরিচিত একটি নাম কাঁচা কলা। এ কলা আমরা মূলত তরকারি হিসেবেই ব্যবহার করি। কাঁচাকলা ভাজা, ঝোল, শুক্তো, ডালনা, কোফতা, বড়া, ভর্তা ইত্যাদি রেধে খেতে খুবই টেস্ট। পাকলে এ কলা এমনিতেই খাওয়া যায়।

এটি কাঁচা অবস্থায় গাছ থেকে তোলা হয় তরকারির জন্য। সারাবছরই এ সবজি আমরা পেয়ে থাকি। আমাদের পুষ্টি দিচ্ছে: প্রতি ১০০গ্রাম কাঁচা কলায় রয়েছে-প্রোটিন১.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৪.০ গ্রাম, ফসফরাস ২৯ মিগ্রাম, ভিটামিন ‘এ’ ৩০ আই.ইউ, লৌহ ৬.২৭ মিগ্রাম, ফ্যাট ০.২ গ্রাম, আঁশ ০.৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ১৯৩ মিগ্রাম, অক্সালিক এসিড ৪৮০মিগ্রাম, ভিটামিন ‘সি’ ২৪ মিগ্রাম, রিবোফ্লেবিন .০২ গ্রাম, থায়ামিন .০৫ মিগ্রাম। উপকারিতা :

* অনেক মানুষ মনে করেন গাছের শেকড়ের রসের সঙ্গে ঘি ও চিনি মিশিয়ে খেলে প্রস্রাবের অসুখ থেকে রক্ষা পাবেন।

* পেটের অসুখে, যাদের আমাশয় ও রক্ত আমাশয় হয় তাদেরকে কাঁচাকলা সিদ্ধ করে টাটকা টক দইয়ের সঙ্গে মেখে খেতে দিতে হবে।

মেয়েদের প্রদর রোগের ওষুধ : *একেবারে কচি কলাপাতা মিহি করে বেটে দুধ মিশিয়ে ঘন ক্ষীরের মতো করে খাওয়ালে মেয়েদের প্রদর রোগে উপকার হয়। * কলা গাছের শুকনো শেকড় গুঁড়ো করে অল্প পরিমাণে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পিত্ত রোগ ভালো হয়ে যায়। রক্তস্বল্পতায় একটি কার্যকরী ওষুধ এই কাঁচাকলা। যৌন রোগের ওষুধ : * কাঁচাকলা শুকিয়ে গুঁড়ো করে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যৌন ব্যাধি সেরে যায়। প্রস্রাবের অসুখ ও শ্বেতপ্রদর ভাল হয়।

* আমাশয় রোগের ওষুধ : * একটি কাঁচাকলা খোসাসহ চাক চাক করে কেটে প্রতি রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ঐ পানি পান করলে কঠিন আমাশয় রোগ ভালো হয়ে যায়। * কাঁচাকলা শরীরের বল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কলার মোচা আমাদের দেশে সারা বছরই সবজির দোকানে চোখে পড়ে।

গ্রামের মানুষ অবহেলা করে কলার মোচা খেতে অপছন্দ করেন দামে সস্তা বলে। অথচ কলার মোচার পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ অনেক বেশি। তাই আজ থেকেই কলার মোচা নিজে খান ও পরিবারের সবাইকে কলার মোচা খেতে উৎসাহিত করুন।


More Article:-



রজঃচক্র স্বাভাবিক রাখা
কলার ফুল রজঃকালীন ব্যথা কমায়। এটি প্রোজেস্টেরন উৎপাদন বৃদ্ধি করে রক্তাল্পতা কমায়।

ওভারিয়ান সিন্ড্রোম
পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন – কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ফোলাভাব বিশেষ করে ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম’ (পিসিওএস) নিয়ন্ত্রণে রাখে।

মন ভালো রাখতে
মোচাতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, উদ্বেগ ও হতাশা কমায়। মন মেজাজ ভালো রাখে।

ডায়াবেটিস
মোচার ফেনলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

হজমে ও কোষ্ঠকাঠিন্যে
মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ পাওয়া যায়, এটি হজম শক্তি বাড়ায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ কমায়
কলার মোচায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উন্মুক্ত ‘রেডিকল’য়ের বিরুদ্ধে কাজ করে। জারণ ক্ষয় প্রতিহত করে এবং হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

ডায়াবেটিসেও উপকার
ডায়াবেটিসের সঙ্গে খাবারের পরীক্ষায় বাদ যায়নি কলার মোচাও। এতে আছে ফেনলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য ‘বায়োঅ্যাক্টিভ’, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

ক্যান্সার, হৃদরোগ প্রতিরোধ
কলার মোচায় থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, ফ্লেভানয়েড ও নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি-র‌্যাডিকেল ধ্বংস করে। এতে ক্যান্সার প্রতিরোধের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডও থাকে ঝুঁকিমুক্ত।

ত্বকের জন্য
কলার মোচা অকালে বৃদ্ধ হওয়া ও বয়সের ছাপ পড়া ধীর করে। এছাড়া ত্বকের গঠন উন্নত করে বলিরেখা কমায়।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

Leave a Comment