অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারেন যেভাবে ,অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করবেন যেভাবে, আপনি কি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে চান,এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? কিভাবে affiliate marketing করে টাকা আয় করবেন

আজকের বিষয়: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারেন যেভাবে ,অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করবেন যেভাবে

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কী?

ইংরেজি অ্যাফিলিয়েট (Affiliate) শব্দের বাংলা অর্থ হলো শাখা। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো কমিশনের বিনিময়ে কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেওয়া। সাধারণত অনলাইন ভিত্তিক বা ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুযোগ দিয়ে থাকে।

আর যারা এই ধরনের কাজ করে তাদেরকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার। বিষয়টি যদি বুঝতে গোলমেলে মনে হয় তাহলে চলুন আরেকটু সহজ করে বুঝা যাক।

প্রতিটি বড় বড় কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট বেতনের ভিত্তিতে সেলস এক্সিকিউটিভ নিয়োগ দেয়। যাদেরকে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রোডাক্ট বিক্রির টার্গেট দেওয়া হয় এবং তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতনের ভিত্তিতে এই কাজটি করে থাকে।

কিন্তু আবার এমন অনেক বড় বড় এবং জনপ্রিয় কোময়ানি আছে যারা কমিশনের বিনিময়ে কর্মী নিয়োগ দেয়। তাদেরকে কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করতে বলা হয়ে থাকে। যদি সে কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারে তাহলে তাকে নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন প্রদান করা হয়। সে যত বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবে তার কমিশন তত বাড়বে।

উদাহরণসরূপ বলা যায়, ধরুন আমি একটা মোবাইল শপের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হয়েছি। আপনাকে একটা মোবাইল সম্পর্কে বিস্তারিত ভালো-মন্দ জানিয়ে সেটি কেনাতে রাজি করিয়েছি, এখন আপনি যদি ঐ মোবাইলটি সেই শপ থেকে কিনেন তাহলে আমি এর বিনিময়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবো। আর এটাই হলো মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এখানে কমিশন ভিত্তিক কাজ করা হয়।

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম কীভাবে কাজ করে?

এতক্ষনণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কী। কিন্তু আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আসলে কীভাবে কাজ করে বা সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বুঝবে কীভাবে যে কেউ আমার অ্যাফিলিয়েটে প্রোডাক্ট কিনেছে। আপনাদের মনে যদি এই ধরনের প্রশ্ন থাকে তাহলে চলুন বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক।

আপনি যখন কোন ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে যুক্ত হোন তখন আপনার জন্য একটা আলাদা ড্যাসবোর্ড এবং ইউনিক লিংক তৈরি হয়ে যায়।

সেখান থেকে যখন আপনি কোনো প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করেন এবং সেই লিংক থেকে কেউ প্রোডাক্টটি ক্রয় তখন ওয়েবসাইটের সিস্টেম সেটা ডিটেক্ট করতে পারে এবং আপনার ড্যাশবোর্ডে তা দেখায়, এটা সম্পূর্ণ অটোমেটিক সিস্টেম। এভাবে মূলত ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের ট্র্যাক করে থাকে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কয় প্রকার?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাধারণত ২ প্রকারঃ

  1. ফ্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  2. নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

ফ্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

এটা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের এমন একটি ধরণ যেখানে বিভিন্ন জনপ্রিয় ইকমার্স প্রতিষ্ঠানের অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট ও সার্ভিস তালিকাভুক্ত থাকে। 

অর্থাৎ এটা  একটা কমন প্ল্যাটফর্মের মতো, আপনি এখানে একটা অ্যাকাউন্ট থেকেই একাধিক কোম্পানির প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিনং করতে পারবেন। এমন কয়েকটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হলোঃ

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কি কি লাগে?

