একটি উত্তম প্রকল্প প্রণয়নের পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর,বাজারজাতকরণ পরিকল্পনার উপাদানগুলো বর্ণনা কর, বাজারজাতকরণ পরিকল্পনার হাতিয়ারসমূহ আলোচনা কর

প্রশ্ন সমাধান: একটি উত্তম প্রকল্প প্রণয়নের পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর,বাজারজাতকরণ পরিকল্পনার উপাদানগুলো বর্ণনা কর, বাজারজাতকরণ পরিকল্পনার হাতিয়ারসমূহ আলোচনা কর

একটি উত্তম প্রকল্প প্রণয়নের পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর

প্রকল্প হল কতগুলো কার্যকলাপের সমষ্টি । অর্থাৎ কোন বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তাই প্রকল্প । একটি উত্তম প্রকল্প উদ্যোক্তাকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে ।

প্রকল্প প্রণয়নের পদক্ষেপসমূহ : উত্তম প্রকল্প প্রণয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় । নিম্নে এগুলো আলোচনা করা হলো :

১. সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ : প্রকল্প প্রণয়নের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ। অর্থাৎ প্রকল্পটি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য তা এ পর্যায়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় ।

২. অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ : এ পর্যায়ে আর্থিক দিক বিবেচনা করা হয় এবং বাজার বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে ।

৩. প্রকল্প নকশা করণ এবং নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণ : এ পর্যায়ে প্রকল্প গঠনের কার্যসমূহের পারস্পরিক আন্তঃসম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হয় । এছাড়া নকশা প্রণয়নের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় ।

৪. উপকরণ বিশ্লেষণ : পর্যায়ে প্রকল্প চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও সহায়ক দ্রব্যাদির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ এ পর্যায়ে সার্বিক প্রয়োজনের ধারণা দেয়া হয় ।

৫. আর্থিক বিশ্লেষণ : এ পর্যায়ে প্রকল্পের আদেয়র উৎস, ব্যয় নির্ধারণ, পরিচালনা ব্যয় প্রভৃতি নির্ধারণ করা হয় । এছাড়া এখানে সবকিছু তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ।

৬. ব্যয়সুবিধা বিশ্লেষণ : এ পর্যায়ে প্রকল্পের ব্যয় সুবিধা বিশ্লেষণ করা হয় এবং মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রকল্প পুনর্বিবেচনা করা হয় ।

৭. বিনিয়োগপূর্ব বিশ্লেষণ : এ পর্যায়ে প্রকল্পটি একটি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। পূর্ববর্তী ধাপের ফলাফলকে মূল্যায়ন করে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ৷

৮. নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নকশাকরণ : প্রকল্পের সর্বশেষ ধাপ এটি। প্রকল্প যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় তার একটি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নকশাকরণ করা হয় এ পর্যায়ে। পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ হচ্ছে কিনা তা এ ধাপে পর্যালোচনা করা হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় উল্লিখিত পর্যায়সমূহ ধারাবাহিকভাবে অনুসরণের মাধ্যমে একটি উত্তম প্রকল্প প্রণয়ন করা সম্ভব হয়।


আরো ও সাজেশন:-

বাজারজাতকরণ পরিকল্পনার হাতিয়ারসমূহ আলোচনা কর

বাজারজাতকরণ পরিকল্পনায় অনেকগুলো উপাদান অন্তর্ভুক্ত থাকে। পণ্য এবং ব্র্যান্ড পরিকল্পনায় যে সকল উপাদান অন্তর্ভুক্ত থাকে সেগুলো নিয়ে উল্লেখ করা হলো :

১. নির্বাহী সার-সংক্ষেপ : নির্বাহীর উদ্দেশ্যভিত্তিক সুপারিশের সারাংশ দিয়ে বাজারজাতকরণ পরিকল্পনা শুরু করতে হয়। নির্বাহী সার-সংক্ষেপ উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের পরিকল্পনা প্রধান পয়েন্টগুলো দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য করে । নির্বাহী সার-সংক্ষেপের পরেই সূচিপত্র দিতে হয় ।

২. বর্তমান বাজারজাতকরণ অবস্থা : পরিকল্পনার প্রথম অধ্যায়ে উদ্দিষ্ট বাজারের বর্ণনা এবং সেখানে কোম্পানির অবস্থান বর্ণনা করতে হয়। এ অধ্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়নকারী নিম্নোক্ত তথ্যগুলো সন্নিবেশিত করে :

(ক) বাজার বর্ণনা : এতে বিগত কয়েক বছরের বিভাগওয়ারী মোট বাজার আয়তন দেখানো হয়; তারপর ক্রেতার প্রয়োজন এবং তাদের ক্রয়কে প্রভাবিত করে এমন পরিবেশগত উপাদানগুলো পর্যালোচনা করা হয়।

(খ) পণ্য পর্যালোচনা : এতে পণ্যসারির প্রধান প্রধান পণ্যগুলোর বিক্রয় মূল্য এবং মোট মুনাফা দেখানো হয় ।

(গ) প্রতিযোগিতা : এতে প্রধান প্রতিযোগীদের চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের প্রত্যেকের পণ্যের মান, মূল্য, বণ্টন এবং প্রমোশনের ব্যাপারে কৌশলসমূহ কি তার বর্ণনা থাকে

(ঘ) বণ্টন : এতে চলতি বিক্রয় প্রবণতা এবং প্রধান বণ্টন প্রণালীর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর বর্ণনা থাকে ।

৩. হুমকি এবং সুযোগ : এ অধ্যায়ে পণ্যটির সম্ভাব্য, হুমকি এবং সুযোগ বিশ্লেষণ করা হয়। সকল হুমকি সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে সকল হুমকি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি এবং সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণও বেশি কোম্পানিকে সেগুলোর মোকাবিলা করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৪. উদ্দেশ্য এবং বিচার্য বিষয় : পণ্যের সম্ভাব্য হুমকি এবং সুযোগসমূহ পর্যালোচনার পর এ পর্যায়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপককে উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হয় এবং উদ্দেশ্যকে প্রভাবিত করে এমন বিচার্য বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে প্ৰধান বিচার্য বিষয় বেরিয়ে আসে। ফলে কোম্পানি ব্যবস্থাপকের পক্ষে বাজার অংশ বৃদ্ধি করা সম্ভবপর হয়।

৫. বাজারজাতকরণ কৌশল : বাজারজাতকরণ পরিকল্পনা এ অংশে উদ্দেশ্য অর্জনের জন্যে বাজারজাতকরণ কৌশলগুলোর বিস্তৃত পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। বাজারজাতকরণ কৌশল হচ্ছে বাজারজাতকরণ যৌক্তিকতা যার মাধ্যমে একটি ব্যবসায় ইউনিট তার বাজারজাতকরণ উদ্দেশ্য অর্জনের প্রত্যাশা করে। এতে অভীষ্ট বাজার, বাজারজাতকরণ মিশ্রণ এবং বাজারজাতকরণ খরচের স্তরের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কৌশল অন্তর্ভুক্ত থাকে ।

৬. কর্মপরিকল্পনা : বাজারজাতকরণ কৌশলগুলোকে কর্ম পরিকল্পনায় রূপান্তর করতে হবে যাতে গুরুত্বপূর্ণ কতকগুলো প্রশ্নের সমাধান থাকবে। কর্মপরিকল্পনায় কার্যক্রম শুরু পর্যালোচনা এবং সমাপ্তির সময়সূচি দেখানো হয় ।

৭. বাজেট : এ পর্যায়ে লাভ-ক্ষতির বিবরণ সম্বলিত একটি বাজারজাতকরণ বাজেটের মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে হবে। ব্যবস্থাপনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বাজেট পর্যালোচনা, অনুমোদন এবং পরিবর্তন করে থাকে। অনুমোদিত বাজেটটি মালামাল ক্রয়, উৎপাদন সূচী, জনশক্তি পরিকল্পনা এবং বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

৮. নিয়ন্ত্রণ : সর্বশেষ অধ্যায়ে পরিকল্পনামাফিক কাজ এগুচ্ছে কিনা তা দেখার জন্যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার রূপরেখা থাকে। এর ফলে ব্যবস্থাপকগণ প্রত্যেক সময়কালের জন্যে ফলাফল মূল্যায়ন করে কোনো ব্যবসায় বা পণ্যটি লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না তা শনাক্ত করে এবং কারণ অনুসন্ধান করে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment