অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ব্লিচিং পাউডার’-এর কথা উল্লেখ আছে

সাদা রঙের ক্যালসিয়াম হাইপোক্লোরাইট পাউডারই মূলত ব্লিচিং পাউডার। এর রাসায়নিক সংকেত Ca(OCl)Cl। এটি ক্লোরিনের ঝাঁজালো গন্ধযুক্ত একটি অজৈব পদার্থ। এটি জলীয় বাষ্প শোষণ করে এবং পানির সঙ্গে আংশিক বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ও ক্যালসিয়াম হাইপোক্লোরাইট উৎপন্ন করে। ব্লিচিং পাউডারের জারণ ও বিরঞ্জন ধর্ম ক্লোরিনের ওপর নির্ভর করে। এটি হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, পানি ও ক্লোরিন গ্যাসে রূপান্তরিত হয়।

জীবাণুনাশক হিসেবে এ পাউডার ব্যবহার করা হয়। অনেকে এটি দিয়ে কাপড়, গোসলখানা ও মেঝে পরিষ্কার করে। ঈষৎ আর্দ্র চুনের সঙ্গে শুষ্ক ক্লোরিনের বিক্রিয়া ঘটিয়ে ব্লিচিং পাউডার তৈরি করা হয়।

এ ছাড়া পানিকে বিশুদ্ধ করতে, ক্লোরোফর্ম প্রস্তুতিতে, কাগজশিল্পে এবং বস্ত্র বিরঞ্জন করতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়। বাড়ির আশপাশে ভেজা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বা টয়লেটের কমোড, ঘরের মেঝে থেকে জীবাণু ধ্বংস করার জন্য এই পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এটি টয়লেটের কমোড ও বেসিনে দেওয়ার পর যখন পানি যোগ করা হয়, তখন এই পাউডার পানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে হাইপোক্লোরাস এসিড (HOCl) ও ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন করে। পরে হাইপোক্লোরাস এসিড ভেঙে গিয়ে জায়মান অক্সিজেন তৈরি করে, যা জীবাণু ধ্বংস করে।

ব্লিচিং পাউডারের ক্ষতিকর দিকও আছে। অনেকে ঘরদোর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কারের কাজে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করেন। এতে ঘরদোর ঝকঝকে হয় ঠিকই; কিন্তু শিশুদের শ্বাসতন্ত্রসহ নানা সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই সতর্কতার কথা বলা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অনেকে না বুঝে সরাসরি মানবদেহে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিচ্ছে, যা মানবদেহের উন্মুক্ত বহিঃঅঙ্গসহ চোখ-মুখের জন্য ক্ষতিকর। ব্লিচিং পাউডার সরাসরি স্কিনে ব্যবহার করা ক্ষতিকর। কারণ এর রাসায়নিক উপাদান স্কিন পুড়িয়ে ফেলে। এর ফলে স্কিনের বিভিন্ন রোগ হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরাসরি মানবদেহে ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে নিষেধ করেছে।

J.S.C

2 thoughts on “অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ব্লিচিং পাউডার’-এর কথা উল্লেখ আছে”

Leave a Comment