এন্টিসেপটিক soap/hand wash

প্রসঙ্গঃ এন্টিসেপটিক soap/hand wash

আমরা প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও ভাইরাস খেয়ে ফেলছি, বাতাসের মাধ্যমে হোক বা খাবারের মাধ্যমে। আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে, মেরে ফেলে। তাই ভয়ের কিছু নেই।

কিন্তু এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে দুর্বল হতে পারে বা ভেঙে পড়তে পারে জানেন?
এন্টিবায়োটিক মেডিসিন খেয়ে আর এন্টিসেপটিক সাবান/hand wash অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে। কিভাবে?
আমরা তো জানি যে এন্টিবায়োটিক শরীরের ব্যাকটেরিয়া মারে। সব ব্যাকটেরিয়াই কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। আর এন্টিবায়োটিক কিন্তু ভালো ব্যাকটেরিয়া বা খারাপ ব্যাকটেরিয়া বেছে বেছে ধ্বংস করে না।

গণহারে সবাইকে ধ্বংস করে। এই কারণে এন্টিবায়োটিক খাওয়ার পর শরীরের বন্ধু ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হওয়ার ফলে শরীর তার নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারায়। শরীর দুর্বল হয়, লাবন্য হারায়। সেই কারণেই এন্টিবায়োটিক খাওয়ার সময় আমাদেরকে প্রোবায়োটিক ও খেতে হয় যেন শরীরে উপযুক্ত বন্ধু ব্যাকটেরিয়ার যোগান পর্যাপ্ত থাকে।

তো এতে এন্টিসেপটিক সাবান আর handwash এর কাজটা কী? ভেবে দেখুন তো সেই একই ঘটনা কী এই ক্ষেত্রেও ঘটছে না?
এন্টিসেপটিক সাবান বা handwash দিয়ে যখন ঘন ঘন wash করেন তখনও কিন্তু আপনি শরীরের শত্রু জীবাণুর সাথে সাথে বন্ধু জীবাণুকেও মেরে ফেলছেন।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে ফেলছেন। ফলে ঘন ঘন অসুস্থ হতে পারেন। যে পরিমাণ বন্ধু ব্যাকটেরিয়া নিজের শরীর থেকে ধ্বংস করছেন প্রতিনিয়ত, সেই পরিমাণ প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট বা প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক খাবার যেমন দই/ঘোল/পানি ভাত ইত্যাদি কী খান?

তাহলে?
সাধারণ সাবান যেমন লাক্স, নিম সাবান, মেরিল, কেয়া বা ডাভ বা সাধারণ handwash দিয়েও কিন্তু ধুলা ময়লা পরিষ্কার হয়। সেটাও যথেষ্ট। আমরাতো আর সবাই ডাক্তার নই যে সারাক্ষণ রোগ-জীবাণুর সংস্পর্শে থাকতে হয়! কিংবা operation theatre এ ও কাজ করি না যে সবসময় antiseptic দিয়ে হাত আর শরীর wash করতে হবে।

আর দুই দশক আগেও কিন্তু সবাই নরমাল সাবান দিয়েই হাত ধুয়ে নিত আর গোসল করতো। তাই এন্টিসেপটিক সাবান দিয়ে গোসল করার আগে একটু ভেবে নেওয়া দরকার আছে কিন্তু! বিশেষ করে শিশুদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে। ওদেরতো Immunity system এমনিতেই দুর্বল। এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনে যদি সচেতনতার প্রয়োজন থাকে তবে antiseptic সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ যত্রতত্র ব্যবহারেও তো সচেতনতা প্রয়োজন তাই না?

লেখাঃ ফরিদা আখতার

Leave a Comment