কুচিসাকা ওনা

-“১৯৭০ সাল। পুরো জাপান তখন কুচিসাকা ওনা আতঙ্কে আতঙ্কিত। অবস্থা এমন হয়ে দাড়িয়েছিল যে, জাপান সরকার বাধ্য হয়েছিল স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের পুলিশি প্রোটেকশন দিতে।

ঘটনা এরকম ছিল যে,একজন মহিলা, যিনি লম্বা ওভারকোট পরিহিতা এবং যার মুখে মেডিক্যাল মাস্ক ছিল যেটা মানুষজন সাধারণত সর্দি কাশি হলে পরিধান করত।তো সে কোনো বাচ্চাকে একা কিংবা নির্জনে পেলে জিজ্ঞেস করত,” আমি কি দেখতে সুন্দর?”

উত্তর যা-ই হত উত্তরদাতার একমাত্র পরিণতি ছিল মৃত্যু। যদি কেউ বলত “না” তবে সঙ্গে সঙ্গে সে তার ওভারকোটের পকেট থেকে কাচি বের করে উত্তরদাতাকে হত্যা করত।আর যদি উত্তর হত “হ্যা”

তবে তার মাস্ক সরিয়ে তার আসলে চেহারা দেখাত।সেটা উত্তরদাতার কলিজা শুকিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।কারণ তার চেহারা কাচি দিয়ে অত্যন্ত বিভৎসভাবে কাটা ছিল।তারপর সে আবার জিজ্ঞেস করত,”আমি কি দেখতে সুন্দর?”

উত্তর যা-ই হত এবারও তার কপালে মৃত্যু লেখা থাকত।
বেশিরভাগ লোক বিশ্বাস করে, এই আরবান লিজেন্ডের রুট তখন থেকে ১২০০ বছর আগের প্রাচীন জাপানে বিদ্যমান। সেখানে কুচিসাকা ওনা নামক এক অত্যন্ত সুন্দরী মহিলা তার সামুরাই স্বামীকে নিয়ে বসবাস করত।কুচিসাকা ওনা সবসময় তার রূপের গৌরব করত।রূপের অহংকারে মাটিতে তার পা পরত না।তাদের দিনকাল সুখেই কাটছিল।

এদিকে একটি যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তার সামুরাই স্বামীর ডাক পরে।তার স্বামী যুদ্ধে চলে যায়।যুদ্ধ থেকে ফিরে তার স্বামী তাকে পরপুরুষের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে।সহ্য করতে না পেরে সে তার হাতে থাকা তরবারি দিয়ে কুচিসাকার মুখে আঘাত করে এবং বলে,
“এখন তোকে কে সুন্দরী বলবে?”
সত্যি বলতে, তরবারির আঘাতে তার চেহারা বেশ বিভৎস লাগছিল এবং তাকে কুৎসিত দেখাচ্ছিল।এরপর তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়।সেদিন রাতেই কুচিসাকা কাচি দিয়ে আত্নহত্যা করে।

জাপানিদের বিশ্বাস, তখনকার সেই ডেডলি উইমেন, আসলে ইতিহাসের সেই সুন্দরী,অহংকারী কুচিসাকা ওনার অতৃপ্ত আত্না,যা ১২০০ বছর জেগে পর উঠেছে।
তো,সংক্ষেপে এই হল “কুচিসাকা ওনা” আতঙ্ক।”
-তোমার বলা শেষ। এবার আমি বলব?
-হ্যা বলো।
-আমি এসব কুসংস্কারে মোটেও বিশ্বাস করি না।আমি একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ।এসব আমার জন্য না – তোমার মত ভীতুদের জন্য।
-এর ফল কিন্তু ভালো হবে না,ইউশিনারি।

-দেখা যাক।ওহ হ্যা,আমাকে আমার বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার কথা ছিল।দেরি হয়ে যাচ্ছে।আচ্ছা চলি কেমন।পরে তোমার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলব।
ইউশিনারি তার বান্ধবীর বাড়ি পৌছল।দরজা নক করতেই সে দরজা খুলে দিল।ইউশিনারি জিজ্ঞেস করলো, “ব্যাপার কি,তোমার সর্দি লেগেছে নাকি? মাস্ক পরেছ কেন? আর বাসায় ওভারকোট কেন?”
তার বান্ধবী বললো,”তুমি বস, আমি আসছি”
ইউশিনারি সোফায় গিয়ে বসল।সেখানে একটি ম্যাগাজিন ছিল, যেখানে কুচিসাকা ওনার ব্যাপারে একটি আর্টিকেল লেখা ছিল।ইউশিনারি পড়ছিল আর হাসছিল।তখন তার বান্ধবী এসে জিজ্ঞেস করলো,
“আমি কি দেখতে সুন্দরী?”

ইউশিনারি রোমান্টিক কণ্ঠে বললো,
“এ কেমন কথা বলছ সোনা।তোমার মত সুন্দরী শুধু জাপান কেন,পুরো বিশ্বে নাই”
তার বান্ধবী মুখের মাস্ক সরিয়ে ফেলল।এরপর ইউশিনারি যেটা দেখলো সেটা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।স্বয়ং কুচিসাকা ওনা তার সামনে দাড়িয়ে!!!

জাপান পুলিশ একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ইউশিনারির লাশ উদ্ধার করলো।কাচির আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের ধারণা।তাকে দেখতে নাকি অত্যন্ত বিভৎস দেখাচ্ছিল!

(তথ্য সংগৃহীত)

Leave a Comment