এটি করতে আপনার আহামরি কোন কিছু লাগবে না, এমনকি খুব বেশি পরিমাণ টাকাও প্রয়োজন নেই। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে মূলত একটি ডিভাইস (কম্পিউটার বা মোবাইল), একটা প্ল্যাটফর্ম (ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ) এবং কিছু পুঁজি লাগে।

আপনি কম্পিউটার বা মোবাইল যেকোনো একটা দিয়েই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় শুরু করতে পারেন। কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলে ভালো হয়, কারণ মোবাইলে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না।

তবে এমন না যে আপনি মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন না, মোবাইল ফোন দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা যায়।

প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কাস্টমারের কাছে বিক্রি করার জন্য আপনার অবশ্যই একটা জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম থাকতে হবে। সেটা হতে পারে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি।

সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনার একটা ওয়েবসাইট থাকে এবং ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল থাকলে আরো বেশি সুবিধা। এরপর আপনার বিভিন্ন সময়ে পেইড ক্যাম্পেইন চালানোর জন্য কিছুর পুঁজির প্রয়োজন হতে পারে।

আপনি পুজি ছাড়াও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন, তবে পেইড ক্যাম্পেইন চালালের আপনার কাজে সুবিধা হবে।

মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো জটিলতামুক্ত একটা কাজ। মোবাইল দিয়েও অ্যাফিলিয়ে মার্কেটিং করে আয় করা যায়। এখানে আপনাকে কিছু সময় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে।

এমন কিছু কাজ থাকে যেগুলো আসলে কম্পিউটার ছাড়া ভালোভাবে করা যায় না। তবে মোবাইলেও করা যায়, কিন্তু ওতটা ভালো হয়না।

ফ্রি ও পেইড ট্রাফিক কী?

ফ্রি ট্রাফিক হলো বিনামূল্যে সোশ্যাল মিডিয়া বা সার্চ ইঞ্জিন থেকে অর্গানিক ট্রাফিক জেনারেট করা। যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভালোমতো এসইও করাতে পারেন তাহলে আপনি সহজেই গুগল, বিং, ইয়াহুর মতো জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন থেকে অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন।

এছাড়াও আপনার সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে যদি ভালো পরিমাণ মানুষ এঙ্গেজ থাকে তাহলে আপনি সেখান থেকে অর্গানিক ট্রাফিক জেনারেট করতে পারবেন। আরে এটাই হলো ফ্রি ট্রাফিক।

আর পেইড ট্রাফিক হলো টাকা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন বা ক্যাম্পেইন চালিয়ে ট্রাফিক জেনারেট করা। তবে আপনার উচিত হবে শুরুতে ফ্রি ট্রাফিক জেনারেট করার।

আপনি যখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরে ভালো করতে পারবেন এবং এ সম্পর্কে ভালো ধারনা চলে আসবে তখন পেইড ট্রাফিক আনা।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কয় টাকা আয় করা যায়?

প্রথমেই বলে রাখি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা আয় হলো ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা। একানে ইনকামের নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ নেই।

আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্যাসিভ টাকা আয় করতে পারেন। বিশ্বে এমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা প্রতিমাসে শুধুমাত্র অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করে ২ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা।

আপনি এখান থেকে কত টাকা আয় করতে পারবেন সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে আপনার দক্ষতা ও কাজের গতির ওপর। তবে এতটুকু জেনে রাখুন যে, এটা থেকে প্যাসিভ আয় করা যায় যেটা লিমিটলেস। শুধু কাজে মনোযোগী হতে হবে।

কীভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবো?

তিনটি ধাপ অনুসরণ করে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করে আয় করতে পারেন। সেগুলো হলোঃ

  1. প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা
  2. প্ল্যাটফর্ম ও কন্টেন্ট তৈরি করা
  3. ট্রাফিক জেনারেট করা

আপনি অন্যান্য ভিন্ন উপায়েও শুরু করতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে এই তিনটি ধাপ অনুসরণ করা ভালো মনে হলো বলে শেয়ার করছি।

প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে হলে প্রথমেই আপনাকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ক্যাটাগরি সিলেক্ট করতে হবে। আপনি কোন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন সর্বপ্রথম সেটি সিলেক্ট করুন। 

বর্তমানে মানুষ অনলাইনে ফিজিক্যাল প্রোডাক্টের চেয়ে সার্ভিস বেশি কিনে থাকে। ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট হলো সেই সকল জিনিস যেগুলোর শারীরিক অস্তিত্ত্ব আছে। আর ডিজিটাল সার্ভিস হলো সেগুলো যেগুলোর কোন শারীরিক অস্তিত্ত্ব নেই অর্থাৎ ধরা বা ছোঁয়া যায় না।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট ক্রয় করলে কোন ডেলিভারি সমস্যা হয় না বিধায় মানুষ এগুলোর দিকে বেশি ঝুকছে। তাই চেষ্টা করুন ডিজিটাল সার্ভিস নিয়ে কাজ করার জন্য।

প্ল্যাটফর্ম ও কন্টেন্ট তৈরি করা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার দ্বিতীয় ধাপ হলো কোনো একটা জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা ও নিয়মিত সেখানে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ক্যাটাগরি নিয়ে পোস্ট করা। আপনার যদি একটা ওয়েবসাইট থাকে তাহলে সেখানে প্রোডাক্টের বিভিন্ন ভালো দিক, সুবিধা-অসুবিধা ও কেন কেউ প্রোডাক্টটি কিনবে সে সম্পর্কে পোস্ট করতে হবে।

এগুলো ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপেও লিখতে পারেন। তাছাড়া একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রোডাক্ট সম্পর্কে রিভিউ দিতে পারেন এবং ডেস্ক্রিপশনে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক সংযুক্ত করে দিবেন।

ট্রাফিক জেনারেট করা

কিছুক্ষণ আগেই আমরা উপরে ট্রাফিক জেনারেট সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে ট্রাফিক জেনারেটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন।

এই ছিলো মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি, কীভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা যায় এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

এফিলিয়াতে মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন ? (How to start affiliate marketing ?)

নিচে আমি ৬ টি সোজা পয়েন্ট বা স্টেপস বলবো, যেগুলি পুরো কোরে আপনারা এফিলিয়াতে মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাজ শুরু করতে পারবেন।

  1. সবচে আগেই, আপনার একটি ব্লগইউটিউবের চ্যানেলফেসবুক পেজ বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়া পেজ থাকতে হবে।এবং, সেই পেজ, ব্লগ বা ইউটিউবের চ্যানেলে অনেক ট্রাফিক, ভিসিটর বা লাইক থাকতে হবে। কারণ, যেকোনো প্রোডাক্টের (product) এর মার্কেটিং করার জন্য সবচে জরুরি অডিয়েন্স (audience)যাদের কাছে আপনি প্রোডাক্ট শেয়ার বা মার্কেটিং করবেন। এবং, যেকোনো জিনিস অনলাইনে মার্কেটিং করার এই ৪ টি মাধ্যম সেরা।
  2. এখন আপনার একটি ব্লগ, ইউটিউবের চ্যানেল বা ফেসবুক পেজ, এগুলির মধ্যে যদি একটিও আছে, তাহোলে এখন আপনি একটি ভালো “Affiliate program” জয়েন করতে হবে। যেকোনো অনলাইন affiliate program জয়েন করার পর আপনি তাদের সামগ্রী বা প্রোডাক্ট প্রোমোট বা শেয়ার করতে পারবেন।
  3. এখন affiliate network বা affiliate program জয়েন করার পর, আপনি কেমন সামগ্রী বা প্রোডাক্ট লোকেদের সাথে শেয়ার করবেন সেটা আপনার নির্ধারিত বা বাছাই করতে হবে।
  4. আপনার বেঁচে নেয়া প্রোডাক্ট বা সামগ্রীর বিনিময়ে আপনাকে একটি affiliate link দেয়া হবে। এই, এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে লোকেরা আপনার শেয়ার বা প্রোমোট করা প্রোডাক্টের পেজে আসতে পারবে। এবং, এখানথেকেই তারা সেই প্রোডাক্টটি ডাইরেক্ট কিনে নিতে পারবেন।
  5. এরপর আপনাকে দেয়া প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক আপনি নিজের ব্লগ, ইউটিউবের চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে লোকেদের সাথে শেয়ার কোরে মার্কেটিং করতে পারবেন।
  6. এখন, আপনার শেয়ার করা প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে যদি কেও সেই সামগ্রী মা প্রোডাক্ট টি কিনেন, তাহলে আপনি affiliate network টির তরফ থেকে টাকা পাবেন commission হিসেবে।

তাহলে, এই ৬ টি সোজা স্টেপস পোরে হয়তো আপনারা বুঝেই গেছেন যে, এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন।

তাহলে আমরা কি শিখলাম ?

ইন্টারনেটে অনেক অনেক অনলাইন কোম্পানি রয়েছেন যেমন, ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি, অনলাইন কাপড়ের দোকান, ডোমেইন কোম্পানি আদি সাধারণ ভাবে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (affiliate program) প্রদান করেন। আপনি এরকম অনেক অনলাইন কোম্পানি খুজেঁ, যারা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম প্রদান করেন নিজেকে একটি এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে sign up করতে পারেন।

এখন আপনি, sign up করা affiliate program, network বা company র যেই প্রোডাক্ট (product) মার্কেটিং করতে চান সেটার এফিলিয়েট লিংক আপনি পেয়ে যাবেন। তারপর, সেই প্রোডাক্ট এর বিষয়ে আপনি নিজের ব্লগে আর্টিকেল লিখতে পারেন বা নিজের ইউটিউবের চ্যানেলে সেই প্রোডাক্টের ওপরে একটি ভিডিও বানাতে পারেন।

শেষে, আপনার লেখা আর্টিকেলের পেজে বা ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনে (description) সেই প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিবেন।

যদি আপনার রিডার্স (readers) রা বা ভিডিও ভিয়ার্স  (viewers) রা সেই লিংক থেকে প্রোডাক্ট টি কিনেন তাহলে আপনি পেয়েযাবেন কমিশন।

এভাবে আপনি যেকোনো জিনিস ইন্টারনেটের মাধবে বিক্রি করিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। এবং, লোকেরা এই মাধ্যমে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ টাকা মাসে কামিয়ে নিচ্ছেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা কত টাকা আয় করা যাবে ?

সত্যি বললে, এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা আপনি কত টাকা আয় করবেন, সেটা পুরো আপনার ওপরে। আজ, লোকেরা কেবল এই মাধ্যমে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা কমিশন হিসেবে কামিয়ে নিচ্ছেন আর তাই আপনি চেষ্টা করলে মাসে কয়েক হাজার তো আরামেই ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু, এই affiliate marketing এর খেলা বুঝতে আপনার অল্প সময় নিশ্চই লাগবে। এই মাধ্যমে আপনি বেহিসাব টাকা আয় করতে পারবেন। কিন্তু, আপনার কিছু জায়গায় এক্সপার্ট (expert) হতে হবে।

ভেবেনিন আপনার একটি ব্লগ বা ইউটিউবের চ্যানেল আছে এবং আপনি তাতে blogging এর ওপর টিউটোরিয়াল (tutorial) আর্টিকেল লিখেন বা ভিডিও চ্যানেলে আপলোড দেন।

যিহেতু, আপনি blogging এর সাথে জড়িত আর্টিকেল লিখেন বা ভিডিও নিজের ইউটিউবের চ্যানেলে আপলোড দেন, তাই আপনার ব্লগে বা চ্যানেলে আশা বেশির ভাগ ভিসিটর্সরা ওয়েব হোস্টিং (web hosting) এবং ডোমেইন (domain) কেনাতে রুচি রাখতে পারে।

এখন, আপনার করতে হবে কি, আপনি ভালো একটি domain এবং hosting কোম্পানিতে গিয়ে নিজেকে affiliate হিসেবে রেজিস্টার কোরে তাদের প্রোডাক্ট নিজের ইউটিউবের চ্যানেল বা ব্লগের আর্টিকেলে এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে প্রোমোট করতে পারবেন এবং নিজের ভিসিটর্স দেড় সেই প্রোডাক্ট গুলি কিনতে বলতে পারবেন। আপনি প্রত্যেক purchase এ ১০% থেকে ২০% অব্দি কমাতে পারবেন।

এখন, যদি আপনার প্রোমোট করা এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে আপনার ভিসিটর্স রা মাসে ২০ টা প্রোডাক্ট যেমন ডোমেইন বা হোস্টিং কেনে ,  এবং একটি হোস্টিং প্যাকেজের দাম বছরে ৭০০০ হয় আর প্রত্যেক কেনাতে আপনাকে ২০% কমিশন দেয়া হয় তাহলে আপনার মোট ইনকাম হবে –

৭০০০*২০ = ১,৪০,০০০/-

১,৪০,০০০*২০/১০০ = ২৮,০০০/-

তাহলে আপনি মোট ২৮,০০০ টাকা এক মাসেই আয় করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় পুরো পুরি নির্ভর করে,

  • আপনি কত দামি জিনিস এর মার্কেটিং করছেন।
  • প্রত্যেক বিক্রিতে আপনাকে কত টাকা দেয়া হচ্ছে কমিশন হিসেবে।
  • আপনি কতটি প্রোডাক্ট এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে বিক্রি করিয়েছেন।
  • যেই প্রোডাক্ট আপনি মার্কেটিং করছেন তার চাহিদা আছে কি না।

এই জিনিস গুলির ওপরে নির্ভর করেই আপনার এফিলিয়েট ইনকাম নির্ভর করবে। অল্প কঠিন, কিন্তু আপনি একবার এই অনলাইন ব্যবসা ধরে ফেললে এতো টাকা আয় করতে পারবেন যে আপনি ভাবতেও পারবেননা। এইটা পুরোটাই একটি অনলাইন ব্যবসা। অনলাইনে অনেক মাল (product) রয়েছে যেগুলির বিষয়ে আপনি লোকেদের জানিয়ে সেই মাল গুলি বিক্রি করিয়ে দিতে পারবেন। অন্যদের মাল (product) বিক্রি করান এবং কমিশন নিয়ে যান।

ইন্ডিয়ার (India) বিখ্যাত (famous) ব্লগার “Mr.Harsh agarwal” তার একটি আর্টিকেলে লিখেছেন যে, তিনি এফিলিয়েট প্রোগ্রামের দ্বারা মাসে ৩০,০০০ ডলার ($30000) ইনকাম করেন। এবং, তিনি এটাও বলেছেন যে, আমরা এর দ্বারা limitless (unlimited) টাকা আয় করতে পারি। শেষে, এটাও Harsh agarwal বলেছেন যে affiliate product মার্কেটিং করার তার উপায় হলো ব্লগের মাধ্যমে।তিনি ১০ বছর থেকে ব্লগের মাধ্যমেই প্রোডাক্ট গুলি মার্কেটিং করছেন এবং লক্ষ লক্ষ টাকা মাসে আয় করছেন।

কিছু লাভজনক এবং বিখ্যাত এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (affiliate program)

এমনিতে আজকাল সব ছোট্ট বড়ো অনলাইন স্টোর বা কোম্পানি affiliate program ব্যবহার করেন। কিন্তু, তাদের মধ্যে কয়েকটি এমন এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক রয়েছে যেগুলি বেশি কমিশন ইনকাম দেয়ার জন্য বিখ্যাত।

  1. Flipkart affiliate program – এইটা ইন্ডিয়া অনেক নাম করা এবং জনপ্রিয় একটি online shopping website . এখানে ফ্রীতেই এফিলাট হিসেবে রেজিস্টার কোরে আপনি বিভিন্ন রকমের দামি কমদামি জিনিস ভালো commission এ বিক্রি করতে পারবেন।
  2. Amazon affiliate program – ভারতের e-commerce ব্যবসাতে আমাজন (amazon) সবচেয়ে আগে এবং এই অনলাইন শপিং স্টোরেও আপনি affiliate হিসেবে রেজিস্টার হোয়ে বিভিন্ন রকমের product এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে ভালো কমিশনে বিক্রি করতে পারবেন।
  3. Go daddy  (domain & hosting) – যদি আপনার ব্লগ বা ইউটিউবের চ্যানেল blogging এবং hosting এর ওপরে, তাহলে Go Daddy তে একজন এফিলিয়েট হিসেবে নিজেকে রেজিস্টার করুন এবং অনেক হাই কমিশনে ডোমেইন এবং হোস্টিং বিক্রি করুন। Go daddy ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার অনেক বিখ্যাত অনলাইন কোম্পানি।
  4. Hostgator affiliate network – hostgator ডোমেইন এবং হোস্টিং এর মার্কেটে অনেক নাম করা কোম্পানি। এবং, আপনি যদি ডোমেইন বা হোস্টিং এর এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান, তাহলে hostgator আপনাকে ভালো কমিশন দিতে পারবে। এখানে আপনি কেবল একটি বিক্রিতেই প্রায় ৩০০০ টাকা অব্দি আয় করতে পারবেন।
  5. Ebay affiliate program – আপনারা হয়তো ebay অনলাইন ওয়েবসাইটের কথা অবশই জানেন। ebay একটি অনলাইন শপিং সাইট যে বিশ্বের সব জায়গায় নিজের প্রোডাক্ট ডেলিভার করেন। এবং, আপনি যেই দেশের কেন নাহোক, ebay এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি তার যেকোনো অনলাইন product মার্কেটিং কোরে ভালো commission আয় করতে পারবেন।

এর বাইরেও অনেক লোকাল ওয়েবসাইট রয়েছেন যারা আপনাকে তাদের প্রোডাক্ট অনলাইন বিক্রি করানোর জন্য ভালো কমিশন দেন। আপনি সোজা Google এ গিয়ে নিজের দেশের লোকাল affiliate program এর বিষয়ে সার্চ কোরে তাদের join করতে পারেন।

Affiliate marketing এর কিছু জরুরি প্রশ্ন এবং তার উত্তর

ওপরে আমি অনেক কিছুই বললাম affiliate marketing এর বেপারে। এবং, আমি জানি আপনাদের মনে এখনো এ বেপারে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তাই, নিচে আমি কিছু কমন (common) প্রশ্নোর উত্তর আপনাদের দিবো।

Affiliate program join করতে কত টাকা লাগে ?

এফিলিয়েট প্রোগ্রাম জয়েন করার জন্য আপনার এক টাকাও কাওকে দিতে হয়না।

Affiliate product কিভাবে প্রমোশন (promotion) করবেন ?

যা আমি আগেই বলেছি, যেকোনো এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রোমোট বা মার্কেটিং করার জন্য একটি ব্লগ এবং ইউটিউবের চ্যানেল সেরা মাধ্যম। কারণ, এই দুটি মাধ্যমে আপনি নিজের প্রোডাক্টের বিষয়ে ভিসিটর্স দেড় ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। এতে, তাদের প্রোডাক্ট কেনার চাহিদা বা ইচ্ছা বেড়ে যায়।

কিরকম প্রোডাক্ট প্রমোশন বা মার্কেটিং করবেন ?

অবশই মনে রাখবেন, সব সময় এমন একটি প্রোডাক্ট মা সামগ্রী বাছাই (select) করবেন যার চাহিদা লোকেদের মাঝে আছে। উদাহরণ স্বরূপে, ডোমেইন এবং হোস্টিং এর চাহিদা অনেক। কারণ আজ লোকেরা নিজেদের ব্যবসা অনলাইন নিয়ে আসতে চান, এবং তার জন্য তারা ডোমেইন বা হোস্টিং অবশই কিনতে চাবেন। অনেক রকমের অনলাইন প্রোডাক্টের চাহিদাও লোকেদের মাঝে এমনিতেই রয়েছে। এর বাইয়ারে, যেগুলি product সহজে বিক্রি হতে পারে এবং যেগুলিতে কমিশন ইনকাম বেশি সেগুলি মার্কেটিং করার চেষ্টা করুন।

কিছু লাভজনক  এবং সহজে বিক্রি হওয়া এফিলিয়েট প্রোডাক্ট হলো –

  • মোবাইল বা স্মার্টফোন
  • ডোমেইন এবং হোস্টিং
  • বই (books).
  • ওয়ার্ডপ্রেস থিম (WordPress theme).
  • ল্যাপটপ (laptop)
  • কাপড় জামা (cloths)
  • আরো অনেক।

আয় করা টাকা কিভাবে কিভাবে তুলবেন ?

এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আয় করা কমিশন ইনকাম আপনি অনেক সহজে নিজের ব্যাঙ্ক একাউন্টে (bank account) তুলে নিতে পারবেন। ব্যাঙ্ক একাউন্ট দেয়ার জন্য আপনাকে সঠিক অপসন দেয়া হবে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment