আজ বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস ইতিহাস

বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালিত হচ্ছে, যদিও এটি আসলে ১৭ই মে পালিত হয়। এবারে কোভিড (করোনা) মহামারির কারনে এটি আজকের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন লিগের সদস্য হিসেবে হাইপারটেনশন কমিটি অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে নানা আয়োজনের মাধ্যমে এই দিবসটি পালন করে আসছে। এবারে এই দিবসের প্রতিপাদ্য—‘রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণ করুন ও বেশি দিন বাঁচুন’।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। এই রোগে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। দিন দিন উন্নয়নশীল বিশ্বে এটা বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রতি বছর শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ হারে এই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। বয়স ৪০ হয়ে গেলে বছরে অন্তত একবার রক্তচাপ মাপা উচিৎ।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ওষুধ না খেলে কিডনি সমস্যা, হার্ট এটাক, মস্তিস্কের রক্তক্ষরনজনিত জটিলতা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।অনেক ক্ষেত্রে রোগীর কোন লক্ষণ থাকে না, তখন তারা মেডিসিন খেতে চায়না, আবার মেডিসিন খাবার পরে রক্তচাপ স্বাভাবিক হলে নিজেই খাওয়া বন্ধ করে দেয়, যা একেবারেই অনুচিৎ। নীরব ঘাতক এই উচ্চ রক্তচাপ তখন আরো নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় এবং মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে। তাই এসব বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়না। তবে বংশগত কারন, কর্মক্ষেত্রে অত্যধিক মানসিক চাপ, শারীরিক পরিশ্রম না করা, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া এবং ফাস্টফুডের প্রতি আসক্তি, হরমোনজনিত কারন ইত্যাদি উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী।

তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সচেতন হওয়া, অতিরিক্ত ও পাতে আলগা লবণ না খাওয়া, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, শাকসবজি ও ফলমুল বেশি খাওয়া, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, নিয়মিত রক্তচাপ মাপা, রক্তের চিনির মাত্রা নিয়মিত মাপা, ধূমপান না করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ পরিবর্তন বা সেবন বন্ধ না করা ইত্যাদি উপায়ের মাধ্যমে রক্তচাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব, যা মানুষের জীবনের গুণগত মান বাড়াতে সহায়ক হবে।

Leave a Comment