একজন উদ্যোক্তা কিভাবে ব্যবসায় পরিকল্পনার অপ্রত্যাশিত বাধা দূর করতে পারে?, উদ্যোক্তা হিসেবে কিভাবে নিজের পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন?

প্রশ্ন সমাধান: একজন উদ্যোক্তা কিভাবে ব্যবসায় পরিকল্পনার অপ্রত্যাশিত বাধা দূর করতে পারে?, উদ্যোক্তা হিসেবে কিভাবে নিজের পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন?

যেকোনো ব্যবসায় পরিকল্পনা ভবিষ্যতের জন্য প্রণয়ন করা হয়। যেকোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলো ব্যবসায় পরিকল্পনা। তবে পরিকল্পনা যেহেতু অনুমানভিত্তিক একটি বিষয় সেহেতু এটি প্রণয়ন ও বাস্ত বায়নে অপ্রত্যাশিত কিছু বাধা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এ সকল বাধাসমূহ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করে। এমনকি ব্যবসার মূল লক্ষ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। তাই একজন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নকারীকে খুব সতর্কতার সাথে ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।

একটি ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নকালে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় আনলে অপ্রত্যাশিত বাধাসমূহের অনেকটাই দূর করা যায়। নিয়ে এগুলোর বিবরণ প্রদান করা হলো :

১. বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ : একটি ব্যবসায়ের মূল লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার মূলে রয়েছে অবাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণ। তাই একজন উদ্যোক্তাকে ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নের বাস্তবসম্মত এবং সবার নিকট গ্রহণযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। লক্ষ্য যেন অবশ্যই বাস্তবসম্মত সময়োপযোগী ও যথাযথ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

২. সঠিক সময় নির্ধারণ : অনেক সময় দেখা যায়, সময় নির্ধারণের অভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী লক্ষ্যঅর্জন করা সম্ভব সঠিক হয় না। তাই পরিকল্পনা প্রণয়নকালে তা বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ও পর্যাপ্ত সময় নির্ধারণ করা হলে ব্যবসায়ের মূল লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হয়। তাই পরিকল্পনা প্রণয়নে বাস্তবায়নে অপ্রত্যাশিত বাধা দূর করতে হলে সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে ।


আরো ও সাজেশন:-

৩. ভবিষ্যতে সমস্যা চিহ্নিতকরণ : ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট ভবিষ্যৎ চলকসমূহ সব সময় ব্যবসায়ের প্রতি বিরূপ হতে পারে এবং ব্যবসায়ের লক্ষ্য অর্জনের সময় ব্যাপকভাবে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ সকল সমস্যাকে সুচিন্তিত উপায়ে চিহ্নিত করতে হবে এবং সেগুলো মোকাবিলার জন্য আগাম কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। তাহলে ব্যবসায় পরিকল্পনার অপ্রত্যাশিত বাধা দূর করা যাবে ।

৪. সঠিক তথ্যসংগ্রহ ও বিশ্লেষণ : আমরা জানি, সকল, পরিকল্পনা তথ্যনির্ভর। কিন্তু তথ্যসংগ্রহ বিশ্লেষণ সঠিকভাবে সম্পাদিত না হলে সঠিকভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা যায় না। এতে করে ব্যবসায়ের লক্ষ্য ব্যর্থ হয়। তাই ব্যবসায় পরিকল্পনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সঠিক উপায়ে, সঠিক মাধ্যমে, সঠিক স্থান থেকে সংগৃহীত ও বিশ্লেষিত হবে। এটা করতে পারলে ব্যবসায়ের লক্ষ্য অর্জনে অপ্রত্যাশিত বাধাসমূহ দূর করা যায় ।

৫. দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ ও দূরীকরণ : ক্ষুদ্র ব্যবসায় উদ্যোক্তা পরিকল্পনা প্রণয়নের পূর্বে ব্যবসায় পরিচালনার সামর্থ্য ও দুর্বলতা চিহ্নিত করতে হবে। এবং দুর্বলতা দূরীকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬. বিকল্প পরিকল্পনা নির্ধারণ : ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত এই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ একক পরিকল্পনা লক্ষ্য অর্জন সর্বদা স হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিকল্প পরিকল্পন থাকা আবশ্যক। ভবিষ্যৎ অপ্রত্যাশিত বাধা এড়াতে বিকল্প পরিকল্পনা নির্ধারণ করা উত্তম।

৭. যথাসময়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন : যথাসময়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন না হলে ক্ষুদ্রে পরিকল্পনা কার্যকারিতা হারায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সময়ের ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।

৮. নমনীয়তার সুযোগ : নমনীয়তা হলো যে কোনো আদর্শ পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য। ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে যে সমস্ত বাধা সৃষ্টি হওয়ার আশংকা থাকে সেগুলো দুর করতে হলে ব্যবসায় পরিকল্পনাটিকে এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে যাতে যেকোনো পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে উহার বিষয়বস্তু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যায়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৯. SWOT বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন : একটি প্রতিষ্ঠানের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ, সুবিধা ও হুমকি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকলে ঐ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে অপ্রত্যাশিত বাধাগুলোর অনেকটাই মোকাবিলা করা যায়। তাই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য অপ্রত্যাশিত বাধা ব্যতিরেকেই কার্যাবলি সম্পাদন করতে হলে ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নকারীদেরকে অবশ্যই SWOT বিশ্লেষণও মূল্যায়ন পূর্ব ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা দরকার ।

১০. দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ : যে-কোনো পরিকল্পনা বাস্ত বায়নের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যঅর্জন করতে হলে অবশ্যই দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ করতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন প্রকার অপ্রত্যাশিত বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ব্যবসা পরিকল্পনা প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে অপ্রত্যাশিত বাধা দূর করতে হলে উক্ত পরিকল্পনায় দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

১১. গবেষণা ও উন্নয়ন : বাজার সম্বন্ধে সঠিক ধারণা অর্জনের জন্য উদ্যোক্তাকে বাজার গবেষণা করতে হবে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির সাথে খাওয়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নসাধন করতে হবে, এতে পরিকল্পনা সফল হয় ৷

১২. অঙ্গীকার সৃষ্টি : উদ্যোক্তাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে ক্ষুদ্র ব্যবসায় পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হবে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা, ভোক্তা, সরবরাহকারী, বাহক, বিমা, সকলের প্রতি অঙ্গীকার সৃষ্টি করতে হবে যাতে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উপরে আলোচিত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অপ্রত্যাশিত বাধাসমূহ দূরীভূত করা সম্ভব। যার ফলে পরিকল্পনা তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সফলতার সহিত পৌছাতে সক্ষম হয়। এতে ব্যবসায়ে সাফল্য অনিবার্য ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment