এথেন্সের সমাজব্যবস্থা কী?, এথেন্সের সমাজব্যবস্থা বলতে কী বুঝ?

এথেন্সের সমাজব্যবস্থা কী?, এথেন্সের সমাজব্যবস্থা বলতে কী বুঝ?

ভূমিকা : প্রাচীন গ্রিস কতকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নগররাষ্ট্র নিয়ে গঠিত হয়েছিল। রাজনৈতিক দিক থেকেও সেগুলো ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন। এসব নগররাষ্ট্রসমূহের মধ্যে এথেন্স ছিল অন্যতম তাই প্রাচীন গ্রিসের সমাজ সম্পর্কে জানতে হলে সবার আগে এথেন্সের সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া প্রয়োজন। মূলত এথেন্স ছিল প্রাচীন গ্রিক নগররাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত, সুন্দর ও প্রতিনিধিত্বমূলক।

এথেন্সের সমাজব্যবস্থা :

এথেন্সের সমাজব্যবস্থাও ছিল প্রাচীন গ্রিসের অন্যান্য নগররাষ্ট্রের মতো শ্রেণিভিত্তিক। নিম্নে এর সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো- ১. সামাজিক শ্রেণি : এথেন্সের সমাজ প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। এ শ্রেণিবিভাগ শুধু যে সামাজিক জীবনে পরিলক্ষিত হতো তাই নয়, রাজনৈতিক ও আইনগত জীবনেও এর যথেষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।

নিম্নে এগুলো আলোচনা করা হলো

নাগরিক : এথেন্সে সমাজের সর্বোচ্চ শ্রেণির লোকদেরকে নাগরিক বলা হতো অর্থাৎ যারা নগরের সদস্য তারাই নাগরিক। নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের একচেটিয়া অধিকার ভোগ করতো। জন্মসূত্রেই তারা নাগরিক হওয়ার সুযোগ লাভ করতো। জন্মগত সূত্রে তাদের পিতামাতা যে নগরের নাগরিক তাদের সন্তানরাও সেই নগরের নাগরিকত্ব লাভ করতো।

মেটিকস বা বিদেশিগণ : এথেন্সীয় সমাজের দ্বিতীয় স্তরে ছিল মেটিকস বা বিদেশিরা। এথেন্সের মতো বাণিজ্যপ্রবণ শহরে বিদেশিদের সংখ্যা প্রচুর হলেও তারা এথেন্সের নাগরিকত্ব লাভ করতে পারত না। দাসদের মতো মেটিসরাও ছিল রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তবে তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার ভোগ করতে পারত।

দাস : এথেন্সীয় সমাজ কাঠামোর দাসরা সর্বনিম্ন স্তরে ছিল। তারা কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করতো। দাসগণ এথেন্সের রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল।

২. সংস্কৃতি এথেন্স ছিল সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র। এথেন্সকে বলা হতো কাব্য ও শিল্পকলার নগর। এখানে চিত্রশিল্পী, ভাস্কর ও সাহিত্যিকদের বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করা হতো। শরীর চর্চা ও খেলাধুলার কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। মুক্তবুদ্ধি, মুক্ত চিন্তা বা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য অনুযায়ী প্রত্যেকেই তার ইচ্ছানুযায়ী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারত

৩. শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমান সময়ের মতো তৎকালীন এথেন্সে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন ছিল না। সোফিস্ট পণ্ডিতরা অর্থের বিনিময়ে অভিজাত শ্রেণির যুবকদের শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানী করে তুলতেন। সোফিস্টরা ছিলেন দার্শনিক, ব্যাকরণবিদ, অলংকারশাস্ত্র, সংগীতবিদ্যা, শরীরতত্ত্ব এবং চারুকলার পণ্ডিত

উপসংহারঃ

পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন গ্রিসের এথেন্সের সমাজব্যবস্থা ছিল মূলত দাসনির্ভর। প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব সমাজব্যবস্থা ও শাসনব্যবস্থা একই প্রকৃতির হলেও প্রাচীন গ্রিসের এথেন্সের সমাজব্যবস্থার দুর্বল দিক হলো ক্রীতদাস প্রথাকে সমর্থন এবং নারীদের সমঅধিকার না দেওয়া। যার ফলে রাষ্ট্র পরিচালনায় পুরুষেরাই একচেটিয়া সুযোগ সুবিধা ভোগ করতো।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পটভূমি বিশ্লেষণ কর

Leave a Comment