কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম: হলুদ হলো একটি মসলা জাতীয় পণ্য। আর এটি আদিকাল থেকেই রুপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। গায়ের রং উজ্জ্বল হওয়া থেকে শুরু করে ব্রণ, মেছতা, এ্যালার্জি, পোড়া দাগও দূর করতে পারে। হলুদ ত্বকের বিতর ও বাহিরে উভয়ের জন্য ভালো। 

কাঁচা হলুদ মুখে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা ও অপকারিতা 

তবে ব্যবহারের সময় হলুদের সাথে অন্য কিছু মিশিয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে এক বা দুই বার থেকে বেশি ব্যবহার করা যাবে না। আর যাদের এ্যালার্জি আছে তারা ত্বকে হলুদ ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।।

কাঁচা হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা,কাঁচা হলুদ খাওয়ার রেসিপি

হলুদের সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে

  • দুই চামচ হলুদের সাথে পরিমাণ মতো গোলাপজল ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। 
  • আপনি চাইলে এক চামচ মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন।
  • এবার এই পেস্টটি ভালো করে মুখে লাগিয়ে নিন।
  • মনে রাখবেন, এই পোস্ট ব্যবহারের আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। 
  • এবার পেস্টটি সারা-রাত মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। 

হলুদের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে –

কালোদাগ, মেছতা ও ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে -হলুদ এবং লেবুর রসের কোন বিকল্প নেই। এক চা চামচ ময়দার সাথে এক চা চামচ হলুদ গুরা, এক চা চামচ লেবুর রস, আর আধা চামচ কাঁচা দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর মুখে ও ঘারে ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধরে নিন।এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারে পাবেন উজ্জ্বল ও দাগহীন ত্বক।। 

 হলুদ, লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে – 

লেবুর রস এবং মধু ত্বকের জন্য দুইটিই খুবই উপকারী। দুই চামচ হলুদের গুরা, এক চামচ লেবুর রস, এক চামচ মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। তারপর হাতে, মুখে ও ঘারে ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে পেলুন। লেবুর রস ব্লিচের কাজ করে আর মধু দাগ দূর করে। এভাবে আপনার ত্বককে উজ্জ্বল ও দাগহীন করতে সাহা্য্য করবে।।

হলুদের সাথে নিম পাতা মিশিয়ে –

হলুদের সাথে নিম পাতার প্যাক যেভাবে তৈরি করতে হয়- নিম পাতা বেটে বা নিম গুড়ার সঙ্গে, হলুদ গুড়া ও গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পাতলা পেস্ট তেরি করুন। সেই পেস্টটি ত্বকে ব্যবহার করুন।২০-২৫মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে পেলুন। এরপর এ্যালোভেরা জেল বা আপনার প্রিয় কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।।এটি আপনার ত্বককে করবে দাগহীন ও উজ্জ্বল। নিম পাতা চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য খুবই উপকারী।।

আরো পড়ুন: পায়খানা রাস্তায় সহবাস করলে কি হয়?,

হলুদের সাথে আঙ্গুর মিশিয়ে –

প্রথমে একটি পাএে দুই টেবিল চামচ আঙ্গুর ম্যাশড করতে হবে, তারপর আধা চা চামচ হলুদের গুড়া, ২-৩চা চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে একটি ঘাড় প্যাক তৈরি করতে হবে। তারপর প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০মিনিট পরে ধুয়ে নিতে হবে। এটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করবে।।

হলুদের সাথে টকদই মিশিয়ে –

প্রথমে এক টেবিল চামচ ময়দার সাথে দুই টেবিল চামচ টকদই, এক চামচ মধু, এক চামচ লেবুর রস, এক চামচ ওএক চামচ হলুদ গুড়া মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। এবার এটি শরীলের যে জায়গায় ট্যানড লাগছে সেই জায়গাগুলোতে ব্যবহার করুন।প্রায় ২০মিনিট পর্যন্ত এটি লাগিয়ে রাখতে হবে, তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পেলুন।এই প্যাকটি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করার পাশাপাশি এটি আপনার ত্বককে টানটান করবে।। 

আরো পড়ুন: পুরুষাঙ্গের বড় করার ব্যায়াম

সৌন্দর্য চর্চায় হলুদের নানামুখী ব্যবহার

যেকোন ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক স্কাব তৈরি করতে হলুদ ও ময়দা ভালো ভাবে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।এটি আপনার ত্বককে তৈলাক্ত ভাব দূর করে উজ্জ্বল ও কোমল করবে।। 

হলুদের সাথে গাজরের রস,বেসন ও জলপাই তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে আপনার ত্বকে করবে উজ্জ্বল ও কোমল।।

হলুদে আছে ত্বক উজ্জ্বল করার উপদান আর লেবুর রসে আছে ব্লিচিং উপদান । তাই আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করতে চাইলে এই প্যাকগুলো ব্যবহার করুন।

হলুদ এবং মধুর ব্যবহার ত্বকের ভেতরের আর্দ্রতা দূর করতে সাহায্য করে।আর মধুতে আছে প্রাকৃতিক ভাবে ত্বক আর্দ্র রাখার ক্ষমতা।।

আরো পড়ুন: মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়

হলুদের মধ্যে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে,যা মুখের ব্রণ দূর করতে সাহয্য করে। কাচা হলুদদের সাথে চন্দন গুড়া ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে ত্বককে উজ্জীবিত করবে।।

অ্যান্টিফাঙ্গল উপাদান আছে হলুদ ও নারিকেল তেলে। এছাড়াও নারিকেল তেল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে শরীলে।। 

ত্বকে পোড়া দাগ দূর করতে হলুদ বাটা, মুলতানি মাটি, শসার রস ও লেবুর রস মিশিয়ে দিলে পোড়া দাগ অনেকটা কমে যায়।। 

আরো পড়ুন: সন্তান জন্মদানের পর সহবাস

চোখের নিচের কালো দাগ দূর ও ত্বকের তারুণ্য ধরে রাকতে হলুদ খুবই উপকারী। হলুদে আছে নানা ধরনের উপদান যা ত্বককে সতেজ ও সুন্দর করে তুলে।

কাচা হলুদের উপকারিতা

হলুদে কারকিউমিন ( curcumin) নামে একটি উপাদান আছে,যা শরীরের লোহিত রক্ত কণিকাকে রক্ষা করে। কাচা হলুদ আমাদের শরীরে ইমিউনিটি বাড়ায় এবং সর্দি-কাশি থেকে আরাম দেয় এছাড়াও হলুদে থাকা কারকিউমিন ইনফ্লুয়েন্জা ও সর্দি -কাশি কমাতে সাহায্য করে।হলুদে থাকা কারকিউমিনিক অ্যান্টি -ডায়াবেটিস এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ও রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে।। 

কাচা হলুদের অপকারিতা 

কাচা হলুদ বেশি দিন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই বেশি দিন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীকে জানান। কাচা হলুদ বেশি ব্যবহার করলে কি কি হতে পারে।

কাচা হলুদ আপনার পেট খারাপ করতে পারে -ক্যাননসারের চিকিৎসার জন্য কাচা হলুদের ব্যবহার দেখার বিষয়ে গবেষণায় কিছু অংশগহণকারীকে বিশ্বস্ত উৎস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, কারণ -তাদের হজম শক্তি নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। 

কাচা হলুদ আপনার রক্ত পাতলা করে। রক্ত পাতলা হওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের হলুদ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।। 

আরো পড়ুন: মাথা ব্যথার দোয়া,মাথা ব্যথা দূর করার দোয়া

আপনার যদি এ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাহলে হলুদ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।। 

শেষ কথা 

রুপচর্চা প্রাকৃতিক ভাবে করলেই সবচেয়ে বেশি ভালো। কারণ এতে কোন ক্ষতিকারক দিক থাকে না। তবে কোন ত্বকে কেমন যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন তা আগে থেকে জেনে নেওয়া ভালো। প্রতিদিনের কাজের মধ্যেও একটু সময় বের করে নিজের যত্ন নিতে হবে। প্রাকৃতিক উপায়ে যত্ন নেওয়ার মধ্যে রয়েছে -ক্লিনজিং,ম্যাসাজ,টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং এইগুলো ত্বরায় খুব ভালো কাজ করে।

আপনার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আরো কিছু পোস্ট

স্বাস্থ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী ঔষধি গুন গোপন সমস্যা রূপচর্চা রোগ প্রতিরোধ

Leave a Comment